প্রধানমন্ত্রী আরও উন্নত ‘টয়কোনমি’র আহ্বান জানিয়েছেন
খেলনা শিল্পের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে এর মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের বিষয়টি যুক্ত বলে মন্তব্য করেছেন
আমাদের স্থানীয় খেলনার জন্য চাহিদা বাড়াতে হবে : প্রধানমন্ত্রী
সারা বিশ্ব ভারতের কর্মক্ষমতা, শিল্প ও সংস্কৃতি এবং সমাজিক বিষয় সম্পর্কে জানতে চায়, খেলনা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে : প্রধানমন্ত্রী
ডিজিটাল গেমিং-এর ক্ষেত্রে ভারতের প্রচুর বিষয় রয়েছে ও এগুলি তৈরিতে দক্ষ কর্মী রয়েছেন : প্রধানমন্ত্রী
খেলনা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত বিনিয়োগকারী ও উদ্ভাবকদের ভারতের ৭৫তম স্বাধীনতাবার্ষিকীতে যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

আপনাদের সবার কথা শুনে আমার খুব ভালো লেগেছে আর আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে আমার সঙ্গী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষজি, সঞ্জয়জি - এঁরা সবাই আমার সঙ্গে রয়েছেন, সারা দেশ থেকে আসা টয়কাথন-এর অংশগ্রহণকারী বন্ধুরাও সঙ্গে রয়েছেন আর উপস্থিত মাননীয় ব্যক্তিবর্গ আজকের এই কর্মসূচি পর্যবেক্ষণ করছেন।
দেখুন, আমাদের শাস্ত্রে বলা হয়েছে – “সাহসে খলু শ্রীঃ বসতি” – অর্থাৎ সাহসের মধ্যেই শ্রী থাকে, সমৃদ্ধিও থাকে। এই সমস্যাকীর্ণ সময়ে দেশে প্রথমবার টয়কাথন-এর আয়োজন এই ভাবনাকে শক্তিশালী করে তোলে। এই টয়কাথন-এ আমাদের শিশু-বন্ধুরা ছাড়াও নবীন বন্ধুরা, শিক্ষক-শিক্ষিকারা, স্টার্ট-আপস এবং শিল্পোদ্যোগীরাও অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে অংশগ্রহণ করেছেন। প্রথমবারেই ১,৫০০-রও বেশি টিমের গ্র্যান্ড ফিনালেতে অংশগ্রহণ এই ভাবনার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের সঙ্কেতবাহী। এই খেলনা এবং খেলনা নিয়ে খেলার বিষয়টি আত্মনির্ভর ভারত অভিযানকেও শক্তিশালী করে তোলে। এখানে বেশ কয়েকজন বন্ধুর খুব ভালো ভালো ভাবনা উঠে এসেছে। এর আগে কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে আমার মুখোমুখি কথা বলারও সুযোগ হয়েছে। আমি এজন্য আরেকবার আয়োজক ও অংশগ্রহণকারীদের অভিনন্দন জানাই।
বন্ধুগণ,
বিগত ৫-৬ বছরে হ্যাকাথন দেশের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে একটি বড় মঞ্চ হয়ে উঠেছে। এর পেছনের ভাবনা হল, দেশের সামর্থ্যকে সংগঠিত করা আর তাকে একটা মাধ্যম প্রদান করা। দেশের সামনে যত সমস্যা আছে সেগুলির সমাধানে আমাদের নবীন প্রজন্মকে সরাসরি যুক্ত করার চেষ্টা থেকেই এই হ্যাকাথন। যখন এই যোগাযোগ শক্তিশালী হয়ে ওঠে, তখন আমাদের যুবশক্তির প্রতিভাও সামনে উঠে আসে আর দেশ উন্নত সমাধান পায়। দেশের প্রথম টয়কাথন-এর উদ্দেশ্য এটাই। আমার মনে আছে, আমি খেলনা এবং ডিজিটাল গেমিং-এর বিশ্বে আত্মনির্ভরতা ও স্থানীয় সমাধানের জন্য নবীন বন্ধুদের কাছে আবেদন রেখেছিলাম। সেই আবেদনের একটা ইতিবাচক সাড়া সারা দেশে পরিলক্ষিত হচ্ছে। অবশ্য হাতেগোনা কয়েকজনের এটাও মনে হচ্ছে, এতো খেলনাই! এটা নিয়ে এত ভাবগম্ভীর আলোচনার কী প্রয়োজন? আসলে, এই খেলনাগুলি, এই খেলাগুলি, আমাদের মানসিক শক্তি, আমাদের সৃষ্টিশীলতা এবং আমাদের অর্থনীতির মতো অনেক ক্ষেত্রকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। সেজন্য এই বিষয়গুলি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনারও অনেক প্রয়োজন রয়েছে। আমরা সবাই জানি যে শিশুদের প্রথম পাঠশালা যদি তার পরিবার হয়, প্রথম বই এবং প্রথম বন্ধু হয় এই খেলনাগুলি। সমাজের সঙ্গে শিশুদের প্রথম বার্তালাপ এই খেলনাগুলির মাধ্যমে হয়। আপনারা হয়তো লক্ষ্য করেছেন, শিশুরা খেলনাগুলির সঙ্গে কথা বলতে পারে। এগুলিকে নানারকম নির্দেশ দেয়। এগুলিকে দিয়ে অনেক কাজ করায়, কারণ, এই বার্তালাপের মাধ্যমেই তারা সামাজিক জীবনে প্রথম পা রাখে। এভাবেই খেলনাগুলি, এই বোর্ড গেমগুলি ধীরে ধীরে তাদের বিদ্যালয় জীবনেরও একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে ওঠে, শেখা এবং শেখানোর মাধ্যম হয়ে ওঠে। তাছাড়া খেলনার সঙ্গে জড়িত আরেকটা অনেক বড় দিক আছে যা প্রত্যেকের জানা উচিৎ, তা হল, খেলনা এবং খেলার দুনিয়ার অর্থনীতি টয়কোনমি-র বিশ্ব বাজার আজ আমরা যখন কথা বলছি, তখন প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে গেছে। এর মধ্যে ভারতের অংশীদারিত্ব মাত্র ১.৫ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি – মাত্র ১.৫ বিলিয়ন। আজ আমরা নিজেদের প্রয়োজনের প্রায় ৮০ ভাগ খেলনা বিদেশ থেকে আমদানি করি। অর্থাৎ, খেলনা কেনা বাবদ দেশের কোটি কোটি টাকা বিদেশে চলে যায়। এই পরিস্থিতির পরিবর্তন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আর এই কথাগুলি আমি শুধুই পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে বলছি না, এই ক্ষেত্রে দেশের সেই শ্রেণীর কাছে, সেই দরিদ্র অংশের কাছে উন্নয়ন ও উন্নয়নের সুফল পৌঁছে দেওয়ার সামর্থ্য রয়েছে যাঁদের এখন উন্নয়নের সবচাইতে বেশি প্রয়োজন। খেলনা শিল্পের সঙ্গে আমাদের কুটীর শিল্প, আমাদের শিল্প ভাবনা, আমাদের গ্রাম-পাহাড়ের কারিগররা, গরীব, দলিত আদিবাসী সমাজের বহুসংখ্যক কারিগররা রয়েছেন। আমাদের এই বন্ধুরা অত্যন্ত সীমিত পুঁজি নিয়ে আমাদের পরম্পরা, আমাদের সংস্কৃতিকে নিজেদের অসাধারণ শিল্প ভাবনার মাধ্যমে প্রস্ফুটিত করে এই খেলনাগুলি তৈরি করেন। এঁদের মধ্যেও বিশেষভাবে আমাদের বোনেরা, আমাদের কন্যারা অনেক বড় ভূমিকা পালন করেন। খেলনার সঙ্গে যুক্ত শিল্পোদ্যোগগুলির উন্নয়নের মাধ্যমে দূর-দুরান্তে বসবাসকারী দরিদ্র পরিবার, আদিবাসী পরিবারের এ ধরনের মহিলাদের অনেক লাভ হবে। কিন্তু এটা তখনই সম্ভব যখন আমরা স্থানীয় খেলনার জন্য সোচ্চার হব, লোকালের জন্য ভোকাল হব। এটা অত্যন্ত জরুরি। স্থানীয় খেলনাকে উন্নত করে তোলার জন্য, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগী করে তোলার জন্য প্রত্যেক স্তরে উৎসাহ যোগাব। সেজন্য উদ্ভাবন থেকে শুরু করে বিনিয়োগ পর্যন্ত প্রত্যেক স্তরের মডেল বিকশিত করার প্রয়োজন রয়েছে। প্রত্যেক নতুন ভাবনাকে ইনকিউবেট করার প্রয়োজন রয়েছে। নতুন নতুন স্টার্ট-আপ কিভাবে বিকশিত করব আর খেলনার পারম্পরিক কলাকৃতীকে, শিল্পীদেরকে কিভাবে নতুন প্রযুক্তি, নতুন বাজারের চাহিদা অনুযায়ী প্রস্তুত করব, এদিকে লক্ষ্য দেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এই ভাবনা থেকেই টয়কাথন-এর মতো কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।

বন্ধুগণ,
আজ দেশে সস্তা ডেটা এবং ইন্টারনেটের গতি বৃদ্ধি গ্রামে গ্রামে দেশবাসীকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত করছে। এক্ষেত্রে শারীরিক ক্রীড়া এবং খেলনার পাশাপাশি ভার্চ্যুয়াল ডিজিটাল অনলাইন গেমিং-এর ক্ষেত্রে ভারতের সম্ভাবনা এবং সামর্থ্য দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু আজ বাজারে যত ধরনের অনলাইন বা ডিজিটাল গেম পাওয়া যায়, সেগুলির মধ্যে অধিকাংশের পেছনে ভাবনা-চিন্তা ভারতীয় নয়। সেজন্য সেগুলির সঙ্গে আমাদের ভাবনা খাপ খায় না। আপনারাও জানেন, এগুলির মধ্যে অনেক গেমের ভাবনা এমন যেগুলি হিংসাকে প্রশ্রয় দেয় অথবা শিশু-কিশোরদের জন্য নানা মানসিক সমস্যা ও চাপের কারণ হয়ে ওঠে। সেজন্য আমাদের দায়িত্ব এমন বিকল্প ভাবনা দিয়ে খেলার নকশা তৈরি করা যাতে ভারতের মূল চিন্তাভাবনা যা সম্পূর্ণ মানবকল্যাণের সঙ্গে জড়িত, সেটাই থাকবে। প্রযুক্তিগতভাবে এগুলি হবে বিশ্বমানের। মজাও থাকবে, আবার এর মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতাও বজায় থাকবে। উভয় ক্ষেত্রে উৎসাহ যোগাতে থাকবে। আর আমি এখন স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি, আমাদের এখানে ডিজিটাল গেমিং-এর জন্য প্রয়োজনীয় ভাবনা ও ভরপুর সামর্থ্য রয়েছে। আমরা এই টয়কাথন-এ ভারতের এই শক্তিকে স্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছি। এতে যে ভাবনাগুলি নির্বাচিত হয়েছে সেগুলির মধ্যে গণিত ও রসায়ন বিদ্যাকে সহজ করে তোলার ভাবনা রয়েছে আর পাশাপাশি মূল্যবোধ গড়ে তোলার মাধ্যমে সমাজকে শক্তিশালী করার ভাবনাও রয়েছে। এখন যেমন একজন আই-কগনিটো গেমিং-এর ভাবনা তুলে ধরেছেন। এতে ভারতের এই শক্তি ও সামর্থ্যের সমাবেশ ঘটেছে।এটি যোগের সঙ্গে ভার্চ্যুয়াল রিয়ালিটি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি যুক্ত করে বিশ্বকে একটি নতুন গেমিং সলিউশন দেওয়ার খুব ভালো প্রচেষ্টা। এভাবে আয়ুর্বেদের সঙ্গে যুক্ত বোর্ড গেমও পুরাতন এবং নতুনের অদ্ভূত সঙ্গম। যেমন একটু আগেই কথা বলার সময় কয়েকজন নবীন বন্ধু বেশ কয়েকটি প্রতিযোগিতামূলক গেমের কথা বলেছেন যা বিশ্বের দূর-দুরান্তে যোগকে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।

বন্ধুগণ,
ভারতের বর্তমান সামর্থ্যকে, ভারতের কলা-সংস্কৃতিকে, ভারতের সমাজকে আজ বিশ্ববাসী খুব ভালোভাবে বোঝার জন্য উৎসাহী। তাঁরা আমাদের বুঝতে চান। এক্ষেত্রে আমাদের খেলনা এবং আমাদের গেমিং ইন্ডাস্ট্রি অত্যন্ত বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। সেজন্য প্রত্যেক নবীন উদ্ভাবকের প্রতি, প্রত্যেক স্টার্ট-আপ-এর প্রতি আমার অনুরোধ যে একটি কথা অবশ্যই খুব ভালোভাবে মনে রাখবেন, আপনাদের ওপর বিশ্ববাসীর কাছে ভারতের চিন্তা-চেতনা, ভারতের সামর্থ্য উভয়ের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরার দায়িত্বও রয়েছে। ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’ থেকে শুরু করে আমাদের ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’-এর শ্বাশত ভাবনাকে সমৃদ্ধ করার দায়িত্বও আপনাদের ওপর রয়েছে। আজ যখন দেশ স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষের অমৃত মহোৎসব পালন করতে শুরু করেছে তখন এই খেলনা এবং গেমিং-এর সঙ্গে যুক্ত সমস্ত উদ্ভাবক এবং স্রষ্টাদের সামনে অনেক বড় সুযোগ এসে দাঁড়িয়েছে। স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত এমন অনেক ঘটনা আছে যেগুলিকে সামনে তুলে ধরা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আমাদের বিপ্লবী ও স্বাধীনতা সংগ্রামীদের শৌর্য, আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃত্ব প্রদানকারীদের অনেক ঘটনাকে খেলনা এবং গেমসের আদলে প্রস্তুত করা যেতে পারে। আপনারা ভারতের লোক-সংস্কৃতিকে ভবিষ্যতের সঙ্গে যুক্ত করার একটি শক্তিশালী মাধ্যম। সেজন্য এটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় যে আমরা এই ধরনের খেলনাকে গুরুত্ব দেব, এই ধরনের খেলা রচনা করব যা আমাদের নবীন প্রজন্মের সামনে ভারতীয়ত্বর প্রতিটি মাত্রাকে মজাদার এবং মিথস্ক্রিয়ামূলক পদ্ধতিতে গড়ে তুলবে। আমাদের খেলনাগুলি আর গেমস যাতে শিশুদের যেমন এনগেজ করবে, তেমনই এন্টারটেনও করবে আবার এডুকেটও করবে - এটা আমাদের সুনিশ্চিত করতে হবে। আপনাদের মতো নবীন উদ্ভাবক ও স্রষ্টাদের থেকে দেশের অনেক আশা। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে আপনারা নিজেদের লক্ষ্যে অবশ্যই সফল হবেন, আপনাদের স্বপ্নগুলি অবশ্যই বাস্তবায়িত করবেন। আরেকবার এই টয়কাথন-কে সফলভাবে আয়োজন করার জন্য আমি অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই, অনেক অনেক শুভকামনা জানাই।
ধন্যবাদ!

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII

Media Coverage

PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
সোশ্যাল মিডিয়া কর্নার 21 নভেম্বর 2024
November 21, 2024

PM Modi's International Accolades: A Reflection of India's Growing Influence on the World Stage