মাননীয়প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টোনিও কোস্টা,
বিশিষ্ট প্রতিনিধিবৃন্দ এবং সংবাদমাধ্যমের সদস্যগণ,
গত সপ্তাহেপর্তুগালের বিধ্বংসী দাবানলের যাঁরা শিকার হয়েছেন, প্রথমেই আমি তাঁদের জন্য গভীরশোক ও সমবেদনা প্রকাশ করছি। তাঁদের পরিবার-পরিজনদের মতোই আমরা সমান উদ্বিগ্ন এবংপ্রার্থনা জানাই তাঁদের সকলের সঙ্গেই।
বন্ধুগণ,
আমাদের এইদুটি দেশের মধ্যে রয়েছে এক গভীর ঐতিহাসিক যোগাযোগ, বলিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্ক তথাদু’দেশের জনসাধারণের মধ্যে এক নিবিড় মৈত্রী বন্ধন । এই কারণেআমি খুবই বিস্মিত বোধ করছি যে এর আগে আর কোন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীই পর্তুগাল সফরেআসেননি। তবে একটি বিষয়ে আমি সন্তোষ অনুভব করছি এই কারণে যে মাত্র ছ’মাসের ব্যবধানেএটি হল ভারত ও পর্তুগালের মধ্যে দ্বিতীয় শীর্ষ বৈঠক। মাত্র স্বল্পকালীনবিজ্ঞপ্তিতে প্রধানমন্ত্রী কোস্টা আমাকে যেভাবে সমাদর ও আন্তরিকতার সঙ্গে স্বাগতজানিয়েছেন, সেজন্য আমি কৃতজ্ঞ তাঁর কাছে। এবছর জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী কোস্টাকেভারতে স্বাগত জানাতে পেরে আমরা সম্মানিত বোধ করেছিলাম। তাঁর এই সফর ছিল শুধুমাত্রএক দ্বিপাক্ষিক উদ্দেশ্যেই নয়, সেইসঙ্গে প্রবাসী ভারতীয় দিবসে আমাদের এক সম্মানিত অতিথিহিসেবেও। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তেবসবাসকারী ভারতীয় বংশোদ্ভূতদেরএক শ্রেষ্ঠপ্রতিনিধি হলেন প্রধানমন্ত্রী কোস্টা।
বন্ধুগণ,
প্রধানমন্ত্রীকোস্টার সঙ্গে আজ আমার বহু বিষয়েই আলোচনা হয়েছে। তাঁর বিগত ঐতিহাসিক ভারত সফরেরসময় থেকে শুরু করে এযাবৎকালেরঅগ্রগতিরবিষয়গুলি সম্পর্কেও আমরা পর্যালোচনা করেছি।আমাদের এই অর্থনৈতিক সম্পর্ক উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে থাকবে। গত বছর দ্বিপাক্ষিকবাণিজ্যের হার বৃদ্ধি পেয়েছে ১৭ শতাংশ। ভারতে পর্তুগালের প্রত্যক্ষ বিদেশিবিনিয়োগের পরিমাণ অল্প হলেও ২০১৬-১৭ বছরে তা দ্বিগুণ হয়ে উঠেছে।তবে দু’দেশেরঅর্থনীতির মধ্যে পণ্য, পরিষেবা, মূলধন এবং মানবসম্পদের যোগান বৃদ্ধির লক্ষ্যেআমাদের এখনও এগিয়ে যেতে হবে আরও বহুদূর। এই বিশেষ ক্ষেত্রটিতে পর্তুগালেরঅর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন প্রচেষ্টা এবং ভারতের বলিষ্ঠ অগ্রগতি দুটি দেশকে একযোগেএগিয়ে যাওয়ার কাজে প্রচুর সুযোগ-সুবিধা এনে দেবে। বন্ধুগণ, শিল্পোদ্যোগ প্রচেষ্টারক্ষেত্রে ইউরোপের এক উজ্জ্বলতম পরিবেশ-বান্ধব রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেপর্তুগাল। অন্যদিকে, ভারতও বলিষ্ঠ এবং গতিশীল স্টার্ট আপ শিল্পের একটি পীঠস্থানহিসেবে নিজেকে মেলে ধরতে পেরেছে । স্টার্ট আপ ক্ষেত্রটি হল এমনই এক দারুণপরিবেশ ও পরিস্থিতি যেখানে মেলবন্ধন ঘটে যুবশক্তি, চিন্তাভাবনা, প্রযুক্তি,উদ্ভাবন এবং সৃজনশীলতার। সমাজের সার্বিক কল্যাণে যা মূল্য সংযোজনের পাশাপাশিসম্পদও সৃষ্ট করতে পারে। প্রধানমন্ত্রী কোস্টার ভারত সফরকালে আমি তাঁর সঙ্গেআলোচনা করেছিলাম ভারত-পর্তুগাল আন্তর্জাতিক স্টার্ট আপ কেন্দ্র গড়ে তোলা প্রসঙ্গে।আমি বিশেষভাবে আনন্দিত যে খুব অল্প সময়কালের মধ্যেই তা বাস্তবায়িত হতে চলেছে।প্রধানমন্ত্রী কোস্টার সঙ্গে একযোগে তা সূচনা করার জন্য আমি উন্মুখ হয়ে রয়েছি। করব্যবস্থা, প্রশাসনিক সংস্কার, মহাকাশ, বিজ্ঞান এবং ক্রীড়া ও যুব সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদেরনতুন নতুন চুক্তিগুলি অংশীদারিত্বের সুযোগ ও মাত্রাকে আরও বহুগুণে প্রসারিত করবে।অত্যাধুনিক প্রযুক্তিরপ্রসার ও উন্নয়নে আমাদের এই সহযোগিতার বাতাবরণকে আরও উন্নতকরে তুলতে ৪ মিলিয়ন ইউরোরও বেশি মূলধন নিয়ে যৌথ উদ্যোগে এক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতহবিল গড়ে তুলতে আমরা সহমত প্রকাশ করেছি। ন্যানো-প্রযুক্তি, নৌ-বিজ্ঞান, সমুদ্রবিদ্যাইত্যাদি ক্ষেত্রেও পর্তুগিজ বিশারদ ও বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাসংগ্রহের জন্য আমরা আগ্রহী। আমাদের দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে মহাকাশ হল একটিনতুন ক্ষেত্র। এবছরের সূচনায় প্রধানমন্ত্রী কোস্টার ভারত সফরকালে এই বিষয়টি নিয়েআমরা চিন্তাভাবনা করেছিলাম। মহাকাশ এবং সমুদ্র-বিজ্ঞান – উভয় ক্ষেত্রেই পর্তুগালেরসঙ্গে যৌথ প্রচেষ্টায় আটলান্টিক আন্তর্জাতিক গবেষণা কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য আমরাঅপেক্ষা করে রয়েছি।
বন্ধুগণ,
আমাদেরদু’দেশের জনসাধারণের মধ্যে রয়েছে এক বলিষ্ঠ মৈত্রী সম্পর্ক যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধিপেয়ে চলেছে। পর্তুগালে বসবাসকারী ভারতীয়রা আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে গভীরতরকরে তোলার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন । ফুটবলকেঘিরে পর্তুগালের নাগরিকদের রয়েছে এক বিশেষ উৎসাহ ও উন্মাদনা। এমনকি প্রধানমন্ত্রীকোস্টা নিজেও একজন বড় ফুটবলপ্রেমী। আমাদের দু’দেশের সমাজের মধ্যে যোগসূত্রকে আরওবাড়িয়ে তোলার কাজে এই বিষয়টিও অনুঘটকের কাজ করতে পারে। এছাড়াও, আমাদের সাংস্কৃতিকবন্ধন ক্রমশঃহয়ে উঠেছে নিবিড়তর। লিসবন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় বিষয় সম্পর্কেপঠনপাঠনের জন্য আমরা এক বিশেষ অধ্যাপকের পদও সৃষ্টি করেছি। বিভিন্ন ভারতীয়চলচ্চিত্রের সাব-টাইটেল অর্থাৎ, উপ-শিরোনাম তৈরি করা হচ্ছে পর্তুগিজ ভাষায়। আমাদেরপারস্পরিক কল্যাণে সংকলিত হচ্ছে হিন্দি-পর্তুগিজ অভিধান। সপ্তদশ শতকে গোয়া ওপর্তুগালের মধ্যে যে সমস্ত চিঠিপত্রের আদানপ্রদান ঘটেছিল, তারই ১২ হাজার নথিসম্বলিত একটি ডিজিটাল সংস্করণ আমাদের সঙ্গে বিনিময়ের জন্য আমি ধন্যবাদ জানাইপর্তুগালকে। কারণ, গুরুত্বপূর্ণ এই পুরাতাত্ত্বিক সংগ্রহ থেকে বিশেষভাবে উপকৃতহবেন আমাদের দু’দেশেরই গবেষকরা।
বন্ধুগণ,
আন্তর্জাতিকমঞ্চেও ভারত ও পর্তুগাল হল একে অপরের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তাপরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদ এবং বহুপাক্ষিক রপ্তানি নিয়ন্ত্রক সংস্থায় ভারতেরঅন্তর্ভুক্তিরবিষয় দুটিকে সমর্থন জানিয়ে যাওয়ার জন্যও আমরা কৃতজ্ঞ পর্তুগালেরকাছে। সন্ত্রাসবাদ এবং চরম উগ্রবাদের মোকাবিলায় আমাদের সহযোগিতাকে আরও গভীরে নিয়েযাওয়ার লক্ষ্যেও আমরা সঙ্কল্পবদ্ধ।
মাননীয়প্রধানমন্ত্রী, আপনার আন্তরিক অভ্যর্থনা এবং উদার আপ্যায়নের জন্য আমি আরও একবারধন্যবাদ জানাই আপনাকে। ধন্যবাদ জানাই, শত ব্যস্ততার মধ্যেও আপনার এই সাগ্রহউপস্থিতির জন্য।
মুইটোওব্রিগাডো।
আপনাদের সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
PM @antoniocostapm & I held wide ranging talks. We reviewed the progress since his visit to India. Our bilateral trade and FDI has grown: PM pic.twitter.com/iFrQkPG3b2
— PMO India (@PMOIndia) June 24, 2017
Start-up sphere is an interesting space for cooperation. It is a great means to generate value and wealth for society: PM @narendramodi pic.twitter.com/FqH6QhsFAt
— PMO India (@PMOIndia) June 24, 2017
New agreements in taxation, science, youth affairs and sports outline the expanding scope of our partnership: PM @narendramodi pic.twitter.com/nnYAZprtjV
— PMO India (@PMOIndia) June 24, 2017