প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গুজরাটের একাল বিদ্যালয় সংগঠনের অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন। প্রধানমন্ত্রী ‘একাল স্কুল অভিযান’-এর প্রসারে একাল বিদ্যালয় সংগঠনের উদ্যোগের প্রশংসা করেন। এর ফলে, গ্রামাঞ্চলে জনজাতি গোষ্ঠীভুক্ত শিশুদের মধ্যে শিক্ষার প্রসার ঘটছে। তিনি ভারত ও নেপালের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রামাঞ্চলে জনজাতিভুক্ত ২৮ লক্ষ শিশুর মধ্যে শিক্ষা ও সচেতনতা গড়ে তোলার কাজে সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকদের ভূমিকার প্রশংসা করেন।
ভারতে ১ লক্ষ স্কুল গড়ে তোলায় প্রধানমন্ত্রী সংগঠনকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, একনিষ্ঠভাবে দায়বদ্ধতার সঙ্গে কাজের ফলেই এই অসাধ্যসাধন হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, সামাজিক কর্তব্যে দায়বদ্ধতার স্বীকৃতিস্বরূপ সংগঠন গান্ধী শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে এবং সারা দেশের জন্য যা অনুপ্রেরণার উৎস।
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, দেশে শিক্ষা ও দক্ষতার উন্নয়নে কেন্দ্র কাজ করে চলেছে। তপশিলি উপজাতিভুক্ত শিশুদের জন্য বৃত্তি, একলব্য মডেল আবাসিক বিদ্যালয়, পোষণ অভিযান, মিশন ইন্দ্রধনুষের মতো প্রকল্প ও জনজাতিদের নানা উৎসব উপলক্ষে বিদ্যালয় ছুটি থাকার কারণে স্কুলছুটের হার নিয়ন্ত্রণে এসেছে। পাশাপাশি, শিশুদের সার্বিক বিকাশেও অগ্রগতি হয়েছে।
২০২২ সালে স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সংগঠনের অধীনস্থ বিদ্যালয়গুলিতে ছাত্রছাত্রীদের জন্য সঙ্গীত প্রতিযোগিতা, বিতর্ক, ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনে জনজাতির ভূমিকা নিয়ে আলোচনা সহ নানা উদ্যোগের পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। এই প্রতিযোগিতাগুলি এ বছর থেকে শুরু হতে পারে এবং ২০২২ সালের মধ্যে জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তা শেষ করা যেতে পারে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, প্রথাগত ভারতীয় খেলাধূলার জন্য একাল পরিবার একটি ‘খেল-মহাকুম্ভ’-এর আয়োজন করতে পারে।
‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর ধারণাকে উজ্জীবিত করতে গ্রামাঞ্চলের বেসরকারি এবং সরকারি বিদ্যালয়গুলির ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে শহরাঞ্চলের বেসরকারি এবং সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের জোটবদ্ধ করার প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী দেন। একাল সংগঠনের বৈদ্যুতিন পদ্ধতিতে শিক্ষাদান এবং ডিজিটাইজেশন প্রক্রিয়া ব্যবহারের তিনি প্রশংসা করেন। শ্রী মোদী বলেন, সব একাল বিদ্যালয়গুলির উন্নয়ন তদারকি করতে একটি রিয়েল টাইম ড্যাশবোর্ড ব্যবস্থা সংগঠন গড়ে তুলতে পারে।
আজকের দিনটি ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকরের ‘পূণ্য তিথি’ বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছেলে এবং মেয়েদের শিক্ষার সমান সুযোগ করে দেওয়ার লক্ষ্যে বাবাসাহেবের স্বপ্ন একাল সংগঠন সফলভাবে বাস্তবায়িত করছে। এই পরিবারের বিগত চার দশকের দীর্ঘ যাত্রাপথে সংগঠন ‘শিক্ষার পঞ্চতন্ত্র মডেল’-এর ধারণাটির সফল রূপদান করেছে যার ফলে, পোষণ বটিকার মাধ্যমে পুষ্টি, কৃষিক্ষেত্রে জৈব সার ব্যবহারের প্রশিক্ষণ, ঔষধি গাছের ব্যবহারের জন্য দক্ষতা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ এবং সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে। একাল বিদ্যালয় থেকে উত্তীর্ণরা দেশের শিক্ষা, পুলিশ প্রশাসন, শিল্প এবং সেনাবাহিনীর মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল পদচারণায় তিনি সন্তোষ ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিতে একাল সংগঠনের সাফল্যে গান্ধীজির গ্রাম স্বরাজের স্বপ্ন, বাবাসাহেবের সামাজিক ন্যায়, দীনদয়াল উপাধ্যায়ের অন্ত্যোদয় এবং স্বামী বিবেকানন্দের গর্বের ভারতের স্বপ্ন পূরণে সহায়তা করবে।
একাল একলব্য সম্পর্কে
ভারত ও নেপালে গ্রামাঞ্চলে জনজাতির সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে একাল বিদ্যালয় কাজ করে। ভারতের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে প্রতিটি শিশুকে শিক্ষাদানের উদ্দেশে একজন শিক্ষক সম্বলিত বিদ্যালয় (যা একাল বিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত) পরিচালনা করাই এর মূল কাজ।