অন্ধ্রপ্রদেশেররাজ্যপাল শ্রী ই এস এল নরসিংহম,
অন্ধ্রপ্রদেশেরমুখ্যমন্ত্রী শ্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু,
বিজ্ঞানও প্রযুক্তি এবং ভূ-বিজ্ঞান দপ্তরের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডঃ হর্ষ বর্ধন,
কেন্দ্রীয়বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং ভূ-বিজ্ঞান প্রতিমন্ত্রী শ্রী ওয়াই এস চৌধুরি,
ভারতীয়বিজ্ঞান কংগ্রেস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভাপতি অধ্যাপক ডি নারায়ণ রাও,
শ্রীভেঙ্কটেশ্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ দামোদরম,
বিশিষ্টপ্রতিনিধিবৃন্দ,
ভদ্রমহিলাও ভদ্রমহোদয়গণ।
পবিত্রতিরুপতি শহরে দেশ-বিদেশের বিশিষ্ট বিজ্ঞানীদের সঙ্গে নিয়ে নতুন বছরটি শুরু করতে পেরেআমি আনন্দিত।
শ্রীভেঙ্কটেশ্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নান্দনিক পরিবেশে ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের ১০৪তমঅধিবেশনের উদ্বোধন করার সুযোগ পেয়েও আমি বিশেষভাবে খুশি।
এবছরের অধিবেশনের বিষয়বস্তু হিসেবে ‘জাতীয় উন্নয়নের স্বার্থে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি’-কেবেছে নেওয়ার জন্য ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেস অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃপক্ষকে আমি সাধুবাদজানাই।
মাননীয়প্রতিনিধিবৃন্দ,
শ্রম,চিন্তাভাবনা ও নেতৃত্বদানের মাধ্যমে সমাজের ক্ষমতায়নে বিজ্ঞানীরা যেভাবে নিরলসপরিশ্রম করে চলেছেন সেজন্য সমগ্র জাতি তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ।
২০১৬-রনভেম্বরে ডঃ এম জি কে মেননের মতো এরকমই একজন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও প্রতিষ্ঠাতাকে দেশহারিয়েছে। সকলের সঙ্গে মিলিতভাবে আমি শ্রদ্ধা জানাই তাঁর উদ্দেশে।
মাননীয়প্রতিনিধিবৃন্দ,
যেগতি ও মাত্রার এক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে আমরা বর্তমানে চলেছি তা এক কথায় নজিরবিহীন।
যেসমস্ত চ্যালেঞ্জ একদিন হঠাৎ এসে উপস্থিত হবে সেগুলির মোকাবিলায় আমরা কিভাবেনিজেদের প্রস্তুত করব এটি একটি বিরাট প্রশ্ন। কিন্তু কৌতুহল ও অনুসন্ধিৎসা-চালিতদৃঢ়মূল এক বৈজ্ঞানিক ঐতিহ্য নতুন বাস্তবতার সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে আমাদেরসাহায্য করেছে।
জনশক্তিএবং পরিকাঠামো ক্ষেত্রে যে বিনিয়োগ আজ আমরা করে চলেছি তারই হাত ধরে আগামীদিনে এসেউপস্থিত হবেন বিশেষজ্ঞরা। মৌল বিজ্ঞান থেকে শুরু করে ফলিত বিজ্ঞান – বৈজ্ঞানিকজ্ঞান ও অনুসন্ধিৎসার সবক’টি ক্ষেত্রেই সহায়তা যোগানোর জন্য আমার সরকারপ্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কারণ, উদ্ভাবনের ওপর আমরা বিশেষভাবে গুরুত্ব আরোপ করেছি।
মাননীয়প্রতিনিধিবৃন্দ,
বিজ্ঞানকংগ্রেসের বিগত দুটি অধিবেশনে জাতির সামনে যে সমস্ত বড় বড় চ্যালেঞ্জ এবং সেইসঙ্গেসুযোগ এসে উপস্থিত, তার কথা আমি বর্ণনা করেছি আপনাদের সামনে।
এইসমস্ত গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জগুলির মধ্যে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে জল ও জ্বালানিশক্তি, খাদ্য ও স্বাস্থ্য পরিচর্যা, পরিবেশ ও জলবায়ু এবং নিরাপত্তা ক্ষেত্রে।
যেসমস্ত প্রযুক্তি ব্যাঘাত ও বিচ্ছিন্নতাকে প্রশ্রয় দেয়, তার ওপর সতর্ক দৃষ্টি রেখেসেগুলিকে বিকাশের কাজের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে আমাদের। প্রযুক্তি প্রস্তুতি এবংপ্রতিযোগিতামুখিনতার যে চ্যালেঞ্জ ও সুযোগগুলি রয়েছে সেগুলি খুব সুস্পষ্টভাবেঅনুভব ও উপলব্ধি করতে হবে আমাদের।
আমিশুনেছি যে গত বছরের বিজ্ঞান কংগ্রেসে ‘প্রযুক্তি ভাবনা, ২০৩৫’-এর যে দলিলটি প্রকাশকরা হয় তা এখন ১২টি গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিক্ষেত্রে একটি বিস্তারিত রূপরেখার আকারধারণ করতে চলেছে। এছাড়াও, দেশের জন্য এক সার্বিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ভাবনা গড়েতোলার কাজে ব্যস্ত রয়েছে নিতি আয়োগ।
সাইবারক্ষেত্রের ব্যবহার সম্পর্কিত বিষয়টি যেভাবে বিশ্বে ক্রমবিস্তৃতি লাভ করেছে, তারমোকাবিলা করাও আমাদের গুরুত্বপূর্ণ কাজের মধ্যে পড়ে। এক নজিরবিহীন চ্যালেঞ্জ এবংজনগোষ্ঠীর ওপর তার প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে যথেষ্ট। কিন্তু গবেষণা, প্রশিক্ষণ,রোবোটিক্স-এ দক্ষতা, গোয়েন্দা তথ্য, ডিজিটাল ব্যবস্থা, তথ্য ও পরিসংখ্যানবিশ্লেষণ, গভীর জ্ঞান ও শিক্ষা, উন্নত যোগাযোগ এবং ইন্টারনেটের সুযোগের সাহায্যেএই সমস্ত চ্যালেঞ্জকে আমরা এক বিরাট সুযোগে রূপান্তরিত করতে পারি।
পরিষেবাও উৎপাদন ক্ষেত্র; জল, কৃষি ও জ্বালানি শক্তি, যান চলাচল ব্যবস্থাপনা; স্বাস্থ্য,পরিবেশ, পরিকাঠামো এবং ভূতাত্ত্বিক তথ্য ব্যবস্থা; নিরাপত্তা, আর্থিক ব্যবস্থা এবংঅপরাধ দমন – এই সবক’টি ক্ষেত্রে প্রযুক্তির উদ্ভাবন, বিকাশ ও প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তাএকান্ত জরুরি।
ভবিষ্যতকেসুরক্ষিত রাখার প্রয়োজনে সাইবারের ব্যবহারিক ক্ষেত্রে আন্তঃমন্ত্রক জাতীয় মিশন গড়েতোলার প্রয়োজন আমরা অনুভব করেছি। দক্ষতা, শ্রমশক্তি এবং গবেষণা ও উন্নয়ন ক্ষেত্রেপ্রাথমিক পরিকাঠামো গঠনের মধ্য দিয়ে আমরা এই কাজে ব্রতী হতে পারি।
বিশিষ্টঅতিথিবৃন্দ,
ভারতীয়ভূখণ্ডের চারপাশে যে মহাসাগরীয় পরিমণ্ডল রয়েছে তাতে অবস্থিত ১,৩০০-রও বেশিদ্বীপভূমি। আমাদের সমুদ্র অঞ্চলে রয়েছে ৭,৫০০ কিলোমিটারব্যাপী এক বিস্তৃত উপকূলরেখা। শুধুমাত্র অর্থনৈতিক অঞ্চলই রয়েছে ২ কোটি ৪০ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে।
আরতা থেকে আমরা লাভ করেছি খাদ্য, ওষুধ, জ্বালানি শক্তি এবং আরও নানা প্রাকৃতিকসহায়সম্পদের সুযোগ ও প্রাচুর্য। আমাদের ভবিষ্যতকে অটুট ও সুরক্ষিত রাখার কাজেসমুদ্র-নির্ভর অর্থনীতি এক বিশেষ মাত্রা যোগ করতে পারে।
এইসমস্ত সহায়সম্পদকে দায়িত্বের সঙ্গে কাজে লাগাতে কেন্দ্রীয় ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রক একগভীর মহাসাগরীয় মিশনের সূচনা করতে চলেছে যাত কাজ হবে এই সমস্ত সম্পদের অন্বেষণ ওপ্রয়োগ সম্পর্কে উপায় উদ্ভাবন। জাতির সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার লক্ষ্যে এই কাজ হয়েউঠবে এক রূপান্তরমুখী পদক্ষেপ।
মাননীয়প্রতিনিধিবৃন্দ,
আন্তর্জাতিকক্ষেত্রের মানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সংক্রান্ত আমাদের শ্রেষ্ঠপ্রতিষ্ঠানগুলির উচিৎ তাদের মূল গবেষণাকে আরও জোরদার করে তোলা। মূল ও প্রাথমিকজ্ঞানকে উদ্ভাবন, স্টার্ট আপ ও শিল্পের কাজে ব্যবহার করতে হবে যাতেঅন্তর্ভুক্তিমূলক এক নিরন্তর বিকাশের মধ্য দিয়ে আমরা যাত্রা করতে পারি।
SCOPUS- এর পরিসংখ্যানগত তথ্যে প্রকাশ যে বৈজ্ঞানিকপ্রকাশনার ক্ষেত্রে ভারতের বর্তমান অবস্থান এখন ষষ্ঠ স্থানে। এই বিশেষ ক্ষেত্রটিতেবিশ্বে বিকাশের হার যেখানে ৪ শতাংশের মতো, ভারত সেখানে এগিয়ে গেছে প্রায় ১৪ শতাংশহারে। প্রাথমিক গবেষণা, প্রযুক্তিতে তা রূপান্তর এবং সামাজিক যোগ স্থাপনেরচ্যালেঞ্জগুলি ভারতের বিজ্ঞানীরা যে সাফল্যের সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারবেন সে বিষয়েআমি নিশ্চিত।
আগামী ২০৩০ সালের মধ্যেবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিশ্বের তিনটি শীর্ষ দেশের মধ্যে যে ভারত নিজেরস্থান করে নেবে সে বিষয়েও কোন সন্দেহ নেই। শুধু তাই নয়, মেধার দিক থেকেও বিশ্বেরআকর্ষণীয় গন্তব্যগুলির অন্যতম হয়ে উঠবে আমাদের দেশ। বিকাশের যে যাত্রাপথে আমরা গতিসঞ্চার করেছি, তা যে স্থির লক্ষ্যে উপনীত হবে এ বিষয়ে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই।
বিশিষ্ট প্রতিনিধিবৃন্দ,
দেশের জনসাধারণের ক্রমবর্ধমানআশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে বিজ্ঞানকে অবশ্যই কাজে লাগাতে হবে। সামাজিক চাহিদা মেটানোরকাজে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যে এক বিশেষ শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে তা আমরা, অর্থাৎভারতবাসীরা নির্দ্বিধায় স্বীকার করতে পারি। গ্রাম ও শহরের মধ্যে যে বিভেদগত সমস্যারয়েছে, তা মিটিয়ে ফেলে অন্তর্ভুক্তিমূলক বিকাশ, অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবংকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির কাজে আমাদের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। এজন্য প্রয়োজনএমন এক নতুন ও উন্নত কাঠামোগত ব্যবস্থা যা সংশ্লিষ্ট সবক’টি ক্ষেত্রকে পরস্পরেরসঙ্গে যুক্ত ও সম্পৃক্ত করতে পারবে।
রূপান্তরমুখী যে বিরাট জাতীয়কর্মসূচি রয়েছে আমাদের তার প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে নিয়ে আমাদের গড়ে তুলতেহবে এক সফল অংশীদারিত্বের সম্পর্ক। সমস্তরকম আলস্য ও অনীহা কাটিয়ে উঠে আমাদের এইকর্মসূচি যাতে সফল হয় সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। গড়ে তুলতে হবে এক সহযোগিতামূলকদৃষ্টিভঙ্গি। কারণ, উন্নয়নের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে সমস্ত চ্যালেঞ্জ রয়েছে সেগুলিরদ্রুত ও কার্যকর মোকাবিলায় এই সহযোগিতা একান্ত জরুরি। এই কাজে ব্রতী হতে হবে দেশেরমন্ত্রী, বিজ্ঞানী, গবেষণা ও উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান, শিল্প, স্টার্ট আপ সংস্থা,বিশ্ববিদ্যালয় এবং আইআইটি-গুলিকে। বিশেষ করে, আমাদের পরিকাঠামো ও আর্থ-সামাজিকমন্ত্রকগুলিকে উদ্যোগ নিতে হবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে যথোপযুক্তভাবে কাজে লাগানোরলক্ষ্যে।
দীর্ঘমেয়াদি গবেষণার কাজে অনাবাসীভারতীয় সহ বিদেশের বিশিষ্ট বিজ্ঞানীদের আমন্ত্রণ জানানোর কথা বিবেচনা করে দেখতেপারে আমাদের এ সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। আমাদের প্রকল্পগুলিতে গবেষণোত্তরকাজের সঙ্গে যুক্ত করতে পারি অনাবাসী ও বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের।
বৈজ্ঞানিক কর্মপ্রচেষ্টারআরেকটি দিক হল, বৈজ্ঞানিক কাজকর্মকে আরও সহজতর করে তোলা। যদি আমরা আগ্রহী হইবিজ্ঞানকে কাজে লাগাতে, তাহলে এদিক থেকেও আমাদের মুখ ফিরিয়ে থাকলে চলবে না। বরং,বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান ও কর্মপ্রচেষ্টার মধ্যে কিভাবে ক্ষমতায়ন ঘটানো যায় সেসম্পর্কে চিন্তাভাবনা করতে হবে আমাদের।
সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্তএকটি ক্ষেত্রই হল এক শক্তিশালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পরিকাঠামো গড়ে তোলা যাতেবিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্টার্ট আপ সংস্থা, শিল্প ও গবেষণা এবং উন্নয়নের কাজেতাকে সাফল্যের সঙ্গে যুক্ত করা যায়। আমাদের বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে দামিযন্ত্রপাতি ও সাজসরঞ্জামগুলি যাতে সহজে ব্যবহার করা যায় এবং তার যথাযথরক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে কোনরকম নকল বা জাল যন্ত্রপাতির উদ্ভাবন রোধ করা যায়,সেদিকেও দৃষ্টি দিতে হবে আমাদের। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে গড়ে তুলতে হবে বড়বড় আঞ্চলিক কেন্দ্র যেখানে পেশাদারিত্বের পরিচালন ও ব্যবস্থাপনার বিষয়টিআশানুরূপভাবে নিশ্চিত করা যাবে। উন্নতমানের বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির পরীক্ষানিরীক্ষাযাতে ভালোভাবে করা যায়, সেই লক্ষ্যে এই ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে আমাদের।
কর্পোরেট জগতের সামাজিকদায়িত্বশীলতার পাশাপাশি বিজ্ঞান জগতেও সামাজিক দায়বদ্ধতাকে প্রতিষ্ঠা করতে হবেআমাদের। স্কুল ও কলেজ সহ দেশের অগ্রণী যাতে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের কাজে লাগানো যায়সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।
ভারতের প্রতিটি প্রান্তে থাকাউচিৎ বিজ্ঞানে উৎকর্ষ লাভের সুযোগ। কারণ তার মাধ্যমে দেশের যুবশক্তি উন্নতমানেরপ্রশিক্ষণের সুযোগ লাভের পাশাপাশি বিশ্ব প্রতিযোগিতায় কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেওবিজ্ঞান ও প্রযুক্তির শ্রেষ্ঠ বিষয়গুলি সম্পর্কে জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমেবিশেষ সুযোগ লাভের অধিকারী হতে পারবেন।
এই লক্ষ্য পূরণে জাতীয়গবেষণাগারগুলির কাছে আমি আর্জি জানাব, স্কুল-কলেজগুলির সঙ্গে যুক্তভাবে উপযুক্তপ্রশিক্ষণ কর্মসূচি উদ্ভাবনের জন্য। এর মধ্য দিয়ে আমাদের যে বিশাল বিজ্ঞান ওপ্রযুক্তিগত পরিকাঠামো রয়েছে, তার যথাযথ ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ সম্ভব হয়ে উঠবে।
দেশের প্রধান প্রধান শহরগুলিতেযে সমস্ত গবেষণাগার, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, সেগুলিকেপরস্পরের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে যাতে আদর্শ জ্ঞান ও শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে সেগুলিগড়ে উঠতে পারে। এই কেন্দ্রগুলিতে প্রধান প্রধান পরিকাঠামো সম্পর্কে জ্ঞান ওঅভিজ্ঞতা বিনিময়, জাতীয় বিজ্ঞান কর্মসূচির কাজে উৎসাহদান এবং আবিষ্কার থেকেপ্রয়োগের ক্ষেত্রে সাফল্যের পক্ষে তা হয়ে উঠবে অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
গবেষণার অভিজ্ঞতা রয়েছে এধরনের কলেজ শিক্ষকদের প্রতিবেশী বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণা ও উন্নয়নপ্রতিষ্ঠানগুলির কাজে যুক্ত করা যেতে পারে। স্কুল, কলেজ, পলিটেকনিক সহ বিভিন্নপ্রতিষ্ঠানে যদি নানা ধরনের কর্মসূচির প্রসার ঘটানো যায়, তাহলে বিজ্ঞান ওপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের শ্রমশক্তিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পারিপার্শ্বিকতার কাজেওব্যবহার করা সম্ভব।
বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দ,
স্কুলের ছেলে-মেয়েদের মধ্যেযদি চিন্তা ও উদ্ভাবন শক্তির উন্মেষ ঘটানো যায়, তাহলে আমাদের উৎপাদন ক্ষেত্র আরওপ্রসারিত হবে। আর এর মধ্য দিয়ে সুরক্ষিত থাকবে জাতির ভবিষ্যৎ। এই লক্ষ্যে একটিবিশেষ পদক্ষেপ হিসেবে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের জন্য এক বিশেষকর্মসূচির সূচনা করছে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রক।
এই কর্মসূচিটির লক্ষ্য হল ১০লক্ষ গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনাকে উৎসাহ যোগানো। এর উদ্দেশ্য হল, স্থানীয়ও আঞ্চলিক স্তরে সামাজিক চাহিদার যোগান দেওয়া। ৫ লক্ষ স্কুলকে এজন্য বেছে নেওয়াযেতে পারে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যে সমস্তক্ষেত্রে ছাত্রীদের প্রতিনিধিত্বের হার এখনও যথেষ্ট কম, সেখানে তাদের প্রতিনিধিত্ববাড়ানোর লক্ষ্যে কন্যা-সন্তানদের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে আমাদের। কারণআমাদের লক্ষ্য হল জাতি গঠনের কাজে শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত মহিলা বিজ্ঞানীদের যুক্তকরা।
মাননীয় প্রতিনিধিবৃন্দ,
ভারত হল একটি বিশাল ও বৈচিত্র্যময়দেশ। এখানে প্রয়োজন প্রযুক্তির এক প্রসারিত ক্ষেত্র। উন্নত মহাকাশ গবেষণা, পরমাণুও প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি থেকে শুরু করে পল্লী উন্নয়ন – সবক’টি ক্ষেত্রেই এরপ্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। কারণ, নির্মল জল, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, পুনর্নবীকরণযোগ্যজ্বালানি, সমষ্টিগত স্বাস্থ্য ইত্যাদি সুযোগ-সুবিধা প্রসারে তার প্রয়োজন আমরাঅনুভব করেছি।
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে উৎকর্ষ ওপারদর্শিতা অর্জনের পাশাপাশি দেশের স্থানীয় ও আঞ্চলিক স্তরে বিভিন্ন সমস্যারসমাধানে উদ্যোগী হতে হবে আমাদের।
গ্রামাঞ্চলের প্রয়োজনে গড়েতুলতে হবে ছোট ছোট শিল্প প্রতিষ্ঠানের মডেল যেখানে স্থানীয় সহায়সম্পদ ও দক্ষতাকেকাজে লাগিয়ে স্থানীয় চাহিদা পূরণ সম্ভব। শুধু তাই নয়, আঞ্চলিক পর্যায়ে শিল্পস্থাপন এবং রুজি-রোজগারের সংস্থানেও তা এক বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে।
দৃষ্টান্ত স্বরূপ, একগুচ্ছগ্রাম ও আধা-শহর এলাকাকে বেছে নিয়ে কিছু কিছু প্রযুক্তির প্রয়োগ আমরা করতে পারি।কৃষি ও জৈব বর্জ্যকে রূপান্তরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ, নির্মল জল, শস্যের প্রক্রিয়াকরণএবং হিমঘরের মতো ব্যবস্থাপনার কাজে ব্যবহারের উপযোগী করে তুলতে পারি।
মাননীয় প্রতিনিধিবৃন্দ,
পরিকল্পনা, সিদ্ধান্ত গ্রহণএবং প্রশাসন ও পরিচালনের কাজে বিজ্ঞানের এই ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
দেশের নাগরিক, গ্রাম পঞ্চায়েত,জেলা এবং রাজ্যগুলির বিকাশের লক্ষ্য পূরণে ভূ-তথ্য ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করে তোলারপ্রয়োজন। ভারতের সমীক্ষা বিভাগ, ইসরো এবং কেন্দ্রীয় বৈদ্যুতিন ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রক এই রূপান্তরমুখী কাজের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে যুক্ত হতে পারে।
নিরন্তর উন্নয়নের লক্ষ্যেবর্জ্য থেকে সম্পদ সৃষ্টি ও তার ব্যবস্থাপনার দিকে আমাদের বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতেহবে যাতে বৈদ্যুতিন বর্জ্য, জৈব চিকিৎসা সংক্রান্ত বর্জ্য, প্লাস্টিক বর্জ্য, কঠিনবর্জ্য এবং তরল বর্জ্যের মতো সমস্যার কার্যকর সমাধান সম্ভব হয়ে উঠতে পারে।
দূষণমুক্ত কার্বন প্রযুক্তি,জ্বালানি শক্তির সাশ্রয়ের জন্য উপযুক্ত প্রযুক্তি এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানিশক্তির দক্ষ ব্যবহারের মাত্রা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গবেষণা ও উন্নয়নের কাজকে আমরা আরওএগিয়ে নিয়ে চলেছি।
নিরন্তর উন্নয়নের কাজসুনিশ্চিত করতে আমাদের অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে পরিবেশ ও জলবায়ুর মতো বিষয়গুলি।এই বিশেষ চ্যালেঞ্জের কার্যকর মোকাবিলায় আমাদের বলিষ্ঠ বৈজ্ঞানিক মানবশক্তি যথেষ্টদক্ষ ও পারদর্শী। মাঠের শস্য যখন খরায় জ্বলে-পুড়ে শেষ হয়ে যায়, তখন তার সমাধান কিহতে পারে, কিংবা আমাদের ইটভাটাগুলি থেকে দূষণের মাত্রা কমানোর জন্য উপযুক্তজ্বালানি শক্তির ব্যবহার কিভাবে সম্ভব হতে পারে তা রয়েছে আমাদের চিন্তাভাবনারমধ্যে।
২০১৬-র জানুয়ারিতে যেকর্মসূচিটির সূচনা করা হয়েছিল সেই ‘স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া’য় একটি গুরুত্বপূর্ণক্ষেত্র হল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি। এই ধরনের আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হল ‘অটলউদ্ভাবন মিশন’ এবং ‘নিধি’। এই কর্মসূচিগুলির লক্ষ্য হল উদ্ভাবন শক্তি পরিচালিতশিল্পের উপযোগী এক পরিবেশ গঠন। এছাড়াও, সিআইআই, ফিকি এবং উচ্চ প্রযুক্তির বেসরকারিসংস্থাগুলির সঙ্গে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের বিষয়টিকেও আমরা অনুসরণ করে চলেছিযাতে উদ্ভাবনের উপযোগী পরিবেশকে আরও জোরদার করে তোলা যায়।
মাননীয় প্রতিনিধিবৃন্দ,
জাতির কৌশলগত চিন্তাভাবনারকাজে খোরাক যোগাতে বিশেষ অবদান রয়েছে দেশের বিজ্ঞানীদের।
মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রেবিশ্বের এগিয়ে থাকা দেশগুলির মধ্যে ভারত তার স্থান করে নিয়েছে নিজস্ব মহাকাশকর্মসূচির মধ্য দিয়ে। উপগ্রহ উৎক্ষেপণকারী মহাকাশ যান, উপগ্রহ নির্মাণ, উন্নয়নেরকাজে তার ব্যবহার, দক্ষতা ও ক্ষমতা বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে মহাকাশ প্রযুক্তি ক্ষেত্রেস্বনির্ভরতা অর্জন করেছে আমাদের দেশ।
দেশের সশস্ত্র বাহিনীকেবিশেষভাবে শক্তি যুগিয়েছে প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা তার প্রযুক্তিগতপদ্ধতির উদ্ভাবন ও প্রয়োগের মাধ্যমে।
ভারতের বিজ্ঞান প্রচেষ্টাকেআন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতামুখী করে তোলার লক্ষ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ওসমন্বয়ের ভিত্তিতে এক কৌশলগত আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের জোটবন্ধন গড়ে তোলার কাজেউদ্যোগী হয়েছি আমরা। ব্রিক্স-এর মতো একটি বহুপাক্ষিক মঞ্চ সহ প্রতিবেশী দেশগুলিরসঙ্গে নিবিড় ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার ওপরও আমরা বিশেষ জোর দিয়েছি। আন্তর্জাতিকক্ষেত্রে বিজ্ঞানের শ্রেষ্ঠ ব্যবস্থাগুলি সৃষ্টির রহস্য উন্মোচনে নানাভাবে সাহায্যকরে চলেছে আমাদের। গত বছর আমরা ৩.৬ মিটার অপটিক্যাল টেলিস্কোপটিকে উত্তরাখণ্ডেরদেবস্থলে সক্রিয় করে তুলেছি। ভারত ও বেলজিয়ামের যৌথ সহযোগিতায় এটি নির্মাণ করাহয়েছে। সম্প্রতি আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথভাবে অনুমোদন দিয়েছি ‘লিগো’প্রকল্পটিকে। এর লক্ষ্য হল ভারতে এক অত্যাধুনিক ‘ডিটেক্টর’ ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
বিশিষ্ট প্রতিনিধিবৃন্দ,
পরিশেষে, আমি আরও একবার ঘোষণাকরতে চাই যে দেশের বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠানগুলির কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ সহযোগিতাও সমর্থনের সুযোগ পৌঁছে দিতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ।
প্রাথমিক বিজ্ঞান থেকেপ্রযুক্তির বিকাশ ও উদ্ভাবনের মানোন্নয়নে আমাদের বিজ্ঞানীরা যে তাঁদেরকর্মপ্রচেষ্টাকে আরও জোরদার করে তুলবেন সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত।
আমি আশা করব যে বিজ্ঞান ওপ্রযুক্তি হয়ে উঠবে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের এক বলিষ্ঠ হাতিয়ার। একইসঙ্গে দেশেরদুর্বলতম এবং দরিদ্রতম স্তরের মানুষদের ভাগ্য পরিবর্তনে ও উন্নয়নের ক্ষেত্রেও তাহয়ে উঠবে এক বিশেষ উপায়।
আমরা সকলে মিলে গড়ে তুলব ন্যায়ও সমতার ভিত্তিতে এক সমৃদ্ধ রাষ্ট্র।
জয় হিন্দ !
Nation will always be grateful to scientists who have worked tirelessly to empower our society by their vision, labour, and leadership: PM
— PMO India (@PMOIndia) January 3, 2017
Tomorrow’s experts will come from investments we make today in our people and infrastructure: PM @narendramodi https://t.co/Iy8hu3Nre5
— PMO India (@PMOIndia) January 3, 2017
Government is committed to supporting different streams of scientific knowledge: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) January 3, 2017
Ranging from fundamental science to applied science with emphasis on innovations: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) January 3, 2017
We need to keep an eye on the rise of disruptive technologies and be prepared to leverage them for growth: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) January 3, 2017
One important area that needs to be addressed is the rapid global rise of Cyber-Physical Systems: PM @narendramodi https://t.co/Iy8hu3Nre5
— PMO India (@PMOIndia) January 3, 2017
There is a need to develop and exploit these technologies in services and manufacturing sectors: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) January 3, 2017
Our best science and technology institutions should further strengthen their basic research in line with leading global standards: PM
— PMO India (@PMOIndia) January 3, 2017
Translating this basic knowledge into innovations, start-ups and industry will help us achieve inclusive and sustainable growth: PM
— PMO India (@PMOIndia) January 3, 2017
Science must meet the rising aspirations of our people: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) January 3, 2017
Another empowering factor for scientific delivery is the Ease of Doing Science. If we want science to deliver, we must not constrain it: PM
— PMO India (@PMOIndia) January 3, 2017
On the lines of Corporate Social Responsibility, concept of Scientific Social Responsibility needs to be inculcated (1/2)
— PMO India (@PMOIndia) January 3, 2017
to connect our leading institutions to all stakeholders, including schools and colleges: PM @narendramodi (2/2)
— PMO India (@PMOIndia) January 3, 2017
The brightest and best in every corner of India should have the opportunity to excel in science: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) January 3, 2017
Seeding the power of ideas & innovation in schoolchildren will broaden the base of our innovation pyramid & secure future of our nation: PM
— PMO India (@PMOIndia) January 3, 2017
The role of science in planning, decision making and governance has never been more important: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) January 3, 2017
Our scientists have contributed strongly to the strategic vision of the nation: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) January 3, 2017
The Government remains committed to provide the best support to our scientists and scientific institutions: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) January 3, 2017