প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি শনিবার দিল্লির লাল কেল্লার সংলগ্ন মাধব দাসপার্কে দশেরা উত্সবে যোগ দিলেন|
তাঁর ভাষণে প্রধানমন্ত্রী ২০২২ সালে দেশ যখনস্বাধীনতার ৭৫ বর্ষ উদযাপন করবে, তার মধ্যে দেশের জন্য কোনো ইতিবাচক অবদান রাখার‘সংকল্প’ গ্রহণ করতে অনুপ্রাণিত করেন|
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভারতের পার্বণগুলো শুধুমাত্রকোনো উত্সব অনুষ্ঠান নয়, এগুলো সমাজকে শেখানোরও এক মাধ্যম| এই পার্বণগুলো আমাদেরকেসমাজের মূল্য সম্পর্কে সচেনত করে| আমাদেরকে এক সম্প্রদায় হিসেবে একসঙ্গে বসবাসকরার শিক্ষা প্রদান করে|”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, উত্সব হচ্ছে আমাদের যৌথ শক্তির,সমাজ-সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের এবং সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক প্রতিফলন| এরপাশাপাশি এগুলো আমাদের কৃষি, নদী, পর্বত, প্রকৃতি ইত্যাদির সঙ্গেও সংযুক্ত রয়েছে|
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে রাবণ, কুম্ভকর্ণ ও মেঘনাদেরপ্রতিমূর্তি জ্বালানোও দেখেন|
নয়া দিল্লির লাল কেল্লা সংলগ্ন মাধব দাস পার্কে দশেরা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ:
বিজয়া দশমীরপুণ্য লগ্নে অনেক অনেক শুভেচ্ছা|
উত্সব এক দিক দিয়ে আমাদের সামাজিক মূল্যবোধেরপ্রতিফলন এবং এক ধরনের সামাজিক শিক্ষার মাধ্যম|
প্রতিটি উত্সব আমাদের সমষ্টিগত শক্তি প্রদর্শনেরপ্রথাকে এগিয়ে নিয়ে যায়, আমাদের সামাজিক দায়িত্বের প্রতি সংবেদনশীল করে তোলে এবংসমাজের সমস্ত অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অক্লান্তভাবে কাজ করে যাওয়াকে চালিত করে|
আমাদের উত্সবের সঙ্গে কৃষি ও ফসল কেটে ঘরে তোলা, নদীও পর্বত, আমাদের ইতিহাস ও আমাদের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যও যুক্ত রয়েছে|
হাজার হাজার বছর হয়ে গেলেও প্রভু রাম ও প্রভু কৃষ্ণেরগাঁথা আমাদের সামাজিক প্রতিবেশকে অনুপ্রাণিত করার এক উত্স| আমাদেরকে জাগরিত করারএক উত্স| নবরাত্রির মঙ্গলময় দিনগুলোর শেষে আজ বিজয়া দশমীর দিনে রাবণের প্রতিমূর্তিজ্বালানোর প্রথা রয়েছে আমাদের| এটাও আমাদের সেই মহান ঐতিহ্যের এক অংশ| কিন্তু একজনদায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে অপশক্তিকে প্রতিসংহার করা আমাদের অবশ্যপালনীয় কর্তব্যএবং এক্ষেত্রে সমাজকে সচেতনতা বৃদ্ধির গতি বজায় রাখতে হবে|
আমি বলতে চাই, এই উত্সব ও পার্বণগুলো শুধুমাত্রবিনোদনের জন্য নয়, এর পেছনে উদ্দেশ্য থাকতে হবে| এর মধ্য দিয়ে আমাদেরকে দেশের জন্যকোনো ইতিবাচক কিছু করার দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করতে হবে| কেউ কল্পনা করতে পারবে যে,অযোধ্যা থেকে একবস্ত্রে বেরিয়ে যাওয়া প্রভু রাম সমস্ত পথ যেতে যেতে তাঁর দৃঢ়চরিত্র ও সংকল্পে এমন এক বিশাল যৌথশক্তির সংগঠন গড়ে তোলেন যে, শ্রীলংকা বিজয়ের সময়সমাজের প্রতিটি পর্যায়ের মানুষ উনার সঙ্গে যুক্ত হয়ে যান| তাতে নর যুক্ত হয়েছে,বানর যুক্ত হয়েছে, এমনকি যোগ দিয়েছে প্রকৃতিও| লোক সংগ্রহের কত বড় অদ্ভুত শক্তিহলে পরে প্রভু রামচন্দ্রজি এতো বড় শক্তিকে নিজের সাথে যুক্ত করতে পেরেছেন| এমনকিবিজয়ী হওয়ার পরও তিনি একইরকম বিনয়ী থাকেন এবং নিজেকে জনগণের কল্যাণে উত্সর্গীকৃতকরে দেন|
আজ বিজয়া দশমীর এই পার্বণে আসুন আমরাও সংকল্প করি যে,২০২২ সালে যখন ভারত স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষ পালন করবে, সেই সময়ের মধ্যে আমরাও আমাদেরদেশের জন্য কোনো না কোনো ইতিবাচক অবদান রাখব| এক গর্বিত জাতির নাগরিক হিসেবেআমাদের ‘সংকল্প’ হতে হবে ‘সিদ্ধির’ জন্য, যাতে আমরা ২০২২ সালের মধ্যে আমাদের বিনীতও ইতিবাচক অবদান রাখতে পারি| আসুন আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্বপ্নের দেশ গঠনেআমরা স্থির সংকল্প করি| আর এভাবেই প্রভু রামজির দেখানো পথে আমাদেরকেও দেশের জন্যকোনো ইতিবাচক অবদান রাখতে দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করতে হবে|
সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা|
বিজয়া দশমীতে আপনাদের সবাইকে আবারও আন্তরিক শুভেচ্ছা|