নিরন্তরউন্নয়নের লক্ষ্যে বিশ্ব শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পেরে আমিআনন্দিত। বিদেশ থেকে যাঁরা এখানে এসে আমাদের সঙ্গে এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন, তাঁদেরসকলকেই দিল্লি তথা ভারতে আমি স্বাগত জানাই।  

  

আমি আশা করবযে এই শীর্ষ সম্মেলনের অবসরে এই শহরের ইতিহাস ও সৌন্দর্যের সঙ্গে পরিচিত হওয়ারমতোসময় আপনারা খুঁজে নিতে পারবেন। আমাদের সকলের জন্য এবং সেইসঙ্গে ভবিষ্যৎপ্রজন্মগুলির স্বার্থে ভারতের দৃঢ় সঙ্কল্পের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে এই শীর্ষ সম্মেলনেরমধ্য দিয়ে।   

  

আমাদের দেশেরসুপ্রাচীন ইতিহাস এবং প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্প্রীতিপূর্ণ সহাবস্থানের ঐতিহ্যেরজন্য জাতি হিসেবে আমরা গর্বিত। আমাদের মূল্যবোধের এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গই হল প্রকৃতিরপ্রতি শ্রদ্ধা ও সম্ভ্রমপূর্ণ আচরণ।   

  

প্রাচীন ওঐতিহ্যবাহী আচার-আচরণের মধ্য দিয়ে আমরা এক নিরন্তর জীবনশৈলীর অভ্যাস গড়ে তুলেছি। আমাদেরপ্রাচীন শাস্ত্রে বলা হয়েছে যে আমরা সকলেই এই বসুন্ধরা মাতার সন্তান। তাই আমাদেরসকলেরই সততার সঙ্গে জীবনযাপন করা উচিৎ। তাই, আমাদের লক্ষ্যই হল ঐ প্রাচীন শাস্ত্রঅনুসরণ করে জীবনধারণে ব্রতী হওয়া।   

আমাদেরসর্বাপেক্ষা প্রাচীন যে শাস্ত্র রয়েছে, সেই অথর্ববেদ-এ বলা হয়েছে যে ‘মাতাভূমিঃপুত্রোহংপৃথিব্যা’ ।  

  

এই আদর্শকেঅনুসরণ করেই কর্মপ্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে আমরা জীবন অতিবাহিত করি। আমরা বিশ্বাস করিযে সকল ধন-সম্পদই প্রকৃতি এবং সর্বশক্তিমানের। আমরা সেই ধন-সম্পদের অছি বাব্যবস্থাপক মাত্র। এই দর্শনের কথা প্রচার করতেন স্বয়ং মহাত্মা গান্ধীও।   

  

ন্যাশনালজিওগ্রাফিকের ২০১৪ সাল সম্পর্কিত সাম্প্রতিক এক ‘গ্রিনডেক্স’ রিপোর্ট অনুযায়ী,পরিবেশ-বান্ধব ভোগ্যপণ্য ব্যবহারকারী দেশ হিসেবে ভারতের অবস্থান একেবারে শীর্ষে। ভোগ্যপণ্যব্যবহার সত্ত্বেও প্রকৃতির নিরন্তর বিকাশ সম্পর্কে সমীক্ষা চালানো হয় এই‘গ্রিনডেক্স’ রিপোর্টে। বিশ্বের কোন প্রান্তেই মাতা বসুন্ধরাকে কোনভাবেই কলুষিত নাকরার সচেতনতার বার্তাই কয়েক বছর ধরেই প্রচার করে আসছে এই শীর্ষ সম্মেলন।  

  

একটি সাধারণইচ্ছা ও বাসনার কথাই প্রতিফলিত হয়েছে প্যারিসে অনুষ্ঠিত ২০১৫-র সিওপি-২১ শীর্ষবৈঠকে। এই মঞ্চটিতে অংশগ্রহণকারী দেশগুলি আমাদের এই পৃথিবীর স্বার্থরক্ষায়যুক্তভাবে কাজ করার সঙ্কল্প গ্রহণ করে। আমাদের মতোই সমগ্র বিশ্বই আজ পরিবর্তনেরঅভিলাষী। বিশ্ব সংসার যখন প্রকৃতির প্রতি সত্যনিষ্ঠ থাকার সমস্যা নিয়ে জেরবারহচ্ছিল, আমরা কিন্তু তখন প্রকৃতিকে রক্ষা করার জন্য কাজ শুরু করে দিয়েছিলাম। কারণ,ভারত বিকাশ বা উন্নয়নের নীতিতে বিশ্বাসী হলেও, পরিবেশকে সুরক্ষিত রাখতে বরাবরইঅঙ্গীকারবদ্ধ।   

  

বন্ধুগণ, এইচিন্তাভাবনাকে অনুসরণ করেই ফ্রান্সের সঙ্গে মিলিতভাবে ভারত উদ্যোগ নেয় আন্তর্জাতিকসৌর সমঝোতা গড়ে তোলার। এই মঞ্চটির সদস্য সংখ্যা বর্তমানে ১২১-এর মতো। প্যারিসশীর্ষ বৈঠক পরবর্তীকালে এটি সম্ভবত এক আন্তর্জাতিক সাফল্য বিশেষ। ২০০৫-৩০ – এইসময়কালের জিডিপি-তে দূষণ নির্গমণের মাত্রা ৩৩ থেকে ৩৫ শতাংশ কমিয়ে আনার সঙ্কল্পগ্রহণ করেছিল ভারত।  

  

২০৩০ সালেরমধ্যে বাতাসে কার্বন ডায়অক্সাইডের মাত্রা ২.৫ থেকে ৩ বিলিয়ন টনে হ্রাস করার বিষয়টিএক সময় অনেকের কাছেই অসম্ভব বলে মনে হয়েছিল। কিন্তু তবুও আমরা কোনভাবেই হাল ছেড়েদিইনি। ইউনেপ গ্যাপ-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০০৫-এর তুলনায় ২০২০-তে দূষণ নির্গমণেরমাত্রা ২০-২৫ শতাংশ কমিয়ে আনার যে সিদ্ধান্ত ভারত গ্রহণ করেছিল কোপেনহেগেন-এ, তাপূরণ করার লক্ষ্যে অপ্রতিহত গতিতে এগিয়ে চলেছে আমাদের দেশ ।   

  

আগামী ২০৩০সালের মধ্যে একটি জাতি হিসেবে এই বিষয়টিতে আমাদের অবদানের নজির সৃষ্টির লক্ষ্যেআমরা কখনই সঙ্কল্প বিচ্যুত হইনি। রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরন্তর উন্নয়নের লক্ষ্য আমাদেরসমতা, অংশীদারিত্ব এবং জলবায়ুর প্রতি সুবিচারের পথ অনুসরণ করতে উদ্বুদ্ধ করেছে। এক্ষেত্রেআমাদের যেটুকু করার তা যেমন আমরা করে চলেছি, তেমনই আমরা আশা করব যে অন্য দেশগুলিওতাদের প্রতিশ্রুতি পূরণে একটি সাধারণ লক্ষ্যের দিকে ক্রমশ এগিয়ে যাবে।   

 

অসহায়মানুষদের জীবনযাপনের স্বার্থেও জলবায়ুর প্রতি সুবিচারের বিষয়টিকে আমরা বিশেষভাবেগুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি। সুপ্রশাসন, নিরবচ্ছিন্ন জীবনযাপন এবং দূষণমুক্তপরিবেশের মধ্য দিয়ে জীবনধারণকে সহজতর করে তুলতে ভারত এখন সচেষ্ট। পরিচ্ছন্ন ভারতঅভিযান দিল্লির পথঘাট থেকে শুরু করে এখন প্রসারিত দেশের প্রতিটি প্রান্তে।আমরা মনেকরি যে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশই রোগমুক্ত উন্নততর ব্যবস্থা, উন্নততর স্বাস্থ্য,উন্নততর কর্মপরিবেশ গড়ে তুলতে পারে যার ফলশ্রুতিতে আয় ও উপার্জন বৃদ্ধির মাধ্যমেমানুষ এক উন্নততর জীবনের স্বাদ পেতে পারে।   

  

কৃষিআবর্জনাকে পুড়িয়ে না ফেলে তা যাতে মূল্যবান সারে রূপান্তরিত করা যায় তা নিশ্চিতকরতে কৃষিজীবী মানুষদের জন্য আমরা সূচনা করেছি একটি বড় ধরনের অভিযানের।   

  

আমাদের এইঅঙ্গীকারকে তুলে ধরতে এবং আমাদের নিরন্তর অংশীদারিত্ব যাতে সমগ্র বিশ্বকে একটিদূষণমুক্ত গ্রহ হিসেবে চিহ্নিত করতে পারে, সেই লক্ষ্যে ২০১৮-র বিশ্ব পরিবেশদিবসেরও আমরা আয়োজন করতে চলেছি।   

  

জলসম্পদেরযোগান ও ব্যবহার একটি বড় ধরনের সমস্যা বিশেষ। তাই, জলের যোগানের সমস্যা মেটানোরবিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে আমরা স্বীকার করে নিয়েছি। এই কারণেই আমরা সূচনাকরেছি ‘নমামি গঙ্গে’ নামে এক বিশেষ কর্মসূচির। এর সুফল আমরা ইতিমধ্যেই লক্ষ্যকরেছি যা অচিরেই আমাদের সর্বাপেক্ষা মূল্যবান সম্পদ গঙ্গার পুনরুজ্জীবন ঘটাবে।   

  

আমাদের দেশ মূলতঃকৃষি নির্ভর। সেই কারণে কৃষিকাজে জলের অব্যাহত যোগানের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোনকৃষিক্ষেত্রই যাতে জলের সুযোগ থেকে বঞ্চিত না থাকে তা নিশ্চিত করতে সূচনা হয়েছে‘প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিচাঁই যোজনা’টির। আমাদের মূল মন্ত্রই হল ‘জলবিন্দু প্রতিঅধিকতর শস্য ফলন’।   

  

জীববৈচিত্র্যসংরক্ষণের ক্ষেত্রে ভারতের একটি সুন্দর রিপোর্ট কার্ড রয়েছে। বিশ্বের ২.৪ শতাংশস্থলভূমির মধ্যে জীববৈচিত্র্যের ৭-৮ শতাংশ লালন করে থাকে ভারত। আর এইভাবেই, প্রায়১৮ শতাংশ মানুষের জীবনযাপনের চাহিদা আমরা মিটিয়ে থাকি।   

ইউনেস্কো-রমানুষ এবং জীববৈচিত্র্য সম্পর্কিত কর্মসূচির আওতায় ভারত ইতিমধ্যেই ১৮টি জীব ওপ্রকৃতি সংরক্ষণের মধ্যে ১০টিতে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করেছে। এ থেকে এটাইপ্রমাণিত হয় যে আমাদের উন্নয়ন প্রচেষ্টা সবুজায়নকেই সমর্থন করে এবং আমাদেরবন্যপ্রাণী সংরক্ষণের বিষয়টিও যথেষ্ট শক্তিশালী।   

  

বন্ধুগণ,   

  

সুপ্রশাসনএবং পরিচালনের সুফল যাতে প্রত্যেক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়, সেই নীতিতেবিশ্বাস করে ভারত।   

  

এই দার্শনিকচিন্তাভাবনা থেকেই জন্ম নিয়েছে আমাদের ‘সব কা সাথ সব কা বিকাশ’-এর মন্ত্র। এইদর্শন অনুসরণের মাধ্যমে দেশের সর্বাপেক্ষা বঞ্চিত ও অবহেলিত অঞ্চলগুলি যাতেআর্থ-সামাজিক দিক থেকে অন্য অঞ্চলগুলির সমকক্ষ হয়ে উঠতে পারে, তা নিশ্চিত করতেআমরা সচেষ্ট রয়েছি।  

  

বর্তমানযুগে এবং আজকের দিনে প্রত্যেক মানুষেরই প্রাথমিক প্রয়োজন বা চাহিদা হল বিদ্যুৎ এবংদূষণমুক্ত রান্নার ব্যবস্থা। এর ওপরই ভিত্তি করে গড়ে ওঠে যে কোন দেশেরই অর্থনৈতিকউন্নয়ন প্রচেষ্টা।   

  

কিন্তু তাসত্ত্বেও ভারতের বাইরে এবং ভেতরে এমন অনেকে রয়েছেন যাঁরা এই সমাধানের পথ খুঁজে না পেয়েএখনও সংগ্রাম করে চলেছেন। ঘর-বাড়ির ভেতরে দূষণ সৃষ্টি করে এমন অস্বাস্থ্যকররান্নার ব্যবস্থা সাধারণ মানুষদের মধ্যে অনেকেই এখনও অনুসরণ করে চলেছেন। আমি জানিযে গ্রামের একটি রান্না ঘরের ধোঁয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে মারাত্মকভাবে ক্ষতিকর। কিন্তুআশ্চর্যের ঘটনা, এই বিষয়টি অনেকেই গ্রাহ্য করেন না। তাই, এ সম্পর্কে চিন্তাভাবনাকরে দুটি সুদূরপ্রসারী কর্মসূচি আমরা গ্রহণ করেছি যার নাম হল ‘উজ্জ্বলা’ এবং‘সৌভাগ্য’। যেদিন থেকে এই দুটি কর্মসূচির সূচনা হয়, সেদিন থেকেই কোটি কোটি মানুষেরজীবনে তা প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। এই দুটি কর্মসূচি রূপায়ণের ফলে কোন মা-কে এখন থেকেআর বন-জঙ্গল থেকে শুকনো গাছপালা সংগ্রহ করে কিংবা গোবর থেকে ঘুঁটে বানিয়ে তারসাহায্যেরান্না করে পরিবারের গ্রাসাচ্ছাদন করতে হবে না। শুধু তাই নয়, কাঠের জ্বালানিরসাহায্যে উনুন ধরানোর যে চিরাচরিত ব্যবস্থা এতকাল ধরে চলে আসছিল, তা অনতিবিলম্বেইস্থান পেতে চলেছে আমাদের সমাজ-ইতিহাসের বইয়ের পাতায়।   

  

একইভাবে,‘সৌভাগ্য’ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দেশের প্রত্যেকটি বাড়িতে বিদ্যুতের আলো পৌঁছেদেওয়ার কাজ আমরা শুরু করেছি। এই বছরের মধ্যেই অধিকাংশ বাড়িতে বিদ্যুতের সুযোগপৌঁছে যাবে। আমরা বিশ্বাস করি যে একটি সুস্থ জাতিই পারে উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে আরওএগিয়ে নিয়ে যেতে। তাই এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে আমরা সূচনা করেছি সরকারি অর্থপুষ্টবিশ্বের বৃহত্তম স্বাস্থ্য কর্মসূচির। কোটি কোটি দরিদ্র পরিবারের কাছে সহায়তারসুযোগ পৌঁছে যাবে এর মাধ্যমে।   

  

যে সমস্তদেশবাসীর এখনও কোনরকম সামর্থ্য বা সঙ্গতি নেই, তাঁদের কাছে জীবনধারণের ন্যূনতমচাহিদা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে আমাদের আরও দুটি কর্মসূচি হল ‘সকলের জন্য বাসস্থান’এবং ‘সকলের জন্য বিদ্যুৎ’।   

বন্ধুগণ!  

  

আপনারানিশ্চয়ই অবগত যে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক-ষষ্ঠাংশের বাস আমাদের এই ভারতে। উন্নয়নেরচাহিদাও তাই আমাদের বিশাল। আমাদের দারিদ্র্য বা সমৃদ্ধি,সবকিছুরই পরোক্ষ প্রভাবপড়বে বিশ্বের দারিদ্র্য ও সমৃদ্ধির ওপর। ভারতবাসীরা দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করেথেকেছেন আধুনিক সুযোগ-সুবিধা এবং উন্নয়নের সুফলের জন্য।   

  

যত দ্রুতসম্ভব এই কাজ সম্পূর্ণ করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। একইসঙ্গে আমরা একথাও বলেছি যেদূষণমুক্ত পরিবেশে এবং সবুজায়নের মধ্য দিয়ে এই কাজ আমরা সম্পন্ন করব। কয়েকটিউদাহরণ মাত্র আমি এখানে আপনাদের সামনে তুলে ধরতে আগ্রহী। আপনারা জানেন যে ভারত হলএক নবীন জাতি। তাই, দেশের যুব সমাজের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে ভারতকেএকটি আন্তর্জাতিক উৎপাদনকেন্দ্র রূপে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত আমরা গ্রহণ করেছি। এইউদ্দেশ্যেই সূচনা আমাদের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির। এই সঙ্গে মনে রাখতে হবে যেত্রুটিমুক্ত এবং ক্ষতিকর প্রভাবমুক্ত পণ্যই আমরা উৎপাদন করতে চাই।   

  

দ্রুততমগতিতে গড়ে ওঠা বিশ্বের এক বিশেষ অর্থনীতি হিসেবে জ্বালানি শক্তির চাহিদাও আমাদেরঅফুরন্ত। আগামী ২০২২ সালের মধ্যে পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি উৎস থেকে১৭৫ গিগাওয়াটবিদ্যুৎ উৎপাদনের একটি পরিকল্পনা আমরা স্থির করেছি। এর মধ্যে রয়েছে ১০০ গিগাওয়াটসৌরবিদ্যুৎ এবং ৭৫ গিগাওয়াট বায়ু এবং অন্যান্য উৎসজাত জ্বালানি। তিন বছর আগেও দেশেসৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল মাত্র ৩ গিগাওয়াটের মতো। আমরা সেক্ষেত্রেইতিমধ্যেই তাতে যুক্ত করেছি আরও ১৪ গিগাওয়াট সৌর জ্বালানি।   

  

আর এইভাবেই,বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদক একটি দেশ হিসেবে ইতিমধ্যেই আমরা পরিচিতিলাভ করেছি। শুধু তাই নয়, পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি ক্ষেত্রেও আমরা বর্তমানেবিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম উৎপাদক দেশের সম্মান অর্জন করেছি।  

  

নগরায়ন এবংতার প্রসারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে পরিবহণের চাহিদাও। বিশেষত,মেট্রো রেল সহ দ্রুতগতির জনপরিবহণের ওপর আমরা তাই বিশেষভাবে জোর দিয়েছি। এমনকি,দূরদূরান্তে পণ্য চলাচলের সুবিধার জন্যও জাতীয় জলপথ ব্যবহারের কাজ আমরা শুরু করেদিয়েছি। জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় আমাদের দেশের প্রত্যেকটি রাজ্যই তাদেরকর্মপরিকল্পনা রচনা করছে।   

  

আমাদের এইসমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্য দিয়ে পরিবেশ সংরক্ষণের পাশাপাশি দেশের অবহেলিতঅঞ্চলগুলির স্বার্থও সুরক্ষিত রাখার আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। মহারাষ্ট্রের মতোআমাদের একটি বৃহত্তম রাজ্য ইতিমধ্যেই এই লক্ষ্যে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। নিরন্তরউন্নয়নের প্রতিটি উদ্দেশ্যকে সফল করে তুলতে আমরা কাজ করে চলেছি ঠিক কথা, কিন্তুআমাদের এই প্রচেষ্টার মূলে রয়েছে পারস্পরিক সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব।   

  

এই সহযোগিতাহল একটি সরকারের সঙ্গে আরেকটি সরকারের, একটি শিল্পের সঙ্গে অন্য আরেকটি শিল্পেরএবং সর্বোপরি, সঠিক জনসমষ্টির। এক উন্নত বিশ্বই এই লক্ষ্য পূরণের কাজে গতি সঞ্চারকরতে পারে।   

  

জলবায়ুপরিবর্তনের মোকাবিলায় সাফল্যের জন্য প্রয়োজন আর্থিক সহায়সম্পদ ও প্রযুক্তি। ভারতেরমতো একটি দেশ নিরন্তর গতিতে এগিয়ে যেতে পারে একমাত্র প্রযুক্তির সাহায্যে। আরএইভাবেই, সুফল পৌঁছে দেওয়া যায় দরিদ্র সাধারণ মানুষের কাছে।  

  

বন্ধুগণ,  

  

মানবজাতিহিসাবে পৃথিবী নামক এই গ্রহটিতে আমরা যে একান্তই স্বতন্ত্র – এই অনুভব ও উপলব্ধিতেবিশ্বাস করেই কাজ করে যাওয়ার জন্য আমরা আজ এখানে মিলিত হয়েছি। আমাদের উপলব্ধি করতেহবে যে এই গ্রহ, অর্থাৎ মাতা বসুন্ধরা আমাদের সকলের কাছেই এক এবং অভিন্ন। তাই,জাতি, ধর্ম, ক্ষমতা – সবকিছুর ঊর্ধ্বে উঠে মিলিতভাবে আমাদের সেবা করে যেতে হবেমাতা বসুন্ধরার।  

  

প্রকৃতি এবংপরস্পরের মধ্যে সহাবস্থানের গভীরেই নিহিত রয়েছে আমাদের এই বিশেষ চিন্তাদর্শ। এইগ্রহকে সকলের জন্য আরও নিরন্তর ও নিরাপদ বাসযোগ্য একটিভূমি রূপে গড়ে তুলতে আমাদেরএই যাত্রাপথে সঙ্গী হতে আমি আমন্ত্রণ জানাই আপনাদের সকলকেই।  

  

নিরন্তরউন্নয়নের লক্ষ্যে আয়োজিত এই বিশ্ব শীর্ষ সম্মেলনের সর্বাঙ্গীন সাফল্য আমি কামনাকরি।  

  

ধন্যবাদ। 

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
Snacks, Laughter And More, PM Modi's Candid Moments With Indian Workers In Kuwait

Media Coverage

Snacks, Laughter And More, PM Modi's Candid Moments With Indian Workers In Kuwait
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM to attend Christmas Celebrations hosted by the Catholic Bishops' Conference of India
December 22, 2024
PM to interact with prominent leaders from the Christian community including Cardinals and Bishops
First such instance that a Prime Minister will attend such a programme at the Headquarters of the Catholic Church in India

Prime Minister Shri Narendra Modi will attend the Christmas Celebrations hosted by the Catholic Bishops' Conference of India (CBCI) at the CBCI Centre premises, New Delhi at 6:30 PM on 23rd December.

Prime Minister will interact with key leaders from the Christian community, including Cardinals, Bishops and prominent lay leaders of the Church.

This is the first time a Prime Minister will attend such a programme at the Headquarters of the Catholic Church in India.

Catholic Bishops' Conference of India (CBCI) was established in 1944 and is the body which works closest with all the Catholics across India.