আপনাদের সবাইকে বিবেকানন্দ জয়ন্তীও জাতীয় যুব দিবসের অনেক অনেক শুভকামনা|
আজ বেলগাবির এই অসাধারণ দৃশ্য, এই বিশাল ছবি দেখে মনেহচ্ছে যে, সবকিছু বিবেকানন্দময় হয়ে গেছে| আজ এখানে সর্বধর্ম সভারও আয়োজন করাহচ্ছে| তার জন্যও আপনাদের সবাকে মঙ্গলকামনা জানাই|
এই সময়ে আমি যে উত্সাহ দেখতে পাচ্ছি, তা সবারচিন্তা-চেতনা, হৃদয়-মন্দিরকে অভিন্ন করে দিয়েছে, সংহত করে দিয়েছে| “সহস্র-সহস্রবিবেক আহ্বান”-এর সঙ্গে আজ এখানে এক বিশ্ব-রেকর্ড তৈরি হচ্ছে|
এই সবকিছু পূজনীয় শ্রী সিদ্ধলিঙ্গ মহারাজ, শ্রীইয়ল্লালিঙ্গ প্রভুজি এবং শ্রী সিদ্ধ রামেশ্বর মহাস্বামীজি’র আশির্বাদেই হচ্ছে|উনাদের আশির্বাদের শক্তি এই সময়ে আপনাদের সবার মুখমণ্ডলে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে|
এই শক্তি, এই আশির্বাদ আমিও অনুভব করতে পারছি| ভাই ওবোনেরা, বেলগাবিতে আসা আমার কাছে সবসময়ই অনেক সুখকর অভিজ্ঞতার বিষয়| এখানে ‘একভারত-শ্রেষ্ঠ ভারতের’ সুন্দর ছবি প্রদর্শিত হয়ে ওঠে|
খুব কম জায়গার মধ্যেই পাঁচটি আলাদা আলাদা ভাষারপ্রবাহ দেখার সুযোগ দেশের অন্য প্রান্তে খুব কমই পাওয়া যায়| আমি আপনাদের সবারসঙ্গেই বেলগাবি’র ভূমিকেও প্রণাম জানাই| বেলগাবি কিত্তুরের রানি চেন্নমা’র ভূমি,ইংরেজদের সঙ্গে লড়াই করা মহান যোদ্ধা সঙ্গোলি রায়ান্নার ভূমি| স্বামীবিবেকানন্দজিও বেলগাবিতে দশদিনের সফর করেছিলেন|
তিনি মহীশুরের বিখ্যাত প্রাসাদেও অবস্থান করেছিলেন|মহীশুর থেকেই এগিয়ে গিয়ে তিনি কেরালা ও তামিলনাড়ুতে গিয়েছিলেন, যেখানেকন্যাকুমারীতে তিনি এক নতুন প্রেরণ পেয়েছিলেন| সেই প্রেরণা থেকে তিনি শিকাগো যানএবং গোটা বিশ্বকে তিনি মুগ্ধ করে দিয়েছিলেন|
এ বছর স্বামী বিবেকানন্দের শিকাগো ভাষণের ১২৫তম বর্ষ|যখন সেই ভাষণের শততম বর্ষ হয়েছিলো, তখন আমি সেজন্য শিকাগো গিয়েছিলাম| সেই বিষয়েরওপঁচিশ বছর হয়ে গেছে| উনার কথার, উনার ভাষণের এতো বছর হয়ে যাওয়ার পরও আমাদেরপ্রতিদিন, জীবনের প্রতিটি বাঁকে, প্রতিটি সমস্যার সমাধান খোঁজার সময় মনে হয়—আরে,স্বামী বিবেকানন্দজি তো এরকম বলেছিলেন!!! কতই না সঠিক বলেছিলেন!!! বিবেকানন্দজিকেআমাদের মনে করার প্রয়োজন হয়না, তিনি সবসময়ই মনে উপস্থিত থাকেন|
একজন ভারতীয়কে কীরকম হওয়া উচিত, এনিয়ে বিবেকানন্দজি অসাধারণশক্তিশালী মন্ত্র দিয়েছিলেন| সেটা ছিল, ‘স্বদেশ মন্ত্র’| এর প্রতিটি পংক্তিতেরয়েছে শক্তি ও প্রেরণা| তিনি বলেছিলেন—“হে ভারত, তুমি ভুলিও না তোমার জীবনব্যক্তিগত সুখের জন্য নয়| হে বীর, গর্বের সঙ্গে বলো যে আমি ভারতবাসী, আর প্রত্যেকভারতবাসী আমার ভাই| গর্বের সঙ্গে উচ্চকণ্ঠে বলো যে প্রতিটি ভারতবাসী আমার ভাই,ভারতবাসী আমার প্রাণ| ভারতের মাটি আমার স্বর্গ| ভারতের কল্যাণ আমার কল্যাণ|”
এরকম ছিলেন বিবেকানন্দ| ভারতের সঙ্গে একীভূত বিবেকানন্দ| ভারতে সম্পৃক্তবিবেকানন্দ| ভারতের সুখ-দুঃখকেই নিজের সুখ-দুঃখ মনে করার বিবেকানন্দ| তিনি সমস্তঅশুভের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন| বিদেশে ভারতকে সর্পসংকুল ও বাজিকরের দেশ বলারঅপপ্রচারকে তিনি বিনষ্ট করেন| বিশ্বে ভারতের খ্যাতি ও মর্যাদা বৃদ্ধি করেন| তাঁরজ্ঞান-বিজ্ঞান, ভাষা, সামাজিক সংস্কার, আধুনিক জগতের এগিয়ে চলা পদক্ষেপের সঙ্গে পামিলিয়ে চলার সাহস ছিল|
সমাজে পরিব্যাপ্ত বিকৃতি, অস্পৃশ্যতা, ভেদাভেদ, ভন্ডামিকে খণ্ড খণ্ড করারএক সাহসী ভাব ছিল তাঁর মধ্যে| এই ভাবের জন্য বিবেকানন্দকে যোদ্ধা-সন্যাসী হিসেবেতৈরি করে দিয়েছিল| স্বামী বিবেকানন্দ কলম্বো থেকে আলমোড়ার সফরে জাতিভেদের বিরুদ্ধেআহ্বানকে শক্তিশালী করেন|
তিনি মানুষকে স্পষ্টভাবে বলেন যে,
“জ্ঞান ও দর্শনে বিশ্বে তোমাদের মতো আর কেউ মহান হয়ত নেই, কিন্তু ব্যবহারেরদিক দিয়েও এ ধরনের নিকৃষ্টতাও হয়ত আর কেউ করেনা| তোমাদের এই ব্যবহারের জন্যধিক্কার!!!”
সোয়া-শ’ বছর আগে তিনি যা বলেছিলেন, তা হয়ত এতো স্পষ্টভাবে আজও কেউ দেখানোরসাহস করেন না| বন্ধুগণ, আমাদেরকে এই পরিবেশকে পরিবর্তন করতে হবে, এই মানসিকতার বদলকরতে হবে| বিবেকানন্দের চিন্তা-চেতনাকে বিশ্বাস করলে অন্তর থেকে জাতি-দ্বেষ,জাতিভেদের বিষকে বের করে দিতে হবে, সমাপ্ত করতে হবে|
শ্রী সিদ্ধলিঙ্গ মহারাজজি’র প্রেরণায় আপনাদের মঠও তো গত দশকে জাতিভেদেরসমস্ত দিককে সমাপ্ত করার জন্য কাজ করেছে| জাতিগতভাবে চিন্তা না করে, কারো জাতিরপরিচয় না জিজ্ঞাসা করে সমাজের উপেক্ষিত ও দুর্বল অংশের মানুষকে আপনারা প্রয়োজনীয়সহায়তা দিচ্ছেন|
আপনাদের মঠের সঙ্গে যুক্ত মানুষ গ্রামে গ্রামে গিয়ে বন্যা-ত্রাণের কাজ করছেন,গরিব মানুষদের বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়ার কাজ করছেন, বিনামূল্যে চিকিত্সা শিবিরকরছেন, মানুষদের খাবার দিচ্ছেন, পোশাক দিচ্ছেন—এগুলো কি জাতির বিবেচনা করেদিচ্ছেন? না|
খুব কঠিন কাজ, তবু দশকের পর দশক ধরে মানুষের প্রয়াসে দেশ জাতিগত বন্ধন থেকেমুক্ত হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে| কিন্তু আপনাদের মতো লক্ষ লক্ষ মানুষের এই প্রয়াসেরওপর কিছু সমাজবিরোধী মানুষের দৃষ্টি পড়েছে| এইসব মানুষ পুনরায় দেশকে জাতির নামেবিভাজনের ষড়যন্ত্র করছে|
এইসব মানুষকে আজকের যুব সমাজ জবাব দিচ্ছে| ভারতের নবীন প্রজন্ম এইসব কিছু-সংখ্যকমানুষের ভুল বোঝানোতে যাচ্ছে না| দেশে জাতিভেদ, কু-রীতি, কুসংস্কার সমাপ্ত করারসংকল্প গ্রহণকারী সেইসব নবীন প্রজন্ম, ‘নব ভারতের’ স্বপ্ন সার্থক করার জন্য সংকল্পগ্রহণকারী এইসব নব প্রজন্মই বিবেকানন্দ| তারা ভারতের নতুন বিক্রমী-শক্তিশালী,প্রগতিশীল মুখের প্রতীক|
সেইসব নবীন যুবক-যুবতী যারা রাষ্ট্র নির্মাণের ক্ষেত্রে সক্রিয় হয়ে নিজেরদায়িত্ব পালন করছেন, নব ভারতের সংকল্পকে পূরণ করার জন্য কাজ করছেন, তারাইবিবেকানন্দ| কোনো ক্ষেতে, কোনো কারখানায়, কোনো স্কুলে, কোনো কলেজে,গলি-পাড়া-রাস্তায় দেশের সেবায় যুক্ত প্রত্যেক মানুষই বিবেকানন্দ|
যারা এই সময়ে স্বচ্ছ ভারতের অভিযানকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, গ্রামে-গ্রামেগিয়ে মানুষকে ডিজিট্যাল সাক্ষরতা প্রদান করছেন, তারা বিবেকানন্দ| যারাদলিত-পীড়িত-শোষিত বঞ্চিতের জন্য কাজ করছেন, তারা বিবেকানন্দ| যারা নিজের শক্তিকে,নিজের ধারণাকে, নিজের উদ্ভাবনাকে সমাজের ভালোর জন্য ব্যবহার করছেন, তারাইবিবেকানন্দ|
বন্ধুগণ, গত বছর এক কর্মসূচি হয়েছিল—স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথন| এইকর্মসূচিতে ৪০ হাজারেরও বেশি যুবক-যুবতী, দেশের প্রায় ৬০০ সমস্যার ডিজিট্যালসমাধানের জন্য যোগ দিয়েছিলেন| এরাও আমার জন্য বিবেকানন্দই| লক্ষ-কোটি সাধারণমানুষ, ভারতের মাটির সুবাস নিয়ে ‘নিউ ইন্ডিয়া’ বা ‘নব ভারতের’ নির্মাতা, আমাদেরনতুন যুগের বিবেকানন্দ| তাঁদেরকে আমি প্রণাম করি, এই কর্মসূচিতে উপস্থিত প্রত্যেকবিবেকানন্দকে, দেশের সমস্ত বিবেকানন্দকে আমি প্রণতি জানাই|
ভাই ও বোনেরা, হাজার হাজার বছরের ইতিহাসকে নিয়ে আমাদের দেশে সময়ের সঙ্গেপরিবর্তন হয়ে আসছে| ব্যক্তিতে পরিবর্তন, সমাজে পরিবর্তন| কিন্তু সময়ের সঙ্গেই কিছুখারাপ বিষয়ও সমাজে যুক্ত হয়ে আসছে|
আমাদের সমাজের বিশেষত্ব হচ্ছে যে, যখনই এ ধরনের কোনো খারাপ বিষয় আসে, তখনতার সংস্কারের কাজও সমাজেরই মধ্য থেকেই কেউ না কেউ শুরু করেন| এ ধরনের মহানসমাজ-সংস্কারকগণ সবসময়ই জনসেবাকে প্রধান হিসেবে দেখেছেন| নিজের কর্ম-মনো-বাক্যেতাঁরা সমাজকে শিক্ষা তো দিয়েছেনই, মানুষকে সেবার বিষয়কে অগ্রাধিকারও দিয়েছেন|দেশের সাধারণ মানুষকে তাঁদের সহজ ভাষায় বুঝিয়েছেন|
এগুলো এক জন-আন্দোলন ছিল, যার বিস্তার হাজার হাজার বছরের ক্যালেন্ডারে দেখাযাচ্ছে|
এই আন্দোলন দক্ষিণে মধ্যাচার্য, নিম্বার্কাচার্য, বল্লভাচার্য,রামানুচার্য, পশ্চিমে মীরাবাই, একনাথ, তুকারাম, রামদাস, নরসি মেহতা, উত্তরেরামানন্দ, কবীরদাস, গোস্বামী তুলসীদাস, সুরদাস, গুরু নানকদেব, সন্ত রাইদাস, পূর্বেচৈতন্য মহাপ্রভু ও শংকরদেব-এর মতো সন্তদের চিন্তাধারায় শক্তিশালী হয়েছে|
এটাও আমাদের দেশের অদ্ভূত শক্তি যে, তাঁদেরকে কখনও ধার্মিক আন্দোলনের সঙ্গেযুক্ত করে দেখা হয়নি| আমাদের এখানে সবসময়ই জ্ঞান, ভক্তি ও কর্ম এই তিনিটি বিষয়েরভারসাম্য স্বীকার করা হয়েছে|
জ্ঞানের দিকে এইসব সন্তগণ এক মৌলিক প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেন যে, ‘আমি কে’?
ভক্তি ছিল সমপর্ণের, আর কর্মের ভিত্তি ছিল সম্পূর্ণরূপে সেবা মানসিকতারওপর| এরকম অনেক সন্ত, মহাপুরুষের প্রভাবেই দেশ সমস্ত রকমের বিপত্তিকে সহ্য করেএগিয়ে যেতে পেরেছে| সেই সময়ে দেশের প্রত্যেক ক্ষেত্র, প্রত্যেক এলাকা, প্রত্যেকদিকে মন্দির-মঠ থেকে বাইরে বেরিয়ে এসে আমাদের সন্তগণ এক সামাজিক চেতনা জাগরণেরপ্রচেষ্টা করেছেন|
আমরা গর্বের সঙ্গে বলতে পারি যে, হিন্দুস্তানের কাছে এমন মহান পরম্পরারয়েছে, এমন মহান সন্ত-মুনি ছিলেন, যাঁরা নিজের তপস্যা, নিজের জ্ঞানের ব্যবহার দেশগঠনের জন্য করেছেন|
এই পর্যায়ে স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী, রাজা রামমোহন রায়, জ্যোতিবা ফুলে,মহাত্মা গান্ধী, বাবা সাহেব আম্বেদকর, বাবা আমতে, পান্ডুরঙ্গ শাস্ত্রী আঠাওয়ালে,বিনোবা ভাবের মতো অগণিত মহাপুরুষ ছিলেন| তাঁরা সেবাকে কেন্দ্রবিন্দুতে রেখেছেন এবংসমাজ-সংস্কারও করেছেন|
তাঁরা দেশের জন্য সমাজের জন্য যেসব সংকল্প গ্রহণ করেছেন, সেগুলোকে সম্পূর্ণকরে দেখিয়েছেন|
বন্ধুগণ, আপনাদের মঠও ত্যাগের পরম্পরাকে গ্রহণ করেছে, সেবার পরম্পরাকেগ্রহণ করেছে| আপনাদের মঠ নির্লিপ্ত মঠ হিসেবেও পরিচিত| নির্লিপ্ত অর্থাত সমস্ত রকমসাংসারিক মোহ থেকে মুক্ত| বিভিন্ন রাজ্যে থাকা আপনাদের ৩৬০টির বেশি মঠ যখনঅন্নদানের প্রথা মেনে চলে, গরিব ও ক্ষুধার্ত মানুষকে খাবার দেয়, তখন সুনিশ্চিতভাবেধরতি মায়ের, মানবতার সর্বোত্তম সেবা হয়|
“শিব হিসেবে জীব সেবা”র এ এক উত্তম উদাহরণ| আমাদের দেশের ইতিহাস রয়েছেসেবার, সেবা-মনোভাবের| কিছু দূর পরপরই গরিবের জন্য খাবার ও থাকার ব্যবস্থা করাআমাদের পরম্পরা হয়ে আসছে| এই ব্যবস্থা সাধু-সন্তদের আশির্বাদে সমাজের সাধারণ মানুষকরতেন| আজও শহর-গ্রামে এই ব্যবস্থা চালু রয়েছে এবং তা বৃদ্ধি পাচ্ছে|
ভাই ও বোনেরা, ভারত সবসময়ই গোটা বিশ্বকে মানবতা, গণতন্ত্র, সুশাসন, অহিংসারবার্তা দিয়েছে| যখন পৃথিবীর বড় বড় দেশ, পশ্চিমের বড় বড় বিশেষজ্ঞগণ গণতন্ত্রকে একনতুন দৃষ্টিভঙ্গি হিসেবে দেখতে শুরু করেন, তারও শত-শত বছর আগে ভারত সেইসবমূল্যবোধকে শুধুমাত্র আত্মসাতই করেনি, বরং নিজের প্রশাসনিক পদ্ধতিতে যুক্তও করেছে|
ভগবান বাসবেশ্বর দ্বাদশ শতাব্দীতেই বিশ্বকে গণতন্ত্রের, সাম্যের ধারণাদিয়েছিলেন| তিনি “অনুভব মণ্ডপ” নামের এক এমন পদ্ধতিকে উন্নত করেছিলেন, যেখানে সবধরনের মানুষ, গরিব-দলিত-পীড়িত-বঞ্চিত মানুষ নিজের মতামত জানাতে পারতেন| সেখানেসবাই সমান ছিলেন|
২০১৫ সালে আমি যখন ব্রিটেন গিয়েছিলাম, তখন সেখানে ভগবান বাসবেশ্বরেরমূর্তির আবরণ উন্মোচনেরও সৌভাগ্য আমি পেয়েছিলাম|
আমার মনে আছে, সেসময় ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ‘ম্যাগনা কার্টা’র উল্লেখকরছিলেন|
কিন্তু ম্যাগনা কার্টা’রও অনেক আগেই বাসবেশ্বর আমাদেরকে প্রথম সংসদের সঙ্গেপরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন|
ভগবান বাসবেশ্বরের ‘বাণী’ ছিল—
“যখন চিন্তাধারার আদান-প্রদান হয়না, যখন তর্কের সঙ্গে যুক্তি থাকেনা, তখন চিন্তাধারারসম্মিলনও অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যায়, আর যেখানে এরকম হয় সেখানে ঈশ্বরের অবস্থানও হয়না”|
অর্থাত তিনি চিন্তাধারার এই সম্মিলনকে ঈশ্বরের মতো শক্তিশালী ও ঈশ্বরের মতইআবশ্যিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন| অনুভব মণ্ডপে নারীদেরও স্পষ্টভাবে মতামত রাখারস্বাধীনতা ছিল|
সমাজের সমস্ত অংশ থেকে আসা নারীরা নিজের চিন্তাধারা ব্যক্ত করতেন| কোনোকোনো নারীরা এমনও হতেন যাদের আসা সেসময়ের তথাকথিত সভ্য সমাজের মধ্যে প্রত্যাশিতছিলনা, সেসব নারীরাও এসে অনুভব মণ্ডপে নিজের মতামত রাখতেন|
নারী সক্ষমতা নিয়ে সেই সময়ের ক্ষত্রে এ এক বিরাট প্রয়াস| আমি গত বছর ভগবানবাসবেশ্বরের বাণীর ২৩টি ভাষার অনুবাদের প্রকাশ করেছি|
আমি আশা করছি যে, ভগবান বাসবেশ্বরের বাণীকে প্রত্যেক মানুষের কাছে পৌঁছানোরজন্য এই উদ্যোগ কার্যকর বলে চিহ্নিত হয়েছে|
এই উপলক্ষে আমি প্রাক্তন উপ-রাষ্ট্রপতি প্রয়াত বি.ডি. জাট্টি-কেও প্রণতিজানাই এবং বাসবা সমিতিতে উনার অবদানকে স্মরণ করছি| শ্রী অরবিন্দ জাট্টি সম্পর্কেওআমি বিশেষভাবে উল্লেখ করতে চাই|
বন্ধুগণ, আমাকে বলা হয়েছে যে, পূজনীয় শ্রী সিদ্ধ রামেশ্বর মহাস্বামীজিপুনরায় ‘অনুভব মণ্ডপ’-এর সূচনা করার সংকল্প গ্রহণ করেছিলেন| তিনি সেখানকার মঠেস্থাপন করতে চেয়েছিলেন|
এটা বিশেষ আনন্দের বিষয় যে, উনার এই স্বপ্ন শ্রী মুরুঘা রাজেন্দ্রমহাস্বামীর নেতৃত্বে সফল হচ্ছে| এই ‘অনুভব মণ্ডপ’-এর মধ্য দিয়ে দেশে সাম্যেরঅধিকারের বার্তা প্রসারিত হবে| ‘সর্ব জন সুখিনো ভবন্তু’-এর মন্ত্রে চালিত হয়ে,সবার সুখের কামনার সঙ্গে হতে চলা এই আয়োজনের জন্য আমি আপনাদের সবাইকে অনেক অনেকশুভকামনা জানাচ্ছি|
বন্ধুগণ, ২০২২ সালে আমাদের দেশ স্বাধীনতার ৭৫তমবর্ষের উত্সব পালন করবে| এই উত্সব কি আমরা দেশের অভ্যন্তরীণ দুর্বলতার সঙ্গে পালনকরবো? না| আমরা সবাই ‘নিউ ইন্ডিয়া’ তৈরির সংকল্প গ্রহণ করেছি| এই সংকল্পে আপনাদেরঅংশগ্রহণ, সংকল্পকে সার্থক করার এই যাত্রাকে আরও সুগম করে দেবে| শিক্ষার ক্ষেত্রে,মেয়েদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে, যুব অংশের কৌশল বিকাশের ক্ষেত্রে, স্বাস্থ্যেরক্ষেত্রে, স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে, ডিজিট্যাল সাক্ষরতার ক্ষেত্রে, সৌরশক্তির প্রসারেরজন্য কি আপনারাও কোনো সংকল্প গ্রহণ করতে পারেন?
আমি জানি যে, আপনারা এ ধরনের ক্ষেত্রে আগে থেকেই কাজ করছেন| কিন্তুপরিসংখ্যান অনুযায়ী লক্ষ্য নিয়ে কি কোনো সংকল্প গ্রহণ করা যায়? যেমন, এমন কোনোসংকল্প কি গ্রহণ করা যায় যে, আগামী দুই বছরে দুই হাজার, পাঁচ হাজার গ্রামকেউন্মুক্ত স্থানে শৌচমুক্ত করার ক্ষেত্রে সহায়তা করা হবে| এমন সংকল্প কি নেওয়া যায়যে, আগামী দুই বছরে আপনাদের নির্বাচিত পাঁচ হাজার গ্রামের প্রতিটি ঘরে এল.ই.ডি.ভাল্ব লাগানো হবে|
বন্ধুগণ, সরকার এই সমস্ত ক্ষেত্রেই কাজ করছে| কিন্তু মানুষের মধ্যে সচেতনতাবৃদ্ধিতে, মানুষকে অনুপ্রাণিত করার ক্ষেত্রে আপনাদের অনেক বড় ভুমিকা রয়েছে| আমারবিশ্বাস যে, আপনারা যখন পা বাড়াবেন, তখন লক্ষ বিবেকানন্দের শক্তি আপনাদের সংকল্পকেসার্থক রূপ দেবে|
এখন বেলগাবিতে দশ হাজার বিবেকানন্দ জড়ো হয়েছেন, তখনলক্ষ বিবেকানন্দ জড়ো হবেন| আপনাদের কাজ সফল হলে আমাদের সামাজিক ব্যবস্থাও আরওশক্তিশালী হবে| এক ভারত-শ্রেষ্ঠ ভারতের, স্বামী বিবেকানন্দের শক্তিশালী ভারতেরস্বপ্ন সম্পূর্ণ হবে|
এই কথাগুলো বলে আমি আমার বক্তব্য সমাপ্ত করছি| আরওএকবার আমি মঞ্চে উপস্থিত সমস্ত সন্তদের প্রণাম জানাই| আপনাদের সবাইকে জাতীয় যুবদিবস এবং সর্বধর্ম সভার জন্য পুনরায় অনেক অনেক শুভকামনা|
অনেক অনেক ধন্যবাদ!!!
Swami Vivekananda emphasised on brotherhood. He believed that our wellbeing lies in the development of India: PM @narendramodi https://t.co/mH5WSFU7Je
— PMO India (@PMOIndia) January 12, 2018
There was a lot of propaganda against India in the Western world that Swami Vivekananda proved wrong. He also raised a voice against social evils: PM @narendramodi https://t.co/mH5WSFU7Je
— PMO India (@PMOIndia) January 12, 2018
Some people are trying to divide the nation and the youth of this country are giving a fitting answer to such elements. Our youth will never be misled: PM @narendramodi https://t.co/mH5WSFU7Je
— PMO India (@PMOIndia) January 12, 2018
It is India's youth that is taking the Swachh Bharat Mission to new heights: PM @narendramodi https://t.co/mH5WSFU7Je
— PMO India (@PMOIndia) January 12, 2018
India has been home to several saints, seers who have served society and reformed it: PM @narendramodi https://t.co/mH5WSFU7Je
— PMO India (@PMOIndia) January 12, 2018
Seva Bhav is a part of our culture. All over India, there are several individuals and organisations selflessly serving society: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) January 12, 2018
Let us work to make our nation ODF: PM @narendramodi https://t.co/mH5WSFU7Je
— PMO India (@PMOIndia) January 12, 2018