প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লির তালকোটরা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় পর্বের ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ অনুষ্ঠানে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অভিভাবকদের সঙ্গে নানা বিষয়ে মতবিনিময় করেন।দেড় ঘন্টারও বেশি সময় ধরে এই মতবিনিময় অনুষ্ঠানে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকদের সকলকেই হাল্কা মেজাজে প্রধানমন্ত্রীর ব্যঙ্গকৌতুক ও রসিকতা মেশানো অভিজ্ঞতা ও মতামতের প্রশংসা করতে দেখা যায়।

এ বছর ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ অনুষ্ঠানে ভারতীয়রা ছাড়াও বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয় ছাত্রছাত্রীরাও যোগ দিয়েছিলেন।

এই মতবিনিময় অনুষ্ঠানের আবহ তৈরি করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ অনুষ্ঠানটিকে ‘ক্ষুদ্র ভারত’ হিসাবে বর্ণনা করেন।তিনি বলেন, এই অনুষ্ঠান ভবিষ্যৎ ভারতের প্রতীক-স্বরূপ।এবারের অনুষ্ঠানে অভিভাবক ও শিক্ষক-শিক্ষিকারাও যোগ দেওয়ায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।

একজন শিক্ষক প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান যে, ছেলেমেয়েদের পরীক্ষার ব্যাপারে মানসিক চাপে থাকা অভিভাবকদের শিক্ষক-শিক্ষিকারা কি পরামর্শ দেবেন? ইউপিএসসি-র পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া এক ছাত্রও প্রধানমন্ত্রীর কাছে একই প্রশ্ন রাখেন।জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরীক্ষাজনিত প্রভাব থেকে সম্পূর্ণ চাপমুক্ত হওয়ার পরামর্শ তিনি কখনই দেবেন না।এ প্রসঙ্গে তাঁর অভিমত, পরীক্ষার মূল বিষয়গুলিকে যথাযথভাবে উপলব্ধি করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলের কাছে প্রধানমন্ত্রী জানতে চান – কোনও একটি পরীক্ষা, আসলে কি জীবনের পরীক্ষা অথবা দশম বা দ্বাদশ শ্রেণীর মতো গ্রেড-ভিত্তিক পরীক্ষা কি না! তিনি আরও বলেন, পরীক্ষার মূল বিষয়টি যখন উপলব্ধি করা সম্ভব হবে, তখন স্বাভাবিকভাবেই মনস্তাত্তিক চাপ দূর হয়ে যাবে।

প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, অভিভাবকদের এটা কখনই আশা করা উচিৎ নয় যে, নিজেদের  অপূর্ণ স্বপ্ন তাঁদের ছেলেমেয়েরা পূরণ করবে।প্রত্যেক ছেলেমেয়ের নিজস্ব সম্ভাবনা ও সক্ষমতা রয়েছে।তাই, প্রতিটি ছেলেমেয়ের ইতিবাচক দিকগুলিকে উপলব্ধি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

শ্রী মোদী বলেন, আশা-আকাঙ্খা জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ।আমরা কেউই হতাশা ও নিরানন্দময় পরিবেশে বেঁচে থাকতে পারি না।

অভিভাবকদের ওপর মনস্তাত্ত্বিক চাপ সংক্রান্ত একগুচ্ছ প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছেলেমেয়েদের সাফল্য অভিভাবকদের কাছে প্রত্যাশার চাবিকাঠি হয়ে উঠতে পারে না।প্রত্যাশা পূরণই যদি মূল মন্ত্র হয়ে যায়, তাহলে বাস্তবতা অধরাই থেকে যায়।কিছু মানুষের বক্তব্য এরকম যে, মোদী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে সকলের প্রত্যাশা বাড়িয়ে দিয়েছে।এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাঁর দৃষ্টিভঙ্গী হ’ল ১২৫ কোটি ভারতবাসীর প্রত্যাশাও হবে ১২৫ কোটির সমতুল।সকলের প্রত্যাশা প্রকাশ করতে হবে এবং এই বিপুল সংখ্যক প্রত্যাশা পূরণে সমবেতভাবে আমাদের সক্ষমতাও বাড়াতে হবে বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।

এক অভিভাবিকা আশঙ্কা-প্রকাশ করে বলেন, এক সময়ে তাঁর ছেলে পড়াশুনায় খুব ভালো ছিল।কিন্তু সে এখন অনলাইন গেম্‌স – এ আক্রান্ত।সন্তানের প্রতি মায়ের এই আশঙ্কার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তির প্রতি আকৃষ্ট হওয়াটা ছাত্রছাত্রীদের কাছে খারাপ – একথা তিনি বিশ্বাস করেন না।তাঁর বিশ্বাস, এটা খুবই ভালো দিক যে, পড়ুয়ারা এখন অনবরত নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।অবশ্য, প্রযুক্তি মানসিকতাবোধের প্রসারেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।স্বাভাবিকভাবেই প্রযুক্তি উদ্ভাবনের পন্থা হয়ে ওঠে।মানসিকতার বিকাশে প্লে-স্টেশন নিঃসন্দেহে ভালো।কিন্তু খেলার মাঠের কথা ভুলে যাওয়াটা বাঞ্ছনীয় নয়।

পরীক্ষার জন্য বরাদ্দ সময়ের পূর্ণ সদ্ব্যবহার সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে শ্রী মোদী বলেন, ১২৫ কোটি ভারতীয়র সকলেই তাঁর পরিবার।তিনি বলেন, যখন একজন ব্যক্তি তাঁর পরিবারের স্বার্থে কাজ করেন, তখন তিনি কিভাবে নিজেকে ক্লান্ত অনুভব করবেন? শ্রী মোদী বলেন, প্রত্যেক দিন তিনি এক নতুন প্রাণশক্তি নিয়ে কাজ করেন।

একদল ছাত্রছাত্রী প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করেন, কিভাবে পড়াশুনাকে আরও আনন্দদায়ক করা যায় এবং কিভাবে পরীক্ষা ব্যবস্থা একজনের ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটাতে পারে? এই প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরীক্ষা ব্যবস্থাকে সঠিক মানসিকতা নিয়ে দেখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।পরীক্ষা ব্যবস্থা একজন ব্যক্তিকে সমস্ত দিক থেকে মজবুত করে তোলে, তাই কোনও ব্যক্তির পক্ষেই পরীক্ষা ব্যবস্থাকে অবজ্ঞা করা সম্ভব নয়।

 

ছাত্রছাত্রীরা সঠিক বিষয় নিয়ে পড়াশুনো এবং পছন্দের কর্মজীবন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ জানতে চান।এই ছাত্রছাত্রীরা আরও বলেন, প্রত্যেকের সক্ষমতা ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে।সুতরাং, প্রতিটি ছাত্রছাত্রী কিভাবে গণিত ও বিজ্ঞানে ভালো ফল আশা করতে পারে।জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি ব্যাপারে স্পষ্ট ভাবনাচিন্তা ও দৃঢ়প্রত্যয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।বিজ্ঞান ও গণিতের মতো অন্যান্য বিষয়ও সমান গুরুত্বপূর্ণ এবং এই বিষয়গুলিতেও আবিষ্কারের অনেক অবকাশ রয়েছে।

 

গত বছরের ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ অনুষ্ঠানে মতবিনিময় পর্বের কথা উল্লেখ করে এক ছাত্রী জানান, এখন বাবা-মা তাঁর পরীক্ষা হোক বা কর্মজীবন সমস্ত বিষয়েই অনেক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।শ্রী মোদী বলেন, অভিভাবকদের ইতিবাচক মনোভাব তাঁর ছেলেমেয়ের জীবনে ব্যাপক অবদান রাখতে পারে।

ছেলেমেয়েদের উৎসাহিত করার প্রয়োজনীয়তা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অন্যদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় সামিল হওয়ার চেয়ে নিজের রেকর্ডের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। একজন ব্যক্তি যখন তাঁর অতীত রেকর্ডের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেন, তখন তাঁর হাতাশা ও নেতিবাচক মনোভাব সহজেই পর্যবসিত হয়।

 

শিক্ষা ব্যবস্থায় আরও উন্নতির প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে ছাত্রছাত্রীরা বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থা কেবল মুখস্ত বিদ্যার প্রবণতাই দূর করে না, একই সঙ্গে পড়ুয়ারা কি শিখেছে, তাও প্রমাণ করে।

প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রসঙ্গে তাঁর জবাবে বলেন, শিক্ষা গ্রহণ পদ্ধতি কেবল পরীক্ষা ব্যবস্থার মধ্যেই সীমিত হতে পারে না।আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে জীবনের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার উপযুক্ত করে তুলতে হবে।

 

হতাশা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মতো দেশে এটা খুবই উদ্বেগের বিষয়।তবে, ভারতীয় সংস্কৃতিতে হতশা মোকাবিলার উপযুক্ত পন্থা রয়েছে।হতাশা ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা যত বেশি খোলাখুলি কথা বলব, জীবনের পক্ষে তা ততধিক ভালো হবে।

শ্রী মোদী আরও বলেন, একজন ব্যক্তি হঠাৎ করেই হতাশার শিকার হন না।এমন অনেক লক্ষণ থাকে, যা দেখে বোঝা যায় – কোনও এক ব্যক্তি হতাশার শিকার হচ্ছেন।এই লক্ষণগুলিকে উপেক্ষা করা মোটেও ভালো দিক নয়।পক্ষান্তরে, এ প্রসঙ্গে আমাদের আরও বেশি কথা বলতে হবে এবং প্রয়োজনে সঠিক পরামর্শও নিতে হবে, যাতে একজন ব্যক্তি তাঁর সমস্যার কথা খোলাখুলি বলতে পারেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Click here to read full text speech

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
2024: A Landmark Year for India’s Defence Sector

Media Coverage

2024: A Landmark Year for India’s Defence Sector
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Governor of Maharashtra meets PM Modi
December 27, 2024

The Governor of Maharashtra, Shri C. P. Radhakrishnan, met Prime Minister Shri Narendra Modi today.

The Prime Minister’s Office handle posted on X:

“Governor of Maharashtra, Shri C. P. Radhakrishnan, met PM @narendramodi.”