প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ রাষ্ট্রীয় একতা দিবস উপলক্ষে কেভাড়িয়ায় স্ট্যাচু অফ ইউনিটিতে ৪৩০ জনের বেশি সিভিল সার্ভিস প্রশিক্ষণাধীন আধিকারিক, আধিকারিক এবং অন্যান্যদের সামনে বক্তব্য রাখেন।

এর আগে প্রশিক্ষণাধীন আধিকারিকরা পৃথকভাবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তাঁরা কৃষি ও গ্রামীণ ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্য পরিষেবার সংস্কার ও নীতি প্রণয়ন, স্থায়ী গ্রাম পরিচালন পদ্ধতি, সমন্বিত নগরায়ন এবং শিক্ষার ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, “দেশে বিভিন্ন সিভিল সার্ভিসেস্‌ – এর কম্বাইন্ড ফাউন্ডেশন পাঠ্যক্রমের মাধ্যমে সিভিল সার্ভিসেস্‌ – এর একটি নতুন অধ্যায় সূচিত হ’ল। এতদিন পর্যন্ত আপনারা মুসৌরি, হায়দরাবাদ ও অন্যান্য কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ পেয়ে এসেছেন। আমি বলতে চাই, আপনাদের প্রশিক্ষণের প্রাথমিক পর্যায়ে আমলাতন্ত্রের কাজকর্মের বিভিন্ন আধারের মধ্য দিয়ে আপনাদের তৈরি হতে হয়। সেটিকেও স্মরণ করিয়ে দিই”।

তিনি বলেন, প্রশিক্ষণাধীন আধিকারিকদের আন্তর্জাতিক স্তরে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে মতবিনিময় করানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, দেশ গড়ার কাজে সিভিল সার্ভিসেসের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার বিষয়টি সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের মস্তিষ্কপ্রসূত।

“সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের পরিকল্পনা ছিল, দেশ গঠন এবং প্রগতির জন্য সিভিল সার্ভিসেস-কে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসাবে গড়ে তোলা। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নকালে সর্দার প্যাটেল’কে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হয়েছে।

একটি ধারনা ছিল, যেসব আধিকারিকরা স্বাধীনতা আন্দোলন দমন করার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন, তাঁদের দিয়ে কিভাবে দেশের উন্নয়নের কাজ করা যায়! কিন্তু সর্দার প্যাটেল বিশ্বাস করতেন, দেশের ভবিষ্যৎ গড়ার কাজে এদের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে”।

“এই একই আমলারা রাজন্যশাসিত রাজ্যগুলিকে ভারতে অন্তর্ভুক্ত করার কাজে সাহায্য করেছিল”।

সর্দার প্যাটেলের ইচ্ছা এবং সংকল্পের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনার বিষয়ে তিনি প্রশিক্ষণাধীন আধিকারিকদের অবহিত করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “প্রায় ১০০ বছর আগে তিনি ১০ বছরের মধ্যে সীমিত সম্পদের সাহায্যে আমেদাবাদ পৌরসভার সংস্কার-সাধন করে সর্দার প্যাটেলের কর্মক্ষমতা প্রমাণ করে দিয়েছিলেন”।

তিনি বলেন, “স্বাধীন ভারতে সিভিল সার্ভিসেসের কর্মপ্রণালীর বিষয়ে সর্দার প্যাটেল তাঁর চিন্তাধারাকে কাজে লাগিয়েছিলেন”।

প্রধানমন্ত্রী প্রশিক্ষণাধীন আধিকারিকদের নিরপেক্ষভাবে এবং নিঃস্বার্থভাবে কাজ করার আহ্বান-ও জানান।

“নিরপেক্ষতা এবং নিঃস্বার্থভাবে প্রতিটি উদ্যোগের মাধ্যমে নতুন ভারতের ভিত্তি দৃঢ় হবে”।

“নতুন ভারতের স্বপ্ন ও চাহিদা পূরণের জন্য আমাদের আমলাতন্ত্রকে একবিংশ শতাব্দীর চিন্তাভাবনা এবং উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আমাদের সৃজনশীল ও গঠনাত্মক, কল্পনা-প্রবণ ও উদ্ভাবন, সক্রিয় ও নম্র, পেশাদারী ও মুক্তমনা, প্রাণোচ্ছ্বল ও কর্মক্ষম, দক্ষ ও কার্যকরী, স্বচ্ছ ও প্রযুক্তি-নির্ভর আমলাতন্ত্রের প্রয়োজন” বলে তিনি তাঁর অভিমত জানান।

তিনি বলেন, সড়ক, যানবাহন, টেলিফোন, রেল যোগাযোগ, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ ইত্যাদির মতো সম্পদের অভাব সত্ত্বেও উচ্চ-পদস্থ আমলারা অনেক কিছু অর্জন করেছেন।

“আজ আর সেই দিন নেই। ভারত প্রগতির পথে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। আমরা যুবশক্তি, আধুনিক প্রযুক্তি, খাদ্য সম্পদে সমৃদ্ধ। আপনাদের ভারতের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে সেটিকে স্থায়ী রূপ দিতে হবে”।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রশিক্ষণাধীন আধিকারিকদের দেশের কাজে নিয়োজিত হতে হবে।

তিনি বলেন, “আপনারা শুধুমাত্র চাকরি বা ভবিষ্যতের জন্য এই পেশায় আসেননি, আপনারা এখানে এসেছেন সেবা করার উদ্দেশ্যে। আপনাদের মন্ত্র – সেবা পরম ধর্ম”।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “আপনাদের প্রতিটি কাজ, একটি স্বাক্ষর লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনে প্রভাব বিস্তার করবে। আপনাদের যে কোনও সিদ্ধান্ত স্থানীয় এবং আঞ্চলিক প্রেক্ষিতে হলেও তার প্রভাব জাতীয় স্তর পর্যন্ত পৌঁছবে। তাই, আপনাদের ভাবতে হবে যে, কিভাবে আপনাদের সিদ্ধান্তগুলি দেশে প্রভাব বিস্তার করবে”।

“দুটি মূল আদর্শের ওপর আপনাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। একটি হ’ল – মহাত্মা গান্ধীর ভাবনা, যেখানে তিনি বলেছিলেন, আপনাদের সিদ্ধান্তগুলি যেন সমাজের প্রান্তিক মানুষটির কাছে পৌঁছয় এবং দ্বিতীয়টি হ’ল – আপনাদের সিদ্ধান্ত দেশের একতা, স্থিতিশীলতা ও ক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে পারে” বলে শ্রী মোদী তাঁর অভিমত ব্যক্ত করেন।

প্রধানমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে ১০০-রও বেশি প্রত্যাশাপূর্ণ জেলার পরিস্থিতির কথা বর্ণনা করেন। কিভাবে নানা ভ্রান্ত ধারনার মাধ্যমে যেগুলি প্রতিটি ক্ষেত্রে অবহেলিত হয়ে এসেছে।

শ্রী মোদী বলেন, “১০০টিরও বেশি জেলা উন্নয়নের দৌড়ে পরাজিত হয়েছিল। আর আজ তারা প্রত্যাশাপূর্ণ জেলা হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। তারা প্রতিটি ক্ষেত্রে অবহেলিত হয়ে এসেছে। এর ফলে, দেশের বিষয়ে ভ্রান্ত ধারনার সৃষ্টি হয়েছে। আর এখন তাদের উন্নয়ন আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। আমরা এখন মানব উন্নয়ন সূচকের প্রতিটি ক্ষেত্র নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছি। আমরা চেষ্টা করছি, প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রতিটি সিদ্ধান্তকে কার্যকর করতে। আপনাদের এখন এ বিষয়ে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। আমাদের এই প্রত্যাশাপূর্ণ জেলাগুলির উন্নয়ন ঘটাতে হবে”।

তিনি প্রশিক্ষণাধীন আধিকারিকদের সময়ে সময়ে এক একটি করে সমস্যা নিয়েই কাজ করার আহ্বান জানান, যার মাধ্যমে যে সমাধানসূত্রটি বেরিয়ে আসবে, সেটি জনগণের আস্থার সঞ্চার সৃষ্টি করবে। এর ফলে, তাঁরাও সমস্যার সমাধানে অংশগ্রহণ করবেন।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “আমাদের উৎসাহ ও উদ্দীপনায় আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করবো এবং আমাদের সম্পদের ব্যবহার করবো। আপনারা একবার একটি বিষয় নিয়ে কাজ করবেন, তার সমাধান খুঁজে বের করবেন। একটি জেলা, একটি সমস্যা এবং সামগ্রিক সমাধান। একটি সমস্যার সমাধান করুন, আপনাদের আস্থা বৃদ্ধির মাধ্যমে জনগণের আস্থাও বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে, কর্মসূচিগুলিতে তাঁদের অংশগ্রহণ বাড়বে”।

তিনি তরুণ প্রশিক্ষণাধীন আধিকারিকদের অনুরোধ করেন, স্বচ্ছ চিন্তাভাবনা নিয়ে কাজ করতে এবং জনগণ যেন তাঁদের নাগাল পান – তা নিশ্চিত করতে।

“আপনারা ক্ষমতার পরিবর্তে বিনয়ী হবেন। জনসাধারণের যেন আপনাদের কাছে সহজেই পৌঁছতে পারেন, তা নিশ্চিত করবেন। স্বচ্ছ চিন্তাভাবনা নিয়ে কাজ করবেন। সব সমস্যার সমাধান হয়তো আপনারা করতে পারবেন না। কিন্তু, সেগুলি শোনার ইচ্ছা আপনাদের থাকতে হবে। এদেশের সাধারণ নাগরিক তাঁদের সমস্যাগুলিকে সঠিকভাবে শুনলে অনেক সময়েই সন্তুষ্ট হন। তিনি চান, সঠিক জায়গায় তাঁর সমস্যাগুলো যথাযথ মর্যাদায় আলোচিত হোক”।

সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার লক্ষ্যে শ্রী মোদী যথাযথ ফিডব্যাকের ব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “যে কোনও ব্যবস্থায় যে কোনও আমলাতান্ত্রিক পরিকাঠামো যথাযথ ফিডব্যাক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কার্যকর হতে পারে। আপনাদের বিরোধী পক্ষের কাছ থেকেও যাতে আপনারা ফিডব্যাক পেতে পারেন, সেই ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এর মাধ্যমে আপনাদের কর্মকুশলতা বাড়বে এবং আপনারা সংস্কারমূলক কাজ করতে পারবেন”।

প্রধানমন্ত্রী সিভিল সার্ভিস প্রশিক্ষণাধীন আধিকারিকদের প্রযুক্তির ব্যবহার করতে বলেন এবং দেশ যেন ৫ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলারের সমতুল অর্থনীতিতে পৌঁছতে পারে, সেই লক্ষ্যে কাজ করার নির্দেশ দেন।

প্রশিক্ষণাধীন আধিকারিকরা এর আগে কৃষি ও গ্রামীণ ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্য পরিষেবার সংস্কার ও নীতি প্রণয়ন, স্থায়ী গ্রাম পরিচালন পদ্ধতি, সমন্বিত নগরায়ন এবং শিক্ষার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

पूरा भाषण पढ़ने के लिए यहां क्लिक कीजिए

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII

Media Coverage

PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM Modi meets with President of Suriname
November 21, 2024

Prime Minister Shri Narendra Modi met with the President of Suriname, H.E. Mr. Chandrikapersad Santokhi on the sidelines of the 2nd India-CARICOM Summit in Georgetown, Guyana on 20 November.

The two leaders reviewed the progress of ongoing bilateral initiatives and agreed to enhance cooperation in areas such as defense and security, trade and commerce, agriculture, digital initiatives and UPI, ICT, healthcare and pharmaceuticals, capacity building, culture and people to people ties. President Santokhi expressed appreciation for India's continued support for development cooperation to Suriname, in particular to community development projects, food security initiatives and small and medium enterprises.

Both leaders also exchanged views on regional and global developments. Prime Minister thanked President Santokhi for the support given by Suriname to India’s membership of the UN Security Council.