“ভারত বিশ্বকে দেখিয়েছে, ভঙ্গুর না হওয়ার অর্থ কি”
১০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় সঙ্কটের মোকাবিলা ভারত যেভাবে করেছে, ১০০ বছর পর মানবজাতি তা নিয়ে গর্ববোধ করবে”
“আমরা ২০১৪ সালের পর শাসন ব্যবস্থার প্রতিটি দিককে পুনরায় ভাবনাচিন্তা করে নতুন করে তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি”
“দরিদ্র ও অক্ষমদের সশক্তিকরণ ছিল সরকারের মূল লক্ষ্য, যাতে পূর্ণ সম্ভাবনার সঙ্গে দেশের উন্নতিতে তাঁরা যোগদান করতে পারেন”
“আমাদের সরকার এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকল্পে সরাসরি ভর্তুকি প্রদানের মাধ্যমে ২৮ লক্ষ কোটি টাকা প্রদান করেছে”
“গত ৯ বছরে ৩.৫ লক্ষ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক ও ৮০ হাজার কিলোমিটার জাতীয় সড়ক নির্মিত হয়েছে”
“বর্তমানে ভারত দৈর্ঘ্যের নিরিখে মেট্রো পথে পঞ্চম স্থানে রয়েছে, শীঘ্রই তৃতীয় স্থানে উঠে আসবে”
“প্রধানমন্ত্রী গতিশক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান কেবলমাত্র পরিকাঠামো উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছে, তা নয় এলাকা ও জনগণের উন্নয়নেও যোগ দিচ্ছে”
“ইন্টারনেট ভিত্তিক তথ্যের হার দেশে ২৫ গুণ কমানো হয়েছে, এই হার বিশ্বের মধ্যে সস্তা”
“করদাতারা তাঁদের প্রদেয় কর কার্যকরভাবে ব্যয় করা হচ্ছে জানতে পেরে কর প্রদানে উৎসা
তারপর, আন্তর্জাতিক স্তরে ও ভারতে দ্রুতগতিতে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে।
২০১৪ সালের পর থেকে দেশে ১০ কোটিরও বেশি শৌচাগার নির্মান করা হয়েছে।
গত সাড়ে তিন বছরে দেশে ৮ কোটিরও বেশি নলবাহিত জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
মেট্রো পথে দৈর্ঘ্যের নিরিখে বিশ্বে ভারতের স্থান পঞ্চম। শীঘ্রই তা তৃতীয় স্থানে উঠে আসবে।
এর ফলে, সময় ও জ্বালানী সাশ্রয়ের পাশাপাশি, ১ লক্ষ টন কার্বনডাই অক্সাইড নির্গমন কমানো সমভাব হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী দিল্লিতে হোটেল তাজ প্যালেসে আজ ইকনোমিক টাইমস্ – এর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য শিখর সম্মেলনে ভাষণ দেন। 

প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, তিন বছর আগে ই টি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য শিখর সম্মেলনে শুরুর পর থেকে বর্তমান পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে গেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত শিখর সম্মেলনের মাত্র ৩ দিন পরেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড অতিমারী ঘোষণা করেছিল। তারপর, আন্তর্জাতিক স্তরে ও ভারতে দ্রুতগতিতে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই পরিস্থিতি আমাদের শিখিয়েছে যে, বিপদের সময় সমস্যাকে কিভাবে সম্ভাবনায় পরিণত করতে হয় এবং প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ভেঙ্গে না পড়ে কিভাবে এগিয়ে যেতে হয়। ১৪০ কোটি ভারতবাসীর দৃঢ় মানসিকতার ফলেই ভারত এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পেরেছে। বিগত তিন বছরে যুদ্ধ ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মতো পরিস্থিতিও দৃঢ়ভাবে মোকাবিলা করেছেন দেশবাসী। ভারত বর্তমানে সমগ্র বিশ্বের কাছে এক দৃঢ় মানসিকতার দেশ হিসাবে পরিচিত। “১০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এক সঙ্কট যেভাবে ভারত মোকাবিলা করেছে, ১০০ বছর পর তা অধ্যয়ন করে সমগ্র মানবজাতি গর্ববোধ করবেন” বলে উল্লেখ করেন শ্রী মোদী। 

এবারের সম্মেলনের মূল ভাবনা বাণিজ্য নিয়ে পুনরায় চিন্তাভাবনা এবং বিশ্ব পরিস্থিতির পুনর্বিবেচনা – প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার ২০১৪ সালে যখন ক্ষমতায় আসে তখন শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন নিয়ে চিন্তাভাবনা করেছিল। সেই সময় দেশ বিভিন্ন আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জর্জরিত ছিল। দুর্নীতির জন্য প্রাপ্ত অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন দরিদ্র শ্রেণীর মানুষ। এমনকি, দেশের যুবকদের স্বার্থও যথাযথভাবে বিবেচনা করা হয়নি। “এই পরিস্থিতিতে আমরা সমগ্র শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তনের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করি। সরকার কিভাবে দরদ্রদের ক্ষমতায়ন করতে পারে, সে নিয়ে কাজ শুরু হয়। আমরা ভাবনাচিন্তা করে দেখি, সরকার আরও কার্যকরভাবে পরিকাঠামো নির্মাণ করতে পারে। এতে জনগণের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক কি হবে, সে নিয়েও আমরা পুনরায় ভাবনাচিন্তা করি” – বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। 

শ্রী মোদী সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে বলেন, ঋণ, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, সম্পত্তির অধিকার, বাড়ি, শৌচাগার, বিদ্যুৎ ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানীর মতো সুবিধাগুলি দরিদ্রদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে সরকার তাঁদের সশক্তিকরণের লক্ষ্যে কাজ শুরু করে। সরকার মূল লক্ষ্য ছিল – দরিদ্রদের দ্রত সশক্তিকরণ, যাতে করে তাঁরা দেশের উন্নয়নের কাজে পূর্ণ ক্ষমতার সঙ্গে সামিল হতে পারে। সরকার বর্তমানে বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় সরাসরি ভর্তুকি বাবদ ২৮ লক্ষ কোটি টাকা প্রদান করেছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নেহরুজীও জানতেন যে, দেশে শৌচাগারের প্রয়োজনীয়তার কথা। কিন্তু, যথাযথ শৌচাগারের ব্যবস্থা ভারতে ছিল না। ২০১৪ সালের পর থেকে দেশে ১০ কোটিরও বেশি শৌচাগার নির্মান করা হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী উচ্চাকাঙ্খী জেলাগুলির কথা উল্লেখ করে বলেন, ২০১৪ সালে দেশে ১০০টিরও বেশি জেলা অত্যন্ত পিছিয়ে পড়া অবস্থায় ছিল। আমরা বর্তমানে সেগুলির উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে চলেছি। উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকে এই ধরনের জেলাগুলির উন্নয়নে কাজ চলছে। গত সাড়ে তিন বছরে দেশে ৮ কোটিরও বেশি নলবাহিত জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। 

পরিকাঠামো ক্ষেত্রেও একইভাবে উন্নয়ন চলছে। দেশে বর্তমানে প্রতিদিন ৩৮ কিলোমিটার করে সড়ক  নির্মিত হচ্ছে। দৈনিক প্রায় ৫ কিলোমিটার করে রেললাইন পাতা হচ্ছে। আমাদের বন্দরগুলির ক্ষমতা আগামী দু’বছরে বেড়ে ৩ হাজার এমটিপিএ-তে পৌঁছবে। ২০১৪৫ সালের তুলনায় বর্তমানে দেশে কার্যকর বিমানবন্দরের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে ১৪৭ – এ পৌঁছেছে। গত ৯ বছরে সাড়ে তিন লক্ষ কিলোমিটারেরও বেশি গ্রামীণ সড়ক এবং ৮০ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি জাতীয় সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। ৩ কোটি দরিদ্র মানুষকে বাড়ি প্রদান করা হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৮৪ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ভারতে প্রতি মাসে মাত্র আর্ধেক কিলোমিটার মেট্রো লাইন পাতা হ’ত। বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে প্রতি মাসে ৬ কিলোমিটার। মেট্রো পথে দৈর্ঘ্যের নিরিখে বিশ্বে ভারতের স্থান পঞ্চম। শীঘ্রই তা তৃতীয় স্থানে উঠে আসবে। 

“পিএম গতিশক্তি ন্যাশনাল মাস্টার প্ল্যান কেবলমাত্র পরিকাঠামো নির্মাণে গতি সঞ্চার করছে, তা নয় – এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি, দরিদ্রদের উন্নয়নেও সহায়ক হচ্ছে”, বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় প্রয়োজনের নিরিখে বিদ্যালয় নির্মাণে জোর দেওয়া হচ্ছে। 

ভারতের অসামরিক বিমান চলাচল ক্ষেত্রের উন্নয়নশীল পরিকাঠামোর উপর আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অতীতে এয়ার স্পেসের একটি বড় জায়গা প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের জন্য সীমাবদ্ধ থাকায় বিমানগুলির গন্তব্যে পৌঁছতে অনেক সময় লাগতো। এই সমস্যার সমাধানে সরকার বর্তমানে নাগরিকদের বিমান চলাচলের জন্য ১২৮টি আকাশ পথের ব্যবস্থা করেছে। এর ফলে, সময় ও জ্বালানী সাশ্রয়ের পাশাপাশি, ১ লক্ষ টন কার্বনডাই অক্সাইড নির্গমন কমানো সমভাব হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, ভারত সমগ্র বিশ্বের কাছে উন্নয়নের এক নতুন দিক তুলে ধরেছে। ভারতের ডিজিটাল পরিকাঠামো ক্ষেত্রে উন্নয়ন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। গত ৯ বছরে ৬ লক্ষ কিলোমিটারেরও বেশি অপ্টিক্যাল ফাইবার লাইন পাতা হয়েছে। মোবাইল প্রস্তুতকারী সংস্থার সংখ্যা বেড়েছে। ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ প্রায় ২৫ গুণ কমেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর আগে পরিবারতন্ত্র নিয়ে দেশের মানুষ সর্বদাই সংশয়ে ভুগতেন। কোনও কাজ করার আগে তাঁদের সরকারের অনুমতি নিতে হ’ত। কিন্তু বর্তমানে এই পরিস্থিতি বদলেছে। সরকার ও দেশের জনগণের মধ্যে এক বিশ্বাসের পরিবেশ গড়ে উঠেছে। বর্তমান সরকারের প্রধান লক্ষ্য হ’ল – জনগণই প্রথম। এই নীতিতেই সরকার বিভিন্ন পরিবর্তন এনে চলেছে। জনগণকে বিশ্বাস করাই সরকারের মূলমন্ত্র বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। কর সংগ্রহের বিস্তারুত উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০১৩-১৪ সালে দেশে সামগ্রিকভাবে কর আদায়ের পরিমাণ ছিল ১১ লক্ষ কোটি টাকা। কিন্তু, ২০২৩-২৪ সালে তা ৩৩ লক্ষ কোটি টাকা হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। গত ৯ বছরে কর সংগ্রহের পরিমাণ প্রায় ৩ গুণ বেড়েছে। করদাতারা বর্তমানে বিশ্বাস করেন যে, তাঁদের প্রদেয় কর যথাযথভাবে ব্যবহৃত হবে। তাই তাঁদের মধ্যে কর প্রদানে উৎসাহ বেড়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের নিরিখে দেশের উন্নয়নের গতিতে আলোকপাত করে বলেন, ভারতের উন্নয়ন হলেই বিশ্বের উন্নয়ন সম্ভব। ‘এক বিশ্ব, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ’ – এই ভাবনা জি-২০’র জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। কারণ, বিশ্বের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা একযোগে করতে হবে। এই দশক এবং আগামী ২৫ বছর ভারতের জন্য বিশেষ আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলবে। পরিশেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবকা প্রয়াস’ বা সকলের চেষ্টার মাধ্যমেই ভারতের উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা দ্রুত অর্জন করা সম্ভব। দেশের এই উন্নয়ন যাত্রায় সম্ভাব্য সবরকমভাবে প্রত্যেক নাগরিককে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান তিনি। শ্রী মোদী বলেন, “আপনি যখন ভারতের উন্নয়ন যাত্রায় সামিল হবেন, তখন ভারতও আপনার উন্নয়ন সুনিশ্চিত করে”। 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

সম্পূর্ণ ভাষণ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Explore More
শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের ধ্বজারোহণ উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বাংলা অনুবাদ

জনপ্রিয় ভাষণ

শ্রী রাম জন্মভূমি মন্দিরের ধ্বজারোহণ উৎসবে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বাংলা অনুবাদ
The Bill to replace MGNREGS simultaneously furthers the cause of asset creation and providing a strong safety net

Media Coverage

The Bill to replace MGNREGS simultaneously furthers the cause of asset creation and providing a strong safety net
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
সোশ্যাল মিডিয়া কর্নার 22 ডিসেম্বর 2025
December 22, 2025

Aatmanirbhar Triumphs: PM Modi's Initiatives Driving India's Global Ascent