জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জলবায়ুর প্রতি ন্যায় বিচারের ওপর প্রধানমন্ত্রী বিশেষ জোর দিয়েছেন
২০০৫ এর স্তরের থেকে আভ্যন্তরীণ মোট উৎপাদনের ওপর ৩৩ থেকে ৩৫ শতাংশ নির্গমন তীব্রতা হ্রাসের বিষয়ে ভারত দায়বদ্ধ বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক স্থিতিশীল উন্নয়ন সম্মেলন ২০২১ এর উদ্বোধন করেছেন। এই শীর্ষ সম্মেলনের মূল ভাবনা হলো "আমাদের সর্বজনীন ভবিষ্যতের পুন:নির্ধারণ:সকলের জন্য নিরাপদ ও নিশ্চিত পরিবেশ।


অনুষ্ঠানে ভাষণ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী এই ভাবধারা কে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য টিইআরআইকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন,আমাদের বর্তমান এবং ভবিষ্যতের জন্য এই ধরনের আন্তর্জাতিক মঞ্চ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন,আগামী দিনগুলিতে মানবতার অগ্রগতি নির্ভর করবে দুটি বিষয়ের ওপর। প্রথমটি হলো সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে আমাদের গ্রহটির স্বাস্থ্য, দুটিই একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,আজ আমরা এখানে মিলিত হয়েছি আমাদের গ্রহের স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনার লক্ষ্যে। আমরা এক বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন,সেক্ষেত্রে প্রথাগত পন্থায় এই সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। আমাদের যুব সমাজের উদ্ভাবনমূলক কাজের ক্ষেত্রে আরও বিনিয়োগ এবং স্থিতিশীল উন্নয়নের কাজের দিকে আরও নজর দিতে হবে।

 

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে, জলবায়ুর প্রতি ন্যায়বিচারের ওপর প্রধানমন্ত্রী বিশেষ জোর দেন। বিশ্বাসের ভিত্তির ওপর জলবায়ুর প্রতি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত বলে তিনি জানান । শ্রী মোদী বলেন, উন্নয়নের গতিপথ নির্ধারিত হয় দরিদ্র মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার মধ্যে দিয়ে। উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলিকে উন্নয়নের সুযোগ করে দেওয়ার অর্থ হলো জলবায়ুর প্রতি ন্যায়বিচার। যখন প্রতিটি মানুষ তাদের ব্যাক্তিগত এবং সমষ্টিগত ভাবে নিজেদের দায়িত্ব বুঝবে, তখনই জলবায়ুর প্রতি ন্যায়বিচার পূর্ণ রূপ পাবে।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহনই হলো ভারতের লক্ষ্য। মানুষের সক্রিয় ভূমিকার মাধ্যমেই আমরা প্যারিস থেকে নিয়ে আসা লক্ষ্য এবং দায়বদ্ধতার পথে এগিয়ে চলেছি। আমরা ২০০৫ এর স্তরের থেকে আভ্যন্তরীণ মোট উৎপাদনের ওপর ৩৩ থেকে ৩৫ শতাংশ নির্গমন তীব্রতা হ্রাসের বিষয়ে দায়বদ্ধ। ভূমিক্ষয়রোধে ভারতের দায়বদ্ধতার বিষয়টি শ্রী মোদী তুলে ধরেন। তিনি বলেন ভারতে পুন:নবীকরণযোগ্য শক্তির ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে ৪৫০ জিগা ওয়াট পুন:নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদনের পথে ভারত দৃঢ় পায়ে এগিয়ে চলেছে।


প্রধানমন্ত্রী বলেন,সঠিক উপলব্ধি ছাড়া স্থিতিশীল উন্নয়ন অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। এই লক্ষ্যেও ভারত ভালো অবস্থায় রয়েছে। ২০১৯ সালের মার্চ মাসে,ভারতে প্রায় একশো শতাংশ বিদ্যুতায়ন সম্ভব হয়েছে। স্থিতিশীল প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের দ্বারাই এই কাজ সম্ভব হয়েছে। তিনি উজালা কর্মসূচীর কথা উল্লেখ করে বলেন ৩৬ কোটি ৭০ লক্ষ এলইডি বাল্ব মানুষের প্রয়োজনে ব্যবহার হচ্ছে। এর ফলে প্রতি বছর ৩ কোটি ৮০ লক্ষ টনের বেশি কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন হ্রাস পেয়েছে। ১৮ মাসের মধ্যেই, জল জীবন মিশনের অধীনে ৩ কোটি ৪০ লক্ষ গৃহস্থ বাড়ীতে নলবাহিত জলের সংযোগ স্থাপন সম্ভব হয়েছে। 'প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনার'অধীনে দরিদ্রসীমার নিচে থাকা ৮ কোটি পরিবারকে পরিচ্ছন্ন রন্ধন জ্বালানি দেওয়া হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। ভারতের শক্তি ভাণ্ডারে প্রাকৃতিক গ্যাসের পরিমাণ ৬ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ চলছে বলে তিনি জানান।


প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে গ্রিন এনার্জির ওপর বিশেষ জোর দিয়ে বলেন,এই লক্ষ্যে এগিয়ে আমাদের গ্রহকে সবুজতর করে তুলতে হবে। আমাদের সংস্কৃতিতে অরন্যের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে, তার ফলও আমরা পেয়েছি। পাশাপাশি পশুদের রক্ষা করার প্রতি বিশেষ নজর দিয়ে আমাদের স্থিতিশীল উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে হবে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, গত পাঁচ থেকে সাত বছরের মধ্যে দেশে সিংহ,বাঘ, চিতার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে,বেড়েছে গাঙ্গেয় ডলফিনের সংখ্যা।


সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী দুটি বিষয়ের ওপর বিশেষ নজর দেওয়ার আহ্বান জানান, যাহলো একতা এবং উদ্ভাবন। তিনি বলেন স্থিতিশীল উন্নয়ন সম্ভব একমাত্র সমষ্টিগত চেষ্টার মাধ্যমে। যখন প্রত্যেকে জাতির ভালো ভাববে, বিশ্বের ভালো ভাববে, তখনই স্থিতিশীল উন্নয়ন সম্ভব হবে। আন্তর্জাতিক সৌর জোটের সঙ্গী হয়ে ভারত সেই লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে।


উদ্ভাবনী বিষয়ের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,বহু স্টার্ট আপ পুন:নবীকরণযোগ্য শক্তির, পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি সহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর কাজ করছে। নীতি নির্ধারক হিসাবে আমাদের এই সব উদ্যোগের পাশে দাঁড়াতে হবে।আমাদের দেশের যুবদের প্রাণ শক্তি নিশ্চিতভাবে ভালো ফল করবে।


প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বিশেষ ভাবে বিপর্যয় মোকাবিলার ক্ষমতা বৃদ্ধির কথা তুলে ধরেন।তিনি বলেন এক্ষেত্রে মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং প্রযুক্তির প্রয়োজন। বিপর্যয় মোকাবিলা পরিকাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে জোটবদ্ধ হয়ে কাজ চলছে। স্থিতিশীল উন্নয়নের লক্ষ্যে যা যা করণীয় সম্ভব ভারত তা করতে প্রস্তুত বলে তিনি জানান।


কোঅপারেটিভ রিপাবলিক অফ গুয়েনার রাষ্ট্রপতি ড: মহম্মদ ইরফান আলি, পাপুয়া নিউ গিনির প্রধানমন্ত্রী শ্রী জেমস মারাপে, রিপাবলিক অফ মালদ্বীপের পিপল মজলিশের অধ্যক্ষ শ্রী মহম্মদ নাসিধ, রাষ্ট্রসংঘের উপ মহাসচিব শ্রীমতী আমিনা জে মহম্মদ এবং কেন্দ্রীয় পরিবেশ ও অরণ্য, জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শ্রী প্রকাশ জাভরেকর এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

 

সম্পূর্ণ ভাষণ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII

Media Coverage

PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
সোশ্যাল মিডিয়া কর্নার 21 নভেম্বর 2024
November 21, 2024

PM Modi's International Accolades: A Reflection of India's Growing Influence on the World Stage