তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল,
লোকসভার উপাধ্যক্ষ,
তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী,
তামিলনাড়ুর উপ-মুখ্যমন্ত্রী,
মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মীবৃন্দ,
বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দ এবং
বন্ধুগণ
কালই ওনক্কম!
নমস্কারম্!
আপনাদের সকলকেই জানাই ‘সুপ্রভাত’!
ডিফেক্সপো-র এটি হল দশম পর্ব।
আপনাদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো এই ধরণের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন বেশ কয়েকবার। আবার, অনেকেই হয়তো সূচনাকাল থেকেই এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকেছেন।
কিন্তু আমি এই প্রথমবার ডিফেক্সপো-তে উপস্থিত হয়েছি। তামিলনাড়ুর মতো একটি রাজ্যে ঐতিহাসিক কাঞ্চিপুরম অঞ্চলে এই বিশেষ সমাবেশে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি আনন্দিত ও অভিভূত।
শিক্ষা ও বাণিজ্যের মধ্য দিয়ে যাঁরা ভারতের ঐতিহাসিক সভ্যতার গোড়াপত্তন করেছিলেন, সেই মহান চোলা রাজদের এই রাজ্যে উপস্থিত থাকার সুযোগ পেয়ে আমি সত্যিই খুব খুশি। আমাদের গৌরবময় সামুদ্রিক উত্তরাধিকারের এ হল এক বিশেষ তটভূমি।
এখান থেকেই হাজার হাজার বছর আগে ভারতের অভিযান ও কর্মপ্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল ‘পূবের দিকে’ এবং ‘পূবের জন্য’।
বন্ধুগণ,
পাঁচশোরও বেশি ভারতীয় সংস্থা এবং দেড়শোটিরও বেশি বিদেশি সংস্থার এই সমাবেশ সত্যিই অভিনব।
চল্লিশটিরও বেশি দেশ তাদের সরকারি প্রতিনিধি পাঠিয়েছে এই বিশেষ অনুষ্ঠানে। ভারতের প্রতিরক্ষা চাহিদা সম্পর্কে শুধুমাত্র আলোচনাই নয়, সেইসঙ্গে এই প্রথমবার এত বিশালভাবে ভারতের নিজস্ব প্রতিরক্ষা উৎপাদন ক্ষমতা বিশ্বের সামনে তুলে ধরার এক সুযোগ আজ এখানে উপস্থিত। বিশ্বের সর্বত্রই যোগান-শৃঙ্খলের গুরুত্বের সঙ্গে পরিচিত সশস্ত্র বাহিনীগুলি। কিন্তু, যুদ্ধক্ষেত্রে নয়, বরং প্রতিরক্ষা উৎপাদনকেন্দ্রগুলিতেই কৌশলগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
পরস্পর সংযুক্ত এক বিশ্ব শৃঙ্খলায় বর্তমানে আমরা বাস করছি। যে কোন উৎপাদন সংস্থাতেই যোগান-শৃঙ্খলের দক্ষতার বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই কারণে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কিংবা ‘মেক ফর ইন্ডিয়া’ এবং সেইসঙ্গে ভারত থেকে বিশ্বের অন্যত্র যোগান দেওয়ার কৌশলের বিষয়টি বর্তমানে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বন্ধুগণ,
ভারতের হাজার হাজার বছরের ইতিহাস থেকে এটাই প্রমাণিত সত্য যে অন্যের ভূখণ্ড দখলের কোন অভিপ্রায় বা অভিসন্ধি আমাদের নেই।
যুদ্ধ-বিগ্রহের মাধ্যমে অন্য কোন দেশ জয়ের পরিবর্তে ভারত বিশ্বাস করে হৃদয় জয় করে নেওয়ার নীতিতে। আমাদের এই দেশ থেকেই শান্তি এবং সার্বজনীন সৌভ্রাতৃত্বের বার্তা পৌঁছে গেছে দিকে দিকে। বৈদিক যুগ থেকে এই ঘটনা ঘটে আসছে।
আমাদের এই দেশ থেকেই বৌদ্ধ ধর্মের আলো পৌঁছে গেছে বিশ্বের অন্যত্র। রাজা অশোক এবং তার পূর্ববর্তীকালেও মানবতার সর্বোচ্চ আদর্শ রক্ষায় বলিষ্ঠ হয়ে ওঠার নীতিতে বিশ্বাস করে ভারত।
আধুনিক যুগে বিগত শতাব্দীর বিশ্বযুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন ১ লক্ষ ৩০ হাজার ভারতীয় সেনা। অন্যের ভূখণ্ড ভারত কোনদিনই দাবি করেনি। বরং, শান্তি পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টায় এবং মানবতার মূল্যবোধকে ঊর্ধ্বে রাখার স্বার্থেই যুদ্ধ করেছিলেন ভারতীয় সেনারা।
এমনকি, স্বাধীনতা-পরবর্তীকালেও বিশ্বের সর্বত্রই রাষ্ট্রসঙ্ঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বৃহত্তর সংখ্যায় সেনাকর্মী পাঠিয়েছে ভারত।
সেইসঙ্গে, রাষ্ট্রের দায়িত্ব হল তার নাগরিকদের সুরক্ষাদান। আজ থেকে ২০০০ বছরেরও বেশি আগে অর্থশাস্ত্র রচনা করেছিলেন মহান ভারতীয় চিন্তাবিদ তথা কূটনীতিক কৌটিল্য। তিনি বলেছিলেন, রাজা অর্থাৎ শাসকের ধর্মই হল প্রজাদের রক্ষা করা। যুদ্ধ-বিগ্রহের তুলনায় শান্তি যে আরও বেশি মাত্রায় কাম্য, একথাও বলে গেছেন তিনি। ভারতের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির মূলে রয়েছে এই সমস্ত চিন্তাভাবনা। শান্তির প্রতি আমাদের অঙ্গীকার হল ততটাই শক্তিশালী, যতটাই বলিষ্ঠ হল নিজস্ব ভূখণ্ড এবং দেশের নাগরিকদের জন্য আমাদের সুরক্ষাদানের সঙ্কল্প। এই লক্ষ্যেই আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে সুসজ্জিত করে তুলতে সমস্তরকম পদক্ষেপ গ্রহণে আমরা প্রস্তুত।
বন্ধুগণ,
কৌশলগত দিক থেকে একটি মুক্ত প্রতিরক্ষা শিল্প কমপ্লেক্স গড়ে তুলতে আমরা আগ্রহী। কিন্তু এই কাজ যে মোটেই সহজসাধ্য নয়, সে সম্পর্কেও আমরা পূর্ণ মাত্রায় সচেতন। আমরা জানি যে আমাদের এখন অনেক কিছুই করা প্রয়োজন। সরকারি অংশগ্রহণ ও অংশীদারিত্বের সুবাদে প্রতিরক্ষা উৎপাদনের বিষয়টি যে এক কথায় একটি অভিনব বিষয়, সে সম্পর্কেও আমরা অবহিত। এই প্রতিরক্ষা উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন সরকারি অনুমতি বা লাইসেন্সের। ভারতে যেহেতু সরকারই হল প্রতিরক্ষা সাজসরঞ্জামের একমাত্র ক্রেতা, খুব স্বাভাবিকভাবেই আপনারা প্রত্যাশা করেন যাতে পুরো বিষয়টির মধ্যে সরকারিভাবে একটি শৃঙ্খলা বজায় থাকে।
এমনকি, এই সমস্ত উৎপাদন বিদেশে রপ্তানি করার ক্ষেত্রেও প্রয়োজন সরকারি অনুমতির।
এই কারণে গত কয়েক বছর ধরে আমরা খুব সাধারণভাবেই সূচনা করেছি বিভিন্ন পন্থাপদ্ধতির। প্রতিরক্ষা উৎপাদন সম্পর্কিত লাইসেন্সদান, প্রতিরক্ষা রপ্তানি সংক্রান্ত ছাড়পত্র, প্রতিরক্ষা উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ এবং প্রতিরক্ষা সংগ্রহ ব্যবস্থার সংস্কারসাধনের লক্ষ্যে আমরা এ পর্যন্ত বহু পদক্ষেপই গ্রহণ করেছি।
এ সমস্ত ক্ষেত্রেই আমাদের নিয়ম-নীতি, পন্থাপদ্ধতি ও প্রক্রিয়াকে করে তোলা হয়েছে শিল্পবান্ধব, স্বচ্ছ ও সহজবোধ্য। শুধু তাই নয়, এই সমস্ত নিয়মনীতি যাতে সফল হয়ে ওঠে, তাও আমরা নিশ্চিত করেছি।
শিল্প লাইসেন্সের প্রাথমিক মেয়াদ তিন বছর থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৫ বছর। তবে, তা আরও তিন বছর বাড়ানোর মতো সংস্থানও রয়েছে তার মধ্যে।
রপ্তানির জন্যও অনুমোদনদান সম্পর্কিত পন্থাপদ্ধতিকে যথেষ্ট সরল করে তোলা হয়েছে এবং তা তুলে ধরা হয়েছে সরকারি ওয়েবসাইটগুলিতে। উৎপাদনের সাজসরঞ্জামের যন্ত্রাংশ রপ্তানির জন্য এতদিন ধরে চলে আসা কিছু কিছু অপ্রয়োজনীয় ব্যবস্থাকেও তুলে দেওয়া হয়েছে।
প্রতিরক্ষা উৎপাদন ক্ষেত্রটির দ্বার ২০০১-এর মে পর্যন্ত পুরোপুরি বন্ধ ছিল বেসরকারি শিল্প সংস্থাগুলির কাছে। কিন্তু শ্রী অটলবিহারীজির নেতৃত্বে পরিচালিত সরকারের আমলেই এর দ্বার বেসরকারি ক্ষেত্রগুলির জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের মাত্রা স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ২৬ শতাংশ থেকে ৪৯ শতাংশে উন্নীত করার জন্য প্রয়োজনীয় সংশোধনের কাজও আমরা সম্পূর্ণ করেছি। কোন কোন ক্ষেত্রে এই মাত্রা ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধিরও সংস্থান রয়েছে।
প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত সাজসরঞ্জামের সংগ্রহ ব্যবস্থা ও পদ্ধতিরও সংশোধন করা হয়েছে। দেশের নিজস্ব প্রতিরক্ষা শিল্পোৎপাদন যাতে যথেষ্ট মাত্রায় বৃদ্ধি পায়, তারও সংস্থান রাখা হয়েছে।
এতদিন পর্যন্ত কিছু কিছু সাজসরঞ্জাম উৎপাদিত হত শুধুমাত্র সরকারি অস্ত্র কারখানাগুলিতেই। কিন্তু আমরা তা বেসরকারি ক্ষেত্রের কাছে বিশেষত, ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্প সংস্থাগুলির জন্য দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছি।
আমাদের গৃহীত পদক্ষেপগুলির উল্লেখযোগ্য সুফলও আমরা লক্ষ্য করেছি। ২০১৪-র মে মাসে প্রতিরক্ষা লাইসেন্সদানের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ২১৫-তে। এর মাত্র চার বছরেরও কম সময়ে এক স্বচ্ছ ব্যবস্থার মাধ্যমে আমরা ১৪৪টি লাইসেন্স প্রদান করেছি।
আবার, ২০১৪-র মে মাস পর্যন্ত ১১৮টি ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষা সাজসরঞ্জাম রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এর বাণিজ্যিক মূল্য ছিল ৫৭৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিন্তু চার বছরেরও কম সময়ে ১.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের সাজসরঞ্জাম রপ্তানির জন্য ৭৯৪টি ক্ষেত্রে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ক্ষুদ্র এবং অতিক্ষুদ্র শিল্প সংস্থাগুলি থেকে সরকারি প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলি এবং সেইসঙ্গে অস্ত্র কারখানাগুলি যে সমস্ত সাজসরঞ্জাম সংগ্রহ করেছিল, তার অর্থমূল্য ২০১৪-১৫ অর্থ বছরের ৩,৩০০ কোটি থেকে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে উন্নীত হয়েছে ৪,২৫০ কোটি টাকায়। বৃদ্ধির হার এক্ষেত্রে প্রায় ৩০ শতাংশ।
উৎসাহের বিষয় যে গত চার বছরে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পক্ষেত্রগুলি থেকে প্রতিরক্ষা সাজসরঞ্জাম উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে ২০০ শতাংশের মতো।
আন্তর্জাতিক যোগান-শৃঙ্খলের সঙ্গেও যুক্ত হয়েছে এই ধরনের শিল্প সংস্থাগুলি।
বন্ধুগণ,
এই প্রসঙ্গের উল্লেখ করার সঙ্গে সঙ্গে একথাও আমার মনে হয়েছে যে অনেক কিছু করা এখনও আমাদের বাকি থেকে গেছে এবং আমরা তা করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
একটি প্রতিরক্ষা শিল্প কমপ্লেক্স গড়ে তোলার জন্য সঙ্কল্প গ্রহণ করেছি আমরা। এর দ্বার উন্মুক্ত হবে সকলের জন্য, তা সে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাই হোক, কিংবা বেসরকারি ক্ষেত্র অথবা বিদেশি শিল্প সংস্থা।
দুটি প্রতিরক্ষা শিল্প করিডর গড়ে তুলতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তার একটি হবে এই তামিলনাড়ুতেই এবং অন্যটি উত্তরপ্রদেশে। এই অঞ্চলগুলির প্রতিরক্ষা উৎপাদন পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে আরও উন্নত হয়ে উঠবে এই শিল্প করিডরগুলি।
এছাড়াও, দেশের অর্থনৈতিক বিকাশ প্রচেষ্টার এক বিশেষ চালিকাশক্তি হয়ে উঠবে এই প্রতিরক্ষা শিল্প করিডরগুলি। এর ফলে, প্রতিরক্ষা শিল্পের প্রসার ঘটবে ক্রমান্বয়ে। প্রতিরক্ষা উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত বিনিয়োগকারীদের জন্য আমরা স্থাপন করেছি একটি বিশেষ সেলও।
বন্ধুগণ,
প্রতিরক্ষা উৎপাদন ক্ষেত্রের স্বার্থে প্রযুক্তি, উদ্ভাবন, গবেষণা এবং উন্নয়ন প্রচেষ্টার কাজে সরকারি সমর্থন ও সহযোগিতা একান্ত জরুরি।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’, ‘স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া’ এবং ‘অটল উদ্ভাবন মিশন’-এর মতো বেশ কিছু উদ্যোগও আমরা গ্রহণ করেছি। এর লক্ষ্য হল, ভারতের বাণিজ্যিক পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে উদ্ভাবন ও শিল্পোদ্যোগ প্রচেষ্টাকে উৎসাহদান।
আমরা সূচনা করেছি, ‘প্রতিরক্ষার উৎকর্ষসাধনে উদ্ভাবন’ নামে একটি কর্মসূচিরও। এর আওতায় সারা দেশে গড়ে তোলা হবে প্রতিরক্ষা উদ্ভাবন কেন্দ্র। এর মাধ্যমে প্রতিরক্ষা উৎপাদন সম্পর্কিত ‘স্টার্ট আপ’ সংস্থাগুলিতে পরিকাঠামোগত সহায়তার প্রসার ঘটানো হবে।
প্রতিরক্ষা উৎপাদন ক্ষেত্রে বেসরকারি মূলধন ব্যবস্থাকে উৎসাহদানের কর্মসূচিও আমরা গ্রহণ করেছি।
বন্ধুগণ,
আমাদের ভূতপূর্ব রাষ্ট্রপতি এবং তামিলনাড়ু তথা ভারতের এক মহান সন্তান ভারতরত্ন ডঃ এ পি জে আব্দুল কালাম আমাদের সকলের কাছে আহ্বান জানিয়েছিলেন, এক বিশেষ স্বপ্নের ওপর নির্ভর করে এগিয়ে যাওয়ার। “স্বপ্ন! স্বপ্ন! স্বপ্ন! স্বপ্নই রূপান্তরিত হয় চিন্তাভাবনায় আর চিন্তাভাবনার রূপান্তর ঘটে কর্মপ্রচেষ্টায়” – একথাই বলেছিলেন তিনি।
আমাদের স্বপ্নই হল প্রতিরক্ষা উৎপাদন ক্ষেত্রে নতুন এবং উদ্ভাবনমূলক শিল্পোদ্যোগের উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলার প্রচেষ্টাকে বিশেষ উৎসাহদান।
এই লক্ষ্যে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ভারতীয় এবং বিদেশি শিল্প সংস্থা সহ সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গেই বিস্তারিত আলোচনা ও মতবিনিময়ে আমরা মিলিত হব। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে নতুন এবং উদ্ভাবনমূলক শিল্পোদ্যোগ প্রচেষ্টা ও শিল্পনীতি প্রসঙ্গে আলোচনা করব আমরা।
বন্ধুগণ,
আমরা এগিয়ে যেতে চাই দ্রুততার সঙ্গে। কিন্তু এজন্য কোন শর্টকাট নীতি বা পথ আমরা গ্রহণ করতে আগ্রহী নই।
এমন একটা সময় আমরা দেখেছি যখন প্রশাসনিক অন্যান্য অচলাবস্থার মতোই প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির বিষয়টিও থমকে দাঁড়িয়েছিল শুধুমাত্র নীতিগত কর্মতৎপরতার অভাবেই।
এই ধরণের অযোগ্যতা ও অলসতা, যার পেছনে রয়েছে হয়তো কোন বিশেষ অভিসন্ধি, জাতির যে কতটা ক্ষতি করতে পারে তাও আমরা লক্ষ্য করেছি।
কিন্তু আর নয়। আর একদমই নয়। এবং আর কখনই নয়। যে বিষয়গুলি পূর্ববর্তী সরকারগুলি দীর্ঘদিন ধরেই ঝুলিয়ে রেখেছিল, তার সমাধানে তাই এখন উদ্যোগী হয়েছি আমরা।
আপনারা হয়তো লক্ষ্য করেছেন যে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে বুলেট প্রুফ জ্যাকেট দেওয়ার বিষয়টিও কত বছর ধরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল।
আবার সেইসঙ্গে আপনারা এটাও লক্ষ্য করেছেন যে দেশের প্রতিরক্ষা উৎপাদনকে চাঙ্গা করে তুলতে কিভাবে সমস্তরকম প্রক্রিয়াকরণের কাজ আমরা সাফল্যের সঙ্গেই সম্পূর্ণ করেছি। যুদ্ধবিমান সংগ্রহের প্রক্রিয়ার কাজটি এর আগে যে কতদিন ধরে আটকে রাখা হয়েছিল, তাও আপনারা লক্ষ্য করেছেন।
আমাদের গুরুত্বপূর্ণ চাহিদাগুলির পূরণে আমরা যে শুধু বলিষ্ঠ পদক্ষেপই গ্রহণ করেছি তাই নয়, ১১০টি যুদ্ধবিমান সংগ্রহের জন্য এক নতুন প্রক্রিয়াকরণের কাজও আমরা শুরু করেছি। কোনরকম ফলাফল ছাড়াই ১০ বছর ধরে কোন বিষয়কে আলোচনার টেবিলে ঝুলিয়ে রাখতে আমরা আগ্রহী নই। আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনীগুলিকে অত্যাধুনিক সাজসরঞ্জামে সুসজ্জিত করে তুলতে আপনাদের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যাব আমরা। এজন্য আমরা গড়ে তুলব দেশে এক উপযুক্ত পরিবেশ ও পরিস্থিতি। সততা ও সংহতির সর্বোচ্চ আদর্শকে অনুসরণ করেই এই কাজে আমরা এগিয়ে যাব।
বন্ধুগণ,
এই পূণ্য ভূমিতে দাঁড়িয়ে প্রবাদপ্রতিম থিরুভাল্লুভার-এর কথা আমি স্মরণ করছি। তিনি ছিলেন এক বিশিষ্ট তামিল কবি ও দার্শনিক। তিনি বলেছিলেন, “বালুভূমি যদি আপনারা খনন করতে শুরু করেন, তাহলে দেখবেন যে তার অতলে রয়েছে এক জলস্রোত। আর এইভাবেই যতই আপনারা শিক্ষার বিষয়ে আগ্রহী হয়ে উঠবেন, ততই অবাধ ও মুক্ত হয়ে উঠবে আপনাদের জ্ঞানের স্রোতোধারা”।
প্রতিরক্ষা শিল্প সংস্থার স্বার্থে এক নতুন ক্ষেত্র আবিষ্কারের সুযোগ যে এই ডিফেক্সপো আপনাদের সামনে এনে দেবে সে বিষয়ে আমি দৃঢ়প্রত্যয়ী।
ধন্যবাদ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।