প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ রাষ্ট্রপতি ভবনে জাতীয় কমিটির দ্বিতীয় কমিটির বৈঠকে ভাষণ দেন।
রাষ্ট্রপতি এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। উপ-রাষ্ট্রপতি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য, বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, বিশিষ্ট গান্ধীবাদীরা সহ কমিটির অন্যান্য সদস্যরা এই বৈঠকে যোগ দেন। কমিটির অন্যতম সদস্য তথা একমাত্র বিদেশি প্রধানমন্ত্রী পর্তুগালের মিঃ আন্তোনিয় কোস্তা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপতি তাঁর ভাষণে আয়োজক কমিটির প্রশংসা করেন। জাতির জনকের ১৫০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনকে একটি ‘জনআন্দোলন’ – এর রূপ দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ নজরদারিতে কমিটি কাজ করছে। স্বচ্ছ ভারত উদ্যোগের মতো এখানেও প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করছেন এবং একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক নিষিদ্ধকরণের উদ্যোগ সহ পরিবেশ রক্ষার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে মহাত্মা গান্ধীর শিক্ষার বার্তা জনমানসে ছড়িয়ে দিচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রী সংস্কৃতি মন্ত্রকের প্রকাশিত একটি বই রাষ্ট্রপতিকে উপহার দেন। বিদেশ দপ্তর সঙ্কলিত এই বইটিতে বিশ্বের ১২৬ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি গান্ধীজীর শিক্ষা সম্পর্কে তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন। বৈঠক চলাকালীন ‘গান্ধী@১৫০’ বিশ্ব জুড়ে উদযাপন উপলক্ষে একটি স্বল্প দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী অনুষ্ঠানে প্রথম বৈঠকে সদস্যদের বিভিন্ন পরামর্শের উল্লেখ করেন, যা মহাত্মা গান্ধীর ভাবনার ওপর ভিত্তি করে জনসাধারণের অংশগ্রহ্ণের মাধ্যমে, এই গান্ধী জয়ন্তী উদযাপনে সহায়ক হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্ব আজ গান্ধীজীকে জানতে চায় এবং তাঁকে গ্রহণ করতে চায়। সেই কারণে মহাত্মা গান্ধীর প্রাসঙ্গিকতা ও দর্শন সারা পৃথিবীকে জানাতে ভারত দায়বদ্ধ।
পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী ভারত ও পর্তুগালে সারা বছর ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই উদযাপনে অংশ নেওয়ার জন্য শ্রী মোদী তাঁকে ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, ‘গান্ধী@১৫০’ শুধু একটি বছরের আয়োজন নয়, প্রতিটি নাগরিকের গান্ধী দর্শনের বিষয়ে জানা প্রয়োজন এবং আগামীতে তাঁদের জীবনে সেই দর্শনকে প্রয়োগ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, সরকারি উদ্যোগে এই উদযাপন বিভিন্ন সময়ে আয়োজন করা হচ্ছে। এর ফলে, এই অনুষ্ঠানে জনগণের অংশগ্রহণ আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা প্রতিটি ভারতবাসীর কাছে গর্বের বিষয়।
প্রধানমন্ত্রী লালকেল্লা থেকে তাঁর পূর্ব ভাষণের কথা স্মরণ করেন, যেখানে তিনি প্রতিটি দেশবাসীকে স্থানীয় জিনিস কেনার আহ্বান জানিয়েছিলেন। গান্ধী দর্শনের মূল ভাবনাই হ’ল – দেশ গঠন ও দেশের সমৃদ্ধির জন্য সাহায্য করা। তিনি ২০২২ সাল, যখন দেশ স্বাধীনতার ৭৫ বছর উদযাপন করবে, সেই সময় পর্যন্ত সকল নাগরিককে তাঁদের জীবনে এই ভাবনায় প্রভাবিত হওয়ার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজ্যসভার সদ্যসমাপ্ত অধিবেশন, যা ছিল ২৫০তম অধিবেশন, সেখানে সদস্যরা তাঁদের স্থানীয় ভাষায় বক্তব্য রাখার সিদ্ধান্ত নেন, যা দেশের কাছে অত্যন্ত গর্বের। তিনি বলেন, আমরা যখন গান্ধীজীর বার্তাকে আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়ে যাচ্ছি, তখন সারা দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে সেই বার্তার প্রাসঙ্গিকতা উপলব্ধী করাতে একযোগে কাজ করতে হবে।
মহাত্মা গান্ধী বিশ্বাস করতেন, প্রত্যেক মানুষেরই দেশের প্রতি দায়িত্ব রয়েছে। একে অন্যের প্রতি বিশ্বাসযোগ্য হলে মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হবে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। ভাষণের শেষে শ্রী মোদী বলেন, দেশের স্বপ্ন পূরণে প্রত্যেকের নিজস্ব কর্তব্য নিজের পন্থায় পালন করা উচিৎ।