-
মাননীয় রাষ্ট্রপতি সিরিল রামাফোজা,
মাননীয় রাষ্ট্রপতি মিশেল টেমার,
মাননীয় রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন এবং
মাননীয় রাষ্ট্রপতি শি জিংপিং,
জুলাই মাসে জোহানেসবার্গে সফল ব্রিক্স শিখর সম্মেলন ও আজকের এই বৈঠক আয়োজন করার জন্য আমি রাষ্ট্রপতি রামাফোজা-কে অভিনন্দন জানাই।
ব্রিক্স গোষ্ঠীভুক্ত দেশে মোট বিশ্বের জনসংখ্যার ৪২ শতাংশ মানুষ বসবাস করেন। গত চার বছরে ব্রিক্স গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলি বিশ্ব উন্নয়নে চালিকাশক্তি হয়ে রয়েছে। যদিও আমাদের বিশ্ব জিডিপি এবং বাণিজ্য বৃদ্ধির আরও সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে বিশ্বে মোট ২৩ শতাংশ জিডিপি এবং ১৬ শতাংশ বাণিজ্যে আমাদের ভূমিকা রয়েছে। আমাদের জনসংখ্যার সঙ্গে এর সামঞ্জস্য নেই।
-
মাননীয় মহোদয়,
বিশ্বায়ন বহু মানুষকে দারিদ্র্য মুক্ত করেছে। যদিও এখনও আমাদের সামনে রয়েছে সুযোগ-সুবিধা সমানভাবে বন্টনের চ্যালেঞ্জ। অর্থনীতির মূল্য হ্রাস এবং তেলের দাম বৃদ্ধি গত কয়েক বছরে অর্জিত লভ্যাংশের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ব্রিক্স গোষ্টীভুক্ত দেশগুলি আন্তর্জাতিক শান্তি, সুস্থিতি ও উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা নিচ্ছে। বিশ্বের অর্থনীতি ও রাজনীতির কাঠামো তৈরিতে আমরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছি।
বিশ্ব অর্থনীতির পরিকাঠামোকে আরও গ্রহণযোগ্য করে তুলতে আমরা বিশেষ ভূমিকা পালন করছি। এই লক্ষ্যে ভবিষ্যতেও কাজ করে যাব।
রাষ্ট্রসংঘ, এর নিরাপত্তা পরিষদ-সহ প্রতিষ্ঠানগুলিতে উন্নয়নশীল দেশগুলির প্রতিনিধিত্ব আরও বাড়াতে আমাদের একযোগে দাবি জানাতে হবে। এই উদ্দেশ্যেই আমরা ব্রিক্স – এর আওতায় একত্রিত হয়েছি। নতুন শিল্প বিপ্লব, কাজের ভবিষ্যৎ-সহ বিভিন্ন বিষয়গুলি নিয়ে বিশ্ব উন্নয়নের লক্ষ্যে জি-২০ সম্মেলনে আলোচনা করতে হবে। আমরা ব্রিক্স গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলি নতুন শিল্প বিপ্লবের জন্য সহযোগিতা বৃদ্ধিতে উৎসাহী।
এই লক্ষ্যে শ্রমিক পরিচালন এবং আন্তর্জাতিক স্তরে সরবরাহ শৃঙ্খলের যে বিষয়টি রয়েছে, তাতে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। কর্মীদের সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্প এবং সারা বিশ্বের শ্রমিক উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মহিলাদের ক্ষমতায়ন, খাদ্য নিরাপত্তা-সহ আর্থ-সামাজিক বিষয়গুলি জি-২০ শিখর সম্মেলনে উত্থাপন করা হবে। ধারাবাহিক উন্নয়ন ও পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য এর আগে আমি বিপর্যয় মোকাবিলার ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। এই লক্ষ্য পূরণে আমাদের একযোগে কাজ করতে হবে।
মহোদয়,
ভারত ব্রিক্স গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির মধ্যে রাজনৈতিক স্তরে মতামত আদান-প্রদানের বিষয়টিতে বিশেষ গুরুত্ব দেয়। এই লক্ষ্যে আমাদের বিদেশ মন্ত্রীদের মধ্যে বৈঠক জরুরি।
সমগ্র বিশ্ব বর্তমানে সন্ত্রাসবাদের হুমকির সম্মুখীন এবং এটি একটি বড় সমস্যা। এই বিষয়ে আমরা সকলেই সহমত পোষণ করি যে, এটি কেবলমাত্র শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে হুমকি নয়, অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও বড় চ্যালেঞ্জ।
রাষ্ট্রসংঘের সন্ত্রাস মোকাবিলা পরিকাঠামোর আওতায় জঙ্গী নেটওয়ার্কগুলি বন্ধ করার জন্য ও তাদের কাজকর্ম থামিয়ে দেওয়ার জন্য ব্রিক্স ও জি-২০ দেশগুলিকে একযোগে কাজ করতে হবে।
অর্থনৈতিক অপরাধী ও ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধেও আমাদের একযোগে লড়াই চালাতে হবে। বিশ্ব অর্থনীতির স্থিতাবস্থায় এটি একটি বড় সমস্যা হয়ে উঠতে পারে।
মহোদয়,
জি-২০’তে আমাদের সমর্থনের ভিত্তি ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠছে। ব্রিক্স গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলি জি-২০ ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে কার্যকর ভূমিকা নিচ্ছে।
জি-২০ শিখর সম্মেলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে একটি উন্নয়নশীল দেশ। তাই, উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্য জি-২০’র দিশা-নির্দেশ যথাযথভাবে কার্যকর করার একটি দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে।
সবশেষে, আমি আবারও জোহানেসবার্গে সফল শিখর সম্মেলন এবং এই বৈঠক আয়োজনের জন্য রাষ্ট্রপতি রামাফোজা-কে ধন্যবাদ জানাই।
আমি আগামী ব্রিক্স সম্মেলনে ব্রাজিলের নেতৃত্বদানকে ভারতের পক্ষ থেকে সম্পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি ও সহযোগিতার আশ্বাস দিচ্ছি। ব্রাজিলের নেতৃত্বে ব্রিক্স সহযোগিতা এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
মহোদয়,
আমি ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা আপনার নেতৃত্বের সুযোগ পাচ্ছি এবং গত ছটি বৈঠক ধরে আপনার সঙ্গে কাজ করছি।
সকলকে আমার শুভেচ্ছা।
ধন্যবাদ।