আজ নতুনদিল্লীতে রাষ্ট্রপতি ভবনে রাজ্যপালদের ৫০তম সম্মেলন শুরু হল। নবগঠিত জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখের উপরাজ্যপাল সহ ১৭ জন প্রথম বারের রাজ্যপাল ও উপরাজ্যপাল এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছেন। উদ্বোধনী অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি , উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, জলশক্তিমন্ত্রী সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবরগ এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৪৯ সালে প্রথম সম্মেলনটি হয়েছিল। সেই আবহে এবারের ৫০তম সম্মেলন অনন্য। এই সম্মেলনে বিগত সম্মেলনগুলির সাফল্য ও আলোচনার পুণর্মুল্যায়ন করে আগামী দিনের পরিকল্পনা রচনা করতে হবে। তিনি বলেন, সহযোগিতাপূর্ণ ও প্রতিযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় রাজ্যপালের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। এই সম্মেলনে রাজ্যপাল ও উপরাজ্যপালরা মতবিনিময়ের সুযোগ পেয়ে থাকেন।
এখানে সবাই নিজ নিজ অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে পারেন। যার মধ্য দিয়ে প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বৈশিষ্ট ও বিবিধতা অনুযায়ী চাহিদার কথা বিবেচনা করে আন্তর্জাতিক স্তরের স্বীকৃত শ্রেষ্ঠ পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, উন্নয়নের বিষয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি তাদের প্রশাসনিক কাঠামোর কারণে আদর্শ হয়ে উঠতে পারে।
২০২২ সালে স্বাধীনতার ৭৫ তম ও ২০৪৭ সালে শতবর্ষপূর্তির বিষয় প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করে বলেন, দেশের জনগণের কাছে প্রশাসনকে নিয়ে আসার কাজটি রাজ্যপালদের করতে হবে। এই লক্ষ্যে তাঁদের সঠিক দিশা দেখানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংবিধান প্রণয়নের ৭০ বছর পূর্তিতে, নাগরিকদের দায়িত্ব ও কর্তব্য ছাড়াও বিভিন্ন দিক রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারগুলিকে তুলে ধরতে হবে। এর ফলে, প্রকৃত অর্থে সকলের অংশগ্রহণে প্রশাসন চালানো সম্ভব হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহাত্মা গান্ধীর জন্মের সার্ধ শতবর্ষ উপলক্ষ্যে রাজ্যপাল ও উপরাজ্যপালদের গান্ধীবাদের চিন্তাধারা ও মূল্যবোধের প্রাসঙ্গিকতা মেনে চলার উপর গুরুত্ব দিতে হবে, যা আমাদের সংবিধানের গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসেবে দেশ গড়া ও সাফল্যর লক্ষ্যে রাজ্যপালদের তরুণদের মধ্যে মূল্যবোধ প্রথিত করতে হবে।
ভাষণের শেষে, প্রধানমন্ত্রী রাজ্যপাল ও উপরাজ্যপালদের অনুরোধ করেন, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা মেনে তাঁরা যেন সাধারণ মানুষের চাহিদার কথা শোনেন। তপশিলি উপজাতি, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, মহিলা ও যুব সম্প্রদায় সহ সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর মানুষদের উন্নতিকল্পে রাজ্যপালদের, রাজ্যসরকারগুলির সঙ্গে একযোগে কাজ করতে হবে। বর্তমানের নানান প্রকল্প ও উদ্যোগের রূপায়ণের উপর গুরুত্ব দিতে হবে।
দরিদ্র ও পিছিয়েপড়া মানুষদের উন্নয়নের লক্ষ্যে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পর্যটনের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, কারণ এগুলি থেকে নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টি করে তা ব্যবহার করা যাবে। ২০২৫ সালের মধ্যে দেশ থেকে যক্ষা রোগ নির্মূল করার জন্য জনসচেতনতা গড়ে তুলতে রাজ্যপালের দপ্তর বিশেষ ভূমিকা নিতে পারে বলে-ও প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। এই সম্মেলনে জনজাতি, কৃষি সংস্কার, জল জীবন মিশন, নতুন শিক্ষা নীতি, সহজ জীবনযাত্রার জন্য প্রশাসনের মত বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করতে পাঁচটি আলাদা গোষ্ঠী গঠন করার বিষয়ে শ্রী মোদী সন্তোষ প্রকাশ করেন। এই গোষ্ঠীগুলি যে প্রতিবেদন তৈরি করবে , সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী রাজ্যপাল ও উপরাজ্যপালরা তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবেন।