- ২০১৭-এর মাঝামঝি গুজরাট, রাজস্তান, আসাম, অরুনাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড এবং মণিপুরে বন্যার ফলে পশু ও মানুষের প্রাননাশ, সম্পত্তি এবং পশুসম্পত্তির যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়। যে মুহূর্তে এই সংক্রান্ত খবর পাওয়া গিয়েছে তৎক্ষণাৎ কেন্দ্রীয় সংস্থা ও সকারের একাধিক দফতর কাজে নেমে পরে, সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নিজে ব্যক্তিগত উদ্যোগে বন্যা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন।
- প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে আকাশপথে বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনের পর একাধিকবার দফায় দফায় কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের বিভিন্ন আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলার বিষয়ে পর্যালোচনা করেন। তিনি বন্যা দুরগত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গেও বৈঠক করেন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের সমস্ত ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
- প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তখন ভূমিকম্পগ্রস্থদের জন্য পুনর্বাসনের পাশাপাশি সেই সব এলাকাগুলিতে রাজ্য সরকারের ব্যবস্থাপনায় দারুন নিপুনতার সঙ্গে বিপর্যয় মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছিলেন। ২০০১-এর গুজরাট ভূমিকম্পে ভূজ শহরটি সম্পূর্ণ ধুলোয় মিশে গিয়েছিল তখন নব্য নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরাসরি তত্যাবধানের ফলে উল্লেখযোগ্য গতিতে এবং মাত্রায় এলাকাটিকে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল। তাঁর কাজের ধরণের নমুনা পাওয়া যায় পরবর্তীকালে মুখ্যমন্ত্রী থাকা অবস্থায় উত্তরবঙ্গের বন্যা কবলিত কেদার উপত্যকায় গুজরাটিদের ত্রান এবং উদ্ধারকার্যে নিজে তদারকি করেছিলেন।
- প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দুর্যোগপূর্ণ অবস্থা মোকাবিলা করার একাধিক বাস্তব অভিজ্ঞতা আছে এবং মুখ্যমন্ত্রী থাকা অবস্থায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রাকৃতিক দুর্যোগ সামলানোর অভিজ্ঞতা তাঁকে আরও সাহায্য করেছে। ২০১৪ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের বন্যা সে রাজ্যে ব্যপক আকার নিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তখন সেই রাজ্যে গিয়ে সেখানকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। সেই বন্যাকে তিনি “জাতীয় স্থরের বন্যা” বলে চিহ্নিত করেন এবং অতিরিক্ত ১০০০ কোটি টাকার বন্যা তহবিল গড়েন বন্যা ত্রান এবং উপত্যকার পুননির্মান কাজের জন্য। সময়মতো সেনা মোতায়ন, ত্রান পৌঁছান এবং উদ্ধারকার্য শুরু হওয়ায় একাধিক প্রান বাচান সম্ভব হয়েছিল।
- যে কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দুর্যোগ মোকাবিলা করার জন্য যত দ্রুত সম্ভব কার্যকরী ভুমিকা গ্রহন করেন এবং রাজ্যগুলিকে দুর্যোগ মোকাবিলা ও মুলস্রোতে ফিরে আসার জন্য সবরকম সহযোগিতা করেন। ২০১৫ সালে যখন চেন্নাইয়ের আবহাওয়া খারাপ হয় তখন প্রধানমন্ত্রী সেই পরিস্তিতিকে সর্বাগ্রে রাখেন। সেই সময় যেহেতু চেন্নাইয়ের সঙ্গে স্থলপথে দেশের সঙ্গে সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল তাই ভারতীয় নৌ-সেনার ঐরাবতকে চেন্নাই উপকূলে রাখা হয়েছিল তাঁর মাধ্যমে চিকিৎসার সরঞ্জাম, ঔষধ, ডাক্তার প্রয়োজনে পৌঁছে দেওয়া হত।
- ২০১৫ সালে নেপাল ভূমিকম্পের সময় ভারত প্রথম দেশ যে সে তাঁর প্রতিবেশী দেশকে উদ্ধার করার জন্য এগিয়ে যায়। ‘দুর্যোগ কূটনীতিকে’ নতুনভাবে উপস্থাপনার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতীয় উপমহাদেশের দক্ষনেতা হিসেবে নিজেকে প্রমান করেছেন। প্রতিবেশী দেশে টন টন ত্রানের উপাদানসহ এনডিআরএফ দল পাঠানো হয়েছিল। নেপালে সর্বতভাবে সাহায্য করার জন্য ভারত বিশ্বের কাছে ভূয়সী প্রশংসিত হয়েছে সেই সঙ্গে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ জানান ভূমিকম্পগ্রস্থ নেপাল থেকে তাঁদের দেশের জনগণকে উদ্ধার করতে সাহায্য করার জন্য সেই সঙ্গে ভারতের মাটিতে ইসরায়েলের বিমান অবতরন করতে দেওয়ায় জন্য। প্রধানমন্ত্রী মোদী অন্যান্য দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোড় দিচ্ছেন যাতে বিভিন্ন ধরণের সমস্যা সমাধানে তাঁদের সঙ্গে পারস্পরিক সক্ষতা গড়ে তোলা যায় যা শুধু কোনও দেশের নয় সারা বিশ্বের সমস্যা যেমন আবহাওয়ার পরিবর্তন, প্রাকৃতিক বা মানুষ দ্বারা সৃষ্ট বিপর্যয় এবং আরও অনেক কিছু।
- বিপর্যয়ের সময় যাতে গুরুত্বপূর্ণ দুরাভাস বিচ্ছিন্ন হয়ে না পরে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইসরো নির্মিত সেই রকম একটি উপগ্রহর সফল উৎক্ষেপণকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এটি ভারতের পক্ষ থেকে তাঁর প্রতিবেশী দেশগুলির জন্য একটি উপহার যার জন্য ভারত সার্ক অন্তর্ভুক্ত সাতটি দেশের প্রধানের কাছে ভূয়সী প্রশংসা কুড়িয়েছে।
- বিপর্যয় মোকাবিলা করা এবং এর প্রভাবকে প্রশমিত করা এই দুটি অত্যন্ত জরুরী বিষয় দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়নের জন্য বিশেষত সেই গ্রহের জন্য যেখানে প্রতিনিয়ত আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়। প্রত্যেকটি বিপর্যয় অপরিকল্পিত নগরায়নের কুফলকে সামনে এনে দেয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশে বিশ্বমানের নগরায়নের পরিকল্পনা করছেন সঙ্গে সেন্ডাই-এর বিপর্যয় কমানোর যে নির্দেশিকা আছে তাও কার্যকরী করার চেষ্টা করছেন যার ফলে ক্ষয় ক্ষতির পরিমান কমানো সম্ভব হবে।
- সরকারিভাবে ভারতের পরিকাঠামগত উন্নয়নের পরিকল্পনার কোথাও বিপর্যয় আসলে কিভাবে তা মোকাবিলা করা যাবে দীর্ঘদিন ধরে তাঁর কোনও পরিকল্পিত কাঠামো নেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেই পরিকল্পনাতে ঘাটতি চিহ্নিতকরণের পাশাপাশি দেশের প্রথম ন্যাশনাল ডিসাস্টার ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান তৈরি করছে যাতে যেকোনও ধরণের বিপর্যয়কে মোকাবিলা করা সম্ভব হয়। সেন্ডাইয়ের কাঠামোর সঙ্গে এনডিএমপি এলাকাগুলিকে উন্নয়ন এবং বিপর্যয় মোকাবিলা করার জন্য ধাপে ধাপে সমান্তরাল এবং লম্বালম্বি ভাবে ভাগ করে নিয়েছে।
- বিপর্যয় ক্ষয় ক্ষতি কমানোর বিষয়ে ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে নতুন দিল্লিতে অনুষ্ঠিত এশিয়ান মিনিস্টারিয়াল কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১০ সংখ্যার একটি এজেন্ডা প্রকাশ করেন তাঁতে তিনি সেন্ডাই কাঠামো মেনে চলার ও বাস্তবায়নের সম্পূর্ণ আশ্বাস দেন। সেখানে তিনি বিপর্যয় মোকাবিলাতে মহিলাদের সক্রিয় ভুমিকা গ্রহন করার কথা উল্লেখ করেছেন সেই সঙ্গে বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা, মোকাবিলা এবং বিপর্যয় কমানোর জন্য অন্যান দেশের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
- ভারত একটি উন্নয়নশীল দেশ যাকে বিপর্যয় রোধ করার জন্য তাঁকে অনেক কিছু করতে হবে সেই সঙ্গে পরিবেশের সমতুল্য দীর্ঘমেয়াদী উন্নত নগর পরিকাঠামো। আবহাওয়ার পরিবর্তন এবং ক্রমবর্ধমান প্রাকৃতিক বিপর্যয় একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন ভারত একদিন আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতা এবং বিপর্যয়ের বিপদ কমিয়ে তাঁর মাপযোগ্য ফল পাওয়ার জন্য এজেন্ডায় থাকা সেন্ডাই নির্দেশিকা কার্যকরী করার দিক থেকে মুখ্য স্থান গ্রহন করবে। স্থানীয় থেকে আন্তর্জাতিক সমস্ত স্তরে ভারতের উন্নয়ন পরিকল্পনায় সমস্ত দিকের বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা, প্রশমন, ত্রান এবং পুনর্বাসন উদ্ভাবনের দায়িত্ব নিয়েছে।