মধ্যপ্রদেশেরতেকানপুরের বিএসএফ অ্যাকাডেমিতে পুলিশ বাহিনীর ডিজি এবং আইজিদের একসম্মেলনেরসমাপ্তি অনুষ্ঠানে আজ ভাষণ দেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী।
২০১৪ সালথেকে এই সম্মেলনের উদ্যোগ-আয়োজন শুধুমাত্র দিল্লির মধ্যেই সীমাবদ্ধ না রেখে দেশেরঅন্যত্রও পর্যায়ক্রমে প্রসারের ফলে যে সুযোগ ও সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে সে সম্পর্কেসকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন প্রধানমন্ত্রী। এই পরিবর্তন নিশ্চিত করার জন্য সরকারিআধিকারিকদের ভূয়সী প্রশংসাও করেন তিনি। দেশের বর্তমান চ্যালেঞ্জ ও দায়-দায়িত্বেরপরিপ্রেক্ষিতে এই সম্মেলন যে আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে, একথার উল্লেখ করে। শ্রীমোদী বলেন, সম্মেলনের কর্মসূচিতে পরিবর্তন নিয়ে আসার ফলে একদিকে যেমন আলোচনারক্ষেত্র আরও বিস্তৃত হয়েছে, অন্যদিকে আলোচনার মানও বৃদ্ধি পেয়েছেতাৎপর্যপূর্ণভাবে।
দেশকেসুরক্ষিত করে তুলতে দেশের বর্তমান নিরাপত্তা ব্যবস্থা যে বিশেষ উপযোগী, একথা শ্রীমোদী তুলে ধরেন সম্মেলনের সমাবেশে। তিনি বলেন, সম্মেলনে উপস্থিত আধিকারিকরা পরিচয়দিয়েছেন পরিস্থিতির মোকাবিলায় তাঁদের নেতৃত্বদানের ক্ষমতার, যদিও অনেক সময়েইতাঁদের প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কাজ করে যেতে হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীবলেন, গত কয়েক বছরের আলোচনার বিষয়বস্তুর সূত্র ধরে একথা বলা যায় যে পুলিশ বাহিনীরমূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের বিষয়টি এখন যথেষ্ট স্বচ্ছ ও সুপরিস্ফুট। বাহিনীরকাজকর্মের মধ্যে স্থান পেয়েছে এক ধরনের সমন্বয় প্রচেষ্টা। শুধু তাই নয়, এই ধরনেরসম্মেলন থেকে শীর্ষস্থানীয় পুলিশ আধিকারিকরা বিভিন্ন সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ সম্পর্কেএকটি সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গিও গড়ে তুলতে পারেন। গত দু’বছরে আলোচনার বিষয়সূচির পরিধিঅনেক প্রসারিত হয়েছে। সুতরাং, বরিষ্ঠ পুলিশ আধিকারিকদের কাছে নিঃসন্দেহেচিন্তাভাবনার এক নতুন জগৎ তা মেলে ধরেছে।
এইসম্মেলনকে কিভাবে আরও মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ করে তোলা যায়, সে সম্পর্কে আলোচনাপ্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাব দেন যে সংশ্লিষ্ট কর্মীগোষ্ঠীগুলির মধ্যে সারাবছর ধরেই কর্মসূচির বাস্তবায়ন ও তার অগ্রগতির বিষয়গুলির পর্যালোচনার ব্যবস্থা থাকাপ্রয়োজন। সার্বিক প্রচেষ্টায় দক্ষতা ও সাফল্য নিশ্চিত করতে তা অনেকটাই সাহায্যকরবে বলে মনে করেন তিনি।
অবৈধ আর্থিকলেনদেন সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী যে জনসচেতনতা ও সহমতের ঐকমত্যের সৃষ্টি হয়েছে সেকথারউল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে এই বিশেষ ক্ষেত্রটিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাপালনের দায়িত্ব রয়েছে ভারতের। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এইভাবে সুস্পষ্ট ধারণা গড়েতোলার পাশাপাশি বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যেও আরও বেশি করে সমন্বয় ও সহযোগিতার প্রসারঘটানো প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।তাঁর মতে, বিশেষত সুরক্ষা ও নিরাপত্তার মতোবিষয়গুলিতে রাষ্ট্রগুলির মধ্যে সমন্বয়ের বাতাবরণ গড়ে তোলার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।
শ্রী মোদীবলেন, নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা একা কিংবা মাত্র কয়েকজনের পক্ষে সম্ভব নয়। এই কারণেবিভিন্ন রাষ্ট্রের প্রয়োজন বিচ্ছিন্নতার মানসিকতাকে কাটিয়ে উঠে তথ্য বিনিময়েরমাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। শ্রী মোদী বলেন, আমাদেরঅস্তিত্ব শুধুমাত্র সমষ্টিগতভাবে উপস্থিতির মধ্যেই নিহিত নয়, আমরা যে সচল ও সজীবতাও আমাদের প্রমাণ করে দেখাতে হবে।
সাইবারনিরাপত্তার বিষয়গুলি সম্পর্কে যে অনতিবিলম্বেই ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন, এ কথারউল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, সাইবার নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ মাত্রায় অগ্রাধিকার দিতেহবে। এই প্রসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, আঞ্চলিক ভাষায়বার্তা বিনিময় আরও বেশি করে সুফল এনে দিতে পারে। উগ্রপন্থা দমনে প্রযুক্তিব্যবহারের ওপরও বিশেষ জোর দেন তিনি।
গোয়েন্দাআধিকারিকদের মধ্যে এদিন পুলিশ পদকও প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী। পদক জয়ীআধিকারিকদের তাঁদের কাজের সাফল্য ও কৃতিত্বের জন্য অভিনন্দিত করেন তিনি।