মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
আমার বন্ধু মার্ক রুট,
সম্মানিত প্রতিনিধিগণ,
সংবাদমাধ্যমের সদস্যবৃন্দ,
বন্ধুগণ,
প্রধানমন্ত্রী মার্ক এবং তাঁর সঙ্গে আসা বিশিষ্টজনেদের ভারতে হার্দিক স্বাগত। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, প্রধানমন্ত্রী মার্কের সঙ্গে তাঁর চারজন ক্যাবিনেট সহযোগী, হেগ এর মেয়র এবং দু’শোরও অধিক বাণিজ্য প্রতিনিধি ভারতে এসেছেন। নেদারল্যান্ড থেকে আসা এটি সর্বকালীন সর্ববৃহৎ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল। এ থেকে স্পষ্ট হয় যে দু’দেশের বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সম্পর্ক কতটা সক্রিয় এবং সম্ভাবনাপূর্ণ। ২০১৫ সালেপ্রধানমন্ত্রীমার্করুট প্রথমবার ভারতে এসেছিলেন।২০১৭ সালে আমি নেদারল্যান্ড গিয়েছিলাম।আর আমাদের তৃতীয় শীর্ষ সম্মেলন হল আজ।এমন খুব কম দেশই রয়েছে যার সঙ্গে ভারতের উচ্চপর্যায় সফরজনিত সম্পর্কে এমন গতি রয়েছে!আর এই স্বতঃস্ফুর্ততার ফলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে ব্যক্তিগতভাবে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্যে,আমি আমারবন্ধুমার্করুটকে হৃদয় থেকে অভিনন্দন জানাই।
বন্ধুগণ,
আজ আমরা দু’জনে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতিকে পর্যালোচনা করেছি।ক্ষেত্রীয় আর আন্তর্জাতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে মতবিনিময় করেছি।আর আমরা উভয় দেশের প্রধান কোম্পানিগুলির সিইওদের সঙ্গেও আলাপ-আলোচনা করেছি।গতবছর আমি যখন নেদারল্যান্ড গিয়েছিলাম,তখনআমারবন্ধুমার্করুটকে অনুরোধ করেছিলাম নেদারল্যান্ড যাতে আন্তর্জাতিক সৌর সঙ্ঘের সদস্যপদ গ্রহণের ব্যাপারে ইতিবাচক চিন্তাভাবনা করে!সৌরশক্তি ক্ষেত্রে নেদারল্যান্ডের কাছে যে প্রযুক্তি,অভিজ্ঞতা এবং সাফল্য রয়েছে,তার দ্বারা সারা পৃথিবী উপকৃত হতে পারে।আর আমি অত্যন্ত খুশি যে আজ নেদারল্যান্ড আন্তর্জাতিক সৌর সঙ্ঘের সদস্যপদ গ্রহণ করেছে।এই সিদ্ধান্তের জন্যে প্রধানমন্ত্রী রুটকে কৃতজ্ঞতা জানাই।রাষ্ট্রসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদ থেকে শুরু করে মাল্টিল্যাটারাল এক্সপোর্ট কন্ট্রোল রিজাইমস বা বহুমাত্রিক রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ শাসন ব্যবস্থা পর্যন্ত ভারত এবং নেদারল্যান্ডের মধ্যে নিবিড় সহযোগিতা ও সমন্বয় রয়েছে।এখন আন্তর্জাতিক সৌর সঙ্ঘের আন্তর্জাতিক মঞ্চেও আমাদের মধ্যে নিবিড় সহযোগিতা একটি নতুন মাত্রা দেবে।
বন্ধুগণ,ডাচ কোম্পানিগুলির কাছে ভারত নতুন নয়।অনেক বছর ধরে কয়েকশো ডাচ কোম্পানি ভারতে কাজ করছে।ভারতে এযাবৎ আসা প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নেদারল্যান্ড পঞ্চম বৃহত্তম দেশ।একইরকমভাবে ভারতীয় কোম্পানিগুলির বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও নেদারল্যান্ড অত্যন্ত আকর্ষক গন্তব্য।আর সেজন্যেই উভয় দেশের প্রধান কোম্পানিগুলির সিইওদের সঙ্গেও আলাপ-আলোচনা অত্যন্ত উপযোগী হয়েছে! আমি আনন্দিত যে নেদারল্যান্ডের ব্যবসায়ী মহল ভারতে সৃষ্ট সুযোগগুলি সম্পর্কে উৎসাহী। আমিও তাঁদের আশ্বস্ত করেছি যে, ভারতে অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রতি আমার এই দায়বদ্ধতা বজায় থাকবে! কৃষি এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্র ভারতের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই বিষয়টি আমাদের খাদ্য সুরক্ষার সঙ্গে জড়িত।পাশাপাশি, আমাদের ভারতের কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যপূরণেও এই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এসব ক্ষেত্রে নেদারল্যান্ড-এর সাফল্যে কথা আমরা জানি। গতবছর ‘ওয়ার্ল্ড ফুড ইন্ডিয়া’তে নেদারল্যান্ড ‘ফোকাস কান্ট্রি’ রূপে অংশগ্রহণ করেছে। আর আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে ২০১৯-এ এর পরবর্তী সংস্করণে নেদারল্যান্ডের অংশীদারিত্ব আরও বেশি হবে। আমি আনন্দিত যে বারামতিতে সব্জি বিষয়ক প্রথম ইন্দো-ডাচ সেন্টার ফর এক্সেলেন্স চালু হয়ে গেছে। এভাবে অন্যান্য কিছু কেন্দ্রেও আমরা যৌথভাবে কাজ করছি। এভাবে নগরোন্নয়ণের ক্ষেত্রেও আমাদের সহযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ভদোদরা এবং দিল্লিতে বর্জ্য জল ব্যবস্থাপনার প্রকল্পে আমরা যৌথভাবে কাজ করছি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে আমরা ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পরস্পরের সহযোগী। আর ২০১৯-এ ভারতে অনুষ্ঠেয়‘টেক সামিট”-এ নেদারল্যান্ড অংশীদার দেশ রূপে অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই সফল অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে।
বন্ধুগণ,
আমাদের সরকারের বিদেশনীতিতে অগ্রাধিকার হল বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয় সমাজের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া। ২০১৭ সালে সেন্ট মার্টিনে প্রবল সামুদ্রিক ঝড়ের প্রকোপে বিপর্যস্ত ভারতীয়দের উদ্ধারে সহযোগিতার জন্যে আমি প্রধানমন্ত্রী রুট এবং নেদারল্যান্ড সরকারকে বিশেষভাবে অভিনন্দন জানাই।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
আমি আরেকবার আপনাকে এবং আপনার সঙ্গে আসা বিশিষ্ট প্রতিনিধিদের ভারতে হার্দিক স্বাগত জানাই।
ধন্যবাদ।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।