প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব যৌথভাবে আজ (সোমবার) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশে তিনটি প্রকল্পের সূচনা করেন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী শ্রীমতী সুষমা স্বরাজ এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ঢাকা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রকল্পগুলির সূচনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
এই প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে – বাংলাদেশের ভিরামারা ও ভারতের বহরমপুরের মধ্যে বর্তমানে সংযুক্ত বিদ্যুৎ লাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে অতিরিক্ত ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ। আখাউরা-আগরতলা রেল সংযোগ এবং বাংলাদেশ রেলের কুলাউরা-শাহবাজপুর শাখার পুনঃপ্রতিষ্ঠা।
এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী সাম্প্রতিককালে কাঠমান্ডুতে বিমস্টেক শীর্ষ বৈঠকে, শান্তিনিকেতনে এবং লন্ডনে আয়োজিত কমনওয়েল্থ শিখর সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের কথা স্মরণ করেন।
প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের কথা পুনরায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রচলিত প্রোটোকলের বাইরে গিয়ে নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ও স্বল্প সময়ের ব্যবধানে পারস্পরিক দেশে সফর অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তাঁর এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে আলাপ-আলোচনা তথা সাক্ষাতেরই প্রতিফলন ঘটায়।
দুই দেশের মধ্যে ১৯৬৫-র আগে যে ধরণের যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল, তা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার ব্যাপারে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনার কথাও প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী উল্লেখ করেন। এই লক্ষ্যে বিগত কয়েক বছরের অগ্রগতিতে শ্রী মোদী সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেন, আজ আমরা বিদ্যুৎ সরবরাহ বৃদ্ধি তথা রেল যোগাযোগ বাড়াতে দুটি প্রকল্পও শুরু হয়েছে। ২০১৫-তে তাঁর বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, তখন সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে বাংলাদেশকে অতিরিক্ত ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবস্থাকে ব্যবহার করে সরবরাহের কাজ করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ সরবরাহের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ায় তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকারও প্রশংসা করেন। তিনি আরও বলেন, এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার ফলে ভারত থেকে বাংলাদেশে ১.১৬ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ মেগাওয়াট থেকে গিগাওয়াটে নিয়ে যাওয়ার এই যাত্রাপথ এক সোনালী যুগের প্রতীকস্বরূপ।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আখাউরা-আগরতলা রেল যোগাযোগ দুই দেশের মধ্যে সীমান্তপারের যোগাযোগের ক্ষেত্রে আরও একটি যোগসূত্র স্থাপন করবে। সুষ্ঠুভাবে এই কাজ সম্পন্ন করতে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেবের ভূমিকারও প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে মধ্যবিত্ত আয়ের দেশ হিসেবে এবং ২০৪১-এর মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার যে লক্ষ্য নিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী তার প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী বলেন, দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও মানুষে-মানুষে যোগাযোগ দু’দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।