“আজ যেখানে প্রয়োজন রয়েছে সেখানেই সরকারের বিভিন্ন নীতি ও সিদ্ধান্তের ইতিবাচক প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে”
“আজ মানুষ সরকারকে বাধা সৃষ্টিকারী হিসেবে বিবেচনা করে না; বরং বলা চলে জনসাধারণ আমাদের সরকারকে নতুন সম্ভাবনার অনুঘটক হিসেবে মনে করেন। নিশ্চিতভাবে এক্ষেত্রে প্রযুক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে”
“নাগরিকরা সরকারের কাছে তাঁদের মতামত খুব সহজেই জানাতে পারেন এবং বিভিন্ন সমস্যার সমাধানও তৎক্ষণাৎ পেয়ে থাকেন”
“আমরা ভারতে আধুনিক ডিজিটাল পরিকাঠামো গড়ে তুলছি, একইসঙ্গে ডিজিটাল বিপ্লবের সুফল যাতে সমাজে প্রত্যেকের কাছে পৌঁছয় সেটিও নিশ্চিত করা হচ্ছে”
“আমরা কি সমাজের ১০টি সমস্যাকে চিহ্নিত করতে পারি যেগুলির কৃত্রিম মেধার সাহায্যে সমাধান করা সম্ভব”
“সরকার এবং জনসাধারণের মধ্যে আস্থার অভাব থাকায় দাসত্বের একটি মানসিকতা গড়ে উঠেছে”
“আমাদের সমাজে আস্থাকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে আন্তর্জাতিক স্তরে ভাল ভাল নিয়মগুলিকে জানার প্রয়োজন”

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ‘প্রযুক্তি ব্যবহার করে সহজ জীবনযাত্রা’ শীর্ষক বাজেট পরবর্তী ওয়েবিনারে ভাষণ দিয়েছেন। ২০২৩-এর কেন্দ্রীয় বাজেটে যেসব প্রস্তাব রাখা হয়েছে সেগুলিকে যথাযথভাবে বাস্তবায়িত করার জন্য সরকার বাজেট পরবর্তী ১২টি ওয়েবিনারের আয়োজন করেছে। আজকের ওয়েবিনারটি সেই সিরিজের পঞ্চম ওয়েবিনার।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন যে একবিংশ শতাব্দীর ভারত প্রযুক্তির সাহায্যে তার নাগরিকদের ক্ষমতায়নের দিকটি নিশ্চিত করেছে। বিগত কয়েক বছরের প্রতিটি বাজেটে প্রযুক্তির সাহায্যে মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজ করে তোলার ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এবারের বাজেটেও প্রযুক্তিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

পূর্ববর্তী সরকারের বিভিন্ন বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়ার ক্ষেত্রে পরস্পর বিরোধী নানা কার্যকলাপের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই সময়ে সমাজের একটি নির্দিষ্ট অংশ সরকারের হস্তক্ষেপের অপেক্ষায় থাকত যার মাধ্যমে মানুষের জন্য কাজ করা যাবে। অথচ, তাঁদের সারা জীবনে সেই সুযোগগুলি তাঁরা কখনোই পাননি। সমাজের আরও একটি শাখা এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করত কিন্তু সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের ফলে বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় তারা চাপের মুখে নতিস্বীকার করত। বর্তমানে সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। আজ যেখানে প্রয়োজন রয়েছে সেখানেই সরকারের বিভিন্ন নীতি ও সিদ্ধান্তের ইতিবাচক প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। এর ফলে, জীবনযাত্রা আরও সহজ হয়ে উঠেছে। আজ মানুষ সরকারকে বাধা সৃষ্টিকারী হিসেবে বিবেচনা করে না; বরং বলা চলে জনসাধারণ আমাদের সরকারকে নতুন সম্ভাবনার অনুঘটক হিসেবে মনে করেন। নিশ্চিতভাবে এক্ষেত্রে প্রযুক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

প্রধানমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে ‘এক দেশ, এক রেশন কার্ড’ এবং ‘জন ধন-আধার-মোবাইল’ বা জ্যাম ত্রিধারা, ‘আরোগ্য সেতু’ ও ‘কোউইন অ্যাপ’, রেলের টিকিট সংরক্ষণ এবং কমন সার্ভিস সেন্টারের উদাহরণ দিয়ে বলেন, প্রযুক্তির মাধ্যমে এই প্রকল্পগুলিকে বাস্তবায়িত করা সম্ভব হয়েছে।

শ্রী মোদী জানান, নাগরিকরা এখন সরকারের কাছে তাঁদের মতামত খুব সহজেই জানাতে পারেন এবং বিভিন্ন সমস্যার সমাধানও তৎক্ষণাৎ পেয়ে থাকেন। এই প্রসঙ্গে তিনি আয়কর ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন অভিযোগের মীমাংসায় স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির প্রয়োগের উদাহরণ তুলে ধরেন। “এখন আপনাদের অভিযোগ এবং তার মীমাংসার মধ্যে কোনও ব্যক্তিবিশেষ থাকেন না, প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়।” মানুষের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে তাঁদের জীবনযাত্রাকে আন্তর্জাতিক মানের করে তুলতে কিভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাবে তা নিয়ে সব দপ্তরকে একযোগে ভাবনাচিন্তা করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী। “আরও একধাপ এগিয়ে আমরা সেই ক্ষেত্রগুলিকে শনাক্ত করতে পারি যেখানে সরকারের সঙ্গে আলোচনার পদ্ধতিটি আরও সহজ হবে।” শ্রী মোদী ‘মিশন কর্মযোগী’ প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে বলেন, সরকারি কর্মচারীরা যাতে আরও নাগরিক-বান্ধব হয়ে ওঠেন তার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি বলেন, এই প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়াকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর আরও সময়োপযোগী করে তুলতে হবে। নাগরিকদের থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ গ্রহণ করে এক্ষেত্রে প্রশিক্ষণে পরিবর্তন আনতে হবে। তাহলেই তাৎপর্যপূর্ণভাবে পুরো প্রক্রিয়ার মানোন্নয়ন ঘটবে। প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য তিনি এমন একটি ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার পরামর্শ দেন যেখানে সাধারণ মানুষ তাঁদের মতামত সহজেই জানাতে পারেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ সকলের পাওয়া উচিত। এ কারণে সরকার প্রযুক্তি ক্ষেত্রে যথেষ্ট বিনিয়োগ করছে। এর ফলে, আধুনিক ডিজিটাল পরিকাঠামো যেমন গড়ে উঠবে, পাশাপাশি প্রত্যেকের কাছে যাতে ডিজিটাল পরিকাঠামোর সুফল পৌঁছয় সেটিও নিশ্চিত হবে। জিইএম বা জেম পোর্টালের উদাহরণ তুলে ধরে শ্রী মোদী বলেন, সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাপনাটি ছোট ব্যবসায়ী এবং রাস্তার হকারদেরও সরকারের বিভিন্ন সামগ্রী সংগ্রহ করার প্রক্রিয়ায় যুক্ত করেছে। ই-ন্যাম ব্যবস্থাপনায় কৃষকরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ক্রেতাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।

৫জি এবং কৃত্রিম মেধার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে শিল্প, ওষুধ উৎপাদন শিল্প, শিক্ষা এবং কৃষিক্ষেত্রে এগুলির প্রয়োগ জরুরি। এর ফলে সাধারণ মানুষের কল্যাণে সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিগুলিকে ব্যবহার করা যাবে। তিনি বলেন, “আমরা কি সমাজের ১০টি সমস্যাকে চিহ্নিত করতে পারি যেগুলির কৃত্রিম মেধার সাহায্যে সমাধান করা সম্ভব?”

সরকারি কাজকর্মে প্রযুক্তির ব্যবহারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন সংস্থা এবং সংগঠন তাদের নথিপত্র রাখার জন্য ডিজিলকার পরিষেবা ব্যবহার করতে পারে। সংশ্লিষ্ট নথিগুলি তারা সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও ভাগ করে নিতে পারেন। এই পরিষেবাগুলির আরও সম্প্রসারণ কিভাবে করা সম্ভব যাতে সাধারণ মানুষ উপকৃত হতে পারেন, সেই বিষয়টি নিয়ে তিনি ভাবনাচিন্তা করার আহ্বান জানান।

শ্রী মোদী বলেন, গত কয়েক বছর ধরে অণু, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ সংস্থাগুলিকে সাহায্য করার জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি যেসব বাধার সম্মুখীন হয় সেগুলিকে শনাক্ত করতে হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সময়ের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছোট ছোট শিল্প সংস্থাগুলির জন্য বিভিন্ন বিধি-নিষেধ তুলে দেওয়ার ফলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলির অর্থের সাশ্রয় হয়েছে। যেসব নিয়মগুলি কার্যকর নয়, সেগুলিকে চিহ্নিত করতে হবে। সরকার ইতোমধ্যেই ৪০ হাজারের বেশি সে্কেলে নিয়মকানুন বাতিল করেছে।

“সরকার এবং জনসাধারণের মধ্যে আস্থার অভাব থাকায় দাসত্বের একটি মানসিকতা গড়ে উঠেছে” বলে প্রধানমন্ত্রী আরো জানান, ছোটখাট ভুল-ত্রুটিগুলিকে ফৌজদারি বিধির বাইরে নিয়ে আসার উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন। এভাবে সরকার নাগরিকদের আস্থা অর্জন করেছে। অণু, ক্ষুদ্র ও অতিক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য সরকার ঋণদানের ক্ষেত্রে গ্যারান্টারের ভূমিকা পালন করছে। আমাদের সমাজে আস্থাকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে আন্তর্জাতিক স্তরে ভাল ভাল নিয়মগুলিকে জানার প্রয়োজন।

প্রযুক্তির ভূমিকার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজার ধরতে হলে প্রযুক্তির সাহায্যে নির্মিত উন্নত পণ্যসামগ্রী উৎপাদন প্রয়োজন। শুধুমাত্র ইন্টারনেট এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। পরিশেষে শ্রী মোদী বলেন, বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়নের ওপর বাজেট অথবা যে কোনও সরকারি নীতির সাফল্য নির্ভর করে। গ্রামাঞ্চলে প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহিত করার জন্য ভারতের প্রতিভাবান যুব সম্প্রদায় এবং দক্ষ মানবসম্পদকে সক্রিয় হতে হবে। “এই বাজেটকে কিভাবে আরও কার্যকর করে তোলা যায় সে বিষয় নিয়ে আপনারা আরও আলোচনা করুন।”

সম্পূর্ণ ভাষণ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
Cabinet approves minimum support price for Copra for the 2025 season

Media Coverage

Cabinet approves minimum support price for Copra for the 2025 season
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
সোশ্যাল মিডিয়া কর্নার 21 ডিসেম্বর 2024
December 21, 2024

Inclusive Progress: Bridging Development, Infrastructure, and Opportunity under the leadership of PM Modi