বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় শেখ হাসিনা মহোদয়া,
ভারত এবং বাংলাদেশের মন্ত্রীগণ,
আর এই সরাসরি সম্প্রচারের সঙ্গে যুক্ত ভারত ও বাংলাদেশের বন্ধুগণ,
নমস্কার।
কয়েকদিনের মধ্যেই এটি আমাদের দ্বিতীয় ভিডিও কনফারেন্স।
আমাদের এই সহজ সম্পর্কের পেছনে কোনও প্রযুক্তি নয়, এর পেছনে রয়েছে, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অবাধ গতি ও নিরন্তর প্রগতি।
ভৌগোলিকভাবে আমরা প্রতিবেশি দেশ। কিন্তু মানসিকভাবে আমরা একই পরিবারের সদস্য।
পরস্পরের সুখ-দুঃখে পাশে দাঁড়ানো, পরস্পরের উন্নয়নে সাহায্যের হাত বাড়ানো – এসব আমাদের পারিবারিক মূল্যবোধেরই পরিচয়।
বিগত কয়েক বছরে আমাদের সহযোগিতা বিশ্ববাসীকে দেখিয়েছে যে প্রতিবেশীরা চাইলে একে অপরের জন্যে কী না করতে পারে!
চার দশক পুরনো সীমান্ত বিবাদের সুষ্ঠু সমাধান থেকে শুরু করে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে পরস্পরের পাশে দাঁড়ানো, আমরা সকল ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নতি করেছি।
এই উন্নতির কৃতিত্ব আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বকে দিতে চাই। আর সেজন্যে আমি আপনাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।
বন্ধুগণ,
আজ যে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইনের কাজ শুরু হয়েছে, তা উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতার মহাকাব্যে এক নতুন অধ্যায় জুড়বে!
যে কোনও দেশের উন্নয়নে জ্বালানী একটা বড় ভূমিকা পালন করে। সেজন্যে আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এই পাইপলাইন বাংলাদেশের দ্রুত উন্নয়নের আকাঙ্ক্ষাপূরণে সহায়ক হয়ে উঠবে।
বিশেষ করে বাংলাদেশের উত্তরভাগে এই পাইপলাইন সুলভে জ্বালানী তেল পৌঁছে দেবে।
এই পাইপলাইন বাংলাদেশের আর্থিক সমৃদ্ধির পাশাপাশি আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কে আরও প্রাণশক্তি সঞ্চার করবে।
আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, ভারতের অর্থানুকূল্যে তৈরি হলেও এই পাইপলাইন সংযোগের পর বাংলাদেশের সরকার ও জনগণকে সমর্পণ করা হবে।
একইভাবে আজ আমরা যে রেল প্রকল্পের কাজ শুরু করেছি, তা ঢাকার যানজট হ্রাস করার পাশাপাশি বাংলাদেশের পরিবহণ শুল্কের আমদানিও বাড়াবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এই রেল প্রকল্প বাংলাদেশের আন্তর্দেশীয় যোগাযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি নাগরিক যাতায়াত ব্যবস্থাকেও উন্নত করবে।
শ্রদ্ধাভাজনেষু,
আপনি চান যে উভয় দেশের জনগণের মধ্যে আবার ১৯৬৫ পূর্ববর্তী কালের মতো অবাধ যাতায়াত শুরু হোক। এই আকাঙ্খা আমাকে প্রেরণা জোগায়।
আমি আনন্দিত যে, ঢাকা- টোঙ্গী – জয়দেবপুর এর মতো প্রকল্প আমাদের পারস্পরিক যাতায়াত ব্যবস্থাকে একবিংশ শতাব্দীর উপযোগী করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
মাত্র ১০ দিনের মধ্যে আমরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৫টি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প উদ্বোধন করতে পেরেছি। এই গতি, এই বাস্তবায়ন আপনার প্রজ্ঞা এবং দক্ষ নেতৃত্ব ছাড়া সম্ভব হ’ত না!
আমি বিশ্বাস করি যে আগামী দিনে ভারত ও বাংলাদেশের জনগণের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্যে আমরা এই ভাবনা নিয়েই কাজ করে যাব।
শ্রদ্ধাভাজনেষু,
আমার বক্তব্য সম্পূর্ণ করার আগে আপনাকে আগামী ২৪শে সেপ্টেম্বর তারিখে আপনার জন্মদিনের জন্যে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাতে চাই। সমস্ত ভারতবাসীর পক্ষ থেকে আপনার দীর্ঘ আয়ু, সুস্থ সবল শরীর ও সবরকম সাফল্য কামনা করি, আর আশা করি, বাংলাদেশের উন্নয়ণ এবং ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রীর আপনি এমনভাবেই পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালন করে যাবেন।
ধন্যবাদ।