প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ৪ ও ৫ই মার্চ গুজরাট সফর করবেন। ৪ তারিখ তিনি জামনগর, জসপুর ও আমেদাবাদ যাবেন। পরদিন অর্থাৎ, ৫ তারিখ তিনি আদালাজ ও ভাস্ত্রল সফর করবেন।
জামনগরে ৪ তারিখ প্রধানমন্ত্রী মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাস পরিদর্শন করবেন এবং সেখানে একাধিক উন্নয়নমূলক কাজের সূচনা করবেন। এই সমস্ত কাজের মধ্যে রয়েছে – ৭৫০ শয্যাবিশিষ্ট গুরু গোবিন্দ সিং হাসপাতাল অ্যানেক্স জাতির উদ্দেশে উৎসর্গীকরণ; এই হাসপাতালের স্নাতকোত্তর স্তরের পড়ুয়াদের জন্য নব-নির্মিত হস্টেলের উদ্বোধন করবেন। এছাড়াও, হাসপাতালের শিক্ষানবিশ ছাত্রছাত্রী এবং অধ্যাপকদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী বোতাম টিপে সাওনি প্রকল্পের সূচনা করবেন। এই প্রকল্পের রঞ্জিত সাগর কৃষি সেচ প্রকল্প এবং নয়ারি সেচ প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। এছাড়াও তিনি জোড়িয়া লবণমুক্ত জল শোধনাগারের শিলান্যাস করবেন।
প্রধানমন্ত্রী বান্দ্রা-জামনগর হামসফর এক্সপ্রেসের যাত্রার সূচনা করবেন। ফলকের আবরণ উন্মোচনের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আজি-৩ থেকে খিজাদিয়া ৯১ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইন জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। রাজকোট-কানালুস রেললাইন ডবল করার কাজেরও সূচনা করবেন।
প্রধানমন্ত্রী জামনগর পুর নিগম নির্মিত ৪৮৮টি বাড়ির চাবি সুফলভোগীদের হাতে তুলে দেবেন এবং জামনগর এলাকা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নির্মিত ১,০০৮টি ফ্ল্যাট সুবিধাভোগীদের হস্তান্তর করবেন। এই উপলক্ষে এক জনসভাতেও তিনি ভাষণ দেবেন।
জসপুরে প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব উমিয়াধাম কমপ্লেক্সের শিলান্যাস করবেন। পরে, এক জনসভাতেও ভাষণ দেবেন।
আমেদাবাদের ভস্ত্রল গাম মেট্রো স্টেশনে প্রধানমন্ত্রী আমেদাবাদ মেট্রোর প্রথম পর্যায়ের সূচনা করবেন এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজে শিলান্যাস করবেন। আমেদাবাদ মেট্রোর যাত্রীদের জন্য অভিন্ন যাতায়াতের কার্ড প্রকাশ করবেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী, ভস্ত্রল গাম স্টেশন থেকে মেট্রো রেলের যাত্রার সূচনা ও ট্রেন সফর করবেন। উল্লেখ করা যেতে পারে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে আমেদাবাদ মেট্রো রেল প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের অনুমোদন দেওয়া হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শেষ হলে আমেদাবাদ ও গান্ধীনগর অঞ্চলের ভ্রমণকারীদের জন্য এক আরামদায়ক ও বিশ্বাসযোগ্য পরিবহণ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে।
আমেদাবাদ মেট্রো রেল প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের দৈর্ঘ্য ৪০.০৩ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৬.৫ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ এবং বাকি অংশ ভূপৃষ্ঠের ওপর নির্মিত হয়েছে। এই মেট্রো প্রকল্পের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নতির পাশাপাশি, সফরের সময় সাশ্রয় হবে এবং শহরাঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হবে।
আমেদাবাদে বি জে মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণে প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য ও রেল পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত একাধিক প্রকল্পের সূচনা করবেন।
আমেদাবাদ অঞ্চলে নির্মিত একাধিক হাসপাতাল জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন শ্রী মোদী। এই চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে রয়েছে – মহিলা, শিশু ও সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, ক্যান্সার হাসপাতাল, চক্ষু হাসপাতাল ও দন্ত হাসপাতাল। এই হাসপাতালগুলির ফলে আমেদাবাদে স্বাস্থ্য পরিচর্যার মান কয়েকগুণ বাড়বে। সেইসঙ্গে, সাধারণ মানুষ গুণগত মানের স্বাস্থ্য পরিষেবাও পাবেন।
প্রধানমন্ত্রী জন-আরোগ্য যোজনা – আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের নির্দিষ্ট কয়েকজন সুফলভোগীর হাতে শ্রী মোদী গোল্ডেন কার্ড তুলে দেবেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী পাটনা-বিন্দি রেললাইনের উদ্বোধন করবেন। দাহোদ রেল ওয়ার্কশপের আধুনিকীকরণ এবং ওয়াগন উৎপাদন বৃদ্ধির কাজের সূচনা করবেন। এর ফলে, এই ওয়াগন নির্মাণ কারখানার মাসিক ক্ষমতা বেড়ে দাঁড়াবে ১৫০। এছাড়াও, তিনি আনন্দ-গোধরা রেললাইন ডবল করার কাজের শিলান্যাস করবেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী জনসভায় ভাষণ দেবেন।
প্রধানমন্ত্রী নব-নির্মিত সিভিল হাসপাতাল ঘুরে দেখবেন এবং ফিতে কেটে ১,২০০ রোগী শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের উদ্বোধন করবেন। আমেদাবাদে নব-নির্মিত ক্যান্সার ও চক্ষু হাসপাতালও তিনি ঘুরে দেখবেন।
৫ মার্চ প্রধানমন্ত্রী গান্ধীনগরের আদালাজ যাবেন। সেখানে তিনি অন্নপূর্ণা ধাম ট্রাস্ট সফর করবেন এবং শিক্ষা ভবন তথা বিদ্যার্থী ভবনের শিলান্যাস করবেন। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী এক জনসভায় ভাষণ দেবেন।
এরপর শ্রী মোদী প্রধানমন্ত্রী শ্রমযোগী মান-ধন যোজনার সূচনা করবেন। সুফলভোগীদের অনলাইনে অর্থ হস্তান্তরের মাধ্যমে এই যোজনার আওতায় প্রধানমন্ত্রী অসংগঠিত ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের পেনশন প্রকল্পের সূচনা করবেন। সুনির্দিষ্ট কয়েকজন সুবিধাভোগীর হাতে প্রধানমন্ত্রী শ্রমযোগী মান-ধন যোজনার পেনশন কার্ড তুলে দেবেন।
উল্লেখ করা যেতে পারে, ২০১৯-২০-র অন্তর্বর্তী বাজেটে কেন্দ্রীয় সরকার প্রধানমন্ত্রী শ্রমযোগী মান-ধন যোজনা শুরু করার কথা ঘোষণা করেন। এই যোজনার মাধ্যমে অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখা হবে। মাসিক আয় ১৫ হাজারের কম, অসংগঠিত ক্ষেত্রের এমন শ্রমিকরাই এই প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা পাবেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৬০ বছর বয়সী শ্রমিকরা মাসিক ৩ হাজার টাকা নিশ্চিত পেনশন পাবেন। মনে করা হচ্ছে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে কমপক্ষে ১০ কোটি অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক এই প্রকল্পের ফলে উপকৃত হবেন। দেশের জিডিপি-র অর্ধেক যোগান আসে অসংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মরত ৪০ কোটি শ্রমিকের কাছ থেকে। এঁদের অধিকাংশই হকার, রিক্সাচালক, নির্মাণকাজে যুক্ত শ্রমিক, জঞ্জাল থেকে পরিত্যক্ত সামগ্রী সংগ্রহকারী, কৃষি শ্রমিক, বিড়ি শ্রমিক, চর্মশিল্পের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক ও তাঁত ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত কর্মী রয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শ্রমযোগী মান-ধন যোজনার পাশাপাশি, আয়ুষ্মান ভারত কর্মসূচির আওতায় এঁদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, প্রধানমন্ত্রী জীবনজ্যোতি এবং প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমা যোজনার আওতায় এ ধরণের শ্রমিকদের জীবনবিমা তথা কর্মে অক্ষম হয়ে পড়লে আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয়ে থাকে। এই ধরণের উদ্যোগের ফলে অসংগঠিত ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত বয়স্ক শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা দানের বিষয়টি সুনিশ্চিত হবে।