#MannKiBaat: PM Modi congratulates all women crew of INSV Tarini for successfully completing the ‘Navika Sagar Parikrama’ expedition
Development is born in the lap of adventure, says PM Modi during #MannKiBaat
#MannKiBaat: PM Modi appreciates those who scaled Mt. Everest
People from all walks of life, be it film actors, sportspersons, our soldiers, teachers, or even the people, everyone is of the same opinion that ‘Hum Fit To India Fit’: PM #MannKiBaat
We are able to freely express our unique qualities while playing: PM Modi #MannKiBaat
Traditional games promote our logical thinking; enhance concentration, awareness and energy: PM Modi during #MannKiBaat
On June 5, India will officially host the World Environment Day Celebrations: PM Modi #MannKiBaat
Let us make sure that we do not use polythene, lower grade plastic as plastic pollution adversely impacts nature, wildlife and even our health: PM #MannKiBaat
Being sensitive towards nature and protecting it should be our motive; we have to live with harmony with nature: PM during #MannKiBaat
#MannKiBaat: PM Modi highlights vitality of Yoga, recalls its ancient connect
As International Day of Yoga nears, let us promote Yoga for unity and harmonious society: PM during #MannKiBaat
It was this month of May in 1857 when Indians had shown their strength to the British: PM Modi during #MannKiBaat
It was Veer Savarkar, who wrote boldly that whatever happened in 1857 was not a revolt but the first fight for independence: PM Modi #MannKiBaat
Veer Savarkar worshiped both ‘Shastra’ and ‘Shaastra.’ He is known for his bravery and his struggle against the British Raj: PM during #MannKiBaat

নমস্কার!

‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আবার একবার আপনাদের সবার সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছি। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, নৌসেনার ছয়জন মহিলা কম্যাণ্ডারের একটি দল গত কয়েক মাস ধরে সমুদ্রসফর করছিল। যার নাম ‘নাবিকা সাগর পরিক্রমা’। এই বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাই। ভারতের এই ছয় কন্যার দল ২৫০ দিনেরও বেশি ‘আই-এন-এস-ভি তারিনী’র মাধ্যমে পুরো বিশ্ব ঘুরে গত ২১-শে মে ভারতে ফিরে এসেছে এবং সারা দেশ তাঁদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছে। বিভিন্ন মহাসাগর এবং কয়েকটি সমুদ্রযাত্রা করে প্রায় ২২,০০০ নটিক্যাল দূরত্ব অতিক্রম করেছে। এটি সারা বিশ্বেই একটি নজীর বিহীন ঘটনা। গত বুধবার, এই কন্যাদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার, তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা শোনার সুযোগ পেয়েছিলাম। আমি আরেকবার এই কন্যাদের দুঃসাহসিক কাজের জন্য, নৌসেনার খ্যাতি বাড়ানোর জন্য, ভারতের সম্মান বৃদ্ধির জন্য এবং বিশেষ করে ভারতের কন্যারা কোনও অংশেই কম নয় — বিশ্বের দরবারে এই বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য অনেক অনেক অভিনন্দন জানাচ্ছি। ‘সেন্স অফ অ্যাডভেঞ্চার’-এর কথা কে না জানে। যদি আমরা মানবজাতির প্রগতির দিকে দেখি, তবে দেখব, কোনও না কোনও দুঃসাহসিক কাজের মধ্যেই প্রগতির উদ্ভাবন ঘটেছে। আসলে প্রগতি দুঃসাহসিক কাজের মধ্যেই জন্ম নেয়। প্রথার বাইরে গিয়ে কিছু অসাধারণ কাজ করে দেখানোর অদম্য ইচ্ছে — এই ভাবনার মানুষ হয়ত কম, কিন্তু যুগ যুগ ধরে কোটি কোটি মানুষকে তা অনুপ্রাণিত করে এসেছে। আপনি নিশ্চয়ই দেখেছেন, গত কয়েকদিনে মাউণ্ট এভারেস্ট-জয়ী মানুষদের সম্পর্কে নতুন নতুন তথ্য পাওয়া গেছে। শতাব্দী ধরে মাউণ্ট এভারেস্ট মানবজাতিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে এবং সাহসী মানুষ সেই চ্যালেঞ্জ স্বীকারও করেছে।

১৬-ই মে মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুরের একটি আশ্রম-বিদ্যালয়ের পাঁচজন আদিবাসী ছাত্র-ছাত্রী — মনীষা ধুরবে, প্রমেশ আলে, উমাকান্ত মঢবি, কবিদাস কাতমোড়ে এবং বিকাশ সোয়াম — এরা পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয় করেছে। ২০১৭ সালের অগাস্ট মাস থেকে ওয়ার্ধা, হায়দ্রাবাদ, দার্জিলিং এবং লে-লাদাখে এদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়। ‘মিশন শৌর্য’-য় এদের নির্বাচন করা হয়েছিল। এবং নামের সার্থকতা রেখে এভারেস্ট জয় করে এরা দেশের নাম উজ্জ্বল করেছে। আমি চন্দ্রপুর স্কুলের এই ছোট ছোট ছাত্র-ছাত্রীদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। সম্প্রতি ষোলো বছরের শিবাঙ্গী পাঠক সবচেয়ে কনিষ্ঠ ভারতীয় মহিলা হিসেবে নেপালের দিক থেকে এভারেস্ট জয় করেছে। কন্যা শিবাঙ্গীকে অনেক অনেক অভিনন্দন!

অজিত বাজাজ এবং তাঁর কন্যা দিয়া এভারেস্ট জয়ী প্রথম পিতা-পুত্রীর জুটি। শুধু যুবপ্রজন্মই এভারেস্ট জয় করছেন তা নয়, গত ১৯-শে মে পঞ্চাশোর্ধ্ব শ্রীমতী সঙ্গীতা বেহল-ও এভারেস্ট জয় করেছেন।

এভারেস্ট আরোহীদের মধ্যে কয়েকজন এমনও আছেন যাঁরা শুধু দক্ষই নন, অনুভূতিপ্রবণও। কিছুদিন আগে ‘স্বচ্ছ গঙ্গা অভিযান’-এর অন্তর্ভুক্ত কার্যক্রমে BSF-এর একটি দল এভারেস্ট-এ আরোহন করে। সেই দলটি এভারেস্ট থেকে যথাসম্ভব নোংরা আবর্জনা নীচে নামিয়ে আনে। এই কাজ প্রশংসনীয় তো বটেই, পাশাপাশি পরিচ্ছন্নতার প্রতি, পরিবেশের প্রতি এঁদের দায়িত্ববোধেরও পরিচায়ক। বহু বছর ধরেই লোকে এভারেস্টে আরোহণ করছেন। বহু লোক এই পর্বতশৃঙ্গের চূড়ায় পৌঁছতে সফলও হয়েছেন। আমি সেই সমস্ত সাহসী বীরদের, বিশেষত কন্যাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।

আমার প্রিয় দেশবাসী, বিশেষত আমার নওজওয়ান বন্ধুরা! দুই মাস আগে আমি যখন ‘Fit India’-র কথা বলেছিলাম, তখন আমি ভাবিনি যে এই বিষয়ে এত ভাল সাড়া পাওয়া যাবে। বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে এত সংখ্যক মানুষ এই বিষয়কে সমর্থন করার জন্য এগিয়ে আসবেন। ‘Fit India’-র প্রসঙ্গে আমি বলব আমার বিশ্বাস, আমরা যত খেলবো, ততই দেশ খেলবে। Social Media-তে লোকে তাঁদের Fitness Challenge–এর ভিডিও শেয়ার করছেন, সেখানে অন্যদের ট্যাগ করে তাদেরও চ্যালেঞ্জ করছেন। Fit India-র এই অভিযানে আজ সকলে অংশগ্রহণ করছেন। সিনেমা জগতের লোক হোক, ক্রীড়াজগতের মানুষজন হোক বা দেশের আমজনতা, সেনা জওয়ান হন বা স্কুল শিক্ষক, চতুর্দিক থেকে একটাই সম্মিলিত ধ্বনি শোনা যাচ্ছে— “আমরা fit তো India fit”। আমার কাছে আনন্দের বিষয় যে ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক বিরাট কোহলি আমায় চ্যালেঞ্জ করেছেন এবং আমিও সেই চ্যালেঞ্জ স্বীকার করেছি। আমার বিশ্বাস, এটি খুবই ভালো প্রক্রিয়া এবং এই ধরনের চ্যালেঞ্জ আমাদের নিজেদের fit থাকতে ও অন্যদের fit রাখতে উৎসাহিত করে।

আমার প্রিয় দেশবাসী, ‘মন কি বাত’-এ একাধিক বার আপনারা আমার কাছ থেকে খেলার বিষয়ে, ক্রীড়াবিদ্‌দের বিষয়ে কিছু না কিছু শুনেছেন। গতবার কমনওয়েলথ-এর নায়ক তার মতামত, তাঁর মনের কথা এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের জানান—

“নমস্কার স্যার! আমি ছবি যাদব, নয়ডা থেকে বলছি। আমি আপনার ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানের নিয়মিত শ্রোতা এবং আজ আপনার সঙ্গে আমার ‘মন কি বাত’ বলতে চাই। এখন গ্রীষ্মকালীন ছুটি আরম্ভ হয়ে গেছে। আমি একজন মা এবং আমি লক্ষ্য করেছি যে এখনকার বাচ্চারা অধিকাংশ সময়েই ইন্টারনেটে গেম খেলতে ব্যস্ত। আমরা যখন ছোটো ছিলাম, তখন ট্র্যাডিশনাল গেমস যা অধিকাংশই আউটডোর গেমস — সেইগুলি খেলতাম। যেমন একটি খেলা ছিল যেখানে সাতটি পাথরের টুকরো একের উপর এক রেখে সেটাকে বল দিয়ে মারতে হত। আর যেমন উঁচু-নীচু খেলা, খো-খো — এইসব খেলাগুলি আজকাল যেন হারিয়ে গেছে। আমার বিনীত অনুরোধ আপনি আজকালকার প্রজন্মকে কিছু ট্র্যাডিশনাল গেমস-এর ব্যাপারে জানান, যাতে তাদের সেইদিকে ঝোঁকটা বাড়ে, ধন্যবাদ!”

ছবি যাদবজী, আপনার ফোনের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ! এটা একদম সঠিক কথা যে, যেসমস্ত খেলা একসময় অলিগলিতে দেখা যেত, সব বাচ্চার জীবনের অঙ্গ ছিল। সেগুলি আজ কমে যাচ্ছে। এই খেলাগুলি গরমের ছুটির বিশেষ অঙ্গ ছিল। কখনও ভরদুপুরে, তো কখনও রাতে খাওয়ার পর একদম নিশ্চিন্তে বাচ্চারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা খেলত। কিছু খেলা তো এমনও ছিল যা গোটা পরিবার একসঙ্গে খেলত — যেমন পিট্‌ঠু, গুলি খেলা, খো-খো, লাট্টু বা ডাঙ্গুলি — এমন অগণিত খেলা কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, কচ্ছ থেকে কামরূপ পর্যন্ত সবার শৈশবের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ ছিল। হ্যাঁ এটা অবশ্যই, আলাদা আলাদা জায়গায় খেলাগুলির আলাদা আলাদা নাম। পিট্‌ঠু খেলাটিই বিভিন্ন নামে লোকে জানে যেমন লাগোরী, সাতোলিয়া, সাত পাত্থর, ডিকোরী, সতোদিয়া এবং আরও না জানি কত অন্য নাম এই একই খেলার। পরম্পরাগত খেলাগুলির মধ্যে দুটি ধরন আছে। আউটডোরও আছে আবার ইন্ডোরও আছে। আমাদের দেশের বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য কোথাও হয়ত এই খেলাগুলির মধ্যেও দেখা যায়। একই খেলা নানা জায়গায় বিভিন্ন নামে পরিচিত। আমি গুজরাটের, আমি জানি গুজরাটের একটা খেলা আছে যাকে ‘চোমল্‌ ইস্তো’ বলা হয়। এটি কড়ি বা তেঁতুল বিচি অথবা গুটি দিয়ে ৮ বাই ৮-এর স্কোয়্যার বোর্ড-এ খেলা হয়। এবং ঐটি প্রায় সব রাজ্যেই দেখতে পাওয়া যায়। কর্ণাটকে একে চোকাবারা বলে। মধ্যপ্রদেশে এর নাম অত্তু। কেরলে পাকিড়াকালী আবার মহারাষ্ট্রতে চম্পল, তামিলনাড়ুতে দায়াম ও থায়াম আর রাজস্থানে চঙ্গাপো — এরকম  না জানি আরও কত নাম। বিভিন্ন রাজ্যের বাসিন্দারা একে অপরের ভাষা না জানলেও খেলার সময় তারা ঠিক দেখে — আরে! ঐটি তাদের অজানা নয়! আমাদের মধ্যে এমন কেউ আছেন যিনি ছোটবেলায় ডাঙ্গুলি খেলেননি! ঐটি তো গ্রাম-শহর নির্বিশেষে সব জায়গায় দেখা যায় এমন খেলা। ঐটিও কিন্তু দেশের নানা প্রান্তে বিভিন্ন নামে পরিচিত। অন্ধ্রপ্রদেশে এটি গোটিবিল্লা অথবা কর‍্যাবিল্লা নামে পরিচিত। ওড়িশাতে একে গুলিবাড়ি বলে, মহারাষ্ট্রে একে বলে বিত্তিডালু। কিছু খেলার অবশ্য মরশুম থাকে। যেমন ঘুড়ি ওড়ানোর জন্য একটি বিশেষ মরশুম থাকে। যখন সবাই মিলে ঘুড়ি ওড়াই, যখন আমরা খেলাধূলা করি, নিজেদের বৈশিষ্ট্যগুলি স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রকাশ করতে পারি। আপনারা দেখে থাকবেন অনেক বাচ্চা খুব লাজুক গোছের হয় কিন্তু খেলাধূলা করার সময় খুব চঞ্চল হয়ে ওঠে, নিজেকে প্রকাশ করে। বড়রা যারা স্বভাবত গম্ভীর থাকেন, খেলাধূলার সময় তাঁদের ভেতরে থাকা বাচ্চাটি বেড়িয়ে আসে। পারম্পরিক খেলাগুলি তৈরিই এমনভাবে যা শারীরিক ক্ষমতার পাশাপাশি আমাদের লজিক্যাল থিংকিং, একাগ্রতা, সজাগ থাকতে, স্ফূর্তি বাড়াতেও সাহায্য করে। আর এগুলি শুধু খেলা নয়, এগুলি আমাদের জীবনের মূল্যবোধ শেখায়, শেখায় লক্ষ্য স্থির করতে, দৃঢ়তা অর্জন করতে, টিম স্পিরিট তৈরি করতে, পরস্পরকে সাহায্য করতে। কিছুদিন আগে আমি দেখছিলাম, বিজনেস ম্যানেজমেন্টের ট্রেনিং প্রোগ্রামগুলিতে সামগ্রিক ব্যক্তিত্বের উন্নয়ন ও interpersonal skill উন্নত করার জন্য আমাদের পরম্পরাগত খেলাগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং সেগুলি ফলপ্রসূ হচ্ছে। তাছাড়া আমাদের এই খেলাগুলির তো কোনও বয়সসীমা নেই। ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে দাদু-দিদা, সবাই মিলে একসঙ্গে খেলতে পারে আর তখন এই জেনারেশন গ্যাপ ছু-মন্তর হয়ে যায়। একই সঙ্গে আমরা আমাদের সংস্কৃতি ও পরম্পরা সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল হই।

কিছু খেলা আমাদের সমাজ, পরিবেশ ইত্যাদি বিষয়ে সচেতন করে। কখনও কখনও মনে হয় যে আমাদের এই খেলাগুলি যেন হারিয়ে না যায়, খেলাগুলি যদি হারিয়ে যায় তাহলে হয়ত শৈশবও হারিয়ে যাবে।

‘ইয়ে দৌলত ভি লে লো

ইয়ে শহরত্‌ ভি লে লো

ভালে ছিন্‌ লো মুঝসে মেরি জওয়ানী

মগর মুঝকো লৌটা দো বচপন কা শাওন

ও কাগজ কি কশ্‌টি, ও বারিষ কা পানি…।

অর্থাৎ, আমার ধনদৌলত নিয়ে নাও, যশ-খ্যাতি নিয়ে নাও, আমার যৌবন নিয়ে নাও কিন্তু আমার শৈশব ফিরিয়ে দাও — এই গান আমরা শুনে থাকি, আর এই জন্যই এই ঐতিহ্যপূর্ণ খেলা, একে হারিয়ে ফেলা যাবে না। এখন স্কুল, পাড়া, যুবসম্প্রদায়য়ের উচিত এগিয়ে এসে এই খেলাগুলিকে উৎসাহিত করা। ‘Crowd Sourcing’-এর দ্বারা আমরা আমাদের ঐতিহ্যশালী খেলাগুলির এক সংগ্রহশালা গড়ে তুলতে পারি। এই খেলার ভিডিও বানানো যেতে পারে, যাতে খেলার নিয়ম, কীভাবে খেলবে এই বিষয়ে দেখান যেতে পারে। অ্যানিমেশন ফিল্ম-ও বানানো যেতে পারে যাতে আমাদের নতুন প্রজন্ম এই খেলাগুলি সম্পর্কে জানতে পারে, খেলতে পারে আর বড় হয়ে উঠতে পারে।

আমার প্রিয় দেশবাসী! আগামী ৫-ই জুন আমাদের দেশ ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানটির আয়োজন করছে। এটা ভারতের পক্ষে অত্যন্ত গর্বের বিষয়। পৃথিবীর জলবায়ু পরিবর্তনকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে সারা বিশ্ব ভারতের নেতৃত্বকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এবারের থিম —  ‘Beat Plastic Pollution’। আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ, এই ভাবনার গুরুত্ব বুঝে আমরা সবাই এটা সুনিশ্চিত করি যে আমরা পলিথিন, লো গ্রেড প্লাস্টিকের ব্যবহার করব না আর ‘প্লাস্টিক পলিউশান’-এর যে ক্ষতিকর প্রভাব আমাদের প্রকৃতি, বন্য জীবন ও আমাদের স্বাস্থ্যের উপর পড়ছে, তাকে কম করার চেষ্টা করব। World Environment Day-এর ওয়েবসাইট wedindia2018 থেকে সব তথ্য দেখে নিয়ে নিজের রোজকার জীবনে তার প্রয়োগের চেষ্টা করার জন্য আমি অনুরোধ করছি। যখন প্রচণ্ড গরম পরে বা বন্যা হয়, বৃষ্টি থামতেই চায় না, প্রচণ্ড ঠাণ্ডা পড়লে সবাই বিশেষজ্ঞর মতো ‘Global Warming’, ‘Climate Change’ -এসবের কথা বলতে থাকে। কিন্তু শুধু কথা বললেই হবে? প্রকৃতির প্রতি সংবেদনশীলতা, প্রকৃতিকে রক্ষা করা — এ আমাদের অভ্যাস এবং সংস্কার হওয়া উচিত। বিগত কয়েক সপ্তাহে আমরা সবাই দেখেছি, দেশের বিভিন্ন জায়গায় ধুলোর ঝড় চলেছে। সঙ্গে প্রচণ্ড বৃষ্টি যা কিনা সময়োচিত নয়। প্রাণহানি ঘটেছে, সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই সবই মূলতঃ Weather Pattern-এ যে পরিবর্তন হয়েছে, তার পরিনাম। আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য প্রকৃতির বিরুদ্ধে যেতে আমাদের শিক্ষা দেয়নি। প্রকৃতির সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রেখে মিলেমিশে থাকতে হবে। মহাত্মা গান্ধী তাঁর সারা জীবন ধরে এই কথাই বলে এসেছেন।

ভারত আজ Climate Justice-এর কথা বলছে, COP 21 এবং Paris চুক্তিতে প্রধান ভূমিকা নিয়েছে, আমরাInternational Solar Alliance–এর মাধ্যমে সারা পৃথিবীকে একজোট করেছি, এই সবের পিছনে মহাত্মা গান্ধীর স্বপ্ন পূর্ণ করার এক শুভ চিন্তা কাজ করছে।

এই ‘পরিবেশ দিবস’-এ আমরা একটু ভাবি, এই পৃথিবীকে আরও পরিষ্কার, আরও সবুজ বানানোর জন্য আমরা কী করতে পারি। এই পথে কীভাবে আরও এগিয়ে যেতে পারি, কী কী innovation করতে পারি! বর্ষা আসছে। এখন আমরা রেকর্ড সংখ্যক বৃক্ষ রোপণ করতে পারি। শুধু রোপণ করাই নয়, গাছ বড় হওয়া অবধি তার দেখাশোনা করাটাও জরুরী।

আমার প্রিয় দেশবাসী, বিশেষ করে আমার যুবা বন্ধুরা! আপনারা এখন ২১-শে জুনকে সবাই মনে রাখেন। শুধু আপনি-আমি নই, সারা পৃথিবী এখন ২১-শে জুনকে মনে রাখে। সারা বিশ্বে এখন ২১-শে জুন ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ হিসেবে পালন করা হয় এবং এটা সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত যে কয়েক মাস আগে থেকেই এই অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি পর্ব শুরু হয়ে যায়। খবর পাওয়া যাচ্ছে যে সারা বিশ্বে ২১-শে জুনকে ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ হিসেবে পালন করার জন্য প্রস্তুতি চলছে।Yoga for Unity এবং Harmonious Society এমন এক বার্তা যা সারা বিশ্ব বিগত কয়েক বছর ধরে বারবার অনুভব করেছে। সংস্কৃতের মহান কবি ‘ভর্তুহরি’ কয়েক শতাব্দী আগে শতকত্রয়ম্‌এ লিখেছিলেন—

ধ্যারয়ম্‌ ইয়স্যয় পিতা শমা চ জননী

শান্তিস্‌ চিরম্‌ গেহিনী

সত্যম্‌ সুনুরয়াম্‌ দয়া চ ভগিনী ভ্রাতা মনহঃ সইয়ামহ

শয্যা ভূমিতলম্‌ দিশোপি বসনাম্‌ জ্ঞানামৃতম্‌ ভোজনম্‌

এতে ইয়স্যয় কুটুম্বিনহ্‌ বদ সখে কস্মাদ্‌ ভয়ম্ যোগীনহ্‌।।

শত শত বছর আগে বলা এই কথার অর্থ হল এই যে — নিয়মিত যোগাভ্যাস করার ফলে কিছু সদ্‌গুণ বন্ধু ও স্বজনের মতো হয়ে ওঠে। যোগাভ্যাসে সাহস বাড়ে যা সবসময় পিতার মত আমাদের রক্ষা করে। ক্ষমার মানসিকতা তৈরি হয় যেমন মা তাঁর নিজের সন্তানের জন্য অনুভব করে। মানসিক শান্তি আমাদের চিরস্থায়ী বন্ধু হয়ে ওঠে। ভর্তুহরি বলেছিলেন, নিয়মিত যোগাভ্যাস করলে সত্য আমাদের সন্তান, দয়া আমাদের ভগ্নী, আত্মসংযম আমাদের ভ্রাতা, পৃথিবী আমাদের শয্যা আর জ্ঞান আমাদের ক্ষুধা নিবৃত্ত করার কাজ করে। যখন এত গুণের অধিকারী কেউ হন, তখন স্বাভাবিক ভাবেই এই যোগী সব ধরনের ভয়কে জয় করে। আরও একবার আমি সব দেশবাসীর কাছে আবেদন জানাচ্ছি যে, তাঁরা যেন ‘যোগ’-এর বিরাট ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে যান এবং এক সুস্থ, সুখী এবং সদ্ভাবনাপূর্ণ রাষ্ট্র গড়ে তোলেন।

       আমার প্রিয় দেশবাসী, আজ ২৭-শে মে। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরুর তিরোধান দিবস। আমি পণ্ডিতজীকে প্রণাম জানাচ্ছি। এই মে মাস আরও এক মহান মানবের জন্য স্মরণীয়। তিনি হলেন বীর সাভারকর। ১৮৫৭-র মে মাসে ভারতবাসী ইংরেজকে নিজের শক্তির পরিচয় দিয়েছিল। দেশের অনেক অংশে আমাদের জওয়ান ও কৃষকরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিল। দুঃখের কথা এই যে, আমরা অনেক দিন ধরে ১৮৫৭-র ঘটনাকে কেবলমাত্র বিদ্রোহ বা সিপাহী বিদ্রোহ বলে এসেছি। প্রকৃতপক্ষে এই ঘটনাকে শুধু ছোট করেই দেখান হয়নি, আমাদের আত্মসম্মানকে আঘাত করার এক চেষ্টা ছিল। এই বীর সাভারকর-ই নির্ভীক হয়ে লিখলেন যে ১৮৫৭ সালে যা কিছু হয়েছিল তা কোনওবিদ্রোহ নয় বরং স্বাধীনতার প্রথম লড়াই। সাভারকরের সঙ্গে লন্ডনের ইন্ডিয়া হাউজের বীরেরা এর পঞ্চাশতম জয়ন্তীসমারোহ সহকারে পালন করল। এটাও এক অদ্ভূত সংযোগ, যে মাসে স্বাধীনতার প্রথম স্বতন্ত্র সংগ্রাম শুরু হল, সেই মাসেই বীর সাভারকরের জন্ম হয়। সাভারকর-জীর ব্যক্তিত্ব নানা বিশেষত্বে পূর্ণ ছিল; শস্ত্র আর শাস্ত্র, দুটোরই উপাসক ছিলেন তিনি। মূলত বাহাদুরি আর ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে তাঁর সঙ্ঘর্ষের জন্য পরিচিত বীর সাভারকর। কিন্তু এসব ছাড়াও তিনি এক ওজস্বী কবি আর সমাজ সংস্কারকও ছিলেন যিনি সর্বদা সদ্‌ভাবনা আর একতার উপর জোর দিয়েছেন। সাভারকর-জীর ব্যাপারে এক অদ্ভূত বর্ণনা দিয়েছেন আমাদের প্রিয়, আদরণীয় অটল বিহারী বাজপেয়ী-জী। অটলজী বলেছিলেন, সাভারকর মানে শক্তি, সাভারকর মানে ত্যাগ, সাভারকর মানে তপস্যা, সাভারকর মানে নীতি-নিষ্ঠা, সাভারকর মানে তর্ক, সাভারকর মানে তারুণ্য, সাভারকর মানে তীর, সাভারকর মানে তলোয়ার। কতটা সঠিক ছবি তুলে ধরেছিলেন অটলজী। সাভারকর কবিতা আর বিপ্লব, দুটোকেই সঙ্গে নিয়ে চলেছেন। সংবেদনশীল কবি হওয়ার পাশাপাশি উনি সাহসী বিপ্লবীও ছিলেন।

আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা। আমি টিভিতে একটা কাহিনি দেখছিলাম। রাজস্থানের সীকরের বস্তিতে থাকা আমাদের গরীব মেয়েদের কাহিনি। আমাদের এই কন্যারা, যারা কোনো এক সময় আবর্জনার স্তূপ ঘাঁটা থেকে শুরু করে বাড়ি-বাড়ি ভিক্ষা করতে বাধ্য হত – আজ তারা সেলাইয়ের কাজ শিখে গরীবদের আচ্ছাদন সেলাই করছে। এখানকারকন্যারা আজ নিজের এবং নিজের পরিবারের কাপড়চোপড় ছাড়াও সাধারণ থেকে উন্নত বস্ত্র সেলাই করছে। তারা এর সঙ্গে কৌশল বিকাশের কোর্সও করছে। আমাদের এই কন্যারা আজ আত্মনির্ভর হয়েছে। সম্মানের সঙ্গে জীবন যাপন করছে আর নিজের-নিজের পরিবারের জন্য এক শক্তি হয়ে উঠেছে। আশা আর বিশ্বাসে ভরপুর আমাদের এই কন্যাদের আমি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের শুভকামনা জানাই। এঁরা দেখিয়েছেন যে যদি কিছু করে দেখানোর জেদ থাকে আর তার জন্য আপনি কৃতসঙ্কল্প হন তো যাবতীয় মুশকিলের মধ্যেও সাফল্য লাভ করা যায় আর এটা শুধু সীকরের কথা নয়, হিন্দুস্থানের প্রতিটি কোণে আপনি এটা দেখতে পাবেন। আপনার আশেপাশে, পাড়া-প্রতিবেশীদের মধ্যে খেয়াল করলে নজরে পড়বে যে কীভাবে লোকেরানানা সমস্যাকে পরাজিত করছে। আপনি অনুভব করেছেন যে যখনই আমরা কোনও চায়ের দোকানে যাই, সেখানকার চা খেয়ে তৃপ্তি পাই তখন কিছু মানুষের সঙ্গে আলোচনা আর 
বিচার-বিশ্লেষণও হয়। এই আলোচনা রাজনৈতিকও হয়, সামাজিকও হয়, চলচ্চিত্র সম্পর্কেও হয়, খেলা আর খেলোয়াড়দের সম্পর্কেও হয়, দেশের সমস্যা নিয়েও হয় – যে, সমস্যাটা এমন – এর সমাধান এমনভাবে হবে –  এমনটা করা উচিৎ। কিন্তু অধিকাংশ সময় এই চর্চা কেবল আলোচনাতেই সীমিত থাকে। কিন্তু কিছু লোক এমন হন যাঁরা নিজেদের কাজের মাধ্যমে, নিজেদের পরিশ্রম আর উদ্যোগের মাধ্যমে পরিবর্তনের অভিমুখে এগিয়ে যান, সেটাকে বাস্তবে রূপ দেন। অন্যের স্বপ্নকে আপন করে নেওয়ারএবং সেটাকে সম্পূর্ণ করতে নিজেকে সঁপে দেওয়ার এমনই এক কাহিনিওড়িশার কটক শহরের ঝুপড়িতে বাস করা ডি প্রকাশ রাওয়ের। গতকালই ডি প্রকাশ রাওয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের সৌভাগ্য হল আমার। শ্রীমান ডি প্রকাশ রাও গত পাঁচ দশক ধরে শহরে চা বিক্রি করছেন। আপনারা জেনে আশ্চর্য হয়ে যাবেন, এক মামুলি চা-বিক্রেতা সত্তরেরও বেশি বাচ্চার জীবনে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে। উনি ঝুপড়ি আর বস্তিতে থাকা বাচ্চাদের জন্য ‘আশা আশ্বাসন’ নামে এক স্কুল খুলেছেন। সেই গরীব চা-ওয়ালা এখানেই তার আয়ের পঞ্চাশ শতাংশ খরচ করেন। তিনি স্কুলে আসা সব বাচ্চার জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য আর ভোজনের যাবতীয় আয়োজন করেন। আমি ডি প্রকাশ রাওয়ের কঠিন পরিশ্রম, ওঁর উদ্যোগ আর সেইসব গরীব বাচ্চাদের জীবনকে এক নতুন দিশা দেখানোর জন্য অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই। উনি ওদের জীবনের অন্ধকারকে মুছে দিয়েছেন। ‘তমসো মা জ্যোতির্গময়ঃ’ এই বেদবাক্য কে না জানে, কিন্তু সেটা করে দেখিয়েছেন ডি প্রকাশ রাও। ওঁর জীবন আমাদের সবার জন্য, সমাজ আর গোটা দেশের জন্য এক অনুপ্রেরণা। অনুপ্রেরণা দেওয়া এমন অনেকঘটনাবলী আপনারও আশেপাশে থাকবে। অসংখ্য ঘটনা হয়ত আছে। আসুন আমরা সদর্থক মানসিকতাকে এগিয়ে নিয়ে যাই।

জুন মাসে এত গরম হয় যে লোক বর্ষার জন্য অপেক্ষা করে আর এই আশায় আকাশের মেঘের দিকে চাতকের মত চেয়ে থাকে। আজ থেকে কিছু সময় পরে লোক চাঁদেরও প্রতীক্ষা করবে। চাঁদ দেখতে পাওয়ার অর্থ হল ঈদ পালিত হওয়া।রমজানের সময় এক মাসের উপবাস শেষে ঈদের পর্ব জাঁকজমকপূর্ণ উৎসব শুরুর প্রতীক। আমার বিশ্বাস সবাইখুবউৎসাহের সঙ্গে ঈদ পালন করবে। এই উপলক্ষে বিশেষ করে বাচ্চাদের ভালো ঈদি লাভ হবে। আশা করছি যে ঈদের উৎসব আমাদের সমাজে সদ্ভাবের বন্ধনকে আরও মজবুত করবে। সবাইকে অনেক-অনেক শুভকামনা।

আমার প্রিয় দেশবাসী। আপনাদের সবাইকে অনেক-অনেক ধন্যবাদ। সামনের মাসে আবার একবার ‘মন কি বাত’এ মিলিত হব।ধন্যবাদ!

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII

Media Coverage

PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM Modi visits the Indian Arrival Monument
November 21, 2024

Prime Minister visited the Indian Arrival monument at Monument Gardens in Georgetown today. He was accompanied by PM of Guyana Brig (Retd) Mark Phillips. An ensemble of Tassa Drums welcomed Prime Minister as he paid floral tribute at the Arrival Monument. Paying homage at the monument, Prime Minister recalled the struggle and sacrifices of Indian diaspora and their pivotal contribution to preserving and promoting Indian culture and tradition in Guyana. He planted a Bel Patra sapling at the monument.

The monument is a replica of the first ship which arrived in Guyana in 1838 bringing indentured migrants from India. It was gifted by India to the people of Guyana in 1991.