জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখার অদূরে গুরেজ উপত্যকায় ভারতীয় সেনা ওজওয়ানদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার দিওয়ালি উদযাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদী। তিনি তাঁদের সঙ্গে প্রায় দু’ঘন্টার মতো সময় অতিবাহিত করেন। এই নিয়ে পর পরচতুর্থবার তিনি দিওয়ালি উৎসব পালন করলেন সীমান্ত এলাকায় কর্মরত জওয়ানদের সঙ্গে। দিওয়ালির শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তাঁদের মিষ্টিমুখ করান প্রধানমন্ত্রী।
এই উপলক্ষে, জওয়ানদের উদ্দেশে শ্রী মোদী বলেন, অন্যান্য সকলের মতো তিনিও তাঁরপরিবারের সঙ্গে দিওয়ালি উদযাপন করতে আগ্রহী। এই কারণেই সশস্ত্র বাহিনীর জওয়ানদেরকাছে তিনি উপস্থিত হয়েছেন এই দিনটিতে। জওয়ানদের তিনি তাঁর আত্মীয়-পরিজন বলেই মনেকরেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর সেনা ও জওয়ানদের সঙ্গে সময় অতিবাহিতকরলে তিনি নতুন করে উৎসাহ ও উদ্দীপনা লাভ করেন। কঠিন ও প্রতিকূল পরিস্থিতিতেওসেনাবাহিনীর ধৈর্য্য এবং আত্মোৎসর্গের মানসিকতার ভুয়সী প্রশংসা করেন তিনি।প্রসঙ্গত তিনি একথারও উল্লেখ করেন যে, জওয়ানরা নিয়মিতভাবে যোগাভ্যাস করে থাকেন বলেতিনি শুনেছেন। এই বিশেষ অভ্যাসটি যে তাঁদের নিশ্চিতভাবেই ক্ষমতা ও দক্ষতাকে আরওবাড়িয়ে তুলবে এবং স্থির মস্তিষ্কে কাজ করে যেতে অনুপ্রাণিত করবে – তাঁর এইবিশ্বাসের কথাও প্রধানমন্ত্রী ব্যক্ত করেন জওয়ানদের কাছে। নির্দিষ্ট কার্যকালেরমেয়াদ শেষে জওয়ানরা যখন সশস্ত্র বাহিনী ছেড়ে চলে যাবেন, তখন তাঁরা যথার্থ যোগপ্রশিক্ষক হয়ে উঠতে পারবেন বলেই তাঁর ধারণা।
আগামী ২০২২ সালে দেশের ৭৫তম স্বাধীনতা উৎসব উদযাপনের জন্য দেশের প্রত্যেকনাগরিক যে এক নতুন সংকল্প গ্রহণে উদ্বুদ্ধ হবেন, এ বিষয়ে তাঁর দৃঢ় বিশ্বাসের কথাব্যক্ত করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। জওয়ানদের উদ্ভাবন প্রচেষ্টার ওপর বিশেষ জোর দিয়েতিনি বলেন যে, এই বিষয়টিতে আগ্রহী হয়ে উঠলে তাঁরা তাঁদের দৈনন্দিন কাজকর্মকে অনেকসহজ ও নিরাপদ করে তুলতে পারবেন। সেনা দিবস, নৌ-সেনা দিবস এবং বিমানবাহিনী দিবস-এশ্রেষ্ঠ উদ্ভাবন প্রচেষ্টাগুলিকে কিভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় ও পুরস্কৃত করা হয়,সেকথারও প্রসঙ্গত উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর কল্যাণে কেন্দ্রীয় সরকার সর্বতোভাবেসংকল্পবদ্ধ। এই প্রসঙ্গে বহু দশক ধরে ঝুলে থাকা ‘এক পদ, এক পেনশন’ নীতি রূপায়ণেরবিষয়টিও তিনি তাঁর বক্তব্যে তুলে ধরেন।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত ও অন্যান্য পদস্থ সেনাআধিকারিকরাও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য পেশকালে।
এই উপলক্ষে, সেখানে এক ভিজিটরস্ বুক-এ প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন,
“প্রিয়জনদেরকাছ থেকে অনেক দূরে থেকে এবং উৎসর্গের মানসিকতার সর্বোচ্চ ঐতিহ্যকে তুলে ধরে দেশেরসীমান্ত এলাকায় যে সমস্ত সেনা তাঁদের কর্তব্য পালন করে চলেছেন, তাঁরা সকলেই নিষ্ঠাও বীরত্বের প্রতীক।
আপনাদের সঙ্গে দিওয়ালি উৎসব উদযাপনের সুযোগ আমি পেয়েছি। উৎসবের এই মরশুমেসীমান্তে বীর জওয়ানদের উপস্থিতি আশাদীপকে প্রজ্জ্বলিত করে এবং কোটি কোটি ভারতবাসীরমধ্যে সঞ্চারিত করে নতুন উৎসাহ ও উদ্যম।
এক ‘নতুন ভারত’ গঠনের স্বপ্নকে সফল করে তোলার লক্ষ্যে আমাদের সকলের এক যোগেকাজ করে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ এখন উপস্থিত। দেশের সেনাবাহিনীও এই সংকল্পসাধনেরয়েছেন আমাদের সঙ্গেই।
দিওয়ালি উপলক্ষে আপনাদের সকলকে অভিনন্দন”।