“২০১৪ সালে কৃষিতে বাজেট বরাদ্দ যেখানে ২৫ হাজার কোটি টাকার কম, আজ তা ১ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি ছাপিয়ে গেছে”
“সাম্প্রতিক বছরগুলিতে প্রত্যেক বাজেটকে বলা হচ্ছে গ্রাম, গরীব এবং কৃষকের বাজেট”
“সরকার অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক বাজারের সুযোগকে কৃষকদের সামনে উন্মুক্ত করছে”
“বাজেটে ক্রমেই এমন সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে যা কৃষিক্ষেত্রের উন্নয়নে সহায়ক হয় ও দেশকে ‘আত্মনির্ভর’ করে তোলে এবং আমদানির জন্য যে টাকা খরচ হত তা কৃষকদের হাতে পৌঁছয় ”
“সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যপূরণ সম্ভব নয় যতক্ষণ পর্যন্ত না কৃষিক্ষেত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জগুলি নির্মূল করা হচ্ছে”
“ভারতে আজ ৩ হাজারেরও বেশি কৃষি স্টার্ট-আপ রয়েছে ৯ বছর আগের সঙ্গে যার কোনও তুলনাই হয় না”
“বাজরার আন্তর্জাতিক পরিচিতি ভারতীয় কৃষকদের জন্য আন্তর্জাতিক বাজারের দরজা খুলে দেবে”
“ ভারতের সমবায় ক্ষেত্রে এক নব-বিপ্লব সাধিত হচ্ছে”

কৃষি এবং সমবায় নিয়ে বাজেট পরবর্তী ওয়েবিনারে আজ ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ২০২৩-এর কেন্দ্রীয় বাজেটে ঘোষিত বিভিন্ন উদ্যোগের যথাযথ রূপায়ণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন পরামর্শ এবং ধারণার অংশীদার হতে বাজেট পরবর্তী ১২টি ওয়েবিনারের এটি দ্বিতীয়।

সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে এ বছরের বাজেটে তদুপরি গত ৮-৯ বছরের বাজেটে কৃষিক্ষেত্রকে যে গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে তার ওপর প্রধানমন্ত্রী আলোকপাত করেন। তিনি জানান, ২০১৪ সালে বাজেটে কৃষিক্ষেত্রে যেখানে বরাদ্দ ছিল ২৫ হাজার কোটি টাকারও কম, আজ তা ১ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি ছাপিয়ে গেছে। শ্রী মোদী বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে প্রত্যেকটি বাজেটকেই ‘গ্রাম, গরীব এবং কৃষক’-এর বাজেট হিসেবে আখ্যা দেওয়া হচ্ছে।

স্বাধীনতা পরবর্তীকালে দীর্ঘ সময় ভারতের কৃষিক্ষেত্র সমস্যা জর্জরিত ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খাদ্য নিরাপত্তার প্রয়োজনে বহির্বিশ্বের ওপর আমাদের নির্ভরশীল থাকতে হত। ভারতের কৃষকরা এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে দেশকে কেবল আত্মনির্ভর করেছেন তাই নয়, খাদ্যশস্য রপ্তানির ক্ষেত্রেও তাঁরা দেশকে সক্ষম করে তুলেছেন বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, আজ ভারত বিভিন্ন ধরনের কৃষিপণ্য রপ্তানি করছে। সরকার অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক বাজারকে কৃষকদের সামনে ব্যবহারের সুযোগ তৈরি করছে বলে জানান শ্রী মোদী। তিনি বলেন, ভারতের লক্ষ্য স্বনির্ভরতা বা রপ্তানির ক্ষেত্রে কেবলমাত্র চাল বা গমের মধ্যেই সীমিত থাকবে না। কৃষিপণ্য আমদানির ওপর আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টান্ত দিয়ে বলেন যে ২০২১-২২-এ ডালশস্য আমদানির জন্য ১৭ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। মূল্য আরোপিত খাদ্যসামগ্রী আমদানিতে খরচ হয় ২৫ হাজার কোটি টাকা এবং ২০২১-২২-এ ভোজ্যতেল আমদানিতে খরচ করতে ১ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি টাকা। তিনি বলেন, কৃষিপণ্য আমদানিতে সর্বসাকুল্যে খরচ প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকার মতো। প্রধানমন্ত্রী জানান, বাজেটে ক্রমাগত কৃষিক্ষেত্রের প্রসারে বিভিন্ন রকম সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে যাতে করে দেশ আত্মনির্ভর হয়ে ওঠে এবং কৃষিপণ্য আমদানির জন্য যে টাকা খরচ হত তা যাতে কৃষকদের কাছে পৌঁছয়। তিনি ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বৃদ্ধির দৃষ্টান্ত দেন, ডালশস্য উৎপাদনের প্রসারের কথা বলেন, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ পার্কের সংখ্যা বাড়ানোর কথা জানান এবং ভোজ্যতেলের ক্ষেত্রে কালক্রমে সম্পূর্ণভাবে স্বনির্ভর হয়ে ওঠার লক্ষ্যের ওপর আলোকপাত করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয় যতক্ষণ পর্যন্ত না কৃষিক্ষেত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চ্যালেঞ্জগুলিকে নিরাময় করা হচ্ছে। তিনি জানান যে ব্যক্তিগত স্তরে উদ্ভাবন এবং বিনিয়োগের দিকটিকে এই ক্ষেত্রে দূরে ঠেলে রাখা হচ্ছে যার ফলে অন্যান্য ক্ষেত্রগুলির তুলনায় কৃষিক্ষেত্রে ভারতীয় যুব সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ অনেকখানি কম। তিনি বলেন, এই ত্রুটি সংশোধনের জন্য এবারের বাজেটে অনেকগুলি ঘোষণা করা হয়েছে। ইউপিআই-এর মতো উন্মুক্ত মঞ্চের তুলনা টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল জন-পরিকাঠামো মঞ্চ কৃষিক্ষেত্রে এবং কৃষি প্রযুক্তি নির্ভর ক্ষেত্রে উদ্ভাবন এবং বিনিয়োগের অপরিসীম সম্ভাবনার দরজা খুলে দিতে পারে। একগুচ্ছ সম্ভাবনার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লজিস্টিক্সের উন্নতিসাধন, বড় বাজারকে আরও বেশি সাধারণ ব্যবহারযোগ্য করে তোলা, প্রযুক্তির মাধ্যমে বিন্দু সেচের প্রসার ঘটানো এবং চিকিৎসা পরীক্ষাগারের মতো মাটির পরীক্ষাগার গড়ে তোলা দরকার। নীতি নির্ণয় এবং উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে সরকার এবং কৃষকের মধ্যে তথ্যের সেতুবন্ধ তৈরি করার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী যুব সম্প্রদায়কে সঠিক সময়ে সঠিক পরামর্শ দেওয়ার কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত ব্যাপারে যথাযথ সময়-ভিত্তিক তথ্য প্রদান এবং কতটা শস্য ফলন হল তা অনুমানের ক্ষেত্রে ড্রোন প্রযুক্তির ব্যবহারের ওপর আলোকপাত করেন শ্রী মোদী।

কৃষি-প্রযুক্তি স্টার্ট-আপ-এর আরও প্রসারের জন্য তহবিল চালুর উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান যে সরকার কেবলমাত্র ডিজিটাল পরিকাঠামোই গড়ে তুলছে না, এর পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে তহবিলের সংস্থানও করছে। তিনি যুব সমাজ এবং যুব উদ্যোগপতিদের এই লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে আজ ভারতবর্ষে ৩ হাজারেরও বেশি কৃষি স্টার্ট-আপ গড়ে উঠেছে যা গত ৯ বছর আগে কল্পনাতীত ছিল।

প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক বাজরা বর্ষের বিষয় উল্লেখ করে বলেন, এই আন্তর্জাতিক পরিচিতি ভারতীয় কৃষকদের সামনে বিশ্ব বাজারের দরজা উন্মুক্ত করে দেবে। তিনি বলেন, “এবারের বাজেটে মোটা দানাশস্যকে শ্রী অন্ন হিসেবে দেশ পরিচিতি দিয়েছে।” আমাদের ক্ষুদ্র কৃষকদের স্বার্থে শ্রী অন্ন-এর প্রসার ঘটানো হবে। এর পাশাপাশি এই ক্ষেত্রে বৃদ্ধির সম্ভাবনাকে ত্বরান্বিত করতে স্টার্ট-আপ-এর সংখ্যাও বাড়ানো হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের সমবায় ক্ষেত্রে এক নব-বিপ্লব সূচিত হচ্ছে। তিনি বলেন, এটা কেবলমাত্র দেশে কয়েকটি রাজ্য বা কয়েকটি এলাকায় সীমাবদ্ধ নেই। তিনি জানান, সমবায় ক্ষেত্রকে এ বছরের বাজেটে কর ছাড় দেওয়া হয়েছে। ফলে, নির্মাণ ক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িত নতুন সমবায় ক্ষেত্রগুলি উপকৃত হবে। তিনি আরও জানান, সমবায়গুলির ৩ কোটি পর্যন্ত টাকা তোলায় কোনও টিডিএস লাগবে না। ২০১৬-১৭-র পূর্বে চিনি সমবায়গুলির পেমেন্টের ক্ষেত্রে কর ছাড়ের যে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর ফলে চিনি সমবায়গুলি ১০ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত সাশ্রয় করতে পেরেছে।

দুগ্ধ এবং মৎস্যক্ষেত্রের ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দুই ক্ষেত্রে আগে যেখানে কোনও সমবায় ছিল না, আজ সমবায় গড়ে ওঠায় কৃষকরা প্রভূত উপকৃত হবেন। মৎস্যজীবীদের ক্ষেত্রে অপরিসীম সুযোগের ওপর আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী জানান, গত ৮-৯ বছরে মৎস্য উৎপাদন ৭০ লক্ষ মেট্রিক টন বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘পিএম মৎস্য সম্পদ যোজনা’র অধীন ৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে আরও একটি নতুন যে সংস্থান করা হয়েছে তাতে মৎস্য মূল্য আরোপিত শৃঙ্খল এবং বাজার প্রসার লাভ করবে।

ভাষণ শেষে ‘পিএম প্রণাম যোজনা’ এবং ‘গোবর্ধন যোজনা’র বিষয়টি তুলে ধরেন। কৃষিক্ষেত্রে রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহার কমিয়ে এনে প্রাকৃতিক এবং জৈব পদ্ধতিতে চাষের প্রসার ঘটানোর লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে বলে শ্রী মোদী জানান।

 

 

 

 

সম্পূর্ণ ভাষণ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
In a first, micro insurance premium in life segment tops Rs 10k cr in FY24

Media Coverage

In a first, micro insurance premium in life segment tops Rs 10k cr in FY24
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Chief Minister of Andhra Pradesh meets Prime Minister
December 25, 2024

Chief Minister of Andhra Pradesh, Shri N Chandrababu Naidu met Prime Minister, Shri Narendra Modi today in New Delhi.

The Prime Minister's Office posted on X:

"Chief Minister of Andhra Pradesh, Shri @ncbn, met Prime Minister @narendramodi

@AndhraPradeshCM"