মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী মিঃ প্রবীন্দ জগন্নাথজী, মন্ত্রিসভার সদস্যগণ, বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দ এবং বন্ধুগণ। নমস্কার! শুভ অপরাহ্ন।
মরিশাসে সকল বন্ধুকে আমার অভিনন্দন ও উষ্ণ শুভেচ্ছা জানাই।
আপনাদের সঙ্গে আমার এই মতবিনিময় দু’দেশের কাছেই এক বিশেষ মুহূর্ত। আমাদের অভিন্ন ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সহযোগিতার এটি একটি নতুন অধ্যায়। সম্প্রতি মরিশাস ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্রগুলিকে নিয়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল এবং এই প্রতিযোগিতায় মরিশাস উল্লেখযোগ্য সাফল্যে পেয়েছে।
আমাদের দুই দেশেই দুর্গা পুজো উদযাপিত হচ্ছে এবং শীঘ্রই দীপাবলী উৎসব উদযাপন করবো। এই উৎসবগুলি মরিশাসে মেট্রো প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের উদ্বোধনকে আরও আনন্দমুখর করে তুলেছে।
মরিশাসে এই মেট্রো প্রকল্প এক পরিচ্ছন্ন, কার্যকর ও সময়-সাশ্রয়ী পরিষেবা প্রদান করবে। এমনকি এই প্রকল্পের ফলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও পর্যটনের বিকাশ ঘটবে।
আজ আরও একটি প্রকল্পের সূচনা হয়েছে। আপনাদের দেশে অত্যাধুনিক ইএনটি হাসপাতাল গড়ে উঠতে চলেছে। এই হাসপাতাল থেকে উন্নতমানের স্বাস্থ্য পরিষেবা পাওয়া যাবে। বিদ্যুৎ-সাশ্রয়ী এই হাসপাতাল ভবনে যাবতীয় কাজকর্ম কাগজ-কলম ছাড়াই হবে। এই দুটি প্রকল্পই মরিশাসের মানুষের কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। মরিশাসের উন্নয়নে এই প্রকল্প দুটি ভারতের দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতীক-স্বরূপ।
এই প্রকল্প দুটির বাস্তবায়নে হাজার হাজার শ্রমিক দিবারাত্রি রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে কঠোর পরিশ্রম করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী প্রবীন্দ জগন্নাথ মরিশাসে আধুনিক পরিকাঠামো ও পরিষেবা গড়ে তোলার জন্য যে দূরদৃষ্টি গ্রহণ করেছেন, আমি তার প্রশংসা করি। এই প্রকল্প দুটির কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী ও মরিশাস সরকারকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ।
বন্ধুগণ,
আমরা গর্বিত যে ভারত ও মরিশাস এই প্রকল্প দুটি ছাড়াও বৃহত্তর জনস্বার্থে একাধিক প্রকল্পের অংশীদার হয়েছে।
গত বছর মরিশাসের ছোট ছেলেমেয়েদের ই-ট্যাবলেট বা বৈদ্যুতিন উপকরণ দেওয়ার একটি প্রকল্প যৌথভাবে গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জগন্নাথ মেডিকেল ক্লিনিক এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির আধুনিকীকরণে যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, ভারত তাতে সাহায্য করবে বলে আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি।
বন্ধুগণ,
ভারত ও মরিশাস উভয় দেশেই এক স্পন্দনশীল গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা রয়েছে। উভয় দেশই মানুষের সমৃদ্ধির লক্ষ্যে তথা আমাদের অঞ্চল ও বিশ্ব শান্তির জন্য একযোগে কাজ করতে বদ্ধ পরিকর।
আমাদের পারস্পরিক আস্থা ও শ্রদ্ধা বিভিন্নভাবে প্রকাশ পেয়েছে। এ বছর প্রধানমন্ত্রী জগন্নাথ ভারতে প্রবাসী ভারতীয় দিবসের প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। এমনকি, আমার সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের সূচনাতেও তিনি উপস্থিত থেকেছেন।
মরিশাসের স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানেও ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রধান অতিথি হিসাবে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। মহাত্মা গান্ধীর সার্ধশত জন্ম জয়ন্তী উদযাপনেও মরিশাস তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ-চিত্তে শ্রদ্ধা জানিয়েছে এবং মহাত্মার সঙ্গে মরিশাসের নিবিড় সম্পর্কের কথা স্মরণ করেছে।
বন্ধুগণ,
ভারত মহাসাগর, ভারত ও মরিশাসের মধ্যে সেতু হিসাবে কাজ করে। আমাদের দুই দেশের মানুষের কাছে মহাসাগর-কেন্দ্রিক অর্থনীতির বিকাশে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।
‘সাগর’ কর্মসূচি এই অঞ্চলে সমস্ত দেশের নিরাপত্তা ও বিকাশের ক্ষেত্রে একযোগে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করবে।
বিপর্যয় প্রতিরোধী পরিকাঠামো জোটের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসাবে যোগদানের জন্য আমি মরিশাস সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।
ভদ্র মহোদয়গণ,
আগামী এক মাসের মধ্যেই বিশ্ব ঐতিহ্যমণ্ডিত স্থান অপ্রবাসী ঘাটে অপ্রবাসী দিবস উদযাপিত হবে। এই অনুষ্ঠান আমাদের দুই দেশের সাহসী পূর্বসূরীদের সফল সংগ্রামের নিদর্শনকেই প্রতিফলিত করে।
মরিশাসের সাফল্যের ক্ষেত্রে পূর্বসূরীদের এই সংগ্রাম দেশটিকে সমৃদ্ধ করে তুলেছে।
মরিশাসের মানুষের অদম্য মানসিকতাকে আমরা অভিবাদন জানাই।
ভারত – মরিশাস মৈত্রীসুলভ সম্পর্ক দীর্ঘজীবী হোক।
ধন্যবাদ, অনেক অনেক ধন্যবাদ।