প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ১৯ শে ডিসেম্বর গোয়া সফর করবেন। গোয়া মুক্তি দিবস উপলক্ষ্যে ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী স্টেডিয়ামে বিকাল ৩টের সময় এক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। শ্রী মোদী স্বাধীনতা সংগ্রামীদের এবং ‘অপারেশন বিজয়’এ অংশগ্রহণকারী প্রাক্তন সেনানীদের এই অনুষ্ঠানে সম্বর্ধিত করবেন। প্রতি বছর ১৯শে ডিসেম্বর গোয়া মুক্তি দিবস উদযাপন করা হয়। এইদিন ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী পর্তুগীজ শাসন থেকে গোয়াকে মুক্ত করেছিল।
প্রধানমন্ত্রী নব-নির্মিত আগুয়ারা দূর্গ কারাগার সংগ্রহশালা, গোয়া মেডিকেল কলেজে সুপার স্পেশালিটি ব্লক, দক্ষিণ গোয়ায় জেলা হাসপাতাল, মোপা বিমান বন্দরে বিমান চলাচল সংক্রান্ত দক্ষতা বিকাশ কেন্দ্র এবং মারগাঁও-এ ডাবোলিন-নাভেলিন গ্যাস ইনসুলেটেড সাব স্টেশন সহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। তিনি ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটি অফ লিগাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ অফ বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া ট্রাস্ট্রের শিলান্যাস করবেন।
প্রধানমন্ত্রী দেশজুড়ে উন্নত মানের চিকিৎসা পরিকাঠামো গড়ে তুলতে স্চেষ্ট হয়েছেন। তাঁর এই উদ্যোগের অঙ্গ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য সুরক্ষা যোজনা প্রকল্পের ৩৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে গোয়া মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে সুপার স্পেশালিটি ব্লক গড়ে তোলা হয়েছে। গোয়া রাজ্যে এটিই একমাত্র সুপার স্পেশালিটি হসপিটাল। এখানে অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি, বাইপাস সার্জারি, লিভার ও কিডনি প্রতিস্থাপন, ডায়ালিসিস ইত্যাদির মতো জটিল চিকিৎসা করা যাবে। এ ছাড়াও এখানে পিএম কেয়ার তহবিল থেকে ১ হাজার এলপিএম পিএসএ প্ল্যান্ট তৈরি করা হবে।
দক্ষিণ গোয়ায় নব-নির্মিত হাসপাতালটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২২০ কোটি টাকা। এই হাসপাতালে ৩৩ রকমের ওপিডি পরিষেবা, অত্যাধুনিক রোগ নির্ণয় যন্ত্রপাতি এবং ফিজিও থেরাপি, অডিওমেট্রির মতো বিভিন্ন পরিষেবা পাওয়া যাবে। হাসপাতালে অক্সিজেনের সুবিধাযুক্ত ৫০০টি শয্যা, চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত ৫,৫০০ লিটারের তরলীকৃত অক্সিজেন ট্যাঙ্ক এবং ৬০০ এলপিএম ক্ষমতা সম্পন্ন দুটি পিএসএ প্ল্যান্ট তৈরি করা হয়েছে।
স্বদেশ দর্শন প্রকল্পের আওতায় আগুয়াড়া দূর্গ কারাগার সংগ্রহশালাটিকে নতুনভাবে গড়ে তোলা হয়েছে। এরজন্য ব্যয় হয়েছে ২৮ কোটি টাকা। গোয়াকে মুক্ত করার আগে আগুয়াড়া দূর্গে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অত্যাচার করা হতো। এখানে সংগ্রহশালাটিতে গোয়ার মুক্তির জন্য যেসব বিখ্যাত স্বাধীনতা সংগ্রামী লড়াই করেছিলেন তাঁদের ভূমিকার কথা তুলে ধরা হবে এবং তাঁদের যথাযথ শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।
নির্মিয়মান মোপা বিমান বন্দরে বিমান চলাচলের জন্য দক্ষতা বিকাশ কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। ৮ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই কেন্দ্রে ১৬ রকমের কাজের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ প্রাপ্তরা ভবিষ্যতে মোপা বিমান বন্দর এবং দেশ-বিদেশের অন্যান্য বিমান বন্দরে কাজের সুযোগ পাবেন
কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রকের সুসংহত বিদ্যুৎ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে মারগাঁও-এ ডাবোলিন-নাভেলিনে গ্যাস ইনসুলেটেড সাব স্টেশন তৈরি করা হয়েছে। এর সাহায্যে ডাভোলিন, নেশাই, নাভেলিন, অ্যাকুয়েম-বাইকসো এবং তেলাউলিন গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সুবিধা হবে।
গোয়াকে উচ্চশিক্ষা এবং কারিগরি শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে দ্য ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটি অফ লিগাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ অফ বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া ট্রাস্ট্র তৈরি করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী পর্তুগীজ শাসন থেকে গোয়াকে মুক্ত করতে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করবেন। ইতিহাসের সেই বিশেষ সন্ধিক্ষণ এবং অপারেশন বিজয়ে যে ৭ জন বীর নৌসেনা প্রাণ দিয়েছিলেন তাঁদের স্মরণে তৈরি ভারতীয় নৌ বাহিনীর রণতরী গোমন্তকের ছবি সম্বলিত ডাকটিকিট প্রকাশ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী পত্রদেবীতে হুতাত্মা স্মারকে ছবি সম্বলিত একটি ডাকটিকিট প্রকাশ করবেন। এই ডাকটিকিটে গোয়া স্বাধীনতা সংগ্রামে যাঁরা প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে। প্রধানমন্ত্রীকে গোয়া স্বাধীনতা সংগ্রামের বিভিন্ন ঘটনা সম্বলিত একটি কোলাজ পোস্টকার্ড ‘মেঘদূত’ উপহার হিসেবে তুলে দেওয়া হবে।
শ্রী মোদী স্বয়ংপূর্ণ গোয়া কর্মসূচির আওতায় সুবিধাভোগী, স্বয়ংপূর্ণ মিত্র এবং শ্রেষ্ঠ পঞ্চায়েত ও পুরসভাকে পুরস্কৃত করবেন। সফরকালে শ্রী মোদী পানাজির আজাদ ময়দানে বেলা ২টো ১৫ মিনিটে শহীদ স্মারকে পুস্পার্ঘ্য নিবেদন করবেন। এরপর তিনি মিরামারে আড়াইটার সময় কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করবেন।