মহামান্যস্যুইস ফেডারেশনের সভাপতি,
সম্মানিতরাষ্ট্রপ্রধানগণ,
বিশ্বঅর্থনৈতিক ফোরামের প্রবর্তক ও কার্যকরী অধ্যক্ষ শ্রী ক্লোজ শোয়াব,
বিশ্বেরঅগ্রণী এবং প্রতিষ্ঠিত শিল্পপতি ও সিইও-বৃন্দ,
সংবাদমাধ্যমেরবন্ধুগণ,
ভদ্রমহোদয়াও ভদ্রমহোদয়গণ,
নমস্কার।
দাভোস-এবিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের এই ৪৮তম বার্ষিক শীর্ষ বৈঠক উপস্থিত হতে পেরে আমি অত্যন্তআনন্দিত। সবার আগে আমি শ্রদ্ধেয় ক্লোজ শোয়াব মহোদয়কে এই সাধু উদ্যোগ নেওয়ার জন্যএবং তার সুযোগ্য নেতৃত্বে এই বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামকে একটি মজবুত এবং বৃহৎ মঞ্চহিসেবে গড়ে তোলার জন্য সাধুবাদ জানাই। তাঁর ভাবনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্যবিষয়সূচি রয়েছে, যার লক্ষ্য হল বিশ্ব পরিস্থিতির সংশোধন। তিনি এই আলোচ্যবিষয়সূচিকে আর্থিক এবং রাজনৈতিক চিন্তাভাবনার সঙ্গে সুদৃঢ়ভাবে যুক্ত করেছেন।পাশাপাশি, আমাদেরকে আন্তরিকঅভ্যর্থনা ও সম্মান প্রদর্শনের জন্য স্যুইজারল্যান্ডসরকার এবং তার নাগরিকদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই।
বন্ধুগণ,
দাভোস-এশেষবার কোন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী এসেছিলেন ১৯৯৭ সালে। আমাদের তৎকালীনপ্রধানমন্ত্রী দেবেগৌড়া মহোদয় এখানে এসেছিলেন।
১৯৯৭সালে ভারতের জিডিপি ৪০০ বিলিয়ন ডলারের সামান্য বেশি ছিল। গত দু’দশকে তা বেড়ে প্রায়ছ’গুণ হয়েছে। সেই বছর ফোরামের আলোচ্য বিষয় ছিল “নেটওয়ার্ক সমাজ নির্মাণ”। আজ একুশবছর পর প্রযুক্তি আর ডিজিটাল যুগের অভিজ্ঞতা এবং অগ্রাধিকারগুলির দিকে যদি তাকাই,ঐ বিষয়টিকে কয়েক শতাব্দী প্রাচীন বলে মনে হবে। আজ আমরা শুধুই নেটওয়ার্ক সমাজ নয়,বিগ ডেটা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং রোবোট-এর বিশ্বে বসবাস করি। ১৯৯৭-এ ইউরো মুদ্রাচালু হয়নি। আর, এশিয়ার অর্থনৈতিক সঙ্কটের কোন হদিশ ছিল না, ব্রেক্সিট-এরও কোনপ্রভাব ছিল না। ১৯৯৭-এ খুব কম মানুষই ওসামা-বিন-লাদেনের নাম শুনেছেন, আর হ্যারিপটারও এত বিখ্যাত হয়নি। তখনকার শ্রেষ্ঠ দাবাড়ুরা কম্পিউটারের কাছে হেরে যাওয়ার ভয়েভীত হতেন না। তখন সাইবার স্পেসে গুগ্ল অবতারের আগমন ঘটেনি।
১৯৯৭-এআপনারা ইন্টারনেটে ‘অ্যামাজন’ শব্দটি খুঁজলে নদী ও অরণ্য সম্পর্কে জানতে পারতেন। সেইসময়ে ‘ট্যুইট’ করত শুধু পাখিরা, মানুষ নয়। সেটা ছিল বিগত শতাব্দী।
আজদু’দশক পর আমাদের বিশ্ব, আমাদের সমাজে অনেকগুলি জটিল নেটওয়ার্কের নেটওয়ার্ক রয়েছে।সেই সময়েও দাভোস নিজের সময়ের থেকে এগিয়ে ছিল, তখনও বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামভবিষ্যতের কথা বলেছে। আজও দাভোস শীর্ষ বৈঠক বর্তমান সময় থেকে এগিয়ে রয়েছে।
এবছর এই শীর্ষ বৈঠকের বিষয় হল “বিভাজিত বিশ্বে সম্মিলিত ভবিষ্যৎ নির্মাণ”, অর্থাৎনতুন নতুন পরিবর্তন, নতুন নতুন শক্তির উদ্ভবে বিশ্বে আর্থিক ক্ষমতা এবং রাজনৈতিকশক্তির ভারসাম্য পরিবর্তিত হচ্ছে। এ থেকে বিশ্বের স্বরূপে আগামী পরিবর্তনগুলিরচিত্র পরিস্ফূট হয়ে উঠছে। বিশ্বের সামনে শান্তি, স্থিরতা আর নিরাপত্তা ক্ষেত্রেনতুন এবং মারাত্মক চ্যালেঞ্জগুলি এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
প্রযুক্তিপরিচালিত রূপান্তর আমাদের চলাফেরা, আচার-ব্যবহার, কর্মশৈলী, কথাবার্তা এমনকিবিভিন্ন আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী এবং রাজনীতি ও অর্থ ব্যবস্থার গভীরে গিয়ে প্রভাবিতকরছে। প্রযুক্তির সংযোজন, বিয়োজন এবং রূপান্তর – এই তিনটি মাত্রার একটি বড় উদাহরণসোশ্যাল মিডিয়ার প্রয়োগে দেখা যায়। আজ তথ্য সবচাইতে বড় সম্পদ। তথ্যের আন্তর্জাতিকপ্রবাহের মাধ্যমে সবচেয়ে বড় সুযোগগুলি তৈরি হচ্ছে, আর বড় হয়ে উঠছে সবচেয়ে বড়প্রতিস্পর্ধাগুলিও। তথ্যের পাহাড়ের ওপর পাহাড় তৈরি হচ্ছে। পাশাপাশি, তথ্যকেনিয়ন্ত্রণ করার প্রতিযোগিতাও শুরু হয়েছে। কারণ এরকম মনে করা হচ্ছে যে, যাঁরাতথ্যকে যত বেশি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন, তাঁরাই ভবিষ্যতে তত ঐশ্বর্যবান হবেন।
এভাবেইসাইবার নিরাপত্তা এবং পরমাণু নিরাপত্তা ক্ষেত্রে দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তি এবংবিনাশকারী শক্তিগুলির উত্থানের ফলে পূর্ববর্তী প্রতিস্পর্ধাগুলি আরও বিকট আকারধারণ করেছে। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং আর্থিক উন্নয়নের নতুন মাত্রাগুলিতে একদিকেযেমন মানবতার সমৃদ্ধির নতুন পথ দেখানোর ক্ষমতা রয়েছে, অন্যদিকে তেমনই এইপরিবর্তনের ফলে এমন সব গভীর ফাটল তৈরি হচ্ছে যা মানবতাকে চরম আঘাত হানতে পারে। অনেকপরিবর্তন এমন সব দেওয়াল তুলে ধরছে যা গোটা মানবতার শান্তি এবং সমৃদ্ধির পথকেদুর্গম থেকে দুর্গমতর এমনকি, অনেক ক্ষেত্রে দুঃসাধ্য করে তুলছে। এই বিভাজন, এইফাটল, আর এই দেওয়াল উন্নয়নের ক্ষেত্রে অভাব, দারিদ্র্য, বেকারত্ব, সুযোগের অভাবএবং প্রাকৃতিক ও প্রযুক্তিগত আধিপত্যের বিভাজন। এই পরিস্থিতিতে আমাদের সামনে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠে দাঁড়িয়েছে যা মানবতার ভবিষ্যৎ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মেরঐতিহ্যের জন্য সমুচিত উত্তর দাবি করে।
আমাদেরবিশ্ব ব্যবস্থা কি এই বিভাজন এবং দূরত্বকে উৎসাহ প্রদান করছে? কোন শক্তিগুলিসামঞ্জস্য থেকে বিভাজনের পথকে ইন্ধন যোগাচ্ছে? আমাদের কাছে সেসব শক্তির মোকাবিলায়কী কী উপায় রয়েছে, যেগুলির মাধ্যমে আমরা ঐ ফাটল এবং দূরত্বগুলিকে মিটিয়ে একটিশান্তিপূর্ণ সম্মিলিত ভবিষ্যতের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে পারব?
বন্ধুগণ,
ভারতভারতীয়ত্ব এবং ভারতীয় ঐতিহ্যের প্রতিনিধি হিসেবে আমার জন্য এই শীর্ষ বৈঠকের বিষয়যতটা সমকালীন, ততটাই সময়াতীত। সময়াতীত এজন্য যে ভারত অনাদিকাল থেকে মানুষের সঙ্গেমানুষকে যুক্ত করায় বিশ্বাস করে। বিভাজনে বিশ্বাস করে না। কয়েক হাজার বছর আগেসংস্কৃত ভাষায়লেখা গ্রন্থগুলিতে ভারতীয় দার্শনিকরা লিখে গেছেন ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’,অর্থাৎ সমগ্র বিশ্ব একটি পরিবার। তাঁরা এই তত্ত্বে বিশ্বাস করতেন যে আমরা সকলেপরিবারের সদস্যদের মতোই পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত। আমাদের নিয়তি একটিমাত্র সুতোয়বাঁধা। ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’-এর এই ধারণা নিশ্চিতভাবেই আজকের বিভাজন এবং দূরত্বমেটানোর ক্ষেত্রে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। কিন্তু আজ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণসমস্যা হল বর্তমান সময়ের এই বিরাট চ্যালেঞ্জগুলির সম্মুখীন হওয়ার ক্ষেত্রে আমাদেরমধ্যে সহমতের অভাব রয়েছে। যে কোন পরিবারে যেমন একদিকে সৌহার্দ্য ও সহযোগিতা থাকে,অন্যদিকে তেমন কিছু মতভেদ ও ঝগড়াও থাকে। পরিবারের প্রাণ, তার প্রেরণা হয় ঐক্যভাবনা যার মাধ্যমে সকলে একজোট হয়ে সমস্ত সমস্যার মোকাবিলা করে,সমস্ত অভিজ্ঞতা এবংআনন্দের অংশীদার হয়। কিন্তু, চিন্তার বিষয় হল আমাদের বিভাজন, ফাটলগুলি এইসমস্যাগুলির বিরুদ্ধে মানবজাতির লড়াইকে আরও কঠিন, আরও কঠোর করে তুলেছে।
বন্ধুগণ,
আমিযে সমস্যাগুলির কথা বলছি, সেগুলি সংখ্যায় অনেক এবং তার বিস্তারও ব্যাপক। এখানে আমিশুধুই তিনটি প্রধান সমস্যার কথা উল্লেখ করব যেগুলি মানবসভ্যতার জন্য সবচাইতে বড়বিপদ সৃষ্টি করছে। প্রথম বিপদ হল, আবহাওয়া পরিবর্তন। হিমবাহগুলি গলে ছোট হয়েযাচ্ছে। উভয় মেরুর বরফও গলছে। অনেক দ্বীপ ডুবে যাচ্ছে কিম্বা ডোবার অবস্থা তৈরিহচ্ছে। অনেক গরম এবং অনেক ঠান্ডা, অতিবৃষ্টি, ভয়ানক বন্যা আর তীব্র খরা – চরমআবহাওয়ার প্রভাব ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের সবার উচিৎ ছিলনিজেদের সীমিত সঙ্কুচিত পরিধি থেকে বেরিয়ে সঙ্ঘবদ্ধ হওয়া। কিন্তু এরকম কিছু কিহয়েছে? না হলে, কেন হয়নি?এখন আমরা কী করতে পারি যাতে এই পরিস্থিতি শুধরায়। সবাইবলছেন যে কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করা উচিৎ। কিন্তু এরকম কত উন্নত দেশ রয়েছে যারাউন্নয়নশীল দেশ এবং সমাজগুলির উন্নয়নে উপযুক্ত প্রযুক্তি পৌঁছে দিতে চায়।
আপনারাহয়তো অনেকবার শুনেছেন যেভারতীয় ঐতিহ্য হল প্রকৃতির সঙ্গে গভীর সম্পর্কের ঐতিহ্য। কয়েকহাজার বছর আগে আমাদের শাস্ত্রে বলা হয়েছে, ‘ভূমি মাতা, পুত্র অহম পৃথ্বাঃ’ অর্থাৎআমরা মানুষ বিশ্ব মায়ের সন্তান। আমরা সকলেই যদি বিশ্ব মায়ের সন্তান, তাহলে মানুষআর প্রকৃতির মধ্যে এই লড়াই কেন?
কয়েকহাজার বছর আগে ভারতের অন্যতম প্রধান উপনিষদ, ‘ঈশোপনিষদ’-এর গোড়ার দিকেহীতত্ত্বদ্রষ্টা গুরু তাঁর শিষ্যদেরকে পরিবর্তনশীল জগৎ সম্পর্কে বলেছিলেন – “তেনত্যক্তেন ভূঞ্জীথা, মাগৃধঃকস্যস্বিদ্ধনম্”, অর্থাৎ এই পৃথিবীতে থাকতেই তাকেত্যাগের সঙ্গে ভোগ করো, আর অন্য কারোর সম্পত্তিতে লোভ করো না। আড়াই হাজার বছর আগেভগবান বুদ্ধ, ‘অপরিগ্রহ’, অর্থাৎ প্রয়োজন অনুসারে ব্যবহারকে তিনি নিজেরসিদ্ধান্তসমূহের মধ্যে প্রধান স্থান দিয়েছিলেন। ভারতের রাষ্ট্রপিতা মহাত্মাগান্ধীর ‘ট্রাস্টিশিপ’-এর সিদ্ধান্তও প্রয়োজন অনুসারে উপভোগের পক্ষে আর, লোভেরবশবর্তী হয়ে শোষণের বিরুদ্ধে স্পষ্ট। ভাবার বিষয় হল যে ত্যাগ করে ভোগ থেকে শুরু করে, প্রয়োজন অনুসারে উপভোগ থেকেআমরা লোভের বশবর্তী হয়ে প্রকৃতির শোষণ পর্যন্ত কিভাবে পৌঁছে গিয়েছি? এটা কি আমাদেরউন্নতি না পতন? আমাদের মস্তিষ্কের এই দুরবস্থা, আমাদের স্বার্থের এই ভয়ঙ্করচেহারা, আমাদের আত্মচিন্তনে বাধ্য করে না কেন?
আমরাযদি ভাবি, তাহলে হয়তো বুঝতে পারব যে আজ পরিবেশে ব্যাপ্ত ভয়ঙ্কর কু-পরিণামগুলিরথেকে রক্ষা পাওয়ার অব্যর্থ উপায় হল প্রাচীন ভারতীয় দর্শন অনুসারে মানুষ ও প্রকৃতিরমধ্যে সামঞ্জস্য। শুধু তাই নয়, এই দর্শনজাত যোগ এবং আয়ুর্বেদের মতো ভারতীয়ঐতিহ্যসমূহের সমগ্র পদ্ধতি শুধুমাত্র পরিবেশ এবং আমাদের মধ্যে উৎপন্ন হওয়াফাটলগুলিকে ভরে তুলবে না, আমাদের শারীরিক, মানসিক এবং আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্যেরমধ্যে ভারসাম্য প্রদান করবে। পরিবেশকে বাঁচাতে আর আবহাওয়ার পরিবর্তন রুখতে আমারদেশের সরকার দেশের সামনে একটি বড় লক্ষ্য রেখেছে, আমরা একটি ব্যাপক অভিযান শুরুকরেছি। সেটি হল, আগামী ২০২২ সালের মধ্যে আমরা ভারতে ১৭৫ গিগাওয়াট পুনর্নবীকরণযোগ্যশক্তি উৎপাদন করব। বিগত তিন বছরে আমরা ৬০ গিগাওয়াট, অর্থাৎ সেই লক্ষ্যেরএক-তৃতীয়াংশেরও বেশি পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদনের সক্ষম হয়েছি।
২০১৬সালে ভারত এবং ফ্রান্স মিলে একটি নতুন আন্তর্জাতিক চুক্তি-ভিত্তিক সংস্থা কল্পনাকরেছিলাম। সেই বৈপ্লবিক পদক্ষেপ এতদিনে একটি সফল প্রয়োগে পরিবর্তিত হয়েছে। আন্তর্জাতিকসৌর সঙ্ঘ রূপে প্রয়োজনীয় চুক্তি সম্পাদনের পর আজ একটি বাস্তব রূপ পেয়েছে। আমিঅত্যন্ত খুশি যে এ বছর মার্চ মাসে ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি ম্যাকঁর এবং আমার যৌথনিমন্ত্রণে এই সঙ্ঘের সদস্য দেশগুলির নেতারা নতুন দিল্লিতে এই সঙ্ঘের প্রথম শীর্ষবৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন।
বন্ধুগণ,
দ্বিতীয়বৃহৎ সমস্যা হল সন্ত্রাসবাদ। এই বিষয়ে ভারতীয় দর্শন আর সারা পৃথিবীতে মানবতা যেরকমভয়ানক বিপদের সম্মুখীন, সে সম্পর্কে আপনারা অবহিত। আমি এখানে শুধু দুটি বিষয়েআপনাদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে চাই। সন্ত্রাসবাদ যতটা ভয়ানক, তার চাইতেও বেশি ভয়ানকহল ভালো সন্ত্রাসবাদী আর খারাপ সন্ত্রাসবাদীর মধ্যে গড়ে তোলা কৃত্রিম ভেদাভেদ। দ্বিতীয়সাম্প্রতিক গভীর চিন্তার বিষয় হল লেখাপড়া জানা সম্পন্ন পরিবারের যুবক-যুবতীদেরমৌলবাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে সন্ত্রাসবাদী হয়ে ওঠা। আশা করি, এই শীর্ষ বৈঠকেসন্ত্রাসবাদ এবং হিংসা যে ফাটলগুলি গড়ে তুলছে, সেগুলির মাধ্যমে গড়ে ওঠা সমস্যাগুলিনিয়ে আলোচনা হবে এবং সেগুলি সমাধানের পথ খোঁজা হবে।
বন্ধুগণ,
তৃতীয়সমস্যা হল, অনেক সমাজ এবংদেশ অত্যধিক আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছে। এরকম মনে হয় যেবিশ্বায়ন নিজের নামের অর্থের বিপরীত সঙ্কুচিত হয়ে উঠছে। এই ধরনের মনোবৃত্তি এবংভুল অগ্রাধিকারগুলির দুস্পরিণামকে আবহাওয়া পরিবর্তন এবং সন্ত্রাসবাদের বিপদ থেকেছোট করে দেখা উচিৎ নয়। যদিও প্রত্যেকেই সংযুক্ত বিশ্বের কথা বলছেন, কিন্তু এইবিশ্বায়নের ঔজ্জ্বল্য কমে যাচ্ছে রাষ্ট্রসঙ্ঘের আদর্শ এখনও সর্বমান্য। বিশ্ববাণিজ্য সংস্থাও এখনও তার গুরুত্ব বজায় রেখেছে। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পরগড়ে ওঠা বিশ্ব সংগঠনগুলির প্রতিষ্ঠা, ব্যবস্থা এবং সেগুলির কার্যপদ্ধতি কি আজকেরমানুষের আকাঙ্ক্ষা এবং তাঁদের স্বপ্নের, আজকের বাস্তবকে দর্শাতে পারছে?
এইপ্রতিষ্ঠানগুলির পুরনো ব্যবস্থা, আর আজকের বিশ্বে বিশেষ করে, উন্নয়নশীল দেশগুলিরপ্রয়োজনের মাঝে একটি বড় খাদ রয়েছে। বিশ্বায়নের বিপরীতে রক্ষণবাদ মাথা তুলছে। তারানিজেরা তো বিশ্বায়ন থেকে দূরে থাকছেই, এমনকি বিশ্বায়নের প্রাকৃতিক প্রবাহের গতিওকখনও কখনও বদলে দিচ্ছে। এর একটা পরিণাম হল নতুন ধরনের ‘ট্যারিফ অ্যান্ড নন-ট্যারিফব্যারিয়ার’ দেখা যাচ্ছে। দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি এবংআদান-প্রদান প্রায় থেমে গেছে। অধিকাংশ দেশের মধ্যেই আন্তঃসীমান্ত বিনিয়োগ হ্রাস পেয়েছে।আর, গ্লোবাল সাপ্লাই চেনগুলির বৃদ্ধি থেমে গেছে। বিশ্বায়নের বিরুদ্ধে এই হতাশাজনকপরিস্থিতির নিরাময় বিচ্ছিন্নতা নয়। এর সমাধান রয়েছে পরিবর্তনকে বোঝা এবং তাকেস্বীকার করার মাধ্যমে। পরিবর্তিত সময়ের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে নমনীয় নীতি প্রণয়নেরমাধ্যমে। ভারতের রাষ্ট্রপিতা মহাত্মা গান্ধী বলেছেন, “আমি চাই না যে আমার ঘরেরদেওয়ালগুলি এবং জানালাগুলি সবদিক থেকে বন্ধ হোক। আমি চাই যে সকল দেশের সংস্কৃতিরবাতাস আমার বাড়িতে স্বাচ্ছ্বন্দ্যে প্রবেশ করুক কিন্তু সেই হাওয়ায় আমার পা উপরেযাবে, সেটা আমি স্বীকার করব না।” আজকের ভারত মহাত্মা গান্ধীর সেই দর্শনকে আপন করেনিয়ে সম্পূর্ণ আত্মবিশ্বাস ও নির্ভীকতার সঙ্গে সারা পৃথিবী থেকে উদ্গত,জীবনদায়িনী তরঙ্গসমূহকে স্বাগত জানায়।
বন্ধুগণ,
ভারতেরগণতন্ত্র স্থিরতা, নিশ্চয়তা এবং সর্বদা উন্নয়নশীলতার মূল আধার। ধর্ম, সংস্কৃতি,ভাষা, বেশভুষা আর খাদ্যাভ্যাসের অপার বৈচিত্র্যপূর্ণ ভারতের জন্য গণতন্ত্র নিছকইএকটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা নয়, একটি জীবন দর্শন, একটি জীবনশৈলী। আমরা ভারতীয়রা খুবভালোভাবেই জানি আর বুঝি যে বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য, সৌহার্দ্য, সহযোগিতা এবং সঙ্কল্পকেঐক্যে পরিণত করার গণতান্ত্রিক পরিবেশ আর স্বাধীনতার গুরুত্ব কী! ভারতে গণতন্ত্রশুধুই আমাদের বৈচিত্র্যকে লালন-পালন করা নয়। ১২৫ কোটির থেকেও বেশি ভারতীয় জনগণেরআশা-আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশা এবং তাঁদের স্বপ্ন পূরণের জন্য, তাঁদের যথাযথ উন্নয়নেরজন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ, রোডম্যাপ এবং টেমপ্লেটও প্রদান করা।
গণতান্ত্রিকমূল্যবোধ এবং সমভাবে আর্থিক উন্নয়ন সমস্ত ফাটল মেরামত করার সঞ্জীবনী শক্তি ধারণকরে। ভারতের ৬০ কোটি ভোটদাতা ২০১৪ সালে ৩০ বছর পর প্রথমবার কোন একটি রাজনৈতিক দলকেকেন্দ্রে সরকার গঠনের জন্য সংখ্যাধিক্যের ভোটে জিতিয়েছে। আমরা সব জায়গাতেই কোনএকটি নির্দিষ্ট বর্গের কিছু মানুষের সীমিত উন্নয়নের কথা ভাবি না, আমরা সকলেরউন্নয়নের সঙ্কল্প গ্রহণ করেছি। আমার সরকারের উদ্দেশ্য হল ‘সকলের সঙ্গে সকলেরবিকাশ’। উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য হল ‘সমোন্নয়ন’। এই সমোন্নয়নের দর্শন আমারসরকারের প্রত্যেক নীতি, প্রত্যেক প্রকল্পের মূল ভিত্তি। সে কোটি কোটি মানুষকেপ্রথমবার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলিয়ে অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিকরণ হোক, কিংবা ডিজিটালপ্রযুক্তির মাধ্যমে দরিদ্র থেকে দরিদ্রতম মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরিসুবিধা হস্তান্তর, অথবা লিঙ্গ বিচারের ক্ষেত্রে ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ প্রকল্পইহোক।
আমরামানি যে উন্নয়ন যখন সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলতে পারে, তখনই তাকে সত্যিকারের উন্নয়ন বলাযায়। সেজন্য আমরা আমাদের আর্থিক এবং সামাজিক নীতির ক্ষেত্রে ছোটখাটো কোন সংশোধনকরছি না, আমূল পরিবর্তন আনছি। আমরা যে পথ বেছে নিয়েছি সেটি হল পুনর্গঠন, সম্পাদনএবং রূপান্তর। আজ ভারতের অর্থ ব্যবস্থাকে বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত সুগম করে তুলেছি।ফলে, আগের তুলনায় ভারতে বিনিয়োগ করা, ভারতে ঘুরতে যাওয়া, ভারতে কাজ করা, ভারতেউৎপাদন করা, আর ভারত থেকে নিজেদের উৎপাদিত পণ্য ও পরিষেবা সারা পৃথিবীতে রপ্তানিকরা – সবকিছুই অনেক বেশি সহজ হয়ে উঠেছে। আমরা লাইসেন্স, পারমিট রাজের মূলোৎপাটনকরার পণ নিয়েছি। লাল ফিতের ফাঁস উধাও করে দিয়ে আমরা বিনিয়োগের জন্য লাল গালিচাপেতে দিয়েছি। অর্থ ব্যবস্থার প্রায় সকল ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের পথখুলে গিয়েছে। এখন প্রায় ৯০ শতাংশেরও বেশি ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিনিয়োগ সম্ভব। কেন্দ্রএবং রাজ্য সরকারগুলি মিলেমিশে অনেক সংস্কার করেছি। ১,৪০০-রও বেশি পুরনো আইন যেগুলিব্যবসা, প্রশাসন এবং সাধারণ মানুষের প্রাত্যহিক জীবনে সমস্যার সৃষ্টি করছিল,সেগুলিকে আমরা বাতিল করে দিয়েছি।
ভারতস্বাধীন হওয়ার ৭০ বছর পর ইতিহাসে প্রথমবার সারা দেশে অভিন্ন পণ্য ও পরিষেবা করচালু করা হয়েছে। স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা বৃদ্ধি করার জন্য আমরা প্রযুক্তিরব্যবহার করছি। ভারতকে রূপান্তরের জন্য আমাদের সঙ্কল্প এবং আমাদের প্রচেষ্টাগুলিকেসারা পৃথিবীর ব্যবসায়িক সম্প্রদায় স্বাগত জানিয়েছে। ভারতে স্বাধীনতা, জনসংখ্যারঅনুপাত এবং গতিশীলতা মিলেমিশে উন্নয়নকে সাকার করে তুলছে। দশকের পর দশক ধরে নানারকম নিয়ন্ত্রণ ভারতের জনগণ তথা যুব সম্প্রদায়ের ক্ষমতাকে সীমিত করে ফেলেছিল।কিন্তু এখন আমাদের সরকারের নির্ভীক, নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে প্রভাবশালীপদক্ষেপগুলি পরিস্থিতির পরিবর্তন করেছে। প্রায় সাড়ে তিন বছরেরও কম সময়ে ভারতেদূরদৃষ্টিসম্পন্ন গুরুত্বপূর্ণ সব পরিবর্তন সাধিত হয়েছে এবং হচ্ছে। ১২৫ কোটিভারতীয়দের প্রত্যাশা, তাদের ক্ষমতা এবং সামর্থ্য অপরিসীম। এখন ভারতের জনগণ, ভারতেরযুবসম্প্রদায় ২০২৫ সালের মধ্যে দেশকে ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থব্যবস্থা গড়ে তোলারক্ষমতা রাখে।
শুধুতাই নয়, উদ্ভাবন এবং আন্ত্রেপ্রেনিউরশিপ-এর মাধ্যমে তাঁরা কর্মপ্রার্থী না হয়েকর্মদাতা হয়ে উঠবেন, তখন তাঁরা দেশের জন্য ব্যবসার কত নতুন রাস্তা খুলে দেবেন তাকল্পনা করা যায়। আপনারা সকলেই বিশ্বের প্রধান দেশগুলির রাষ্ট্রপ্রধান। বিশ্বে যেসকল পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে, ভারতের র্যাঙ্কিং এবং রেটিং-এ উন্নতি সম্পর্কে আপনারাভালোভাবেই অবহিত। কিন্তু এই সকল পরিসংখ্যান থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল আমাদেরনীতি ভারতের জনগণনিজেদের ভবিষ্যৎ নির্মাণে নতুন উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সোনালী সঙ্কেতদিয়ে স্বাগত জানিয়েছেন। স্বেচ্ছায় ভর্তুকি ত্যাগ অথবা একের পর এক নির্বাচনেগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আমাদের নীতি এবং সংস্কারের প্রতি নিজেদের বিশ্বাস ব্যক্তকরার মাধ্যমে ভারতে এই অভূতপূর্ব পরিবর্তনগুলির প্রতি ব্যাপক সমর্থন জানাচ্ছেন।
বন্ধুগণ,
বিশ্বেরসকল প্রকার বিভাজন এবং ফাটলকে দেখে এটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বলে অনুভূত হচ্ছে যেআমরা সকলেই নিজেদের সংযুক্ত ভবিষ্যতের জন্য কী কী পদক্ষেপ নিতে পারি তা নিয়েআলোচনা করি। সবার আগে প্রয়োজন হল বিশ্বের বৃহৎ শক্তিগুলির মধ্যে সহযোগিতার সম্পর্কগড়ে তোলা। নিজেদের প্রতিযোগিতার মনোভাব যেন মানব সম্পর্কের ক্ষেত্রে দেওয়াল না তুলেদেয়। নিজেদের মতভেদকে পাশে রেখে বৃহত্তর দৃষ্টিকোণ থেকে মানবতার কল্যাণে কাজ করতেহবে। দ্বিতীয় প্রয়োজন হল নিয়মমাফিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা পালন করা, বিশেষ করে আমরাযখন এমন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, চারপাশের পরিবর্তন অনিশ্চয়তার জন্ম দিচ্ছে, তখনআন্তর্জাতিক নিয়মগুলির সঠিকভাবে পালন করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণবিষয় হল বিশ্বের প্রধান রাজনৈতিক, আর্থিক এবং নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানগুলি সংস্কারেরমাধ্যমে সহযোগিতা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করে পরিস্থিতিকে অনুকূল করে তোলা। চতুর্থগুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আমাদের বিশ্বের আর্থিক উন্নয়নকে আরও ত্বরান্বিত করতে হবে।এক্ষেত্রে বিশ্বের সাম্প্রতিক আর্থিক বৃদ্ধির সঙ্কেত উৎসাহজনক। প্রযুক্তি এবংডিজিটাল বিপ্লব এ ধরনের নতুনসমাধান সমূহের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে যার মাধ্যমে আমরাদারিদ্র্য এবং বেকারত্বের মতো পুরনো সমস্যাগুলির নতুনভাবে মোকাবিলা করতে পারি।
বন্ধুগণ,
এভাবেনানা প্রচেষ্টার মাধ্যমে ভারত সর্বদাই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। এটা শুধু আমারসরকার নয়, শুধু ভারতের স্বাধীনতার পর থেকে নয়, প্রাচীনকাল থেকে ভারত সমস্যারমোকাবিলায় সকলকে সঙ্গে নিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে এসেছে। বিগত শতাব্দীতে যখন বিশ্বদু-দুটো বিশ্বযুদ্ধের সঙ্কটগ্রস্ত হয়েছে, তখন কোনরকম স্বার্থ ছাড়াই ভারতীয় সৈনিকরাশান্তি এবং মানবতার উচ্চ আদর্শ রক্ষার স্বার্থে লড়াই করেছে। দেড় লক্ষেরও বেশিভারতীয় সৈনিক ঐ দুই যুদ্ধে প্রাণ দিয়েছেন। একই আদর্শ অনুসরণ করে রাষ্ট্রসঙ্ঘ স্থাপনেরপর থেকে ভারত রাষ্ট্রসঙ্ঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীতে সবথেকে বেশি সৈনিক পাঠিয়েছে। একইআদর্শ থেকে আমরা নানা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলির দিকেসাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। যে কোন মানুষকে সাহায্য করার জন্য আমরা উৎসাহদিয়েছি। নেপালের ভূমিকম্প কিংবা আমাদের প্রতিবেশী কয়েকটি দেশে বন্যা, ভয়ঙ্করসামুদ্রিক ঝড় কিংবা অন্য প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় ভারতই প্রথম সাড়া দিয়েছে। ইয়েমেনযখন হিংসার কবলে, তখন আমরা শুধু সে দেশে বসবাসকারী ভারতীয়দের নয়, অন্যান্য দেশের প্রায়২ হাজার নাগরিককেও উদ্ধার করে নিয়ে এসেছি। একটি উন্নয়নশীল দেশ হয়েও ভারত উন্নয়নসহযোগিতায় সব সময়ই এক পা বাড়িয়ে থাকে। আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ কিংবা দক্ষিণ-পূর্বএশিয়ার অথবা প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলিতেও বিভিন্ন প্রকল্পে অগ্রাধিকার অনুসারেভারত সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।
বন্ধুগণ,
ভারতকোন রাজনৈতিক কিংবা ভৌগোলিক আগ্রাসন নীতিতে বিশ্বাস করে না। আমরা কোন দেশেরপ্রাকৃতিক উপাদানগুলি শোষণ করি না। আমরা অন্য দেশের সঙ্গে মিলেমিশে সে দেশেরমানুষের উন্নয়নে সাহায্য করি। হাজার হাজার বছর ধরে ভারতের মাটি বৈচিত্র্যের মধ্যেসৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় রেখেছে। ফলস্বরূপ, আমরা বহু সাংস্কৃতিক এবং বহুমুখীবিশ্ব ব্যবস্থায় বিশ্বাস রাখি। ভারত প্রমাণ করে দিয়েছে যে গণতন্ত্র, বৈচিত্র্যেরসম্মান, সৌহার্দ্য, সমন্বয়, সহযোগ আর সংবাদের মাধ্যমে সকল প্রকার বিবাদ ও ফাটলকেমেটানো সম্ভব। শান্তি ও স্থিরতা হল উন্নয়নের জন্য ভারতের বহু পরীক্ষিত ঔষধি। নিজেরজন্য নয়, নিজের দেশের জন্যও নয়, ভারতীয় মননে, ভারতীয় দার্শনিকরা, ঋষি-মুনিরাপ্রাচীনকাল থেকেই যে মানসিকতা রোপণ করে দিয়েছেন তা হল “সর্বে ভবন্তু সুখিনঃ সর্বেসন্তু নিরাময়া, সর্বে ভদ্রাণী পশন্তু, মাকশ্চিদ্ দুখ ভাগ ভবেৎ” অর্থাৎ, সবাইপ্রসন্ন থাকুক, সবাই সুস্থ থাকুক, সকলের কল্যাণ হোক, কেউ দুঃখ না পাক, তাঁরা এরকমস্বপ্নই দেখে গেছেন। আর এই আদর্শ প্রাপ্তির জন্য এই স্বপ্ন সাকার পথও তাঁরাদেখিয়েছেন – “সহনাঅবতু, সহ নৌ ভুনক্তু, সহ বীর্যং, করোয়াবহে/তেজস্বীনাধীতমস্তু মাবিদ্বিষাবহে”।
এইহাজার হাজার বছর পুরনো ভারতীয় প্রার্থনার উদ্দেশ্য হল যে আমরা সবাই মিলেমিশে কাজকরব, মিলেমিশে চলব, আমাদের প্রতিভারা একসাথে বিকশিত হবে এবং আমাদের মাঝে কখনও দ্বেষথাকবে না। বিগত শতাব্দীর মহান ভারতীয় কবি নোবেল পুরস্কার বিজেতা গুরুদেবরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এমন একটি স্বাধীনতার স্বর্গের কথা কল্পনা করেছিলেন যেখানে “…যেথা গৃহের প্রাচীর/আপন প্রাঙ্গণ তলে দিবসশর্বরী/বসুধারে রাখে নাই খণ্ড ক্ষুদ্রকরি…”। আসুন, আমরা সকলে মিলে স্বাধীনতার স্বর্গ গড়ে তুলি যেখানে সহযোগ আর সমন্বয়থাকবে, বিভেদ এবং ফাটল থাকবে না। আসুন, আমরা সবাই মিলে বিশ্বকে সে সব ফাটল এবংঅনাবশ্যক দেওয়ালগুলি থেকে মুক্তি দিই।
বন্ধুগণ,
ভারতএবং ভারতীয়রা গোটা বিশ্বকে একটি পরিবার বলে মনে করে। বিভিন্ন দেশে বসবাসকারীভারতীয় বংশোদ্ভূত ৩ কোটি মানুষেরা সে সব দেশকে আপন করে নিয়েছেন। আমি আপনাদের সকলকেআহ্বান জানাই, আপনারা যদি সুস্বাস্থ্যের পাশাপাশি ভালো থাকতে চান, তাহলে ভারতে কাজকরুন। আপনারা যদি সুস্বাস্থ্যের পাশাপাশি ভালো থাকতে অর্থাৎ, সমগ্রতা চান, তাহলেভারতে আসুন।আপনারা যদি ঐশ্বর্যের পাশাপাশি শান্তি চান, তাহলে ভারতে এসে থাকুন।ভারত আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছে। আপনাদের সকলের সঙ্গে কথা বলার এই বহুমূল্যসুযোগদানের জন্য আমি বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম এবং শ্রী ক্লোজ শোয়াবকে ধন্যবাদ জানাই।আপনাদের সবাইকে হৃদয় থেকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
I am happy to be in Davos to address the @wef. This Summit seems to find solutions to the various problems the world faces. I thank the people and Government of Switzerland for the warm welcome here: PM @narendramodi #IndiaMeansBusiness https://t.co/plnF2ehgs8 pic.twitter.com/pO40NbSkza
— PMO India (@PMOIndia) January 23, 2018
दावोस में आख़िरी बार भारत के प्रधानमंत्री की यात्रा सन् 1997 में हुई थी, जब श्री देवे गौड़ा जी यहाँ आए थे। 1997 में भारत का GDP सिर्फ़ 400 billion dollar से कुछ अधिक था। अब दो दशकों बाद यह लगभग 6 गुना हो चुका है: PM @narendramodi @wef #IndiaMeansBusiness https://t.co/plnF2ehgs8
— PMO India (@PMOIndia) January 23, 2018
1997 में भी दावोस अपने समय से आगे था, और यह World Economic Forum भविष्य का परिचायक था। आज भी दावोस अपने समय से आगे है: PM @narendramodi at the @wef #IndiaMeansBusiness https://t.co/plnF2ehgs8
— PMO India (@PMOIndia) January 23, 2018
A vital theme chosen by the @wef. #IndiaMeansBusiness pic.twitter.com/JC1h5PPUd6
— PMO India (@PMOIndia) January 23, 2018
Technology is assuming immense importance in this era. @wef #IndiaMeansBusiness https://t.co/plnF2ehgs8 pic.twitter.com/ua1z8tX2oL
— PMO India (@PMOIndia) January 23, 2018
PM @narendramodi at the @wef in Davos. https://t.co/plnF2ehgs8 pic.twitter.com/6nK4P7FIY7
— PMO India (@PMOIndia) January 23, 2018
India has always believed in values of integration and unity. @wef #IndiaMeansBusiness pic.twitter.com/YJCOylAXVN
— PMO India (@PMOIndia) January 23, 2018
Let us think about what we can do to mitigate climate change. @wef #IndiaMeansBusiness https://t.co/plnF2ehgs8 pic.twitter.com/ZrEKuHGVRY
— PMO India (@PMOIndia) January 23, 2018
Care towards the environment is a part of India's culture. @wef #IndiaMeansBusiness pic.twitter.com/imrr47ufJJ
— PMO India (@PMOIndia) January 23, 2018
भारतीय परम्परा में प्रकृति के साथ गहरे तालमेल के बारे में। हजारो साल पहले हमारे शास्त्रों में मनुष्यमात्र को बताया गया- "भूमि माता, पुत्रो अहम् पृथ्व्याः'' यानि, we the human are children of Mother Earth: PM @narendramodi at the @wef
— PMO India (@PMOIndia) January 23, 2018
India is giving great importance to renewable energy. @wef #IndiaMeansBusiness pic.twitter.com/gYkHm1adXp
— PMO India (@PMOIndia) January 23, 2018
Terrorism is dangerous. Worse is when people say there is a difference between 'good' and 'bad' terror. It is painful to see some youngsters getting radicalised: PM @narendramodi at @wef
— PMO India (@PMOIndia) January 23, 2018
PM @narendramodi speaks about globalisation at the @wef. #IndiaMeansBusiness pic.twitter.com/45b5tRcbIs
— PMO India (@PMOIndia) January 23, 2018
PM @narendramodi talks about globalisation and protectionism. @wef. #IndiaMeansBusiness pic.twitter.com/nw4ftbaUtx
— PMO India (@PMOIndia) January 23, 2018
Globalisation के विरुद्ध इस चिंताजनक स्थिति का हल अलगाव में नहीं है। इसका समाधान परिवर्तन को समझने और उसे स्वीकारने में है, बदलते हुए समय के साथ चुस्त और लचीली नीतियां बनाने में है: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) January 23, 2018
We in India are proud of our democracy and diversity. pic.twitter.com/AM9nm91a6G
— PMO India (@PMOIndia) January 23, 2018
The motto of my Government is 'Sabka Saath, Sabka Vikas' says PM @narendramodi. pic.twitter.com/xp912ogJLh
— PMO India (@PMOIndia) January 23, 2018
हम मानते हैं कि प्रगति तभी प्रगति है, विकास तभी सच्चे अर्थों में विकास है जब सब साथ चल सकें।#IndiaMeansBusiness pic.twitter.com/LkSvGPYvVp
— PMO India (@PMOIndia) January 23, 2018
70 साल के स्वतंत्र भारत के इतिहास में पहली बार देश में एक एकीकृत कर व्यवस्था goods and service tax – GST - के रूप में लागू कर ली गई है। पारदर्शिता और जवाबदेही बढ़ाने के लिए हम technology का इस्तेमाल कर रहे हैं: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) January 23, 2018
भारत में democracy, demography और dynamism मिल कर development को साकार कर रहे हैं, destiny को आकार दे रहे हैं: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) January 23, 2018
विश्व में तमाम तरह के फ्रैक्चर और तमाम तरह की दरारों को देखते हुए, यह आवश्यक है कि हमारे साझा भविष्य के लिए हम कई दिशाओं पर ध्यान दें। pic.twitter.com/GLcQnpUCcy
— PMO India (@PMOIndia) January 23, 2018
India has always contributed toward global peace: PM @narendramodi at @wef pic.twitter.com/m1rDxqVyv5
— PMO India (@PMOIndia) January 23, 2018
India in the 21st century. @wef #IndiaMeansBusiness pic.twitter.com/IwsQXJxV5x
— PMO India (@PMOIndia) January 23, 2018
Let us create a 'heaven of freedom', where there is cooperation and not division, fractures. @wef #IndiaMeansBusiness pic.twitter.com/XCaxMOp7Wf
— PMO India (@PMOIndia) January 23, 2018