কোভিড-১৯-এর কারণে যে সমস্ত শিশু পিতা-মতাকে হারিয়েছে তাদের সাহাযার্থে ও কল্যাণে কি ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে সে সম্পর্কে আলাপ-আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে পৌরোহিত্য করেন। বর্তমান কোভিড মহামারীর দরুণ প্রভাবিত শিশুদের কল্যাণে প্রধানমন্ত্রী একগুচ্ছ সুযোগ-সুবিধার কথা ঘোষণা করেন। এই সমস্ত সুযোগ-সুবিধার কথা ঘোষণা করে প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, শিশুরাই দেশের ভবিষ্যতের প্রতিনিধি এবং তাদের স্বার্থ সুরক্ষায় ও কল্যাণে আমরা করণীয় সবকিছুই করবো, যাতে তারা সুনাগরিক হয়ে ওঠার পাশাপাশি নিজের জন্য উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, কঠিন এই সময়ে একটি সমাজ হিসেবে আমাদের কর্তব্যই হল শিশুদের পরিচর্যা ও দেখভাল করা এবং তাদের মধ্যে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আস্থার সঞ্চার করা। কোভিড-১৯-এর কারণে যে সমস্ত শিশু তাদের পিতা-মাতা অথবা আইনি অভিভাবক/দত্তক পিতা-মাতাদের হারিয়েছে, তাদের পিএম কেয়ার্স ফর চিল্ড্রেন কর্মসূচির মাধ্যমে সবরকম সাহায্য করা হবে। তিনি আরও বলেন, এই ধরণের শিশুদের জন্য যে সমস্ত সুযোগ-সুবিধার কথা ঘোষণা করা হচ্ছে, তা সম্ভব হয়েছে পিএম কেয়ার্স তহবিলে উদার হস্তে দান করার জন্য, যা পক্ষান্তরে কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে ভারতের লড়াইকে মদত যোগাচ্ছে।
শিশুর নামে ফিক্সড ডিপোজিট :
শিশুটি ১৮ বছর বয়স পূর্ণ করলে তার জন্য একটি বিশেষ কর্মসূচির মাধ্যমে ১০ লক্ষ টাকার তলবিল সংস্থান করা হবে। পিএম কেয়ার্স কর্মসূচির মাধ্যমে এই তহবিল গঠনে সাহায্য করা হবে। এই তহবিলের সুযোগ-সুবিধা হল :
• শিশুটি ১৮ বছর বয়স পূর্ণ করলেই মাসিক ভিত্তিতে আর্থিক সুবিধা/ভাতা পাবে। পরবর্তী ৫ বছর তাকে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত প্রয়োজনীয়তা মেটাতে এই তহবিল সাহায্য করবে এবং
• শিশুটির বয়স ২৩ বছর হলেই, সে এককালীন ব্যক্তিগত বা পেশাদারি কাজের জন্য আর্থিক সুবিধা পাবে।
বিদ্যালয় শিক্ষা : ১০ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য
• এই বয়সী শিশুদের নিকটবর্তী কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে অথবা দিনের বেলায় পড়াশুনার সুবিধা পাওয়া যাবে এমন বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হবে।
• যদি সংশ্লিষ্ট শিশুটিকে বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়, সেক্ষেত্রে পঠন-পাঠন বাবদ মাশুল শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী মেটানো হবে। পিএম কেয়ার্স তহবিল থেকে এই মাশুল মেটানো হবে।
• পিএম কেয়ার্স কর্মসূচির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট শিশুর জন্য বিদ্যালয়ের পোশাক, পাঠ্যপুস্তক এবং নোটবুক বাবদ খরচ মেটানো হবে।
বিদ্যালয় শিক্ষা : ১১-১৮ বছর বয়সী শিশুদের জন্য :
• এই বয়সী শিশুদের সৈনিক স্কুল, নবোদয় বিদ্যালয়ের মত কেন্দ্রীয় সরকারি আবাসিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হবে।
• যদি কোন শিশু তার অভিভাবক/দাদু-দিদা/পরিবারের অন্যান্য সদস্যের তত্ত্বাবধানে থেকে পড়াশুনো চালিয়ে যেতে চায়, সেক্ষেত্রে তাকে নিকটবর্তী কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় বা দিনের বেলায় পড়াশুনো হয় এমন বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হবে।
• সংশ্লিষ্ট শিশুটিকে যদি বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয় তাহলে পঠন-পাঠন বাবদ শিক্ষা মাশুল শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী পিএম কেয়ার্স কর্মসূচি থেকে মেটানো হবে।
• পিএম কেয়ার্স কর্মসূচির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট শিশুর জন্য বিদ্যালয়ের পোশাক, পাঠ্যপুস্তক এবং নোটবুক বাবদ খরচ মেটানো হবে।
উচ্চ-শিক্ষা ক্ষেত্রে সাহায্য :
• সংশ্লিষ্ট শিশুকে বর্তমান শিক্ষা ঋণ বিধি অনুযায়ী ভারতে যে কোন পেশাদারি কোর্সে/উচ্চ-শিক্ষার জন্য শিক্ষা ঋণে সাহায্য দেওয়া হবে। ঋণের সুদ মেটানো হবে পিএম কেয়ার্স কর্মসূচির মাধ্যমে।
• কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারের কর্মসূচির আওতায় এধরণের শিশুদের নিম্নস্নাতক/ বৃত্তিমূলক কোর্সে পড়াশুনোর জন্য টিউশন ফি/কোর্স ফি-র মত স্কলারশিপ সমতুল বিকল্প পঠন-পাঠনে সাহায্য করা হবে। যে সমস্ত শিশু বর্তমান বৃত্তিমূলক কর্মসূচির আওতায় সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে যোগ্য নয়, তাদের পিএম কেয়ার্স কর্মসূচির মাধ্যমে সমতুল/বিকল্প বৃত্তির সুবিধা প্রধান করা হবে।
স্বাস্থ্য বিমা :
• সমস্ত শিশুকে আয়ুষ্মান ভারত কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসা হবে এবং তারা ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা পাবে।
• শিশুর বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত স্বাস্থ্য বিমা খাতে প্রিমিয়াম মেটানো হবে পিএম কেয়ার্স কর্মসূচির মাধ্যমে।