প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার তথ্য প্রযুক্তি-ভিত্তিক সক্রিয় প্রশাসন ও সময়ানুগ রূপায়ণ সংক্রান্ত ‘প্রগতি’ মঞ্চের ৩১তম মতবিনিময় অনুষ্ঠানে পৌরহিত্য করেন।
‘প্রগতি’র বিগত বৈঠকগুলিতে ১২ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ সহ মোট ২৫৬টি প্রকল্প, ৪৭টি কর্মসূচি এবং ১৭টি ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত অভাব-অভিযোগ নিষ্পত্তির বিষয়গুলি পর্যালোচনা করা হয়।
আজকের ‘প্রগতি’র বৈঠকে ৬১ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ সহ ৯টি প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়েছে। এই প্রকল্পগুলি কেন্দ্রশাসিত জম্মু ও কাশ্মীর সহ ১৬টি রাজ্যে রূপায়িত হচ্ছে। বৈঠকে বিদেশে কর্মরত ভারতীয় নাগরিকদের অভাব-অভিযোগের পাশাপাশি, জাতীয় কৃষি বাজার ও উন্নয়নে আগ্রহী জেলাগুলির বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
প্রত্যাশা পূরণ
উন্নয়নে আগ্রহী জেলাগুলিতে রূপায়িত বিভিন্ন কর্মসূচির অগ্রগতি পর্যালোচনা করে প্রধানমন্ত্রীকে ৪৯টি ক্ষেত্রের অগ্রগতির খতিয়ান সংক্রান্ত ড্যাশবোর্ড সম্পর্কে অবহিত করা হয়। পুষ্টি ক্ষেত্রের মতো মন্থর অগ্রগতির বিষয়গুলিতেও লক্ষ্যণীয় অগ্রগতি হয়েছে বলে ড্যাশবোর্ড থেকে জানা গেছে। আরও জানা গেছে যে, উত্তর প্রদেশের কয়েকটি জেলায় অভাবনীয় অগ্রগতি হয়েছে।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রগতির সূচকগুলিকে জাতীয় সেবা হিসাবে বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী আদিবাসী শিশুদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিচর্যা ক্ষেত্রে আরও গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন। সময়সীমা মেনে পিছিয়ে পড়া জেলাগুলিকে অগ্রগতির জাতীয় গড় হারে উন্নীত করতে তিনি উন্নয়নে আগ্রহী জেলায় নিযুক্ত তরুণ আধিকারিকদের পরামর্শ দেন।
কৃষি ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্র
প্রধানমন্ত্রীকে জাতীয় কৃষি বিপণন প্ল্যাটফর্মের কাজকর্মে অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করা হয়। কৃষিপণ্য বিপণনের ক্ষেত্রে এ ধরনের প্যাটফর্ম চালু হওয়ার ফলে বিভিন্ন পণ্যের ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। এখন ই-পেমেন্টের মাধ্যমে কৃষকদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পৌঁছে যাচ্ছে। জম্মু ও কাশ্মীরে নির্মীয়মান দুটি ই-মান্ডির অগ্রগতিও বৈঠকে পর্যালোচনা করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী চাহিদা নিরূপণের ই-মডেলের ওপর ভিত্তি করে লজিস্টিক সহায়তার ক্ষেত্রে নতুন স্টার্ট আপ মডেল এবং এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে সহজেই কৃষি পণ্য সরবরাহের জন্য সড়ক পরিবহণ ও জাতীয় মহাসড়ক সহ কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রককে একযোগে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, কৃষি পণ্যের সুষ্ঠু সরবরাহে সমস্ত রাজ্যকে একযোগে কাজ করতে হবে এবং এই লক্ষ্যে অভিন্ন একটি প্যাটফর্ম ব্যবহার করা প্রয়োজন।
ফসলের গোড়া পোড়ানো প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী উত্তর প্রদেশ, পাঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষকদেরকে ফসলের গোড়া পোড়ানো বন্ধ করতে উপযুক্ত সরঞ্জাম বন্টনের জন্য কৃষি মন্ত্রককে নির্দেশ দিয়েছেন।
পরিকাঠামোগত যোগাযোগ ব্যবস্থার মানোন্নয়ন
প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী কাটরা – বানিহাল রেল লাইন সহ অন্যান্য পরিকাঠামোগত যোগাযোগ প্রকল্পগুলির অগ্রগতি পর্যালোচনা করেছেন। তিনি এই রেল লাইন প্রকল্পের কাজ আগামী বছরের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
বৈঠকে আইজল – তুইপাং মহাসড়কের সম্প্রসারণ ও মানোন্নয়ন সহ উত্তর-পূর্বের অন্যান্য প্রকল্পগুলির অগ্রগতি নিয়েও আলোচনা হয়। দিল্লি ও মিরাটের মধ্যে দ্রুত ও নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দিল্লি – মিরাট এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ সংশোধিত সময়সীমা ২০২০-র মে মাসের মধ্যেই সম্পূর্ণ করতে হবে।
সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলি দীর্ঘ দিন পড়ে থাকা বিভিন্ন প্রকল্পের রূপায়ণ ত্বরান্বিত করতে উদ্যোগী হবে বলেও প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের প্রকল্পের কাজকর্মে অগ্রগতি সম্পর্কিত নিয়মিত রিপোর্ট তাঁর দপ্তরে পাঠানোর ব্যাপারেও আধিকারিকদের নির্দেশ দেন।
শক্তি চাহিদা পূরণ
পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী ৮টি পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি সমৃদ্ধ রাজ্যের মধ্যে আন্তঃরাজ্য সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপর জোর দেন। পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি সমৃদ্ধ এই রাজ্যগুলি হ’ল তামিলনাডু, রাজস্থান, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক, হিমাচল প্রদেশ, গুজরাট, মহারাষ্ট্র ও মধ্যপ্রদেশ। জমি অধিগ্রহণ সহ নতুন প্রকল্প স্থাপনে সৌর ও বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থাগুলি যে সমস্ত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী সে সম্পর্কেও খোঁজখবর নেন।
ভেমাগিরি প্রকল্প সহ বিদ্যুৎ সরবরাহকারী অন্যান্য প্রকল্পের সময় মতো রূপায়ণের অগ্রগতিতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী কর্ণাটক ও অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারকে অভিনন্দন জানান।