প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নয়াদিল্লিতে রাজস্ব জ্ঞান সঙ্গমের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন।সেখানে তিনি ভাষণ দেন কেন্দ্র ও রাজ্যের কর প্রশাসকদের উদ্দেশে।
সংশ্লিষ্টআধিকারিকদের কর্মসংস্কৃতির বিকাশের ওপর বিশেষ জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন যেএই কর্মসংস্কৃতিতে দ্রুত কাজ শেষ করার মানসিকতা গড়ে তোলার পাশাপাশি কতটা কাজসম্পূর্ণ হল সে সম্পর্কেও বিশেষ নজর রাখতে হবে।
পণ্য ওপরিষেবা কর অর্থাৎ, জিএসটি-র সুফলগুলির কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, দেশেরঅর্থনৈতিক সংহতি এবং সামগ্রিক ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা ছাড়াও ১৭ লক্ষেরওবেশি নতুন ব্যবসায়ীকে মাত্র দু’মাসের মধ্যেই নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে পরোক্ষ করেরআওতায়।
প্রধানমন্ত্রীবলেন, জিএসটি-র সর্বোচ্চ সুফল গ্রহণের সুযোগ ব্যবসায়ীদের কাছে পৌঁছে দেওয়ারলক্ষ্যে আমাদের এমনভাবে কাজ করে যাওয়া উচিৎ যাতে অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সহবাণিজ্যিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত সকলকেই জিএসটি ব্যবস্থায় নথিভুক্ত করা সম্ভব হয়।যে সমস্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর বাণিজ্যিক লেনদেনের পরিমাণ ২০ লক্ষ টাকারও কম, তাঁদেরওএই ব্যবস্থায় যুক্ত করতে এক নতুন ব্যবস্থা উদ্ভাবনের পরামর্শ দেন তিনি সংশ্লিষ্টআধিকারিকদের।
আগামী ২০২২সাল, অর্থাৎ, স্বাধীনতার ৭৫তম বার্ষিকীর পূর্বেই দেশের কর প্রশাসনকে আরও উন্নত করেতুলতে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা স্থির করার জন্য তিনি আর্জি জানান কর প্রশাসকদেরকাছে। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার এমন এক পরিবেশ গড়ে তোলার কাজে বর্তমানে যুক্তরয়েছে, যেখানে দুর্নীতিবাজদের আত্মবিশ্বাস পুরোপুরিভাবে খর্ব করে ফেলা সম্ভব হবে।সেইসঙ্গে, সৎ করদাতাদের মধ্যে জেগে উঠবে আস্থা ও আত্মবিশ্বাসের মানসিকতা।প্রসঙ্গত,বিমুদ্রাকরণের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে শ্রী মোদী বলেন, কালো টাকা এবং বেনামি সম্পত্তিরবিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রীবলেন, কর প্রশাসন সংক্রান্ত কাজকর্মে বৈদ্যুতিন প্রক্রিয়া ও পদ্ধতির দিকে আরও বেশিকরে জোর দিতে হবে।নিজেরা নেপথ্যে থেকে সমস্তরকম হিসেবনিকেশের কাজেপ্রযুক্তিকে আরওবেশি করে ব্যবহার করতে হবে। এর ফলে, কোন কায়েমি স্বার্থই আইনের পথ অনুসরণেরক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করতে পারবে না।
করসংক্রান্ত বহু বিষয় এখনও ঝুলে থাকায় স্পষ্টতই অসন্তোষ প্রকাশ করেন শ্রী নরেন্দ্রমোদী। তিনি বলেন, এর ফলে যে বিপুল পরিমাণ অর্থ এখনও আদায়ের অপেক্ষায় রয়ে গেছে তারসাহায্যে দেশের দরিদ্র জনসাধারণের জন্য কল্যাণমূলক কাজকর্ম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব। এইসমস্ত বকেয়া কাজ যত দ্রুত সম্ভব সেরে ফেলার জন্য রাজস্ব জ্ঞান সঙ্গমে নির্দিষ্টকর্মপরিকল্পনা স্থির করার জন্য তিনি আর্জি জানান সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের কাছে।
অঘোষিত আয় ওসম্পদ চিহ্নিত করার কাজে তথ্য ও পরিসংখ্যান বিশ্লেষণের ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী।তিনি বলেন, আধিকারিকরা যদিও প্রতি বছরই আরও বেশি করে কর রাজস্ব আদায়ের চেষ্টাচালিয়ে যাচ্ছেন, তা সত্ত্বেও যে পরিমাণ রাজস্ব সরকারি কোষাগারে এসে পৌঁছনো উচিৎছিল, তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। এই কারণে একটি সুনির্দিষ্ট সময়-ভিত্তিক সমাধানের পথখুঁজে বের করার জন্য তিনি আহ্বান জানান সকল কর প্রশাসকদের কাছে। প্রধানমন্ত্রীরমতে, অসৎ ব্যক্তির দুর্নীতির জন্য যাতে সৎ ব্যক্তিকে মূল্য দিতে না হয়, তাআধিকারিকদেরই নিশ্চিত করতেহবে। এই কারণে কর সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলিতে মানবসম্পদপরিচালন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর পরামর্শ দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর ফলেপরিসংখ্যান ও তদন্ত – উভয় ক্ষেত্রেই বিশেষ শক্তি বৃদ্ধি ঘটবে।
করপ্রশাসনকে আরও চাঙ্গা করে তুলতে দু’দিনের এই জ্ঞান সঙ্গম যে সুনির্দিষ্ট উপায়খুঁজে বের করার কাজে সফল হবে সে বিষয়ে তাঁর আশার কথা ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।