প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুনদিল্লিতে জাতীয় সমর শিক্ষার্থী বাহিনী (এনসিসি)র র্যালিতে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রীকে র্যালিতে অভিবাদন জানানো হয় এবং তিনি এনসিসি-র বিভিন্ন শাখা ও অন্যান্য বন্ধু এবং প্রতিবেশি রাষ্ট্রের ক্যাডেটদের কুচকাওয়াজ দেখেন।
বোড়ো ও ব্রু-রিয়াং চুক্তি
উত্তরপূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের উদ্যোগ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে এই অঞ্চল ছিল অবহেলিত। চরমপন্থীদের সঙ্গে লড়াই-এ নিরীহ মানুষ প্রাণ হারাতেন। এই সরকার উত্তরপূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের জন্য অভূতপূর্ব উদ্যোগ যেমন একদিকে নিয়েছে, অন্য দিকে খোলা মনে সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। বোড়ো চুক্তি তারই ফল। নতুন ভারতের চিন্তাধারা এমনই।
মিজোরাম ও ত্রিপুরার মধ্যে ব্রু-রিয়াং চুক্তি সাক্ষর হবার পর, ব্রু উপজাতির ২৩ বছরের সমস্যার সমাধান হয়েছে। নতুন ভারতের চিন্তাধারা এমনই।সকলকে সঙ্গে নিয়ে, সকলের বিকাশের লক্ষ্যে, সকলের বিশ্বাস অর্জন করে আমরা দেশের উন্নতি ঘটাবো।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের সত্যিটা জানা দেশের যুব সম্প্রদায়ের কাছে অত্যন্ত জরুরী। স্বাধীনতার সময়, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের হিন্দু-শিখ ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে স্বাধীন ভারত প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, যে প্রয়োজন পরলে তাঁরা ভারতে আসতে পারেন। ভারত তাঁদের পাশে রয়েছে। তিনি বলেন, ১৯৫০ সালের নেহরু-লিয়াকত চুক্তির এটিই ছিল মূল সারবত্তা, গান্ধীজীর ইচ্ছেও ছিল তাই। “এই দেশগুলিতে , যে সব মানুষ নিজেদের বিশ্বাসের কারণে অত্যাচারিত হয়েছিলেন, ভারতের দায়িত্ব ছিল তাঁদের আশ্রয় দেওয়া, তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া।কিন্তু এই ধরণের হাজার হাজার লোকের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছিল”। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই মানুষগুলির প্রতি ঐতিহাসিক অবিচার বন্ধ করতে, আজ আমাদের সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন এনেছে, ভারতের পুরোনো প্রতিশ্রুতি রক্ষায় এই সব মানুষকে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে”।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশভাগের সময় অনেক লোক ভারত ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন কিন্তু তাঁরা তাঁদের সম্পত্তির অধিকার বজায় রেখেছিলেন। এই কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির উপর ভারতের অধিকার থাকা সত্ত্বেও দশকের পর দশক শত্রু সম্পত্তি মুলতুবি রাখা ছিল। তিনি বলেন, যারা শত্রু সম্পত্তি আইনের বিষয়ে বিরোধীতা করেছিলেন, সেই একই লোকেরা আজ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় নেমে পড়েছেন।
ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত বিবাদ
ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকার বিবাদের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সমস্যার সমাধানে কোন ফলপ্রসূ উদ্যোগ নেওয়া হয় নি। সীমান্তে বিবাদ বজায় থাকলে, অনুপ্রবেশ বন্ধ করা যাবে না। বিবাদও মেটানো হয় নি, অনুপ্রবেশকারীদের জন্য দরজা খোলা রাখা হয়েছে, আর তা নিয়ে আপনারা রাজনীতিও করবেন।
উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে, তা অনুধাবন করে দুই দেশের সম্মতিক্রমে একটি সমাধান খোঁজার প্রক্রিয়ায় এই সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যার সমাধান করেছে বলে তিনি জানান। আজ শুধু সীমান্ত সমস্যারই সমাধান হয় নি, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক এক ঐতিহাসিক উচ্চতায় পৌঁছেছে এবং দুটি দেশ একজোট হয়ে দারিদ্র দূরীকরণে উদ্যোগী হয়েছে বলে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।
কারতারপুর করিডোর
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশভাগের ফলে আমাদের থেকে গুরদুয়ারা কারতারপুর সাহিব চলে গেছে, তা আজ পাকিস্তানের। কারতারপুর ছিল গুরু নানকের জায়গা। তিনি বলেন , এই পবিত্র জায়গার সঙ্গে কোটি কোটি ভারতবাসীর বিশ্বাস জড়িয়ে রয়েছে। শিখ পূন্যার্থীরাদশকের পর দশক কারতারপুরে সহজে পৌছানোর উপায়ের অপেক্ষায় ছিলেন যাতে গুরুভূমি তাঁরা দর্শন করতে পারেন। এই সরকার কারতারপুর করিডোর নির্মাণ করে তা বাস্তবায়িত করেছে।