প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী বৃহস্পতিবার সেন্ট পিটার্সবার্গ-এ অষ্টাদশ ভারত-রাশিয়া শীর্ষবৈঠকে মিলিত হলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে।
শীর্ষবৈঠক শেষে সংবাদমাধ্যম প্রতিনিধিদের কাছে ভাষণদানকালে প্রধানমন্ত্রী ২০০১ সালেগুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর সেন্ট পিটার্সবার্গ সফরের স্মৃতিচারণ করেন।তিনি বলেন, ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্কের প্রসার ঘটেছে সংস্কৃতি থেকে প্রতিরক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে।
শ্রীমোদী বলেন, ভারত-রাশিয়া কূটনৈতিক সম্পর্ক সুদীর্ঘ ৭০ বছরের। এই সময়কালে বিভিন্নদ্বিপাক্ষিক তথা আন্তর্জাতিক বিষয়ে দু’দেশের মধ্যে যথেষ্ট মিল ও মতৈক্য এইসম্পর্ককে আরও সমৃদ্ধ করে তুলেছে।
বৃহস্পতিবারেরসেন্ট পিটার্সবার্গ ঘোষণাপত্রকে এক অস্থির অথচ পরস্পর সংযুক্ত এবং পরস্পরনির্ভরশীল বিশ্ব পরিস্থিতিতে এক বিশেষ সুস্থিতির অঙ্গীকার বলে বর্ণনা করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীবলেন, এসপিআইইএফ-এ একটি অতিথি রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের অংশগ্রহণ এবং শুক্রবার সেখানেতাঁর ভাষণ দু’দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতার বাতাবরণকে আরও নিবিড় করে তুলবে।
প্রসঙ্গত,জ্বালানি ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার প্রসঙ্গও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনিবলেন, এই বিষয়টি ভারত-রাশিয়া সম্পর্কে এক বিশিষ্টতা দান করেছে। পরমাণু শক্তি,হাইড্রো কার্বন এবং জ্বালানি ক্ষেত্রে এই সহযোগিতা আরও গভীরতা লাভ করেছে বৃহস্পতিবারেরবৈঠকে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে। এই প্রসঙ্গে কুড়ানকোলাম পরমাণু বিদ্যুৎপ্রকল্পের ৫ ও ৬ নম্বর ইউনিট সম্পর্কিত চুক্তি সম্পাদনের কথা উল্লেখ করেন তিনি।
দু’দেশেরমধ্যে শিল্প-বাণিজ্যের প্রসারে বেসরকারি ক্ষেত্রের ভূমিকার ওপর বিশেষ জোর দেন শ্রীনরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণবিনিয়োগের লক্ষ্যে পৌঁছতে ভারত ও রাশিয়ার খুব একটা বেশি সময় লাগবে না।
সংযোগতথা যোগাযোগের বিষয়টিও এদিন উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে। তিনি বলেন,আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে উত্তর-দক্ষিণ পরিবহণ করিডর স্থাপনের ক্ষেত্রেও দুটি দেশপরস্পরের সঙ্গে সহযোগিতা করে চলেছে। স্টার্ট আপ ও শিল্পোদ্যোগ প্রচেষ্টায়‘উদ্ভাবনের সেতুবন্ধন’ গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে ভারত ও রাশিয়া। ইউরেশিয়ান ইকনমিকইউনিয়নের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সম্পর্কিত আলোচনাও অচিরে শুরু হবে বলে তিনিউল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রীবলেন, ভারত-রাশিয়া সম্পর্ক কৌশলগতভাবে এক কালের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। এই প্রসঙ্গেতিনি উল্লেখ করেন আসন্ন তিন পরিষেবা প্রচেষ্টা ‘ইন্দ্র, ২০১৭’-র কথা। প্রতিরক্ষাউৎপাদনের ক্ষেত্রে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে কামোভ ২২৬ হেলিকপ্টার নির্মাণেরজন্য। সীমান্ত সন্ত্রাস দমনে ভারতকে নিঃশর্ত সমর্থন ও সহযোগিতার যে প্রস্তাবদিয়েছে রাশিয়া তাকেও স্বাগত জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীরবক্তব্যে দু’দেশের সাংস্কৃতিক প্রচেষ্টার বিষয়টিও এদিন স্থান পেয়েছে। তিনি বলেন,রাশিয়ার সংস্কৃতি ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সম্পর্কে ভারতীয়দের মধ্যে সচেতনতার প্রসারঘটেছে যথেষ্ট মাত্রায় । অন্যদিকে, যোগ এবং আয়ুর্বেদ সম্পর্কে জ্ঞান ওঅনুসন্ধিৎসার উৎসাহ লক্ষ্য করা গেছে রাশিয়ার মধ্যে। নিঃসন্দেহে এটি আনন্দ ওসন্তোষের বিষয়।
ভারত-রাশিয়াসম্পর্কের প্রসার ও অগ্রগতিতে প্রেসিডেন্ট পুতিনের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেনভারতের প্রধানমন্ত্রী। সম্প্রতি প্রয়াত রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার কাডাকিন-কে ভারতেরএক অকৃত্রিম বন্ধু বলে বর্ণনা করেন তিনি। দিল্লির একটি রাস্তা তাঁর নামে নামাঙ্কিতহয়েছে বলেও এদিন উল্লেখ করেন শ্রী মোদী।
এরআগে, দু’দেশের সিইও-দের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ভারতীয়অর্থনীতির প্রধান প্রধান ক্ষেত্রগুলিতেবিনিয়োগের জন্য তিনি আমন্ত্রণ জানান রাশিয়ার শিল্প সংস্থাগুলিকে। বিশেষত, কৌশলগতক্ষেত্রগুলিতে যে বিনিয়োগের প্রচুর সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে সে কথাও তিনি বিবৃতকরেন এদিনের বৈঠকে।
বৃহস্পতিবারভারত ও রাশিয়ার মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় পরমাণু শক্তি, রেল, রত্ন ও অলঙ্কার, প্রথাগতজ্ঞান এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় সম্পর্কিত পাঁচটি সহযোগিতা চুক্তি।
বৃহস্পতিবারসকালে পিসকারোভ্সকোয়ে সমাধি ক্ষেত্রে গিয়ে লেনিনগ্র্যাদের যুদ্ধে যে সমস্ত বীর ওসাহসী যোদ্ধা প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন, তাঁদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেনভারতের প্রধানমন্ত্রী।
Trade, commerce, innovation and engineering are of immense importance in this era: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) June 1, 2017
Companies from Russia should explore the opportunities in India and collaborate with Indian industry: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) June 1, 2017
Defence is a key area where India and Russia can cooperate. I appreciate President Putin's role in enhancing India-Russia ties: PM
— PMO India (@PMOIndia) June 1, 2017