প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ তাঁর বাড়িতে সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণকারী আদিবাসী অতিথি, এনসিসি ক্যাডেট, এনএসএস স্বেচ্ছাসেবক ও ট্যাবলোর শিল্পীদের সঙ্গে মত বিনিময় করেছেন। এই অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী রাজনাথ সিং, শ্রী অর্জুন মুন্ডা, শ্রী কিরেণ রিজিজু এবং শ্রীমতী রেণুকা সিং সারুতা উপস্থিত ছিলেন।
এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে আদিবাসী অতিথি, শিল্পী, এনসিসি ক্যাডেট, এনএসএস ক্যাডটদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্রত্যেক নাগরিকের উৎসাহ উদ্দীপনা পূর্ণ হয়। এর মাধ্যমে দেশের বৈচিত্র্য তুলে ধরা হয়, যা সকলকে গর্বিত করে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভারতের মহান সামাজিক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং সংবিধানকে এই সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানানো হয়। যা আসলে বিশ্বের বৃহত্ত্ম গণতন্ত্রের জীবনী শক্তিকে প্রতিফলিত করে।
প্রধানমন্ত্রী এই বছরের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেছেন, দেশ স্বাধীনতার ৭৫ তম বছরের দিকে এগিয়ে চলেছে এবং আমরা গুরু তেগ বাহাদুরজির ৪০০ তম প্রকাশ পর্ব উদযাপন করছি। এবছর থেকে নেতাজীর সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মবার্ষিকী উদযাপনকে পরাক্রম দিবস হিসেবে পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই অনুষ্ঠানগুলি দেশের জন্য কাজ করার ক্ষেত্রে আমাদের আরো উৎসাহিত করতে অনুপ্রেরণা যোগায় বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাসভবনে আসা যুবক-যুবতী অতিথিবৃন্দকে বলেছেন, এদেশের নাগরিকদের উচ্চাকাঙ্খা সামগ্রিক শক্তির মধ্যে নিহিত। তিনি বলেছেন, ভারত মানে হলো – অনেক রাজ্য -এক দেশ, অনেক সম্প্রদায় -এক আবেগ, অনেক পথ -এক লক্ষ্য, অনেক রীতিনীতি -এক মূল্যবোধ, অনেক ভাষা -এক প্রকাশ এবং অনের বর্ণ- একটি ত্রিবর্ণ। এই অভিন্ন লক্ষ্যের গন্তব্য হলো “এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত।” তিনি অতিথি যুবক-যুবতীদের কাছে আবেদন করেছেন দেশের প্রতিটি অংশে একে অনন্যের সংস্কৃতি, খাদ্যাভ্যাস, ভাষা এবং শিল্পের বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে তাঁরা যেন একযোগে কাজ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত”, “লোকাল ফর ভোকাল” আন্দোলনকে শক্তি যোগায়। যখন দেশের একটি অংশ অন্য অংশের উৎপাদিত পণ্যের জন্য গর্ব অনুভব করে এবং সেই বিষয়ে প্রচার চালায় তখনই স্থানীয় পণ্যটি জাতীয় পণ্য হয়ে ওঠে এবং আন্তর্জাতিক স্তরে উন্নীত হয়। শ্রী মোদী বলেছেন, আমাদের যুব-যুবতীদের উপরই “ভোকাল অফ লোকাল” এবং “আত্মনির্ভর অভিযান”-এর সাফল্য নির্ভর করছে।
দেশের যুব সম্প্রদায়ের সঠিক দক্ষতা অর্জনের প্রয়োজনিয়তার উপর প্রধানমন্ত্রী গুরুত্ব দিয়েছেন। দক্ষতার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে তিনি জানিয়েছেন, ২০১৪ সালে দক্ষতা বিকাশ মন্ত্রক তৈরি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই সাড়ে ৫ কোটি যুবক যুবতী বিভিন্ন দক্ষতা অর্জন করেছেন যার মধ্য দিয়ে তাঁরা আত্মনির্ভর ও রোজগারের সংস্থান করতে পেরেছেন। নতুন শিক্ষা নীতিতে দক্ষতার বিষয়টি প্রতিফলিত হয়, যেখানে জ্ঞানের প্রয়োগের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। এই নীতির মুখ্য বৈশিষ্ট্য হলো নিজের পছন্দ অনুসারে বিষয় বাছার সুযোগ দেওয়া। এই প্রথমবার কারিগরি শিক্ষাকে, শিক্ষার মূল ধারায় নিয়ে আনার গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের পছন্দ অনুসারে, স্থানীয় চাহিদা ও ব্যবসা বাণিজ্যর কথা বিবেচনা করে একটি বিষয় নির্বাচন করতে পারবে। পরবর্তীতে মধ্য পর্যায়ে শিক্ষা ব্যবস্থা ও কারিগরি শিক্ষাকে সমন্বিত করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী করোনার সময়কালে এবং বিভিন্ন প্রয়োজনে এনসিসি ও এনএসএস-এর ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। এই মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পরবর্তী পর্যায়ে তিনি তাঁদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। টিকাকরণ কর্মসূচীতে তাঁদের সাহায্য চেয়ে দেশ ও সমাজের প্রতিটি স্তরে টিকার সচেতনতা প্রচারের তিনি আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “এই টিকা উদ্ভাবন করে আমাদের বিজ্ঞাবানীরা তাঁদের কর্তব্য পালন করেছেন আর এখন সময় আমাদের। সবরকমের মিথ্যে প্রচার ও গুজবকে পরাস্থ করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে” ।