প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একদল চিকিৎসকের সঙ্গে কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ফলে অভূতপূর্ব পরিস্থিতির বিরুদ্ধে যে অনুকরণীয় লড়াই চিকিৎসক এবং প্যারামেডিকেল কর্মীরা করেছেন প্রধানমন্ত্রী তার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান। এরজন্য সারা দেশ তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে। নমুনা পরীক্ষা, ওষুধ সরবরাহ অথবা নতুন পরিকাঠামো দ্রুততার সঙ্গে তৈরি করার মত প্রতিটি বিষয় তিনি বৈঠকে উল্লেখ করেছেন। অক্সিজেন উৎপাদনের এবং সরবরাহের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করা হয়েছে। দেশে মানব সম্পদের ঘাটতি মেটাতে কোভিডের চিকিৎসায় এমবিবিএস ছাত্রছাত্রীদের যুক্ত করার মতো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও গ্রামাঞ্চলে আশা ও অঙ্গনওয়াড়ী কর্মীরা একাজে সামিল হওয়ায় স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, টিকাকরণ অভিযান, সামনের সারিতে থাকা যোদ্ধাদের দিয়ে শুরু করার ফলে দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় তার সুফল পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত প্রায় ৯০ শতাংশ পেশাদার টিকার প্রথম ডোজ ইতিমধ্যেই পেয়েছেন। বেশিরভাগ চিকিৎসক টিকার মাধ্যমে সুরক্ষিত হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসকদের প্রতিদিন অক্সিজেনের হিসেব রাখার জন্য অনুরোধ করেছেন । বিপুল সংখ্যক রোগী হোম আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা করাচ্ছেন। শ্রী মোদী চিকিৎসকদের অনুরোধ করেছেন বাড়িতে থাকা রোগীদের জন্য সাধারণ পরিচালন পদ্ধতি মেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা যাতে নেওয়া হয় তারা যেন সে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীদের ক্ষেত্রে টেলি-মেডিসিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। গ্রামাঞ্চলে এই ব্যবস্থাকে ছড়িয়ে দেওয়া উচিত। গ্রামে টেলি-মেডিসিন পরিষেবা দেওয়ার জন্য যেসব চিকিৎসক, দল গঠন করে এই কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী তাঁদের উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। চিকিৎসকরা যাতে বিভিন্ন রাজ্যে এই ধরণের উদ্যোগ নেন, চূড়ান্ত বর্ষের এমবিবিএস-এর ছাত্রছাত্রী ও ইন্টার্নদের প্রশিক্ষণ দেন এবং দেশের সব তহশিল ও জেলায় টেলি-মেডিসিন পরিষেবা শুরু করার উদ্যোগ নেন তার জন্য তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন।
মিউকোরমাইকোসিসের চ্যালেঞ্জ নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। শ্রী মোদী এই অসুখের বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য চিকিৎসকদের বাড়তি উদ্যোগ নিতে অনুরোধ জানান। শারীরিক যত্নের পাশাপাশি মনস্তাত্বিক যত্নের ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে অবিরত লড়াই চালানো হচ্ছে। এর ফলে চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা মানসিকভাবে যে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছেন তার থেকে বেরিয়ে আসার জন্য নাগরিকদের বিশ্বাস তাদের শক্তি যোগাবে।
চিকিৎসকরা, সংক্রমণ বৃদ্ধির এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ও নেতৃত্বের জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের প্রথম টিকাকরণের সিদ্ধান্তের গ্রহণের জন্যও তারা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। কোভিডের প্রথম ঢেউয়ের সময় থেকে যে প্রস্তুতি তাঁরা নিয়েছেন এবং দ্বিতীয় ঢেউয়ে যে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছেন সে বিষয়ে চিকিৎসকরা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন। এছাড়াও তাঁরা তাঁদের অভিজ্ঞতা, বিভিন্ন অভ্যাস এবং উদ্ভাবনমূলক উদ্যোগের বিষয়ও বৈঠকে আলোচনা করেছেন। কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময় যাঁরা কোভিড আক্রান্ত রোগী নন তাঁদের চিকিৎসার জন্যও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো এবং যথেচ্ছ ওষুধ খাওয়ার বিরুদ্ধে মানুষকে সচেতন করে তোলার বিষয়ে কি কি অভিজ্ঞতা তাঁরা সঞ্চয় করেছেন সে বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
নীতি আয়োগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সদস্য, স্বাস্থ্য সচিব, ফার্মাসিউটিক্যাল সচিব এবং প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের আধিকারিকরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।