Ayurveda isn’t just a medical practice. It has a wider scope and covers various aspects of public and environmental health too: PM
Government making efforts to integrate ayurveda, yoga and other traditional medical systems into Public Healthcare System: PM
Availability of affordable healthcare to the poor is a priority area for the Government: PM Modi
The simplest means to achieve Preventive Healthcare is Swachhata: PM Modi

আমারমন্ত্রীমণ্ডলের প্রিয় সাথী শ্রী শ্রীপাদ নায়ক মহোদয়, এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত যোগাচার্য, আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ, অধ্যাপক, ছাত্র এবংএখানে উপস্থিত অন্য মাননীয় অতিথিগণ। 
  

আপনাদেরসবাইকে ধন্বন্তরী জয়ন্তীএবং আয়ুর্বেদ দিবস উপলক্ষে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। দেশের প্রথমঅখিল ভারতীয় আয়ুর্বেদ সংস্থান-এরসকল আধিকারিক এবং কর্মীদেরও অনেক অনেক শুভেচ্ছা।  

এইধন্বন্তরী জয়ন্তীকে আয়ুর্বেদ দিবস রূপে পালন করার জন্য আর এই সংস্থানের স্থাপনেরজন্য আমি আয়ুষ মন্ত্রালয়কে সাধুবাদ জানাই।  

বন্ধুগণ,কেউ দেশের উন্নতির জন্য যতই চেষ্টা করুক, যতদিন নিজের ইতিহাস এবং ঐতিহ্যকে নিয়েগর্ব করতে পারবে না, ততদিন দেশ এগিয়ে যেতে পারবে না। নিজের ঐতিহ্যকে ছেড়ে যে দেশএগিয়ে যেতে চায়, একদিন তার পরিচয় হারিয়ে যায়।

বন্ধুগণ,আমাদের দেশের ইতিহাসের দিকে যদি তাকাই, তাহলে দেখবো, যতদিন জ্ঞান এবং বুদ্ধিমত্তায়ভারত সমৃদ্ধ ছিল, সারা পৃথিবী জ্ঞান লাভেরজন্য তার দিকে তাকিয়ে থাকত, ততদিনই আমাদের দেশ শক্তিশালী ছিল। সেজন্যে তারা বিকল্পপথ অবলম্বন করে। আমাদের যা কিছু শ্রেষ্ঠ, সেগুলিকে ধ্বংস করা তাদের কাছেঅপেক্ষাকৃত সহজ বলে মনে হয়।

পরাধীনতারকালখণ্ডে আমাদের ঋষি পরম্পরা, আমাদের আচার্য, বৈজ্ঞানিক জ্ঞান, যোগ, আয়ুর্বেদ,আমাদের কৃষি – এই সবকিছুকে নিয়ে তারা উপহাস করত, এগুলিকে দুর্বল করার চেষ্টা করত,এমনকি, আমাদের এই ঐতিহ্যগুলি সম্পর্কে আমাদের দেশের শিক্ষিত মানুষদের আস্থা হ্রাসকরার ক্ষেত্রেও তারা সফল হয়েছিল।

পরাধীনতারথেকে মুক্তির পর একটি নতুন আশা জাগে যে, যা কিছু এখনও নিঃশেষিত হয়নি, সেগুলিকেএবার সংরক্ষণ করা হবে এবং সময়ের নিরিখে অনুকূল পরিবর্তন করা হবে। কিন্তু,দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়নি। যা ছিল তাকে ভাগ্যের হাতেছেড়ে দেওয়া হল।

পরাধীনভারতে আমাদের শক্তি ও সামর্থ্যকে বিনষ্ট করার যে চেষ্টা হয়েছিল, দেশ স্বাধীন হওয়ারপরও দীর্ঘকাল সেই শক্তি ও ঐতিহ্যকে ভুলিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা জারি ছিল। একভাবে বলাযায় যে নিজের ঐতিহ্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। এসব কারণেই আমাদের যাবতীয়বিদ্যার পেটেন্ট অন্যান্য দেশের হাতে চলে গেছে। যেগুলি আমরা কখনও ঠাকুমা-দিদারটোটকা হিসেবে ঘরে ঘরে ব্যবহার করতাম।

 

আজ আমিঅত্যন্ত গর্বিত যে গত তিন বছরে এই পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে দেওয়া গেছে। আমাদেরঐতিহ্য, শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিষ্ঠা দেশের অসংখ্য মানুষের মনে আবার জায়গা করে নিয়েছে।  

আজ যখন আমরাসবাই আয়ুর্বেদ দিবস উপলক্ষে উপস্থিত হই, কিংবা যখন ১৯ জুন তারিখে সারা পৃথিবীরলক্ষ লক্ষ মানুষ এই আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালন করে, তখন আমার মন গর্বে ভরে ওঠে।বিশ্বের বিভিন্ন দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের ছবি ও ভিডিওচিত্র দেখে মনে হয় যে, হ্যাঁ, ভারত এঁদের সবাইকে যুক্ত করতে পেরেছে। ভাই ও বোনেরা,এই যোগ ভারতের ঐতিহ্য। এটি এখন বিস্তারিত হয়ে গোটা মানবজাতির ঐতিহ্যে পরিণত হতেচলেছে।    

এই পরিবর্তনকেবল তিন বছরের প্রচেষ্টার ফল। আর, নিশ্চিতভাবেই এক্ষেত্রে দেশে আয়ুষ মন্ত্রকেরগুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।   

বন্ধুগণ,আয়ুর্বেদ নিছকই একটি চিকিৎসাপদ্ধতি নয়। এর বৃত্তের মধ্যে রয়েছে সামাজিক স্বাস্থ্য,সার্বজনীন স্বাস্থ্য, পরিবেশের স্বাস্থ্যের মতো আরও অনেক বিষয়। এই প্রয়োজনীয়তাকেঅনুভব করে বর্তমান সরকার আয়ুর্বেদ, যোগ এবং অন্যান্য আয়ুষ পদ্ধতিগুলিকে পাবলিকহেল্‌থ কেয়ার সিস্টেম-এ সংহত করার দিকে জোর দিয়েছে। একটি স্বতন্ত্র মন্ত্রক গড়েতোলার পাশাপাশি আমরা জাতীয় স্বাস্থ্য নীতি গ্রহণ করে স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং আয়ুষব্যবস্থাকে সংহত করার জন্য ব্যাপক নিয়ম গড়ে তুলেছি এবং দিশা নির্দেশ করেছি।  

বন্ধুগণ, আমাদেরসরকার এটা মানে যে আয়ুষকে স্বাস্থ্য পরিষেবায় সংহত করার কাজটি আগেকার মতো শুধুইলাল ফিতের ফাঁসে আটকে থাকবে না, একে মাটি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া হবে। সেই লক্ষ্যেআয়ুষ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে অনেক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রীয় আয়ুষ মিশন শুরু করা,স্বাস্থ্যরক্ষণ কর্মসূচি চালু করা, মিশন মধুমেহ, আয়ুষ নামের পরিকল্পনা – এরকম অনেকবিষয় রয়েছে যেগুলি সম্পর্কে একটু আগেই এখানে শ্রী শ্রীপাদ নায়েক মহোদয় আলোচনাকরেছেন।


বন্ধুগণ,আয়ুর্বেদকে বিস্তারিতভাবে গ্রহণ করতে এটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় যে দেশের প্রতিটিজেলাকে এর সঙ্গে যুক্ত করা এবং সর্বত্র আয়ুষ চিকিৎসাযুক্ত হাসপাতালের পরিষেবানিশ্চিত করা। সেই লক্ষ্যে আয়ুষ মন্ত্রক দ্রুতগতিতে কাজ করছে এবং বিগত তিন বছরেরমধ্যেই ৬৫টিরও বেশি আয়ুষ হাসপাতাল স্থাপন করেছে।  

আজ দিল্লিরএইম্‌স-এর মতোই এখানে অখিল ভারতীয় আয়ুর্বেদ সংস্থান-এর উদ্বোধন করা হয়েছে। এখনগোড়ার দিকে এখানে রোজ ৭৫০-এরও বেশি রোগী আসছে। আগামীদিনে এই রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণহবে বলে আমাদের অনুমান। এই সংস্থানকে আধুনিক পরিকাঠামো সমৃদ্ধ করে গড়ে তোলা হয়েছে।এগুলির সাহায্যে বেশ কিছুজটিল রোগের আয়ুর্বেদিক উপাচার সহজ হবে। আমি অত্যন্তআনন্দিত যে আজ আয়ুর্বেদ সংস্থান উদ্বোধনের মাধ্যমে আয়ুর্বেদ-বিদ্যা ও সংশ্লিষ্টজ্ঞানভাণ্ডার পুনরুজ্জীবিত হয়ে উঠল।  

এটা অত্যন্তআশার কথা যে এই আয়ুর্বেদিক সংস্থান এইম্‌স এবং ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেলরিসার্চ এবং আরও কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে মিলিতভাবে কাজ করবে। আমি মনে করি,এভাবে অখিল ভারতীয় আয়ুর্বেদ সংস্থান ইন্টার-ডিসিপ্লিনারি আর ইন্টিগ্রেটিভ হেল্‌থপ্র্যাকটিস-এর একটি প্রধান কেন্দ্র হয়ে উঠবে।  

বন্ধুগণ,আয়ুর্বেদের গুণাবলীর লম্বা তালিকা রয়েছে। বিশ্বকে এখন কেবল সুস্থ থাকলেই চলবে না,এখন তাকে ভালো থাকতে হবে। আর এই ভালো থাকার ব্যাপারটা আয়ুর্বেদ এবং যোগ মিলেমিশেসুনিশ্চিত করতে পারে। আজ পৃথিবীর সকল দেশেই প্রকৃতির দিকে ফিরে তাকানোর প্রবণতাদেখা যাচ্ছে। এ ধরনের প্রাকৃতিক পদ্ধতিগুলির দিকে মানুষের আকর্ষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এইপরিস্থিতিতে আয়ুর্বেদের জন্য অনুকূল পরিবেশ গড়ে তোলা কঠিন নয়। শুধু আমাদের আজপ্রয়োজন অনুসারে আয়ুর্বেদের উপযোগিতাকে যথাসম্ভব বৃদ্ধি করতে হবে।


আয়ুর্বেদবিশেষজ্ঞরা এগিয়ে আসুন এবং আপনাদের পরিষবা আরও ছড়িয়ে দিন। আয়ুর্বেদের মাধ্যমে রোগনিরাময়ের যত ক্ষেত্র আছে, সকল বিষয়েই আপনারা এগিয়ে আসুন, বিশেষ করে খেলাধূলারক্ষেত্রে। আপনারা হয়ত লক্ষ্য করেছেন যে সম্প্রতি কয়েক বছর ধরে ফিজিওথেরাপি জানাচিকিৎসকদের ভূমিকা কত বৃদ্ধি পেয়েছে। বড় বড় খেলোয়াড়রা এখন ব্যক্তিগতফিজিওথেরাপিস্ট নিয়োগ করেন। তাঁরা অনেক সময় জানা-অজানা নানা ঔষুধের নামে ড্রাগ্‌স-এরশিকার হন। আপনারা এবং আমি জানি ভালোভাবেই জানি যে আয়ুর্বেদ এবং যোগ এক্ষেত্রে কতবেশি কার্যকর হতে পারে। আয়ুর্বেদ এবং যোগ-নির্ভর ফিজিওথেরাপি কিভাবে নিষিদ্ধ ঔষধথেকে খেলোয়াড়দের রক্ষা করতে পারে আবার ব্যথাও দূর করতে পারে, সে বিষয়ে আরওবিস্তারিত গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।   

উৎকৃষ্টআয়ুর্বেদিক শিক্ষার উন্নয়নে আরও গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এর পরিধি আরও বৃদ্ধিকরতে হবে। যেমন, পঞ্চকর্ম থেরাপিস্ট, আয়ুর্বেদিক ডায়াটিশিয়ান, পরাকৃতিঅ্যানালিষ্ট, আয়ুর্বেদ ফার্মাসিস্ট– এভাবে আয়ুর্বেদের একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ শৃঙ্খলবিকশিত করতে হবে।   

এছাড়া আমারএকটি পরামর্শ হল আয়ুর্বেদিক শিক্ষাক্ষেত্রে চালু বিভিন্ন কোর্স এবং বিভিন্নস্তরগুলি সম্পর্কে পুনর্বিচার করা উচিৎ। কোন ছাত্র যখন ব্যাচেলার অফ আয়ুর্বেদ,মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারি – বিএএমএস কোর্স করেন, তখন তিনি আয়ুর্বেদিক আহার-বিহার,পরাকৃতি এবং আয়ুর্বেদিক ফার্মাসিউটিক্যাল্‌স সম্পর্কেও পড়েন। পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচবছর শিক্ষার পর তিনি ডিগ্রি পান, আর তারপর নিজে প্র্যাক্টিস কিংবা চাকরি কিংবাউচ্চশিক্ষার চেষ্টা করতে পারেন।   

বন্ধুগণ,বিএএমএস কোর্সটিকে কি এভাবে ডিজাইন করা সম্ভব যে, এর প্রতিটি পরীক্ষা পাশ করার পরছাত্রটি কোন না কোন শংসাপত্র পাবে? এমনটি হলে দুটো লাভ হবে। যে ছাত্র ভবিষ্যতেপড়াশোনার পাশাপাশি নিজস্ব প্র্যাক্টিস শুরু করতে চান, কোন ব্যক্তিগত পারিবারিক বাপারিপার্শ্বিক কারণে তাঁর পড়া বন্ধ হয়ে গেলে তিনি যতটা করেছেন, সেই স্তরে শংসাপত্রনিয়ে রোজগারের পথে পা বাড়াতে পারেন। যে ছাত্র পাঁচ বছরের কোর্স পুরো করবেন, তাঁরকাছে আরও অধিক রোজগারের বিকল্প থাকবে।


কিছুক্ষণআগে শ্রী শ্রীপাদ নায়েক মহোদয় তাঁর বক্তব্যে ‘স্পোল্ডিং রিহ্যাব হসপিটাল’ এবং‘হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল’-এর সঙ্গে সহযোগিতার কথা বলেছেন। একথা শুনে আমি খুব খুশিহয়েছি, আর উভয় পক্ষকেই অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। আশা করি, এই সহযোগিতার মাধ্যমেক্রীড়াওষধি, রিহ্যাবিলিটেশন মেডিসিন এবং ব্যথা দূরীকরণে আয়ুর্বেদিক উপাচারেরসম্ভাবনাগুলি খুঁজে বের করতে সুবিধা হবে।   

ভাই ওবোনেরা, কিছুক্ষণ আগেই আমি আয়ুর্বেদের মাধ্যমে চিকিৎসার জন্য স্ট্যান্ডার্ডগাইডলাইন্স এবং স্ট্যান্ডার্ড টারমিনলজির পোর্টাল উদ্বোধন করেছি। এই পোর্টালেরমাধ্যমে যে তথ্য সংগৃহীত হবে এবং যে ব্যাপক ডেটা জেনারেট হবে, সেগুলি আয়ুর্বেদকেআধুনিক চিকিৎসাপদ্ধতির মতো বৈজ্ঞানিক স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে। আমারমনে হয়, এই উদ্যোগ আয়ুষ বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসেবে পরিগণিত হবে। এরসাহায্যে আয়ুর্বেদের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও বৃদ্ধি পাবে।

আয়ুর্বেদেস্ট্যান্ডার্ড গাইডলাইন্স এবং স্ট্যান্ডার্ড টারমিনলজি থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কারণ,এগুলি না থাকায় অ্যালোপ্যাথিক ওষধি প্রক্রিয়াগুলি সহজেই আয়ুর্বেদকে ছাপিয়ে যায়।একটা জমানায় ভারত সরকার নিয়োজিত একটি কমিশন তো এতদূর স্পষ্টভাবেই বলে দিয়েছিল যেআমাদের দেশে সাধারণ মানুষের মধ্যে আয়ুর্বেদ জনপ্রিয় নয়, কারণ এর পদ্ধতি সময়োপযোগীনয়। 
  

একদিকেঅ্যালোপ্যাথিক ওষধি, পট করে খুললেন আর খেয়ে নিলেন, অন্যদিকে আয়ুর্বেদ যার নির্মাণএবং খাওয়ার প্রক্রিয়া এত দীর্ঘ যে সাধারণ মানুষ ভাবে, কে এতটা সময় নষ্ট করবে! এখনফাস্ট ফুডের জমানা। এই সময় দাঁড়িয়ে আয়ুর্বেদিক ওষধি যদি পুরনো সময়ের প্যাকেজিংনিয়ে চলে তাহলে কেমন করে চলবে? আয়ুর্বেদিক ওষধির প্যাকেজিং যত আধুনিক হবে, চিকিৎসাপ্রক্রিয়া যত স্ট্যান্ডার্ড হবে, টার্মিনলজি যত কমন হবে, আপনারা দেখবেন যে কতদ্রুত পরিস্থিতি বদলাচ্ছে।


আজকের যুগেমানুষ তৎকাল পরিনাম চায়। তক্ষুণি ফল পেলে মানুষ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার তোয়াক্কা করেনা। যে ভাবনা ভুল, কিন্তু চারপাশে প্রতিনিয়ত দেখা যায়, তাকেই আপন করে নেয়। সেজন্য,মানুষকে আয়ুর্বেদ সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে আয়ুর্বেদাচার্যদেরপার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত কিন্তু তৎকাল পরিণাম প্রদায়ী ওষধি আবিষ্কারের কথা ভাবতেহবে।   

ভাই ওবোনেরা, আমাকে বলা হয়েছে যে আয়ুষ মন্ত্রালয়ের মাধ্যমে ৬০০-রও বেশি আয়ুর্বেদিক ওষধিআর ফার্মাসি স্ট্যান্ডার্ড প্রকাশ করা হয়েছে। এগুলির যত বেশি প্রচার-প্রসার হবে,আয়ুর্বেদিক ওষধির গুরুত্বও তত বৃদ্ধি পাবে। সারা পৃথিবীতেই আজ ভেষজ ঔষধের বড় বাজারগড়ে উঠছে। ভারতকে এই পরিস্থিতির সুযোগ নিতে হবে। ভেষজ এবং ওষধি বৃক্ষ-গুল্মেরচাষ,এ থেকে উৎপন্ন ফল, ফুল, পাতা, শিকড় কর্মসংস্থানের বড় মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে।   

আয়ুর্বেদেঅধিকাংশই এমন বৃক্ষ-গুল্ম থেকে ওষধি তৈরি করা হয় যেগুলি চাষের ক্ষেত্রে বেশি জলেরওপ্রয়োজন হয় না, ঊর্বর মাটিরও প্রয়োজন হয় না।   অনেক ভেষজ লতা-গুল্ম তো এমনি গজিয়ে যায়। কিন্তুআমরা সেই সব বৃক্ষ-গুল্মের গুণ সম্পর্কে জানি না বলে সেগুলিকে আগাছা ভেবে সাফ করেদিই। সচেতনতার অভাবে এই বিরাট ক্ষতি থেকে দেশকে কিভাবে রক্ষা করা যেতে পারে তানিয়ে চিন্তাভাবনা করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।  

ওষধিবৃক্ষ-গুল্মের চাষবাস রোজগারের নতুন সুযোগ খুলে দিচ্ছে। আমি চাইব যে, আয়ুষ মন্ত্রালয়দক্ষতা উন্নয়ন মন্ত্রালয়ের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এই লক্ষ্যে অল্প সময়ের পাঠক্রম চালুকরুক। পারম্পরিক চাষবাসের প্রক্রিয়ার পাশাপাশি কৃষকরা যখন খেতের কোণে খালি জমিতেভেষজ লতা-গুল্মের চাষ করতে শুরু করবে, তখন এগুলির মাধ্যমে তাঁদের আয় বৃদ্ধি পাবে।   

ভাই ওবোনেরা, এই ক্ষেত্রটিকে বিকাশ ও বিস্তারের জন্য এখন অনেক অর্থ বিনিয়োগের প্রয়োজনরয়েছে। সরকার হেল্‌থ কেয়ার সিস্টেমে ১০০ শতাংশ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগকেস্বীকৃতি দিয়েছে। আয়ুর্বেদ এবং যোগ এথেকে কিভাবে উপকৃত হতে পারে, তা নিয়েচিন্তাভাবনা করা উচিৎ।

মি দেশেরসকল কম্পানি এবং বেসরকারি ক্ষেত্রকে অনুরোধ করবো যে, তাঁরা যেভাবেঅ্যালোপ্যাথি-ভিত্তিক বড় বড় হাসপাতাল গড়তে এগিয়ে আসেন, সেভাবেই যোগ ও আয়ুর্বেদহাসপাতাল গড়ে তুলুন। নিজেদের কর্পোরেট সামাজিক দায়িত্ব অথবা সিএসআর ফান্ড-এরকিছুটা অংশ আয়ুর্বেদ এবং যোগের ক্ষেত্রেও বিনিয়োগ করুন।   

আমাদের এটাওখেয়াল রাখতে হবে যে হাজার হাজার বছর আগে আমাদের পূর্বজরা যে জ্ঞানার্জন করেছিলেনতার পেছনে ছিল অনেক পরিশ্রম এবং মানবজাতির কল্যাণের প্রেরণা। কোন কিছু নতুন গবেষণাএবং আবিষ্কারের ভাবনা থেকেই যোগ এবং আয়ুর্বেদের মতো ফলপ্রদায়ী বিষয়গুলি উঠে এসেছে।কিন্তু যখনই তাঁরা আবিষ্কার থেকে পিছিয়ে গেছেন, পরিস্থিতি বদলে গেছে। আমাদেরপ্রভাব হ্রাস পেয়েছে।  

এই পরিস্থিতিকেএখন সম্পূর্ণ বদলে দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। এখন শুধু সময়ের চাহিদা নয়, গোটা মানবতারচাহিদা হল ভারতকে নিজের পরিস্থিতি উন্নয়নে নজর দিতে হবে। বন্ধুগণ,আজ সারা পৃথিবীহলিস্টিক হেল্‌থ কেয়ার-এর পথ অন্বেষণ করছে। কিন্তু তারা পথ খুঁজে পাচ্ছে না। তারাভারতের আয়ুর্বেদিক এবং যৌগিক শক্তির দিকে তাকিয়ে রয়েছে। তাদের বিশ্বাস যে আমরা যোগও আয়ুর্বেদের অভিজ্ঞতাকে গোটা বিশ্বের মানবতার কল্যাণে কাজে লাগাব। সেজন্য, আমাদেরদেশের জন্য এই সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর এই সুযোগ আমরা যেন না হারাই। সঙ্কল্পনিয়ে এগিয়ে যেতে হবে এবং তাকে সিদ্ধ করতে হবে।  


বন্ধুগণ,ভারতের ‘একম্‌ শত বিপ্রা বহুধা বদন্তী’ভাবনা সমস্ত ধরনের ঔষধ প্রণালীর ক্ষেত্রেপ্রযুক্ত। আমরা সবরকমের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে সম্মান করি আর সকলের উন্নতি কামনাকরি। ভারতে আধ্যাত্মিক গণতন্ত্রের মতো উপাচার প্রণালীরও গণতন্ত্র রয়েছে।প্রত্যেকেরই উন্নয়নের অধিকার রয়েছে। প্রত্যেকেরই সম্মান রয়েছে। সকল প্রকারস্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারেরএকটাই লক্ষ্য যে গরিবমানুষ যাতে সহজে সুলভ স্বাস্থ্য পরিষেবা পান।  

সেজন্যইস্বাস্থ্যক্ষেত্রে আমরা দুটি প্রধান বিষয়ে জোর দিচ্ছি। প্রথমটি হল প্রিভেন্টিভহেল্‌থ কেয়ার আর দ্বিতীয়টি হল স্বাস্থ্যক্ষেত্রকে সুলভ এবং সহজ করা।


প্রিভেন্টিভহেল্‌থ কেয়ারের ক্ষেত্রে আমরা ‘মিশন ইন্দ্রধনুষ’ শুরু করেছি, যার মাধ্যমে ২০২০সালের মধ্যে দেশের সকল শিশুদের টিকাকরণ সম্পূর্ণ করতে হবে। কোন শিশু যেন এই টিকাকরণঅভিযান থেকে বাদ না যায় সেটা দেখতে হবে। এই টিকাকরণ শিশুদের ১২ ধরনের রোগ থেকেরক্ষা করবে। ইতিমধ্যেই আমরা আড়াই কোটি শিশু এবং প্রায় ৭০ লক্ষ গর্ভবতী মহিলাদেরটিকাকরণ সম্পন্ন করেছি।   

বর্তমানসরকারের প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ দেশে টিকাকরণের গতি প্রতি বছর ১ শতাংশ থেকে এখন ৬.৫শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।   


এ মাসেইসরকার এই মিশনকে আরও সংহত করে ইন্টেনসিফায়েড মিশন ইন্দ্রধনুষ শুরু করেছে যারমাধ্যমে দেশের যে জেলা, শহর ও অঞ্চলগুলিতে টিকাকরণের মাত্রা কম, সেগুলিকেঅগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। আগামী ১ বছর ধরে দেশের এরকম ১৭৩টি জেলায় প্রতি মাসেসপ্তাহে সাতদিন লাগাতার টিকাকরণ অভিযান চলবে। সরকারের লক্ষ্য হল, ২০১৮ সালেরডিসেম্বর মাসের মধ্যে দেশের সর্বত্র সম্পূর্ণ টিকাকরণ সম্পন্ন করা।  

বন্ধুগণ,আগে মনে করা হত স্বাস্থ্য সুরক্ষার দায়িত্ব শুধুই স্বাস্থ্য মন্ত্রকের। কিন্তুআমরা অন্যরকম ভাবি। ইন্টেনসিফায়েড মিশন ইন্দ্রধনুষ সরকারের ১২টি আলাদা মন্ত্রক,এমনকি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকেরও সাহায্য নেওয়া হবে।  

ভাই ওবোনেরা, প্রিভেন্টিভ হেল্‌থ কেয়ার একদিকে যেমন সস্তা, অন্যদিকে তেমনইপরিচ্ছন্নতাকে গুরুত্ব দেয়। পরিচ্ছন্নতাকে বর্তমান সরকার গণ-আন্দোলনের মতো বাড়িতেবাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে। বিগত ৩ বছরে ৫ কোটিরও বেশি শৌচালয় নির্মাণ করেছে।পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে মানুষের ভাবনা কিরকম পরিবর্তন হয়েছে তার উদাহরণ হল এখন অনেকজায়গায় শৌচালয়কে ‘ইজ্জত ঘর’ নাম দেওয়া হয়েছে। আপনারা কিছুদিন আগে পাওয়া ইউনিসেফেররিপোর্টে হয়তো লক্ষ্য করেছেন যে, যে পরিবার গ্রামে একটি শৌচালয় নির্মাণ করেছেতাঁদের গড়ে বার্ষিক ৫০ হাজার টাকা সাশ্রয় হয়েছে। নাহলে চিকিৎসাবাবদ এই টাকা খরচহত।

প্রিভেন্টিভহেল্‌থ কেয়ারকে গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি, সরকার স্বাস্থ্য পরিষেবাকে সুলভ ও সহজকরার জন্য গোড়া থেকেই হলিস্টিক অ্যাপ্রোচ নিয়ে এগিয়ে এসেছে। মেডিকেল কলেজেরছাত্রদের জন্য স্নাতকোত্তর আসন বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর দ্বারা আমাদের যুব সম্প্রদায়যেমন উপকৃত হবেন, তেমনই গরিব মানুষের চিকিৎসার জন্য অনেক বেশি উচ্চশিক্ষিত চিকিৎসকপাওয়া যাবে। সারা দেশে উন্নত চিকিৎসা এবং মানুষের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্যবিভিন্ন রাজ্যে নতুন নতুন এইম্‌স-এর শাখা খোলা হচ্ছে। স্টেন্ট বসাতে এখন অনেক ছাড়পাওয়া যাচ্ছে। হাঁটু সংস্থাপনের খরচকেও নিয়ন্ত্রিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।জনওষধি কেন্দ্রগুলির মাধ্যমে গরিবদের সস্তায় ঔষধ দেওয়া হচ্ছে। বন্ধুগণ, আমাকে বলাহয়েছে যে,এ বছর প্রায় ২৪টি দেশে আমাদের দূতাবাসগুলিতেআয়ুর্বেদ দিবস পালন করা হচ্ছে। বিগত ৩০ বছর ধরে বিশ্ববাসী আইটি বিপ্লব দেখেছে। এখনআয়ুর্বেদের নেতৃত্বে সারা পৃথিবীতে স্বাস্থ্য বিপ্লব আসবে। আসুন, আমরা এই শুভদিনেশপথ গ্রহণ করি  : 

“আমরাআয়ুর্বেদ অভ্যাস করব, আমরা আয়ুর্বেদকে বাঁচিয়ে রাখব, আর আমরা আয়ুর্বেদের জন্যবাঁচব।”  

ভাই ওবোনেরা, আপনাদের সবাইকে আয়ুর্বেদ দিবসে অখিল ভারতীয় আয়ুর্বেদ সংস্থান-এর উদ্বোধনউপলক্ষে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানিয়ে আমার বক্তব্য সম্পূর্ণ করছি।  

অনেক অনেকধন্যবাদ।

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
India’s Biz Activity Surges To 3-month High In Nov: Report

Media Coverage

India’s Biz Activity Surges To 3-month High In Nov: Report
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM to participate in ‘Odisha Parba 2024’ on 24 November
November 24, 2024

Prime Minister Shri Narendra Modi will participate in the ‘Odisha Parba 2024’ programme on 24 November at around 5:30 PM at Jawaharlal Nehru Stadium, New Delhi. He will also address the gathering on the occasion.

Odisha Parba is a flagship event conducted by Odia Samaj, a trust in New Delhi. Through it, they have been engaged in providing valuable support towards preservation and promotion of Odia heritage. Continuing with the tradition, this year Odisha Parba is being organised from 22nd to 24th November. It will showcase the rich heritage of Odisha displaying colourful cultural forms and will exhibit the vibrant social, cultural and political ethos of the State. A National Seminar or Conclave led by prominent experts and distinguished professionals across various domains will also be conducted.