রবীন্দ্রনাথ বাংলাকে নিয়ে যতটা গর্বিত ছিলেন, ভারতের বৈচিত্র্য নিয়েও ছিল তাঁর সমান গর্ব : প্রধানমন্ত্রী
দেশই সর্বাগ্রে – এই মানসিকতা সমাধানের দিশা দেখাতে পারে : প্রধানমন্ত্রী
বাংলা এক ভারত – শ্রেষ্ঠ ভারতের প্রেরণা : প্রধানমন্ত্রী
আত্মনির্ভর ভারত গঠনে জাতীয় শিক্ষা নীতি এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন। এই উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল ও বিশ্বভারতীর অধ্যক্ষ শ্রী জগদীপ ধনকর, কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রী শ্রী রমেশ পোখরিয়াল ‘নিশাঙ্ক’ এবং বিভাগীয় প্রতিমন্ত্রী শ্রী সঞ্জয় ধোত্রে উপস্থিত ছিলেন।


সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বীর শিবাজীকে নিয়ে গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার উল্লেখ করেন যেটি অখন্ড ভারতের ব্যাপারে গুরুদেবকে অনুপ্রাণিত করেছিল। প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিন্ন অংশই নয়, বরং তাঁরা সকলেই এক প্রাণবন্ত ঐতিহ্যের বাহক। তিনি বলেন, গুরুদেব এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ করেছিলেন বিশ্বভারতী। আসলে তিনি চেয়েছিলেন, এই প্রতিষ্ঠানে যাঁরা অধ্যায়নের জন্য আসবেন, তাঁরা সকলেই যেন ভারত ও ভারতীয়ত্বের দৃষ্টিভঙ্গী থেকে সমগ্র বিশ্বকে দেখেন। তাই তিনি বিশ্বভারতীকে শিক্ষার এমন এক জায়গা করে তুলেছিলেন, যা ভারতের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যে দেখা যায়। গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ভারতীয় ঐতিহ্যকে নিয়ে আরও বেশি অন্বেষণের আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং দরিদ্র থেকে দরিদ্রতম মানুষের সমস্যা সমাধানে নিজেকে ব্রতী করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, গুরুদেবের কাছে ...বিশ্বভারতী কেবল জ্ঞান বিতরণের প্রতিষ্ঠানই ছিল না, বরং তিনি চেয়েছিলেন, এই প্রতিষ্ঠান ভারতীয় সংস্কৃতির শীর্ষে পৌঁছে যাক ।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভিন্ন ভিন্ন মতবাদ ও আদর্শ থেকে নিজের স্বতন্ত্রতাকে খুঁজে বের করায় গুরুদেব বিশ্বাসী ছিলেন । বাংলার জন্য গুরুদেব গর্ববোধ করতেন। একই সঙ্গে, ভারতের বৈচিত্র্যের জন্যও তাঁর ছিল সমান গর্ববোধ। আর এই কারণেই শান্তিনিকেতনে খোলা আকাশের নীচে মানবতাবাদের প্রসার ঘটানো ছিল গুরুদেবের উদ্দেশ্য । প্রধানমন্ত্রী বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশংসা করে বলেন, এই প্রতিষ্ঠান জ্ঞানের এক অসীম সাগর এবং অভিজ্ঞতা-ভিত্তিক অধ্যয়নের কেন্দ্র হিসাবে প্রতিষ্ঠানটিকে গড়ে তোলা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সৃজনশীলতা ও জ্ঞানের কোনও সীমা নেই। এই ভাবনার উপর ভিত্তি করেই গুরুদেব এই অসামান্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী ছাত্রছাত্রীদের বলেছেন, জ্ঞান, চিন্তাভাবনা ও দক্ষতা অর্জন কোন স্থির প্রক্রিয়া নয়, বরং একটি ধারাবাহিক পদ্ধতি। শ্রী মোদী বলেন, জ্ঞান ও ক্ষমতার মাধ্যমেই দায়িত্ববোধের বিকাশ ঘটে। তাই, ক্ষমতায় থাকার সময় একজনকে যেমন অন্যদের প্রতি সংবেদনশীল হতে হবে, তেমনই প্রত্যেক বিদ্বান ব্যক্তিকেও অন্যকে জ্ঞানের আলোকে আলোকিত করতে প্রয়াসী হতে হবে।

ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁদের অর্জিত জ্ঞান কেবল নিজেদের জন্যই নয়, বরং সেটি সমাজের এবং এটিই দেশের পরম্পরা। আপনাদের অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতা দেশকে গর্বিত করতে পারে, আবার তা সমাজকে অন্ধকারের গ্লানিতে নিমজ্জিত এবং ধ্বংস করতে পারে। শ্রী মোদী বলেন, বিশ্বে যাঁরা সন্ত্রাস ও হিংসার পরিবেশ সৃষ্টি করছে তাদের অনেকেই সুশিক্ষিত এবং সুদক্ষ। অন্যদিকে, এমন অনেক মানুষও রয়েছেন, যাঁরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাসপাতালে বা গবেষণাগারে কোভিডের মতো মহামারী থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন রক্ষায় ব্রতী হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এটা কেবল আদর্শ নয়, বরং মানসিকতা তা সে ইতিবাচক হোক বা নেতিবাচক। এই সমাজে ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় মনোভাবাপন্ন মানুষের নিজ নিজ উদ্দেশ্য রয়েছে এবং তাঁদের জন্য পথও খোলা রয়েছে। এই প্রেক্ষিতে তিনি ছাত্রছাত্রীদের বলেন, তাঁদেরই সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তাঁরা সমস্যার কারণ হয়ে উঠবেন না সমস্যার সমাধানের পথ দেখাবেন। শ্রী মোদী আরও বলেন, যদি এই ছাত্রছাত্রীরা দেশকে অগ্রাধিকার দেন , তা হলে তাঁদের প্রতিটি সিদ্ধান্তই কোনও না কোনও সমাধানসূত্র খুঁজে বের করবে। ছাত্রছাত্রীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে দ্বিধাগ্রস্ত না হওয়ার তিনি পরামর্শ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যতদিন পর্যন্ত দেশের যুবসম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্ভাবনের আকাঙ্ক্ষা থাকবে, ঝুঁকি নেওয়ার মানসিকতা থাকবে এবং এগিয়ে চলার প্রেরণা থাকবে- ততদিন দেশের ভবিষ্যতকে নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই। যুবসম্প্রদায়ের এই ধরণের প্রয়াসে তিনি সবরকম সরকারি সাহায্যের আশ্বাস দেন।


চিরায়ত ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষমতার কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রী গান্ধীবাদী শ্রী ধরমপাল রচিত ‘দ্য বিউটিফুল ট্রি – ইন্ডিজেনাস ইন্ডিয়ান এডুকেশন ইন দ্য এইটটিন্থ সেঞ্চুরি’ বইটির প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন, ১৮২০’র সমীক্ষায় প্রতিটি গ্রামে এক বা একাধিক গুরুকূলের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। এই গুরুকুল বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে স্থানীয় মন্দিরের যোগসূত্র ছিল। এমনকি, স্বাক্ষরতার হারও ছিল অনেক বেশি। ব্রিটিশ পন্ডিতরাও এই গুরুকুলগুলিকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। শ্রী মোদী আরও বলেন, গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ বিশ্বভারতীতে এমন এক শিক্ষা ব্যবস্থার প্রণয়ন করেছিলেন, যা ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিক করে তুলবে এবং দাসত্বের যাতাকল থেকে সকলকে মুক্ত করতে পারবে।

নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতিতেও একইভাবে, বিভিন্ন পুরনো বাধা-বিপত্তি দূর করা হয়েছে, যাতে ছাত্রছাত্রীরা তাঁদের পূর্ণ সম্ভাবনার বিকাশ ঘটাতে পারে। এই শিক্ষা নীতিতে পড়াশুনোর বিষয় এবং শিক্ষাদানের পন্থাপদ্ধতি সরল করা হয়েছে। এমনকি, নতুন এই শিক্ষা নীতিতে শিল্পোদ্যোগ ও স্বনির্ভর হবার পাশাপাশি, গবেষণা ও উদ্ভাবনেও অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই শিক্ষা নীতি এক আত্মনির্ভর ভারত গঠনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। সরকার সম্প্রতি লক্ষ লক্ষ পত্রপত্রিকা যাতে বিদ্বান ব্যক্তিরা পেতে পারেন, সরকার সম্প্রতি সেই উদ্যোগ নিয়েছে। এবারের বাজেটে ন্যাশনাল রিসার্চ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ৫ বছরে ৫০ হাজার কোটি টাকা খরচের সংস্থান রাখা হয়েছে । নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতিতে লিঙ্গ-ভিত্তিক সমানুপাতিক হারে তহবিল সংস্থানের সুবিধা রয়েছে। এর ফলে, মেয়েরা পড়াশুনায় আরও বেশি আগ্রহী হবে। মেয়েদের অধিক সংখ্যায় স্কুল ছুটের হার সম্পর্কে সমীক্ষা চালানো হয়েছে এবং জাতীয় শিক্ষা নীতিতে যে কোন সময় শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হওয়া বা এই ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে যাবার ব্যবস্থা ছাড়াও স্নাতক স্তরে বার্ষিক ক্রেডিডের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।


বাংলাকে এক ভারত – শ্রেষ্ঠ ভারতের প্রেরণা হিসাবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একবিংশ শতাব্দীর জ্ঞান-ভিত্তিক অর্থনীতিতে বিশ্বভারতী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। এমনকি, বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে ভারতীয় জ্ঞান ও পরিচিতিকে নিয়ে যেতে পারে। প্রধানমন্ত্রী মর্যাদাপূর্ণ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের ২০৭৪ সালের কথা বিবেচনা করে আগামী ২৫ বছরে ২৫টি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য অর্জনের জন্য ভবিষ্যৎ রুপরেখা তৈরির পরামর্শ দেন। তিনি ছাত্রছাত্রীদের ভারত সম্পর্কে সচেতনতা আরও ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলেন। ভারতের চিরন্তন মূল্যবোধ এবং বিশ্বে ভারতের ভাবমূর্তির আরও প্রসারে বিশ্বভারতী অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে নেতৃত্ব দিতে পারে । শ্রী মোদী প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীকে তাঁদের নিকটবর্তী গ্রামগুলি বেছে নিয়ে সেগুলিকে আত্মনির্ভর করে তুলে সেখানকার উৎপাদিত পণ্য সারা বিশ্বে বিপণনের পন্থা খুঁজে বের করার পরামর্শ দেন।

সম্পূর্ণ ভাষণ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
Cabinet extends One-Time Special Package for DAP fertilisers to farmers

Media Coverage

Cabinet extends One-Time Special Package for DAP fertilisers to farmers
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Prime Minister greets on the occasion of Urs of Khwaja Moinuddin Chishti
January 02, 2025

The Prime Minister, Shri Narendra Modi today greeted on the occasion of Urs of Khwaja Moinuddin Chishti.

Responding to a post by Shri Kiren Rijiju on X, Shri Modi wrote:

“Greetings on the Urs of Khwaja Moinuddin Chishti. May this occasion bring happiness and peace into everyone’s lives.