এই শক্তি দেশের ঐক্য ও সংহতি বজায় রেখে আমাদের সবরকম চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে শেখায়: প্রধানমন্ত্রী মোদী
আমাদের সংবিধানে নাগরিকদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের দিশাই প্রতিফলিত হয়: প্রধানমন্ত্রী মোদী
একজন গর্বিত ভারতবাসী হিসেবে কিভাবে আমাদের দেশ আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠবে তা নিয়ে আমাদের ভাবনা-চিন্তা করা উচিৎ: প্রধানমন্ত্রী মোদী

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ আমাদের সংবিধানের অন্তর্ভুক্তিমূলক শক্তির ওপর জোর দিয়ে বলেছেন, এই শক্তি দেশের ঐক্য ও সংহতি বজায় রেখে আমাদের সবরকম চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে শেখায়। সংবিধানের ৭০তম বর্ষ উদযাপন উপলক্ষে সংসদের সেন্ট্রাল হল-এ যৌথ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী আজ ভাষণ দিচ্ছিলেন।

সংবিধানের দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে শ্রী মোদী বলেন, “খুব কম সময় এবং খুব কম দিনই আছে যার সঙ্গে আমাদের অতীতের দৃঢ় সম্পর্ক রয়েছে। তাঁরা আমাদের আরও ভালো ভবিষ্যৎ তৈরি করার অনুপ্রেরণা যোগান। আজ ২৬শে নভেম্বর এক ঐতিহাসিক দিন। ৭০ বছর আগে আমরা এই মহান সংবিধানকে গ্রহণ করেছিলাম।”

প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেন, গণপরিষদের বহু বিতর্ক, আলাপ-আলোচনা ও বিশ্লেষণের ফসল হল এই সংবিধান। দেশের এই সংবিধান প্রণয়নে যাঁরা নিরলস পরিশ্রম করেছিলেন তাঁদের প্রতি তিনি সশ্রদ্ধ চিত্তে প্রণাম জানান।

“সাত দশক আগে এই সেন্ট্রাল হল-এ সংবিধানের প্রত্যকটি ধারা নিয়ে আলোচনা হয় এবং আমাদের স্বপ্ন, প্রতিবন্ধকতা, সমৃদ্ধি নিয়ে বহু বিতর্ক হয়। ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ, ডঃ ভীমরাও আম্বেদকর, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল, পণ্ডিত নেহরু, আচার্য কৃপালিনী, মৌলানা আবুল কালাম আজাদ এবং অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ এই বিষয়ে আলোচনা-বিতর্কের পর এই ঐতিহ্য রেখে যান। তারপরই আমাদের কাছে এই মহান ঐতিহ্য তুলে ধরেন। এই সংবিধান প্রণয়নে যাঁরা দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করেছিলেন তাঁদের সকলের প্রতি আমি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।”

তিনি বলেন, “গণপরিষদের সদস্যদের স্বপ্ন লিখিত আকারে আমাদের সংবিধানের মূল্যবোধের হিসেবে প্রতিফলিত হয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাবাসাহেব ভীমরাও আম্বেদকরজি ১৯৪৯ সালের ২৫শে নভেম্বর সংবিধানের ওপর তাঁর শেষ বক্তৃতায় বলেছিলেন, “অতীতে আমাদের নিজেদের ভুলের জন্যই স্বাধীনতা এবং দেশের গণতন্ত্র আমরা হারিয়েছি।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আম্বেদকরজি সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে প্রশ্ন করেছিলেন যে এখন আমাদের দেশের স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্র রক্ষা করা যায় কিনা।”

তিনি বলেন, “যদি বাবাসাহেব আম্বেদকর আজ বেঁচে থাকতেন, তিনি হয়তো সম্ভবত খুব খুশি হতেন। ভারত শুধুমাত্র তার মূল্যবোধকেই তুলে ধরেনি, একইসঙ্গে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকেও আরও শক্তিশালী করেছে।”

“এই কারণেই আমি সংবিধানের তিন স্তম্ভ – আইনসভা, প্রশাসন এবং বিচার বিভাগের কাছে মাথা নত করি যারা সংবিধানে বর্ণিত আদর্শ এবং মূল্যবোধগুলিকে রক্ষা করে চলেছে।”

সমগ্র দেশবাসীকে সংবিধানের মূল্যবোধ রক্ষা করার জন্য আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

“আমি ১৩০ কোটি দেশবাসীকে বিনম্রভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি, ভারতের গণতন্ত্রের প্রতি বিশ্বাস অটুট রাখার জন্য। সংবিধানের মতো এই পবিত্র গ্রন্থ ও জ্ঞানের দিশারীকে সব সময় সংরক্ষণ করে রাখা প্রয়োজন।

৭০ বছর ধরে সংবিধান আমাদের প্রসন্নতা, আধিপত্য ও সিদ্ধান্তে পৌঁছনোর জ্ঞান এনে দিয়েছে।

এই প্রসন্নতা আমাদের মধ্যে একতা নিশ্চিত করেছে এবং সংবিধানের মূল্যবোধ ও সত্ত্বাকে সমৃদ্ধ করেছে। সংবিধানের প্রতি যে কোন ধরনের আক্রমণ আমাদের দেশের মানুষ প্রত্যাখান করেছে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সংবিধানের আদর্শগুলি আমাদের মধ্যে যে আধিপত্যের অনুভূতি এনে দিয়েছে তার মাধ্যমেই আমরা এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারতের পথে এগিয়ে যেতে পারি।

এই সত্ত্বা আমাদের সংবিধানের নিয়ে আসতে হবে যাতে এই বিশাল বৈচিত্র্যময় দেশে আমরা আমাদের প্রত্যাশা, স্বপ্ন এবং উন্নতি অর্জন করতে পারি।”

প্রধানমন্ত্রী সংবিধানকে আমাদের এক পবিত্র গ্রন্থ বলে বর্ণনা করেন।

তিনি বলেন, “আমাদের সংবিধান হল এমন এক পবিত্র গ্রন্থ যা আমাদের জীবন, আমাদের সমাজ, আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের মূল্যবোধ এবং বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার ক্ষমতার এক মিলিত রূপ।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্মান এবং একতার দ্বৈত দর্শনের ওপর সংবিধান নির্মিত। “‘ভারতবাসীর জন্য সম্মান’ এবং ‘ভারতের একতা’ – এটিই সংবিধানের মন্ত্র। এই দুই মন্ত্রই আমাদের নাগরিকদের একতা ধরে রাখতে সাহায্য করেছে।”

প্রধানমন্ত্রী সংবিধানের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, সংবিধানকে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্বই নয়, কর্তব্যও।

তিনি বলেন, “আমাদের সংবিধানে নাগরিকদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের দিশাই প্রতিফলিত হয়। এটাই আমাদের সংবিধানের বিশেষত্ব। দায়িত্ব ও কর্তব্যের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা সম্পর্কে খুব ভালোভাবে বলেছিলেন আমাদের জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীজি।”

সংবিধানে যে কর্তব্যগুলির কথা বলা আছে নাগরিকদের তা পালনের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

শ্রী মোদী বলেন, “সংবিধানে যেভাবে আমাদের দায়িত্বের কথা বলা হয়েছে তা কিভাবে পূর্ণ করা যায় তা নিয়ে আজ চিন্তাভাবনা করা প্রয়োজন।

আমাদের সেবা এবং কর্তব্যের মধ্যে পার্থক্য করা উচিৎ। সেবা হল স্বেচ্ছায় কোন কিছু করা, যেমন, কোন অভাবগ্রস্থ ব্যক্তিকে সাহায্য করা হল সেবা, কিন্তু, ট্র্যাফিক আইন মেনে গাড়ি চালানো হল কর্তব্য।

মানুষের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় কর্তব্যের ওপর জোর দেওয়া প্রয়োজন।

একজন গর্বিত ভারতবাসী হিসেবে কিভাবে আমাদের দেশ আরও বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠবে তা নিয়ে আমাদের ভাবনা-চিন্তা করা উচিৎ।”

তিনি বলেন, “আমাদের সংবিধান এই কথাগুলি দিয়েই শুরু হয় – “আমরা ভারতের নাগরিকবৃন্দ”। আমাদের অনুভব করা প্রয়োজন যে আমরা ভারতের নাগরিকবৃন্দই হচ্ছে তার শক্তি, তার অনুপ্রেরণা এবং তার উদ্দেশ্য।”

প্রধানমন্ত্রী, ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলায় নিহত শহীদদের কথাও এদিন স্মরণ করেন এবং কৃতজ্ঞ চিত্তে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

তিনি বলেন, “এই দিনটি একদিক থেকে যন্ত্রণাদায়কও। এই ২৬শে নভেম্বর মুম্বাইয়ে সন্ত্রাসবাদীরা হামলা চালিয়েছিল। তারা শতাব্দী প্রাচীন ভারতীয় দর্শন ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’ ধ্বংস করতে চেয়েছিল। আমি প্রয়াত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।”

Click here to read full text speech

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
'You Are A Champion Among Leaders': Guyana's President Praises PM Modi

Media Coverage

'You Are A Champion Among Leaders': Guyana's President Praises PM Modi
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM Modi congratulates hockey team for winning Women's Asian Champions Trophy
November 21, 2024

The Prime Minister Shri Narendra Modi today congratulated the Indian Hockey team on winning the Women's Asian Champions Trophy.

Shri Modi said that their win will motivate upcoming athletes.

The Prime Minister posted on X:

"A phenomenal accomplishment!

Congratulations to our hockey team on winning the Women's Asian Champions Trophy. They played exceptionally well through the tournament. Their success will motivate many upcoming athletes."