দিল্লির অনুমোদনহীন কলোনিগুলির সদস্যরা ও আবাসিক কল্যাণ সংস্থার কর্মকর্তারা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার সাম্প্রতি এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে সম্বর্ধনা প্রদান করেন। এই সিদ্ধান্ত অনুসারে দিল্লির এই সব কলোনিগুলির চল্লিশ লক্ষ বাসিন্দা ওই সব অনুমোদনহীন কলোনীতে বসবাসের স্বত্ব পাবেন এবং তা বন্ধক ও হস্তান্তরের অধিকার পাবেন।
এই অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী শ্রী হরদীপ সিং পুরি , দিল্লির তিন সাংসদ মনোজ তিওয়ারী, হংস রাজ হংস, বিজয় গোয়েল সহ বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।
ওই সভায় ভাষণ দেবার সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সবকা সাথ সবকা বিকাশ”- এই উদ্দেশ্য নিয়েই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, রাজনীতির উপর উঠে সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক আনুগত্য, ধর্মের ভেদাভেদের উর্ধে উঠে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে। স্থানীয় সাংসদ, বিধায়ক, কলোনীর বাসিন্দা সহ সমাজের সকলের সঙ্গে আলোচনা করে পিএম-উদয় প্রকল্পটির সূচনা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
একে প্রধানমন্ত্রী দিল্লির ওই সব অঞ্চলের বাসিন্দাদের জয় বলে বর্ণনা করেন। তাঁদের জীবনে পরিবর্তন আসবে, এই আশা নিয়ে অতীতে এঁরা সব সরকারের সঙ্গে সহযোগিতার চেষ্টা করেছেন। তিনি জানান, সরকার এই সব নাগরিকদের জীবনে অনিশ্চয়তা বা অস্থায়িত্ব আসুক, তা চায় না। তাই তাঁরা যেন স্বত্ব ও হস্তান্তরের অধিকার পান সেই লক্ষ্যে আইন আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর ফলে যুগের পর যুগ ধরে তাঁরা যে অনিশ্চয়তায় ভুগছিলেন তার অবসান হবে এবং তাঁদের বাস্তুচ্যুত হবার আশঙ্কা কেটে যাবে। তাঁদের জীবনে শান্তি বিরাজ করবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন,” এর ফলে সমগ্র দিল্লির ভাগ্য পরিবর্তিত হবে। দিল্লির ভাগ্য যতক্ষণ না বদলাচ্ছে, দেশের ভাগ্যও ততক্ষণ বদলাবে না।“
দশকের পর দশক দেশের অবক্ষয়ের প্রসঙ্গ বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা উত্তর কালে, দেশে সিদ্ধান্তহীনতা , সিদ্ধান্ত না নেওয়া অথবা প্রসঙ্গ ঘুরিয়ে দেওয়ার সংস্কৃতি চলছিল। এর ফলে আমাদের জীবনে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।
জম্মু ও কাশ্মীরের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংবিধানের অস্থায়ী ৩৭০ ধারার জন্য ওই অঞ্চলের স্থায়িত্ব আসে নি , বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছিল। একইভাবে তিন তালাকের জন্য গৃহবধুদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। সরকার এই ধরণেরঅসঙ্গতি দূর করেছে এবং একই ভাবে এই সব কলোনির চল্লিশ লক্ষ বাসিন্দার বাস্তুচ্যুত হবার আশঙ্কা দূর করার লক্ষে কাজ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী আরো জানান, মধ্যবিত্তদের জন্য থেমে থাকা আবাসন প্রকল্পগুলি আবার শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে দেশের সাড়ে চার লক্ষ গৃহ ক্রেতার সুবিধে হবে। তাঁরা আবারো শান্তিতে জীবন নির্বাহ শুরু করতে পারবেন।
তিনি বলেন পিএম-উদয় প্রকল্প দিল্লির এই সব বাসিন্দাদের জীবনে নতুন প্রভাত নিয়ে আসবে।
প্রধানমন্ত্রী এই প্রসঙ্গে ২০২২ সালের মধ্যে সকলের জন্য আবাসের ব্যবস্থা করার লক্ষ্যে তাঁর সরকারের অঙ্গীকার পুণরায় ব্যক্ত করেন।
পিএম –উদয়ের প্রেক্ষাপটঃ-
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার ২৩শে অক্টোবরের বৈঠকে দিল্লির অনুমোদনহীন কলোনিগুলির বাসিন্দাদের বসবাসের স্বীকৃতির প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। এই মর্মে ২৯শে অক্টোবর বিজ্ঞপ্তি জারী করা হয়।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা এই সম্পত্তির মালিকানাকে স্বীকৃতি দিতে আইনসম্মত প্রতিনিধির সাধারণ ক্ষমতা, ইচ্ছাপত্র, বিক্রয়ের চুক্তি, প্রদত্ত অর্থ ও অধিকার সংক্রান্ত নথীকে মান্যতা দেবার লক্ষ্যে সংসদে একটি বিল পেশ করবার অনুমতি দিয়েছে।
প্রস্তাবিত বিলে বর্তমান আইনের আওতায় এলাকাভিত্তিক করের পরিবর্তে রেজিস্ট্রেশন চার্জ ও স্ট্যাম্প ডিউটি বাবদ স্বল্প মূল্য সরকার ধার্য করতে পারবে। এর ফলে ওই সব অনুমোদনহীন কলোনীর বাসিন্দাদের বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনা করে তাঁদের এককালীন ছাড় দেওয়া হবে।