ভারত এবং ফ্রান্সের সম্পর্কের ভিত্তি হল ‘স্বাধীনতা, সমতা এবং সৌভ্রাতৃত্ববোধ: প্রধানমন্ত্রী মোদী
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে ফ্রান্স এবং ভারত
নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় সহযোগিতা আরও প্রসারিত করবে ফ্রান্স এবং ভারত: প্রধানমন্ত্রী

মাননীয় রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ,

ভারত এবং ফ্রান্সের সুধী প্রতিনিধিবৃন্দ,

বন্ধুগণ,

বঁ জঁ,

নমস্কার,

প্রথমে আমি আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু রাষ্ট্রপতি ম্যাক্রঁকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তিনি এই ঐতিহাসিক স্থানে আমাকে এবং আমার প্রতিনিধিদলকে দারুণভাবে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন। এটা আমার জীবনে একটি স্মরণীয় মুহূর্ত। রাষ্ট্রপতি ম্যাক্রঁর জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানোর মধ্য দিয়ে ভারত এবং ফ্রান্সের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্বের দিকটি গুরুত্ব পাচ্ছে। পাশাপাশি, এর মাধ্যমে আমার প্রতি তাঁর সৌহার্দ প্রকাশিত হচ্ছে। এবারের জি-৭ শীর্ষ সম্মেলন ফ্রান্সের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই সম্মেলনের বিষয়ে আমাদের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আশা করব এই সম্মেলন সফল হবে। ভারত এই সম্মেলনে সবরকমের সহযোগিতা আশা করছে। ভারত বহু শতাব্দী ধরে জীববৈচিত্র্য, জলবায়ু পরিবর্তন, গ্যাস সহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রকৃতির সঙ্গে ভারসাম্য রেখে সেগুলি ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছে। প্রকৃতিকে ধ্বংস করে মানবসভ্যতা লাভবান হতে পারে না। আর, এবারের জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে যেহেতু এটিই থিম, তাই ভারতের পক্ষে তা অত্যন্ত আনন্দের বিষয়।

বন্ধুগণ,

ভারত এবং ফ্রান্সের মধ্যে বহু যুগের পুরনো সম্পর্ক। আমাদের বন্ধুত্ব কোন স্বার্থ সর্বস্ব কারণের জন্য নয়, বরং এর ভিত্তি হল ‘স্বাধীনতা, সমতা এবং সৌভ্রাতৃত্ববোধ’। এই কারণেই স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য ও ফ্যাসিবাদ এবং চরমপন্থাকে প্রতিহত করার জন্য ভারত এবং ফ্রান্স একযোগে কাজ করে চলেছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে হাজার হাজার ভারতীয় সৈনিকের আত্মবলিদান ফ্রান্স আজও মনে রেখেছে। আজ ফ্রান্স এবং ভারত সন্ত্রাসবাদ, জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ এবং প্রযুক্তির সমন্বিত উন্নয়নের বিষয়ে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জগুলি দৃঢ়ভাবে মোকাবিলা করছে। আমাদের দুটি দেশ শুধু ভালো বিষয় নিয়েই কথা বলে না, আমরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপও নিয়ে থাকি আর তারই একটি সফল উদ্যোগ হল আন্তর্জাতিক সৌর চুক্তি।

বন্ধুগণ,

গত দু’দশকে আমাদের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে উঠেছে। আজ ফ্রান্স এবং ভারত একে অন্যের বিশ্বাসযোগ্য অংশীদার। আমাদের সমস্যার দিনে আমরা একে অন্যের বক্তব্য বুঝতে পারি এবং তা সমর্থন করি।

আজ রাষ্ট্রপতি ম্যাক্রঁ এবং আমি আমাদের সম্পর্কের সবদিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। ২০২২ সালে ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি হবে। এই সময়ের মধ্যে নতুন ভারত গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা বেশ কিছু লক্ষ্য ধার্য করেছি। আমাদের মূল লক্ষ্য হল ভারতের অর্থনীতিকে ৫ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলারের সমতুল অর্থনীতিতে পরিণত করা। ফরাসি উদ্যোগপতিদের কাছে ভারতের উন্নয়নে সামিল হওয়ার এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ। দক্ষতা বিকাশ, বিমান পরিবহণ, তথ্যপ্রযুক্তি, মহাকাশ সহ আমাদের অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিকাশের জন্য আমরা আরও নতুন নতুন উদ্যোগের দিকে তাকিয়ে রয়েছি। সামরিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা আমাদের সম্পর্কের একটি মজবুত স্তম্ভ। আমার খুব ভালো লাগছে যে আমরা বিভিন্ন প্রকল্পে অগ্রগতি নিশ্চিত করেছি। আগামী মাসে প্রথম ৩৬টি রাফায়েল বিমান ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রযুক্তি এবং উৎপাদনের ক্ষেত্রে আমরা সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি করব। ফ্রান্সের সঙ্গেই আমরা প্রথম সর্বশেষ প্রযুক্তির অসামরিক আনবিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। জইতাপুর প্রকল্পের বাস্তবায়নের জন্য আমরা আমাদের কোম্পানিগুলিকে সক্রিয় হতে বলেছি। এক্ষেত্রে বিদ্যুতের দামে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এটা খুবই আনন্দের বিষয়, উভয় দেশের পর্যটন বিকশিত হচ্ছে। প্রতি বছর ফ্রান্স থেকে ২.৫ লক্ষ পর্যটক ভারতে আসেন এবং ভারত থেকে ৭ লক্ষ পর্যটক ফ্রান্সে যান। উচ্চশিক্ষায় ছাত্র আদানপ্রদান আরও বাড়াতে হবে। ‘নমস্তে ফ্রান্স’ – ভারতের এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পরবর্তী পর্বটি ফ্রান্সে ২০২১-২২ সাল জুড়ে চলবে। আমি আশা করব এই উৎসবের মাধ্যমে ফরাসি জনগণ ভারতের সংস্কৃতির বিবিধতা সম্পর্কে আকৃষ্ট হবেন। আমি জানি, যোগ ফ্রান্সে অত্যন্ত জনপ্রিয়। আমি আশা করব, ফ্রান্সে আমার অনেক বন্ধু আরও বেশি করে এই স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের ধারাটি গ্রহণ করবেন।

বন্ধুগণ,

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় ভারত এবং ফ্রান্সের মধ্যে সহযোগিতার বিষয়টি আমি বিশেষভাবে উল্লেখ করছি। আমাদের দুটি দেশই সন্ত্রাসবাদ এবং চরমপন্থার শিকার। আমরা সীমান্তের অন্য পারের থেকে আশা সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় ফ্রান্সের মূল্যবান সমর্থন এবং সহযোগিতা পেয়ে আসছি। এ কারণে আমরা রাষ্ট্রপতি ম্যাক্রঁকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় আমাদের সহযোগিতা আরও প্রসারিত করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সামুদ্রিক এবং সাইবার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি করব। আমার খুব ভালো লাগছে যে সাইবার নিরাপত্তা এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আমরা নতুন একটি পরিকল্পনায় ঐক্যমত্য হয়েছি। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আমাদের সহযোগিতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ও প্রগতির জন্য যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

বন্ধুগণ,

আমি আশা করি, জি-৭ বৈঠকে আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু রাষ্ট্রপতি ম্যাক্রঁ সফলভাবে নেতৃত্বদান করবেন। নতুন দৃষ্টিভঙ্গি, উৎসাহ এবং দক্ষতার মাধ্যমে ফ্রান্স বর্তমান যুগের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারবে।

সুধী,

এই অবকাশে ১৩০ কোটি ভারতবাসীর সহযোগিতা এবং সমর্থন আপনাদের সঙ্গে রয়েছে। একটি নিরাপদ এবং সমৃদ্ধশালী বিশ্ব গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আমরা দুটি দেশ একযোগে কাজ করব। বিয়াররিৎস-এ জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের বিষয়ে আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। একটি সাফল্যমণ্ডিত সম্মেলনের জন্য আমার শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আমি আরও একবার আপনাদের আন্তরিক আমন্ত্রণের জন্য আমার কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

ধন্যবাদ।

ম্যাসি বুকু,

আঁ রেভ্যঁ।

 

 

 

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII

Media Coverage

PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
সোশ্যাল মিডিয়া কর্নার 21 নভেম্বর 2024
November 21, 2024

PM Modi's International Accolades: A Reflection of India's Growing Influence on the World Stage