গিফটসিটিতে ভারতের প্রথম আন্তর্জাতিক স্টক এক্সচেঞ্জ ‘ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনালএক্সচেঞ্জ’-এর উদ্বোধনে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি আনন্দিত| বস্তুত এটি ভারতেরঅর্থনৈতিক ক্ষেত্রের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান|
আপনারাযেভাবে জানেন, এই প্রকল্পটি ২০০৭ সালে রূপায়ণ শুরু হয়েছিল| এর লক্ষ্য ছিল ভারতেরজন্য আন্তর্জাতিক স্তরের অর্থ ও তথ্য-প্রযুক্তি কেন্দ্র গড়ে তোলা, যাতে শুধুমাত্রভারতের জন্য নয় গোটা বিশ্বের জন্যই পরিষেবা প্রদান করা যায়|
এখনকারমত আমি সেই দিনগুলিতেও যেখানেই যেতাম, আমি সে দেশের প্রথম সারির অর্থনৈতিকবিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করতাম| সেটা নিউইয়র্ক, লন্ডন, সিঙ্গাপুর, হংকং অথবাআবুধাবি যেখানেই হোক না কেন, আমি তাঁদের মধ্যে অনেককেই পেতাম যারা ভারতীয় বংশোদ্ভুত|অর্থনৈতিক বিশ্ব সম্পর্কে তাঁদের ধারণা সম্পর্কে এবং সেই দেশে তাঁদের অবদানের কথাভেবে আমি প্রভাবিত হতাম|
আমিভাবতাম, “আমরা কীভাবে এইসব মেধাবীদের ফিরিয়ে আনতে পারবো এবং সেইসঙ্গে সমগ্রঅর্থনৈতিক বিশ্বে নেতৃত্ব দিতে পারবো?”
গণিতেরক্ষেত্রে ভারতের সুপ্রাচীন ঐতিহ্য রয়েছে| ভারত দু’ হাজার বছরেরও আগে ‘শূন্য’ এবং‘দশমিক পদ্ধতি’র ধারণার উদ্ভাবন করেছিল| তথ্য-প্রযুক্তি এবং অর্থনীতি, যেখানেশূন্য-এর জ্ঞান বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে থাকে, সেখানে ভারত যে এখন সামনেরসারিতে রয়েছে তা কোনো কাকতালীয় বিষয় নয়|
গিফটসিটি যখন ধারণার পর্যায়ে ছিল, তখন আমি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম| প্রযুক্তিগতঅগ্রগতি তখন বহুমুখী ক্ষেত্রে দ্রুত গতিতে হচ্ছিল| ভারতীয় বংশোদ্ভুত বিশ্বমানেরমেধা আমাদের ছিল, যারা ভারতে ও দেশের বাইরে কর্মরত| তথ্য-প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ভারতছিল নেতৃত্বের স্থানে| অর্থনীতি দ্রুতগতিতে প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছিল| এটাআমাদের কাছে পরিষ্কার ছিল যে, প্রযুক্তি অর্থনীতির সঙ্গে জড়িত, অথবা কখনও কখনও একেযে “ফিনটেক” নামে ডাকা হয়, তা ভারতের ভবিষ্যত উন্নয়নের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ|
অর্থনীতিরক্ষেত্রে ভারতকে কীভাবে এক সুবিবেচক নেতা হিসেবে তৈরি করা যায়, তা নিয়ে আমিবেশকিছু বিশেষজ্ঞের সঙ্গে আলোচনা-পরামর্শ করেছি| এটা পরিষ্কার যে বিশ্বের সমস্তবাজারে লেনদেন করার জন্য আমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ সুবিধা ও সক্ষমতা থাকা প্রয়োজন| এইদৃষ্টিভঙ্গি থেকেই গিফট সিটি’র জন্ম| আমাদের লক্ষ্য ছিল অর্থনীতি ও প্রযুক্তিরক্ষেত্রে ভারতের বিশ্ব মানের মেধাকে বিশ্ব মানের সুবিধা প্রদান করা| আজ এইএক্সচেঞ্জ-এর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে আমরা সেই লক্ষ্য পূরণের এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলকে এসে পৌঁছেছি|
আমি২০১৩ সালের জুন মাসে একটি বই প্রকাশের অনুষ্ঠানে গিয়ে বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ অর্থাৎবি.এস.ই. পরিদর্শন করেছি| সে সময় বিশ্বকে পেছনে ফেলে দেওয়া যায় এমন মানেরআন্তর্জাতিক স্টক এক্সচেঞ্জ তৈরি করার জন্য আমি বি.এস.ই.-কে আমন্ত্রণ জানাই| ২০১৫সালে ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাট’ অনুষ্ঠানের সময় তারা গুজরাট সরকারের সঙ্গে একটি মউস্বাক্ষর করে| আজ আমি এই নতুন ‘ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল এক্সচেঞ্জ’-এর উদ্বোধনেএখানে থাকতে পেরে আনন্দিত| এটা একুশ শতকের পরিকাঠামো গড়ার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র গিফটসিটিরই নয়, গোটা ভারতবর্ষের ক্ষেত্রেই একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইল ফলক|
আমাকেবলা হয়েছে, এই এক্সচেঞ্জ প্রথম পর্যায়ে ইকুইটি, পণ্য, মুদ্রা এবং সুদের হারেরউদ্ভুত বিষয় নিয়ে বাণিজ্য করবে| পরবর্তী পর্যায়ে তা ভারতীয় ও বিদেশি কোম্পানিরইকুইটি ইনস্ট্রুমেন্ট বাণিজ্য করবে| আমাকে বলা হয়েছে, মশলা বন্ডও এখানে বাণিজ্যেরজন্য সহজলভ্য হবে| এশিয়া, আফ্রিকা এবং ইউরোপের বিভিন্ন কোম্পানি এই গুরুত্বপূর্ণআন্তর্জাতিক অর্থকেন্দ্র থেকে তহবিল তুলতে পারবে| সর্বাধুনিক বাণিজ্য, ক্লিয়ারিংএবং সেটেলমেন্ট পদ্ধতি নিয়ে এই এক্সচেঞ্জ পৃথিবীর দ্রতগতি সম্পন্ন এক্সচেঞ্জগুলির মধ্যমণিহয়ে উঠবে| প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে ভারত এক অসাধারণ সময় মান-মণ্ডলে রয়েছে| আমাকেবলা হয়েছে, এই এক্সচেঞ্জ দিনে বাইশ ঘণ্টা করে কাজ করবে| সকালে জাপানি মার্কেট শুরুহওয়ার সময় শুরু হবে এবং রাতে আমেরিকার মার্কেট বন্ধ হওয়ার সময় বন্ধ হবে| আমিনিশ্চিত যে, পরিষেবা প্রদানের মানে এবং সময় মান-মণ্ডলের মধ্যে লেনদেনের গতিতে এইএক্সচেঞ্জ এক নতুন মানদণ্ড তৈরি করবে|
এইএক্সচেঞ্জ গিফট সিটি আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরিষেবা কেন্দ্র অর্থাৎআই.এফ.এস.সি.-এর একটি অংশ| আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরিষেবা কেন্দ্র-এর ধারণা সাধারণহলেও শক্তিশালী| এর লক্ষ্য হচ্ছে বিদেশের প্রযুক্তি ও নিয়ন্ত্রক পরিকাঠামোর সঙ্গেদেশীয় প্রতিভা প্রদান করা| বিদেশের অর্থনৈতিক কেন্দ্রগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতারক্ষেত্রে ভারতীয় সংস্থাগুলিকে একই মঞ্চের সুযোগ করে দেওয়া এর উদ্যেশ্য| গিফট সিটিআই.এফ.এস.সি. বিশ্বের অন্যান্য যেকোনো প্রথম সারির আন্তর্জাতিক অর্থ কেন্দ্রেরসমতুল্য সুবিধা ও ব্যবস্থাপনা প্রদান করতে সক্ষম হবে|
ভারতেরমত বিশাল দেশে বিস্তৃত দেশীয় বাজার নিয়ে বিদেশের মত পরিকাঠামো তৈরি করা সহজ কাজনয়| ভারতকে ছোট দেশের সঙ্গে তুলনা করা যায় না| সেইসব দেশের খুব ছোট আকারের স্থানীয়বাজার থাকে এবং তাই তারা বিশেষভাবে অনুকূল কর ও নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থা গ্রহণ করতেপারে| বড় আকারের দেশ তা করতে পারে না| ভারতের মত বড় দেশে বিদেশের মত কেন্দ্র গড়েতোলা পরিচালনাগত প্রতিকুলতার জন্ম দেয়| আমি আনন্দিত যে অর্থমন্ত্রক, রিজার্ভব্যাঙ্ক এবং সেবি (এস.ই.বি.আই.) এই নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থা নিয়ে সমাধান খুঁজেপেয়েছে|
দীর্ঘদিনথেকেই এই সমালোচনা রয়েছে যে, ভারতীয় অর্থনৈতিক পরিকাঠামোতেও বর্তমানে বিদেশেপ্রচুর বাণিজ্য হচ্ছে| এটা বলা হচ্ছে যে, কিছু ভারতীয় অর্থনৈতিক বিষয়ের জন্যও ভারতমূল্য নির্ধারক হয়ে উঠতে পারছে না| গিফট সিটি সেইসব বিভিন্ন সমালোচনা প্রশমিতকরবে| কিন্তু গিফট সিটি নিয়ে আমার দৃষ্টিভঙ্গি আরও বৃহত্তর ক্ষেত্রে প্রসারিত|আমার দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে, এখন থেকে দশ বছরের মধ্যে গিফট সিটিকে অন্তত বিশ্বের কিছুবৃহত্তর বাণিজ্য বিষয়ে মূল্য নির্ধারক হয়ে উঠতে হবে| সেটা পণ্য, মুদ্রা, ইকুইটি,সুদের হার অথবা অন্য যেকোনো অর্থনৈতিক বিষয়ে হতে পারে|
ভারতকেআগামী কুড়ি বছরে ত্রিশ কোটি নতুন কর্মসংস্থান করতে হবে| এটা একটা বিশাল কর্মযজ্ঞ|পরিষেবা ক্ষেত্রে দক্ষ এবং ভালো বেতনের কর্মসংস্থানকে এই কর্ম-বিপ্লবের অংশ হতেহবে| ভারতীয় তরুণরা তা করতে পারেন| গিফট সিটির জন্য যে আন্তর্জাতিক সুযোগ আমাদেরতরুণরা পাবেন, তা এদের মধ্য থেকে আরও বেশি অংশকে এই গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে যুক্তহওয়া সুনিশ্চিত করবে| আমি দক্ষতাপূর্ণ ও পৃথিবীর মধ্যে শ্রেষ্ঠ অর্থনৈতিক কর্মজীবীতৈরির ক্ষেত্রে সহায়তা করার জন্য ভারতীয় কোম্পানি, এক্সচেঞ্জ এবং নিয়মকদের আহ্বানজানাবো| তারা যাতে এই বিশেষ নতুন সিটিতে কাজ শিখতে পারে এবং গোটা বিশ্বকে পরিষেবাপ্রদান করতে পারে| আগামী দশ বছরে আমি আশা করি এই সিটি কয়েক লক্ষ কর্মসংস্থান করবে|
আপনারাজানেন, আমি স্মার্ট সিটির উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত| গিফট সিটি হচ্ছে দেশের সত্যিকারেরপ্রথম সম্পূর্ণ স্মার্ট সিটির ভিত্তি| গিফট সিটি কিভাবে এর মূল পরিকাঠামো তৈরিকরেছে, যার ফলে বিশ্বের শ্রেষ্ঠদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারছে, তা দেশের একশটিস্মার্ট সিটি বোঝার চেষ্টা করবে| আমি আগেও বলেছি যে, ভারত একটি প্রজন্মের মধ্যেইউন্নত দেশ হয়ে উঠতে পারে| আমাদের স্বপ্নের নতুন ভারত গড়ার জন্য নতুন শহরগুলিগুরুত্বপূর্ণ| যেখানে আমাদের স্বপ্ন হচ্ছে:
–এক আত্মবিশ্বাসী ভারত
–এক সমৃদ্ধ ভারত
–এক সর্ব্যাপী ভারত
–আমাদের ভারত
আমি এর মধ্য দিয়ে ‘ইন্ডিয়াইন্টারন্যাশনাল এক্সচেঞ্জ’-এর সূচনার ঘোষণা করছি| আমি গিফট সিটি এবং ইন্ডিয়াইন্টারন্যাশনাল এক্সচেঞ্জ-এর সমৃদ্ধি কামনা করি|
আপনাদের ধন্যবাদ|
Delighted to be here at Gift City to inaugurate India’s first international stock exchange,that is the India International Exchange: PM
— PMO India (@PMOIndia) January 9, 2017
Indians are at the forefront of IT and finance, says PM @narendramodi. pic.twitter.com/5fjpOCeR2G
— PMO India (@PMOIndia) January 9, 2017
An important milestone for creating 21st century infrastructure: PM @narendramodi @VibrantGujarat #TransformingIndia pic.twitter.com/z8dpFtRGRW
— PMO India (@PMOIndia) January 9, 2017
India International Exchange will set new standards of quality of service and speed of transactions: PM @narendramodi pic.twitter.com/vahzh6GNU5
— PMO India (@PMOIndia) January 9, 2017
Combination of talent and technology....enabling Indian firms to compete on an equal footing with offshore financial centres. pic.twitter.com/ensTKBwang
— PMO India (@PMOIndia) January 9, 2017
New cities will be important in creating the new India of our dreams! pic.twitter.com/v5Cr9WX2j3
— PMO India (@PMOIndia) January 9, 2017