নবীনবন্ধুগণ,
আজ একসঙ্গেঅনেকগুলি প্রকল্প উদ্বোধন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানে আপনাদের সঙ্গে সম্মিলিত হওয়ারসুযোগ পেয়েছি। উত্তরপ্রদেশে নবনির্বাচিত সরকার যে উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে স্পষ্টলক্ষ্য নিয়ে উন্নয়নের যাত্রাপথে এগিয়ে চলেছে; দেশের প্রত্যেক প্রান্তের মানুষ এখনঅত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে উত্তরপ্রদেশের প্রতি মুহূর্তের ঘটনাবলীর দিকে নজর রেখেছে। আর,যোগীজির নেতৃত্বে একের পর এক যে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, মন্ত্রিসভার সদস্য ও আমলারাযেভাবে পরিশ্রম করছেন, অনেক বছরের অসুস্থতা, দীর্ঘ সময়ের নানা অবরোধ; এই সমস্তকিছু দূর করতে করতে উত্তরপ্রদেশ তীব্র গতিতে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে, সেজন্য আমিযোগীজি এবং তাঁর টিমের সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই। অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই।
আজ কিছুটা সময়আমি ড্রাগ রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এ অতিবাহিত করার সুযোগ পেয়েছি। আমাদের বৈজ্ঞানিকরামানবকল্যাণে যে সকল ওষুধের প্রয়োজন, সস্তাও হবে আবার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও খুব কমথাকবে কিন্তু উপশম হবে অত্যন্ত দ্রুত, তেমন সব ওষুধ আবিষ্কারের চেষ্টায় তাঁদেরসারা জীবন গবেষণাগারে কাটিয়ে দিচ্ছেন। এই বৈজ্ঞানিকদের আমি বলি আধুনিক ঋষি।মানুষের সমস্ত শারীরিক সমস্যা দূর করার জন্য পরম্পরাগত জ্ঞান-বিজ্ঞানকে আধুনিকযন্ত্রপাতির সাহায্য নিয়ে অত্যাধুনিক ব্যবস্থার মাধ্যমে সহজ পদ্ধতিতে সুলভে উপশমব্যবস্থা করার জন্য তাঁরা দিন-রাত এক করে সন্ন্যাসীদের মতো কঠোর তপস্যা চালিয়েযাচ্ছেন।
আজ মানুষেরসামনে বিশেষ করে, আরোগ্য ক্ষেত্রে অনেক নতুন সমস্যা রয়েছে। একটি ওষুধ তৈরি করতেবছরের পর বছর পেরিয়ে যায়, কয়েকশ’ বৈজ্ঞানিক জীবনপাত করেন। আর যতদিনে নতুন ওষুধতৈরি হয়, তার আগেই আরেকটি নতুন রোগ জন্ম নিয়ে নেয়। একপ্রকার রোগের সঙ্গেবৈজ্ঞানিকদের প্রতিযোগিতা চলতে থাকে। রোগগুলিকে পরাস্ত করতে হবে, আবার দরিদ্র থেকেদরিদ্রতম ব্যক্তিকে সস্তায় কার্যকরী ওষুধ পৌঁছে দিতে হবে। এই প্রতিস্পর্ধাকেস্বীকার করে নিয়ে জয়লাভের জন্য চেষ্টা করতে হবে।
আজ এইপ্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভবন উদ্বোধনের সুযোগ পেয়েছি। শ্রদ্ধেয় ডঃ এ পি জেআব্দুল কালামের নামে এই ভবনের নামকরণ করা হয়েছে। আমি মনে করি না, প্রযুক্তি জগতেরজন্য অন্য কোন নাম ডঃ এ পি জে আব্দুল কালামের থেকে বেশি প্রেরণা যোগাতে পারত।বিজ্ঞান সার্বভৌম, কিন্তু প্রযুক্তি হওয়া উচিৎ স্থানীয়। এখানেই আমাদেরপ্রতিযোগিতা। বিজ্ঞানের সিদ্ধান্ত প্রতিপাদিত হলে, বিজ্ঞানের জ্ঞানকে আমাদের নবীনপ্রজন্মের মধ্যে এভাবে সঞ্চারিত করতে হবে যাতে তাঁরা সবসময়ই ভাবেন যে কোনআবিষ্কারের পথে গেলে প্রযুক্তির ন্যূনতম ব্যবহারে সাধারণ মানুষের জীবনে অধিকতরউৎকর্ষসাধন হবে। আমরা বিশ্বের কাছে গর্ব করে বলি যে ভারতের ৮০ কোটি নব যুবক-যুবতীসেনানী রয়েছে। দেশের ৬৫ শতাংশ মানুষের বয়স ৩৫ বছরের নিচে। তাঁদের মেধা রয়েছে, হাতেদক্ষতা রয়েছে, সঙ্গে বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির আবিষ্কার যোগ হলে আমার দেশের নবযুবক-যুবতীরা সারা পৃথিবীতে নিজেদের সামর্থ্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবে। কিন্তুবিগত শতাব্দীতে যে সব প্রযুক্তির সাহায্যে আমরা সাফল্য পেয়েছি, আজকের যুবক-যুবতীরাসেই প্রযুক্তি নিয়ে তেমন সাফল্য পাবেন না। সেজন্য সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়েসময়োপযোগী প্রযুক্তি গড়ে তুলতে হবে। ভারতের নবীন প্রজন্মের সেই সামর্থ্য রয়েছে।সেই সামর্থ্যকেই আমাদের প্রযুক্তি ক্ষেত্রের নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে হবে।
আজও আমাদেরদেশে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আমাদের সেনাবাহিনীর জন্য অধিকাংশ যুদ্ধ সরঞ্জাম বিদেশথেকে আমদানি করতে হয়। আমরা কি দ্রুত দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রকে আত্মনির্ভর করেতুলতে পারি না? দেশের নিরাপত্তার জন্য যে সমস্ত সরঞ্জামের প্রয়োজন, যে প্রযুক্তিরপ্রয়োজন, যে অস্ত্রশস্ত্র দরকার, আমরা কি ভারতের গবেষণাগারেই সেগুলি নির্মাণ করতেপারি না? নিরাপত্তা ক্ষেত্রে ভারতকে আত্মনির্ভর করে তোলার স্বপ্ন নিয়ে আমরা কয়েকটিনীতিগত পরিবর্তন এনেছি। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রকেও ১০০ শতাংশ প্রত্যক্ষ বিদেশিবিনিয়োগের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছি। ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও যাতে বিদেশিদের সাথেঅংশীদারিত্বের মাধ্যমে বিনিয়োগ করতে পারেন সে ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। ভারত সরকারকোন কোন সরঞ্জাম বাইরে থেকে আমদানি করে তার একটি সূচি আমরা দেশ-বিদেশের সংশ্লিষ্টব্যবসায়ীদের জন্য তৈরি করেছি । আমাদের নবীন প্রজন্মের প্রযুক্তিবিদরা এই সুযোগ হাতছাড়া করবেন না।
তেমনইআরেকটি ক্ষেত্র হচ্ছে চিকিৎসা-বিজ্ঞান। আজ অত্যাধুনিক চিকিৎসা-বিজ্ঞানপ্রযুক্তি-নির্ভর। এখন কার কী রোগ হয়েছে সেটা আর কোন ডাক্তারবাবু নির্ণয় করেন না।কোন না কোন যন্ত্র সেটা নির্ণয় করে দেয়। সেই যন্ত্রের রিপোর্ট অনুযায়ীডাক্তারবাবুরা চিকিৎসা করেন। শুধু ওষুধ দিলেই কাজ চলবে, নাকি শল্য চিকিৎসা করতেহবে সেই নির্ণয় নেন। এই অত্যাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম নির্মাণের ক্ষেত্রে ভারতের মতোবড় দেশকে অনেক দূর যেতে হবে। আমাদের নবীন প্রজন্মের বিজ্ঞানের ছাত্ররা ভাবুনআপনারা কোন সরঞ্জাম নির্মাণের স্টার্ট আপ কারখানা খুলবেন। সে বিষয়ে খোঁজখবর নিন,যাতে অদূর ভবিষ্যতে চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সকল যন্ত্রপাতি ভারতেই উৎপন্ন হয়।এতবড় দেশের এতবড় বাজার আপনারা পাবেন।
আমার ‘মেকইন ইন্ডিয়া’র স্বপ্নকে সাকার করতে ভারতের প্রযুক্তিক্ষেত্রে এগিয়ে নবীন প্রজন্মকেনতুন সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সরকার স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া, স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়া,স্কিল ইন্ডিয়া, মুদ্রা যোজনা ইত্যাদি প্রকল্পের মাধ্যমে যথাযোগ্য ঋণের ব্যবস্থাকরেছে। পাশাপাশি, প্রযুক্তিগত সহায়তা ও মানবসম্পদ উন্নয়নে দক্ষতাকে প্রাধান্যদেওয়ার ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত জ্ঞান বৃদ্ধিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে একপ্রকার সার্বিকদৃষ্টিকোণ নিয়ে এগিয়ে চলেছে। দেশে যে প্রযুক্তিগত জ্ঞান রয়েছে, যে প্রযুক্তিগতউদ্ভাবন রয়েছে, আমাদের যে প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলি রয়েছে, সেগুলিকে সঙ্কুলিতকরে যথাযথ ভারসাম্য রক্ষার মাধ্যমে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে হবে। সুযোগ পেলেআমাদের দেশের নবীন প্রজন্ম যে এই সকল সমস্যাকে অনেক বেশি দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলাকরতে পারে, তার প্রমাণ আমরা বারবার পেয়েছি।
সম্প্রতি, বিশ্বেরতাবড় তাবড় দেশ মঙ্গল গ্রহে মহাকাশ পাঠানোর চেষ্টা করেছে। প্রথম প্রচেষ্টাতেই আজপর্যন্ত কোন দেশ মঙ্গল গ্রহের কক্ষপথে উপগ্রহ প্রতিস্থাপন করতে পারেনি। কিন্তু,ভারতের নবীন প্রজন্মের বৈজ্ঞানিকরা সকলকে চমকে দিয়ে প্রথম প্রচেষ্টাতেই সেই সাফল্যপেয়েছে। তাঁরা গরিব দেশের সন্তান, সেজন্য মঙ্গল গ্রহে মহাকাশ যান পাঠাতেও তাঁরাঅত্যন্ত সুলভ সরঞ্জাম ব্যবহার করেছেন। আমাদের লক্ষ্ণৌ শহরে ট্যাক্সি কিংবাঅটোরিকশ’য় কোথাও গেলে কিলোমিটার প্রতি ১০ টাকা তো লাগবেই। কিন্তু তাঁরা মঙ্গলগ্রহে মহাকাশ পাঠিয়েছেন কিলোমিটার প্রতি মাত্র ৭ টাকা খরচে। আমাদের দেশের মঙ্গলযাত্রায় যা খরচ হয়েছে, হলিউডের অনেক সিনেমা তৈরি করতে তার থেকে বেশি খরচ হয়।আমাদের নবীন প্রজন্মের এই সামর্থ্য রয়েছে। আমাদের দেশে এমন অসংখ্য মেধা রয়েছে,প্রযুক্তিবিদ রয়েছে, বৈজ্ঞানিক রয়েছে। সম্প্রতি ভারত একসঙ্গে ১০৪টি উপগ্রহ মহাকাশেপ্রতিস্থাপন করতে সমর্থ হয়েছে। এই ১০৪-টির মধ্যে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রায়৯০-টি উপগ্রহ ছিল। কারণ, অত্যন্ত সুলভে মহাকাশে উপগ্রহ পাঠানোর ক্ষেত্রে ভারতের যেদক্ষতা রয়েছে তা ঐ দেশগুলি স্বীকার করে নিয়েছে । সেজন্যেই আজ যে প্রযুক্তিবিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভবন উদ্বোধন হচ্ছে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যে কলেজগুলিরয়েছে সেগুলিকেও এই সামর্থ্য গড়ে তোলার কাজে ব্যবহার করতে হবে। আমি জানিউত্তরপ্রদেশে শিক্ষাক্ষেত্রে কাজ করা কত কঠিন! আমাদের রাজ্যপাল শ্রদ্ধেয় রাম নায়েকমহোদয় রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে নিয়মানুবর্তিতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কাজ করেচলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলি কিভাবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ছাত্রছাত্রীদের প্রশিক্ষণসম্পূর্ণ করে পরীক্ষা গ্রহণ করতে পারে এবং ফল প্রকাশ করতে পারে, এসব বিষয় নিয়েচিন্তা করে তিনি রাতের পর রাত অতিবাহিত করছেন। ইতিমধ্যেই এই রাজ্যের ২৮-টিবিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ২৪-টি বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাসময়ে পরীক্ষা গ্রহণ ও ফলপ্রকাশেরক্ষেত্রে তিনি সাফল্য পেয়েছেন। এই নিয়মানুবর্তিতা অত্যন্ত জরুরি। মাননীয় রাজ্যপাললক্ষ্য নির্দিষ্ট করে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির নিয়ম-নীতি, পরম্পরা,নিয়মানুবর্তিতাকে এমন পর্যায়ে পৌঁছে দিতে চাইছেন যাতে ছাত্রছাত্রীদের সময় নষ্ট নাহয় আর, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাঁরা নির্দিষ্ট মানের শিক্ষালাভ করেন। সম্প্রতিযোগীজির নেতৃত্বে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসায় প্রতিকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। মাননীয়রাজ্যপালের কাজ সহজ হয়েছে।
আজ আমিঅত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে এখানে ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’ প্রকল্পের অন্তর্গত বেশকিছু পরিবারের হাতে সম্মতিপত্র তুলে দিতে পারছি। আগামী ২০২২ সালে ভারত স্বাধীনতার ৭৫বছর পূর্তি উৎসব পালন করবে। স্বাধীনতা সংগ্রামীরা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, যেমন দেশেরস্বপ্ন দেখে তাঁরা হাসি মুখে ফাঁসি কাঠে আত্মবলিদান দিয়েছিলেন, গোটা যৌবনকারান্তরালে কাটিয়েছেন, তাঁদের স্বপ্ন সফল করতে আজ দেশের ১২৫ কোটি মানুষ কিসঙ্কল্পবদ্ধ হতে পারি না? আমি দৃঢ় নিশ্চিত যে দেশকে সেই নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়ারসামর্থ্য এই ১২৫ কোটি দেশবাসীর রয়েছে। আমরা স্বপ্ন দেখেছি, আগামী ২০২২ সালে দেশেরপ্রত্যেক দরিদ্র থেকে দরিদ্রতম ব্যক্তির মাথার ওপর নিজস্ব ছাদ থাকবে, ঐ বাড়িতেশৌচালয় থাকবে, বিদ্যুৎ সংযোগ থাকবে, পানীয় জল থাকবে, কাছাকাছি ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনারজন্য বিদ্যালয় থাকবে – এই স্বপ্ন সাকার করার জন্য আমরা গোটা দেশে গ্রামীণ আবাসযোজনার অভিযান চালু করেছি। পাশাপাশি, শুরু করেছি শহরগুলিতেও আমরা ‘প্রধানমন্ত্রীআবাস যোজনা’র কাজ শুরু করেছি। আজ আমি সৌভাগ্যবান যে এই প্রকল্প অনুসারে কয়েকজনমায়ের হাতে সরকারি আবাসনের সম্মতিপত্র তুলে দিতে পেরেছি। একজন মা বলছিলেন, খুবভালো হল। নিজের বাড়ি থেকেই এখন মেয়ের বিয়ে দেব। বিয়েতে আপনাকে ডাকব। তাঁর উৎসাহআমাকে আপ্লুত করেছে। স্বপ্ন যখন সত্যি হতে শুরু করে, তখন মানুষের চেহারা কিরকম হয়তা এই মায়েদের দেখলে বোঝা যায়।
বিদ্যুৎশক্তিক্ষেত্রের উন্নয়নে আজ নতুন প্রযুক্তি প্রণয়নের প্রয়োজন রয়েছে। এক্ষেত্রে আমাদেরনিজস্ব সামর্থ্য রয়েছে, বিশেষ করে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ক্ষেত্রে সৌরশক্তিরমাধ্যমে দেশে একটি বিপ্লব আনার চেষ্টা করছি আমরা। প্রত্যেক বাড়িতে এলইডি বাল্বপৌঁছে দিয়ে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের একটি বড় অভিযান শুরু হয়েছে। প্রায় ২২ কোটিরও বেশিএলইডি বাল্ব এক বছরের মধ্যেই মানুষের বাড়িতে পৌঁছে গেছে। এর ফলে, এক বছরে ঐপরিবারগুলির ১২ থেকে ১৩ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। সাধারণ মানুষের পরিশ্রমেরপয়সা সাশ্রয় হচ্ছে। আজ এখানে ৪০০ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন উদ্বোধন করলাম। এর ফলে,উত্তরপ্রদেশের মধ্যভাগে বিদ্যুৎ পরিবহণে উৎকর্ষ বাড়বে। এই উৎকর্ষ শিল্পক্ষেত্রকেউজ্জীবিত করে তুলবে। আমি শুনেছি আপনাদের এখানে বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রেও ভিআইপিকোটা চালু ছিল। যে জেলাগুলিতে বড় ভিআইপি-রা থাকতেন, সেখানকার মানুষ যে পরিমাণ বিদ্যুৎপেতেন, অন্যান্য জেলার মানুষেরা তা পেতেন না। আমি যোগীজিকে ধন্যবাদ জানাই যে তিনিরাজ্যের ৭৫-টি জেলাকেই সমানভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রশাসনেরএটাই তো কাজ। সবসময় লাভের কথা ভাবলে চলে না। এই কাজ সম্পন্ন করতে কত সমস্যারসম্মুখীন হতে হয় তা আমি জানি। কিন্তু আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে যোগীজি এই কাজে অবশ্যইসফল হবেন।
ভাই ওবোনেরা, আমাদের দেশ উন্নয়নের নতুন অতিক্রম করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। জীবনেরপ্রত্যেক ক্ষেত্রে উন্নয়ন হলে তবেই নতুন উচ্চতা অতিক্রম করা সম্ভব। ১২৫ কোটিমানুষের দেশ, আজ গোটা বিশ্ব স্বীকার করে নিয়েছে যে বিশ্বের বড় দেশগুলির মধ্যেসর্বাধিক দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলা অর্থনীতির দেশ হচ্ছে ভারত। ১২৫ কোটি দেশবাসীমিলেমিশে কাজ করলে, সঙ্কল্প নিয়ে এগিয়ে গেলে, এই পরিবর্তন আসতে বাধ্য।উত্তরপ্রদেশের নাগরিকরাও সবাই মিলে ভাবুন, সঙ্কল্প গ্রহণ করুন, দেখবেন কত দ্রুতপরিবর্তন আসবে।
আগামী ১জুলাই সারা দেশে জিএসটি কার্যকর হচ্ছে। দেশের জন্য এটি অত্যন্ত গর্বের কথা। দেশেরসকল রাজনৈতিক দল, দেশের সকল রাজনৈতিক নেতা, পারস্পরিক সকল বিরোধকে একপাশে সরিয়েরেখে এই জিএসটি প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশের প্রত্যেকটি রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয়সরকার সম্মিলিতভাবে এই ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিয়েছে যা আগামী ১ জুলাই থেকে দেশের অর্থব্যবস্থায় একটি বড় পরিবর্তন আনবে। ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর এটি একটিঐতিহাসিক সিদ্ধি। ভারতের সকল রাজনৈতিক দলের পরিপক্কতার এটি একটি বড় প্রমাণ। দলেরওপরে দেশকে স্থাপন করে ভারতের প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল প্রমাণ করে দিয়েছে যে তারাদেশকে কত ভালবাসে। সেজন্য আমি দেশের প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের প্রতি কৃতজ্ঞ।প্রত্যেক রাজ্য সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ। লোকসভা, রাজ্যসভা এবং প্রত্যেকটি বিধানসভারপ্রত্যেক সদস্যের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। সবাই মিলেই জিএসটি চালু করার ক্ষেত্রে এইসাফল্য অর্জন করেছি আমরা। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, ১ জুলাইয়ের পর থেকে নাগরিকদেরসাহায্যে, বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের সহযোগে আমরা এতবড় দেশে একটিঅভিন্ন কর ব্যবস্থা চালু করতে সফল হব। এই অভিন্ন কর ব্যবস্থা ভারতীয় গণতন্ত্রেরশক্তির পরিচায়ক যা বিশ্বকে এই বার্তা পৌঁছে দেবে যে দেশের সকল রাজনৈতিক দল, ভিন্নভিন্ন মতাবলম্বী মানুষেরাও দেশকে ভালবেসে কিভাবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কত বড়সিদ্ধান্ত নিতে পারে, আর, এত বড় জনসংখ্যা কত দ্রুত এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতেপারে। এটাই ভারতীয় গণতন্ত্রের শক্তি, ভারতীয় গণতন্ত্রের পরিপক্কতার শক্তি। এরকৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী মোদীর নয়। এর কৃতিত্ব কোন নির্দিষ্ট সরকারের নয়। এটি ১২৫কোটি দেশবাসীর কৃতিত্ব।
এত বড় কাজহয়েছে সেটাকে আমাদের বুঝতে হবে। যে সমস্যাগুলি রয়েছে, সেগুলির মোকাবিলা করারব্যবস্থা সরকার নিয়েছে। আমরা সেই সমস্যাগুলি দূর করার চেষ্টা পূর্ণ দমে করে যাব।এই প্রক্রিয়াকে সাফল্যমণ্ডিত করে তুলতে ১ জুলাই থেকে দেশের মানুষ বিশেষ করে,ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগোতে হবে। আপনারা দু’কদম এগিয়ে আসুন, সহজমনে দেশকে এক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার পথে নেতৃত্ব দিন। তাহলে সাফল্য সুনিশ্চিত।
এই আশারেখে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠরত সকল ছাত্রছাত্রীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে, এইবিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত সকলকে অন্তর থেকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমার বক্তব্য সম্পূর্ণকরছি।