সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের অভিষেক দিবস ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’-এ এক নতুন সচেতনতা ও প্রত্যেকের মধ্যে নতুন শক্তির সঞ্চার করেছে। ৩৫০ বছর আগে ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের অভিষেক ভারতের ইতিহাসে এক বিশেষ অধ্যায় হয়ে রয়েছে। এমনকি আজও তাঁর সুশাসন ও সমৃদ্ধির কাহিনী প্রত্যেককে অনুপ্রাণিত করে চলেছে। তাঁর শাসনের মূল ভিত্তি ছিল ‘জাতীয় কল্যাণ এবং সাধারণ মানুষের কল্যাণ।’ তিনি বলেন, স্বরাজ্যর প্রথম রাজধানী রায়গড় দুর্গে বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে এবং গোটা মহারাষ্ট্রে দিনটি উদযাপিত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ ৩৫০ বছর আগেও স্বরাজ্য এবং জাতীয়তাবাদের চেতনাকে আত্মস্থ করেছিলেন। ভারতের ঐক্য এবং সংহতিকে তিনি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন। শ্রী মোদী বলেন, আজ ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর যে দর্শন গ্রহণ করা হয়েছে, তার মধ্যে শিবাজির চিন্তাভাবনার প্রতিফলন ঘটেছে। তিনি বলেন, “শত শত বছরে দাসত্বের কারণে দেশবাসীর বিশ্বাস তলানিতে ঠেকেছিল। আমাদের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলির ওপর আক্রমণ চালিয়ে মানুষের মনোবল ভাঙার চেষ্টা করা হয়েছিল।” তাঁর কথায়, “শিবাজি মহারাজ দাসত্বের মানসিকতার অবসান ঘটিয়ে দেশ গড়ার কাজে মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন।”
শ্রী মোদী বলেন, ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ ছিলেন এক অনন্য ব্যক্তিত্ব যিনি ‘স্বরাজ’-এর সঙ্গে ‘সুরাজ’-এর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শিবাজি মহারাজের সামরিক নেতৃত্বের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাজা হিসেবেও প্রশাসনিক কাজে সংস্কার ঘটিয়ে তিনি সুশাসনের পথ দেখিয়েছিলেন। ইতিহাসের অন্যান্য বীরদের তুলনায় ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ একেবারে আলাদা ছিলেন বলে মন্তব্য করেন শ্রী মোদী। প্রশাসনিক কাজে ছত্রপতি শিবাজির জনকল্যাণমূলক নীতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা স্বরাজ, ধর্ম, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে আঘাত করার চেষ্টা করেছিল, তাদের প্রতিও কঠোর বার্তা পাঠিয়েছিলেন তিনি। শ্রী মোদী বলেন, কৃষককল্যাণ, মহিলাদের ক্ষমতায়ন কিংবা সাধারণ মানুষের জন্য প্রশাসনিক সুযোগ-সুবিধা, সবক্ষেত্রে ছত্রপতি শিবাজি যে নীতি নিয়েছিলেন, তা আজও প্রাসঙ্গিক।
নৌ-ক্ষেত্রের সম্প্রসারণ এবং তার পরিচালন দক্ষতার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেসব দুর্গ ছত্রপতি শিবাজি তৈরি করেছিলেন, সেগুলি আজও সাগরের মাঝখানে মাথা উঁচু করে গর্বিতভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ছত্রপতির অনুপ্রেরণায় দাসত্বের চিহ্ন হিসেবে থেকে যাওয়া নৌ-বাহিনীর পতাকায় ইংরেজদের প্রতীককে সরিয়ে সেখানে শিবাজি মহারাজের প্রতীক বসানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ছত্রপতি শিবাজির সাহস, আদর্শ এবং ন্যায়পরায়ণতা বহু প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করেছে। তাঁর নির্ভীক কর্মপদ্ধতি, কৌশলগত দক্ষতা এবং শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যবস্থা আজও আমাদের কাছে অনুপ্রেরণা।” বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিবাজি মহারাজকে নিয়ে গবেষণা এবং মরিশাসে একমাস আগে তাঁর মূর্তি বসানোর কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, ছত্রপতি শিবাজির অভিষেকের ৩৫০ বর্ষ পূর্তি ‘আজাদি কা অমৃতকাল’-এ অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের স্বপ্নের ভারত গড়ার এই যাত্রার মূলমন্ত্র হল স্বরাজ, সুশাসন এবং আত্মনির্ভরতা। এই যাত্রা হবে উন্নত ভারতের যাত্রা।”