প্রধানমন্ত্রী আইআইএম সম্বলপুরের স্থায়ী ক্যাম্পাসের শিলান্যাস করেছেন
নয়াদিল্লী, ২ জানুয়ারি, ২০২১
প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আইআইএম সম্বলপুরের স্থায়ী ক্যাম্পাসের শিলান্যাস করেছেন। অনুষ্ঠানে ওড়িশার রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী রমেশ পোখরিয়াল ‘নিশাঙ্ক’, শ্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান এবং শ্রী প্রতাপ চন্দ্র সারেঙ্গি উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী এই অনুষ্ঠানে বলেছেন আইআইএম সম্বলপুরের স্থায়ী ক্যাম্পাসটি ওড়িশার সংস্কৃতি ও সম্পদের নিদর্শন হিসেবে গড়ে উঠবে, একইসঙ্গে ম্যানেজমেন্টের বিষয়ে রাজ্যকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এনে দেবে। তিনি বলেছেন সম্প্রতি দেশে ভারতীয় বহুজাতিক সংস্থা দেখা যাচ্ছে, এর আগে ভারতে বিদেশ থেকে বহুজাতিক সংস্থা আসতো। সম্প্রতি সমস্যাদীর্ণ সময়ে ভারতে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের শহরগুলিতে স্টার্ট-আপ সংস্থা আরও বেশি করে দেখা যাচ্ছে, কৃষিক্ষেত্রে দ্রুত সংস্কার হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীদের দেশের চাহিদার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে তাদের কেরিয়ার গড়তে প্রধানমন্ত্রী পরামর্শ দিয়েছেন। নতুন এই দশকে ব্র্যান্ড ইন্ডিয়াকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এনে দেওয়ার দায়িত্ব ছাত্রছাত্রীদের বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় সংস্থাগুলিকে আন্তর্জাতিক মানের করে তোলার জন্য ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেছেন। সম্বলপুর অঞ্চলে যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকায় কিভাবে এখানে পর্যটন শিল্পের প্রসার ঘটানো যায় তা নিয়ে তিনি ছাত্রছাত্রীদের ভাবনাচিন্তা করতে বলেছেন। স্থানীয় হস্তশিল্প, বস্ত্র ও উপজাতিদের শিল্পকলারও যথেষ্ঠ সম্ভাবনা রয়েছে। এগুলি নিয়ে তিনি কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। আত্মনির্ভর ভারত অভিযানে ভূমিকা রাখার জন্য এই অঞ্চলের প্রচুর খনিজ সম্পদ এবং অন্যান্য সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিয়ে কাজ করারও পরামর্শ আইআইএম-এর ছাত্রছাত্রীদের শ্রী মোদী দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আত্মনির্ভরতা মিশন, স্থানীয় পণ্য ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মধ্যে তাদের সেতুবন্ধের কাজ করতে হবে যাতে স্থানীয় পণ্যকে আন্তর্জাতিক স্তরে পরিচিত করার জন্য উদ্ভাবনমূলক বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া যায়। শ্রী মোদী বলেছেন, ‘উদ্ভাবন, সমন্বয় ও বিশুদ্ধতার মন্ত্রে তোমাদের ম্যানেজমেন্টের দক্ষতা দেখাতে হবে’।
প্রধানমন্ত্রী সংযোজিত মুদ্রণ, উৎপাদন প্রক্রিয়ার প্রযুক্তির পরিবর্তন, লজিস্টিক্স ও সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যবস্থাপনার নতুন ধারার মতো ম্যানেজমেন্টের সর্বশেষ ধারা নিয়ে আলোচনা করেছেন। এই প্রযুক্তিগুলি ডিজিটাল সংযোগের সঙ্গে যুক্ত এবং বিশ্বের যেকোন প্রান্ত থেকে এখন কাজ করার যে সুবিধা তৈরি হয়েছে তাতে সারা পৃথিবী একটি গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হয়েছে। ভারত সম্প্রতি বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্রুত সংস্কার হাতে নিয়েছে এবং পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার পাশাপাশি ভবিষ্যতে কি হতে চলেছে সে বিষয়ে ধারণা করে আগে থেকেই প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন বর্তমান পরিবর্তিত কর্মধারায় ম্যানেজমেন্টের দক্ষতার ক্ষেত্রেও পরিবর্তন এসেছে। এখন ওপর থেকে নিচে অথবা উপর মহলে বেশি পরিমাণে ম্যানেজমেন্টে দক্ষ ব্যক্তিদের থাকার বদলে সহযোগী, উদ্ভাবনমূলক ও সংস্কারমুখী ম্যানেজমেন্টের ধারণা গ্রহণ করা হচ্ছে। বর্তমানে নিচু স্তরে কারিগরি ক্ষেত্রে ম্যানেজমেন্টকে হিউম্যান ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
যেভাবে ভারতে উদ্ভাবনমূলক উদ্যোগে সহযোগিতার মাধ্যমে কোভিড পরিস্থিতির মোকাবিলা করা হয়েছে তা নিয়ে শ্রী মোদী ছাত্রছাত্রীদের গবেষণার আহ্বান জানিয়েছেন। কিভাবে স্বল্প সময়ের মধ্যে দক্ষতা এবং ক্ষমতার প্রসার ঘটানো সম্ভব হয়েছে সেই বিষয় নিয়েও তিনি গবেষণা করতে বলেছেন। দেশ বর্তমানে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে স্বল্প মেয়াদী উদ্যোগের পরিবর্তে দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের দিকে কাজ করায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এই প্রসঙ্গে জনধন অ্যাকাউন্ট ও রান্নার গ্যাসের সংযোগর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ২০১৪ সালে যেখানে মাত্র ৫৫ শতাংশ মানুষ রান্নার গ্যাসের ব্যবহার করতেন, আজ তা বৃদ্ধি পেয়ে ৯৮ শতাংশে পৌঁছেছে। বিপুলভাবে উদ্ভাবন, পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের ফলেই এটি সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘ম্যানেজমেন্টের অর্থ বড় বড় সংস্থাগুলির কাজকর্ম পরিচালনা করাই শুধু নয়, ম্যানেজমেন্টের সাহায্যে মানুষের জীবনকেও রক্ষা করতে হবে’।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেছেন, ভালো ম্যানেজার হতে হলে দেশের সামনে যে সব চ্যালেঞ্জগুলি রয়েছে, সেগুলিকে বুঝতে হবে। এর জন্য উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে শুধু বিশেষ একটি দিকেই গুরুত্ব দিলে চলবেনা, তাদের বিপুল সুযোগ গড়ে তুলতে হবে। দীর্ঘ দিন ধরে পেশাদারী শিক্ষার একটি বিশেষ ক্ষেত্রেই আবর্তিত হয়ে থাকার বিষয়টি থেকে বেরিয়ে আসার জন্যই জাতীয় শিক্ষা নীতিতে বৃহত্তর, বহু বিষয়ক সর্বাঙ্গীণ উদ্যোগের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।