তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রের সিইও এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সোমবার একআলোচনা বৈঠকে মিলিত হন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। রসনেফট্, বিপি,রিলায়েন্স, সৌদি অ্যারামকো, এক্সন মোবিল, রয়্যাল ডাচ শেল, বেদান্ত, উড ম্যাকেনজি,আইএইচএস মার্কিট, স্কালমবার্গার, হ্যালিবাটন্, এক্সকোল, ওএনজিসি, ইন্ডিয়ান অয়েল,গেইল, পেট্রোনেট এলএনজি, অয়েল ইন্ডিয়া, এইচপিসিএল, ডেলোনেক্স এনার্জি, এনআইপিএফপি,ইন্টারন্যাশনাল গ্যাস ইউনিয়ন, বিশ্ব ব্যাঙ্ক এবং ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সিরসিইও এবং আধিকারিকরা যোগ দেন এই বৈঠকে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান ও শ্রী আরকে সিং ছাড়াও আলোচনাবৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নীতি আয়োগ, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক এবংঅর্থ মন্ত্রকের পদস্থ আধিকারিকরা।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রের সিইও-দের এই আলোচনা বৈঠকেসমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করে নীতি আয়োগ। কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাসদপ্তরের মন্ত্রী শ্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান ও শ্রী রাজীব কুমার সিং এবং নীতি আয়োগেরভাইস চেয়ারম্যান তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রের কাজকর্ম ও সাফল্যের একটি সংক্ষিপ্ত চিত্রতুলে ধরেন বৈঠকের সূচনায়। ভারতের শক্তি ও জ্বালানি ক্ষেত্রের সম্ভাব্য চাহিদারবিষয়টিও তাঁরা ব্যাখ্যা করেন আলোচনাকালে। বৈদ্যুতিকরণ এবং এলপিজি’র প্রসারেরক্ষেত্রে যে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি লক্ষ্য করা গেছে, তাও এদিন স্থান পায় তাঁদেরবক্তব্যে।
একটি সংক্ষিপ্ত উপস্থাপনার মাধ্যমে সাম্প্রতিককালে ভারতের তেল ও গ্যাসক্ষেত্রে যে উন্নয়ন ও চ্যালেঞ্জ লক্ষ্য করা গেছে, তা এদিন সকলের কাছে তুলে ধরেননীতি আয়োগের সিইও শ্রী অমিতাভ কান্ত।
গত তিন বছরে ভারতে সংস্কার ও অগ্রগতি প্রচেষ্টার ভুয়সী প্রশংসা করেন বৈঠকেউপস্থিত সিইও এবং আধিকারিকরা। জ্বালানি ক্ষেত্রের সংস্কার প্রচেষ্টায় যে গতি ওচালিকাশক্তি এনে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী তারও উচ্চকিত প্রশংসাকরেন তাঁরা। এক অভিন্ন জ্বালানি নীতি, ঠিকা সম্পর্কিত কাঠামোগত ব্যবস্থা, ভূ-কম্পনসম্পর্কিত তথ্য ও পরিসংখ্যান, জৈব জ্বালানি ব্যবহারে উৎসাহদান, গ্যাসের যোগানবৃদ্ধি, একটি গ্যাস হাব গড়ে তোলা এবং নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থা সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়েরওপর তাঁরা আলোকপাত করেন। জিএসটি’র কাঠামোর মধ্যে গ্যাস ও বিদ্যুতের অন্তর্ভুক্তিরসমর্থনে অংশগ্রহণকারীদের অনেকেই জোরালো সুপারিশ করেন। কেন্দ্রীয় রাজস্ব সচিব শ্রীহাসমুখ আধিয়া তাঁর বক্তব্যে তেল ও গ্যাস ক্ষেত্র সম্পর্কে জিএসটি পরিষদেরসাম্প্রতিক সিদ্ধান্তগুলি ব্যাখ্যা করেন এদিনের আলোচনা বৈঠকে।
বৈঠকে উপস্থিত অন্যান্যদের আলোচনা ও মতামতের জন্য তাঁদের ধন্যবাদ জানানপ্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, গত বছর অর্থাৎ ২০১৬’তে অনুষ্ঠিত শেষ বৈঠকটিতে এমন অনেকপ্রস্তাব ও সুপারিশ পাওয়া গেছে, যা নীতি রচনার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সাহায্য করেছে।বিভিন্ন ক্ষেত্রে এখনও যথেষ্ট মাত্রায় সংস্কারের সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনিউল্লেখ করেন। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত সিইও আধিকারিকরা যেভাবে মূল্যবান প্রস্তাব ওপরামর্শ পেশ করেছেন, সেজন্য তাঁদের ধন্যবাদ জানান শ্রী মোদী।
বৈঠকে অংশগ্রহণকারী সিইও এবং আধিকারিকরা শুধুমাত্র তাঁদের নিজের নিজেরসংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সমস্যা ও সম্ভাবনাকে তুলে না ধরে সার্বিকভাবে তেল ও গ্যাসক্ষেত্রের সার্বিক উন্নয়নে যেভাবে মতামত পেশ করেছেন, সেজন্য তাঁদের বিশেষ প্রশংসাওকরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, যে সমস্ত প্রস্তাব ও পরামর্শ এদিনের বৈঠকে উঠেএসেছে তা নীতি, প্রশাসন এবং নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থার ক্ষেত্রে যথেষ্ট মূল্যবান।
ভারতের শক্তি ও জ্বালানি ক্ষেত্রে সহযোগিতা প্রসারে দৃঢ় অঙ্গীকারের জন্যরাশিয়ার প্রেসিডেন্ট মিঃ ভ্লাদিমির পুতিন এবং রসনেফ্ট কর্তৃপক্ষকে অশেষ ধন্যবাদজানান শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ২০৩০ সালের লক্ষ্যে সৌদি আরবের গৃহীত দৃষ্টিভঙ্গিরওবিশেষ প্রশংসা করেন তিনি। তাঁর সৌদি আরব সফরের কথা বিশেষভাবে স্মৃতিচারণ করেপ্রধানমন্ত্রী বলেন যে, ঐ দেশে জ্বালানি ক্ষেত্রের প্রসার ও উন্নয়নে বেশ কিছুপ্রগতিশীল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে ভারত ও সৌদি আরবের মধ্যেসহযোগিতার নতুন নতুন সুযোগ দেখা দেবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
শ্রী মোদী বলেন, ভারতের জ্বালানি ক্ষেত্রটি বর্তমানে যে অবস্থায় রয়েছে, তারউন্নতি ঘটানো প্রয়োজন। একটি সুসংবদ্ধ জ্বালানি নীতি অনুসরণের জন্য বিভিন্নপ্রস্তাব ও পরামর্শকে স্বাগত জানান তিনি। পূর্ব ভারতে জ্বালানি পরিকাঠামোর প্রসার এবংজ্বালানি শক্তিকে সুলভ করে তোলার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে তিনি মনে করেন। বায়োমাসজ্বালানির সম্ভাবনার বিষয়টিকেও বিশেষভাবে গুরুত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী। কয়লা থেকেগ্যাস উৎপাদনের লক্ষ্যে যৌথ উদ্যোগের ওপর জোর দিয়ে তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রের উদ্ভাবনও গবেষণা প্রচেষ্টার সম্ভাবনার বিষয়গুলিকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানান তিনি।
শ্রী মোদী বলেন, ভারত বর্তমানে আরও স্বচ্ছতার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে। তাই,বিশুদ্ধ জ্বালানির উদ্ভাবন এবং জ্বালানির দিক থেকে দক্ষ এক অর্থনীতির বিকাশ ঘটানোপ্রয়োজন। এর সুফল যাতে সমাজের সকল স্তরের মানুষের কাছে, বিশেষত দরিদ্রদের কাছেপৌঁছে দেওয়া যায়, সেই লক্ষ্যে সমবেত প্রচেষ্টার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।