ভারতের জনসাধারণের মধ্যে আশার আলো জাগিয়ে তুলতেইবিজেপি-র যাত্রা শুরু। বিজেপি আজ যে অবস্থায় এসে পৌঁছেছে তা শুধুমাত্র ব্যক্তিবিশেষের কারণেই নয়, বরং বহু প্রজন্ম ধরে কার্যকর্তাদের কঠোর শ্রম, স্বেদবিন্দু এবংআত্মোৎসর্গের মধ্য দিয়ে। কারণ আমরা মনে করি যে দলের ঊর্ধ্বে হল দেশ তথা জাতি। ভারতেপ্রথম এই মন্ত্রোচ্চারণের মধ্য দিয়েই বিজেপি তার যাত্রাকে অব্যাহত রাখবে।”  

২০১৩-র ৬ এপ্রিল আমেদাবাদে কার্যকর্তাদেরমহাসম্মেলনে কার্যকর্তাদের উদ্দেশে একথা বলেছিলেন নরেন্দ্র মোদী।  

Organiser par excellence: Man with the Midas Touch

দলের ৩৩তম স্থাপনা দিবসে বিজেপি কার্যকর্তাদেরমহাসম্মেলনে ভাষণ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী।  

দলের একজন সাধারণ কর্মী হিসেবে যাত্রা শুরু করে দেশের সর্বোচ্চ পদেআসীন হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। সাংগঠনিক জ্ঞান ও দক্ষতা এবং যেকোন ধরনের গুরুদায়িত্ব পালনে দক্ষতা তাঁকে এই পদে উন্নীত করেছে। এমনকি, তিনি যখনদলের একজন সাধারণ কর্মী মাত্র ছিলেন তখনও এই সাংগঠনিক ক্ষমতার পরিচয় তিনি দিয়েছিলেন।দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এমন কিছু কিছু অঞ্চলে তাঁকে পাঠিয়েছিল যেখানে দল সঙ্ঘবদ্ধ করারপ্রয়োজন অনুভূত হয়েছিল সবথেকে বেশি। প্রত্যেকবারই দলের কোন না কোন দায়িত্ব দেওয়াহত তাঁকে, তা সে কোন বিরুদ্ধে পরিবেশে সভা-সমাবেশের আয়োজন করাই হোক, বা কোননির্বাচনী প্রচারাভিযানের উদ্যোগ গ্রহণ করাই হোক ।  তাঁরকাজ ও সাফল্য সবসময়ই দলের প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে যেত।  

আজও তিনি দলের প্রতিটি স্তরের কর্মীদের সাংগঠনিক ভূমিকার কথাগুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেন। এ সম্পর্কে প্রায়ই বলতে শোনা যায় তাঁকে।  

এই নিবন্ধের প্রথমেই মোদীর যে ভাষণের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে তা তাঁর মুখথেকে উচ্চারিত হয়েছিল আমেদাবাদে সেপ্টেম্বর মাসের কোন এক গুমোট আবহাওয়ার পরিবেশে।ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার কার্যকর্তাদের সামনে ভাষণ দিচ্ছিলেন তিনি মঞ্চ থেকে। বুথপরিচালনার গুরুত্ব সম্পর্কে তিনি বক্তব্য রাখছিলেন সেই সময়।  

নির্বাচনের সময় বুথ পরিচালনার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোন দুর্গদখল না করলে যেমন যুদ্ধে জয়লাভ বোঝায় না, ঠিক সেরকমই কোন নির্বাচন কেন্দ্রে জয়ী নাহলে নির্বাচন জেতাও সম্ভব নয়। নির্বাচন কেন্দ্রে পরিচালনার দায়িত্বে সফল হতেপেরেছি কিনা তা হল নির্বাচনে জেতার এক পরীক্ষা বিশেষ।” 

namo-organiser-in2

ভারতীয় জনতা যুব মোর্চার সম্মেলনে ভাষণ দিচ্ছেননরেন্দ্র মোদী।  

ঐ ভাষণে তিনি বলেছিলেন যে, সাধারণ মানুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়েদাঁড়ানো দলের কর্মীদের পক্ষে একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সুখ বা দুঃখ যে কোন সময়ইএইভাবেই তাঁদের সঙ্গে গড়ে ওঠে ব্যক্তিগত সংযোগ ও সম্পর্ক।  

আজ সারা বিশ্বের কাছেই একথা অজানা নয় যে নরেন্দ্র মোদী হলেন এক সচলব্যক্তিত্ব যিনি তাঁর নিজের রাজ্য গুজরাটের ভোলই পালটে দিয়েছিলেন। কিন্তু সুদক্ষসংগঠক হিসেবে খ্যাতি অর্জনের আগেই যেখানে যেখানেই তিনি কাজ করে এসেছেন, কোন একযাদু স্পর্শে সেখানে রচিত হয়েছে বিজেপি-র সাফল্যের এক কাহিনী।

namo-organiser-in3

নরেন্দ্র মোদী যাদুকরের মতোই যাঁর রয়েছে একবিশেষ ক্ষমতা  

একটি সাদমাটা ঘরে বসে থাকা মানুষ যাঁর চারপাশে ছড়িয়ে রয়েছেনদেশ-বিদেশের বহু মানুষ, সেই নরেন্দ্র মোদীর আরএসএস-এ প্রথম কাজই ছিল আমেদাবাদেদলের সদর দপ্তরে মেঝে পরিষ্কার করা। একথা ভাবতে অবাক লাগে না কী?  

শুধু তাই নয়, সেখানে তাঁর কাজ ছিল সকালে দুধ আনা থেকে শুরু করে অফিসচত্বরকে সাফসুতরো রাখা। এমনকি, পরম ভক্তি ভরে তিনি দলের বরিষ্ঠ প্রচারকদেরজামা-কাপড়ও কেচে দিতেন।  

নির্বাচনী রাজনীতি থেকে বরাবরই দূরে থাকতে চাইতেন নরেন্দ্র মোদী।রাজনীতির ঘোর-প্যাঁচ ব্যক্তিগতভাবে তাঁর ভালো লাগত না। কিন্তু সঙ্ঘ নেতৃত্ব তাঁকেনির্দেশ দিলেন, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ১৯৮৭ সালে বিজেপি-তে যোগদানের জন্য। সেইশুরু, তারপর আর ফিরে তাকানোর কোন অবকাশ নেই। একের পর এক নির্বাচনে জয়ী হলেন তিনিএবং দলের অন্যান্যদেরও নির্বাচনে জিততে সাহায্য করলেন।  

পৌর নির্বাচন : আকারে ছোট কিন্তু গুরুত্বে অনেক বড় 

১৯৮৭ সালে বিজেপি-তে যোগদানের পর ঐ বছরই আমেদাবাদে পৌর নির্বাচনেউত্তীর্ণ হওয়া ছিল নরেন্দ্র মোদীর রাজনৈতিক জীবনে প্রথম পরীক্ষা। ১৯৮০ সালেরসূচনায় রাজকোট ও জুনাগড় কর্পোরেশনের নির্বাচনে বিজেপি সাফল্যের স্বাদ লাভ করল।এমনকি, বিধানসভাতেও দখল করল কয়েকটি আসন। কিন্তু যে দলটি রাজ্যে একটি বিশেষরাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে চেয়েছিল, তার কাছে পুরস্কার এনে দিলআমেদাবাদ পৌর নির্বাচনের ঘটনা। গুজরাট রাজ্য থেকে সংসদ, বিধানসভা এমনকি, প্রায়প্রত্যেকটি পঞ্চায়েত ও কর্পোরেশন তখন কংগ্রেসের দখলে। রাজ্যে তখন তাঁর পর্যুদস্তঅবস্থা। কিন্তু নানারকম কৌশলে তারা এড়িয়ে গেল দলের পরাজয়।

আর ঠিক এই চ্যালেঞ্জটাই গ্রহণ করলেন নরেন্দ্র মোদী। সারা শহর জুড়ে চললতাঁর নিরলস পরিশ্রম। লক্ষ্য একটাই, বিজেপি-কে জয় এনে দিতেই হবে। বিজেপি তারকাঙ্খিত ফললাভে বঞ্চিত হল না। আমেদাবাদ পুর নির্বাচনে কর্তৃত্ব দখল করল বিজেপি।সাধারণ মানুষের কাছে সেবা ও পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ পেল এই দলটি। সেইসঙ্গেপরের বছরগুলির জন্য তাদের ভিত আরও শক্ত করে তোলার মতো জমি পেল।

২০০০ সাল পর্যন্ত আমেদাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনে বিজেপি তারআধিপত্য বজায় রাখল। আশ্চর্যজনকভাবে ১৯৮৭ সালে অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনের সময়নরেন্দ্র মোদী তখন কিন্তু গুজরাটে ছিলেন না, কাজ করছিলেন অন্যত্র। 

বিধানসভায় সাফল্য : গান্ধীনগরে প্রস্ফুটিত হল উজ্জ্বল পদ্ম 

১৯৮০-র বিধানসভা নির্বাচনে মাধব সিং সোলাঙ্কির নেতৃত্বে এবং তাঁরকেএইচএম কোয়ালিশন-এ কংগ্রেস জয়ী হল ১৪১টি আসনে। কংগ্রেসের সপক্ষে ভোট পড়েছিল ৫১.০৪শতাংশ। কিন্তু বিজেপি দখল করতে পেরেছিল মাত্র ন’টি আসন। নতুন সামাজিক জোটের বার্তাদিয়ে এবং শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর হত্যাকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে সহানুভূতির হাওয়ায়সোলাঙ্কির নেতৃত্বে কংগ্রেস ৫৫.৫৫ শতাংশ ভোট পেয়ে আরও একবার জয়লাভ করল, দখল করল১৪৯টি আসন। বিজেপি-কে আরেকবার পরাজয় স্বীকার করতে হল। দলের পক্ষে ভোট পড়ল মাত্র১৪.৯৬ শতাংশ এবং দখলে এল ১১টি আসন।

কিন্তু কংগ্রেসের কোন সুস্পষ্ট নীতি ও লক্ষ্য ছিল না। সংরক্ষণ এবংসামাজিক কোয়ালিশন-এর ভাঙা-গড়া খেলার মধ্যেই তারা সীমাবদ্ধ রাখল তাদের দলীয়রাজনীতিকে। এদিকে আবার, ১৯৮৫-৮৮ পর্যন্ত ভয়াবহ খরার কবলে পড়ল সমগ্র রাজ্যটি। এরওপর আবার কয়েকটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় গুজরাটের সামাজিক প্রেক্ষিতটি তখন প্রায়দীর্ণ-বিদীর্ণ।

namo-organiser-in4

১৯৯০-এর দশকে গুজরাটে স্বাগত জানানো হচ্ছেনরেন্দ্র মোদীকে  

ধীরে ধীরে এগিয়ে এল ১৯৯০-এর বিধানসভা নির্বাচন। চারদিকে তখন কংগ্রেসবিরোধী হাওয়া। কিন্তু দলের রাজনৈতিক কৌশল কিন্তু তখনও বেশ জোরদার। নরেন্দ্র মোদীতাঁর কাজের ছক তৈরি করে ফেললেন। গড়ে তুললেন এক শক্তিশালী সংগঠন। দলের রাজনৈতিকনেতৃত্বের পরিপূরক হিসেবে সাধারণ মানুষের কাছে সমর্থন আদায় ছিল তাঁর সাংগঠনিকলক্ষ্য।

কংগ্রেসের এক দশককালের শাসনের পর ১৯৯০-এর ২৭ ফেব্রুয়ারি নতুন বিধানসভাগঠন হল গুজরাটে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। ২৯.৩৬ শতাংশ জনসমর্থন লাভ করে শীর্ষ স্থানদখল করল চিমনভাই প্যাটেলের নেতৃত্বাধীন জনতা দল। তাদের দখলে তখন ৭০টি আসন। এরপরেই৬৭টি আসনে জয়ী হয়ে দ্বিতীয় স্থানটি দখল করল কংগ্রেস। এর আগে যে দলের বিন্দুমাত্রঅস্তিত্বই ছিল না সেই বিজেপি রাজ্যে আত্মপ্রকাশ ঘটাল এক বিশেষ রাজনৈতিক শক্তিহিসেবে।

namo-organiser-in5

১৯৯০-এর দশকে মঞ্চে নরেন্দ্র মোদী, কেশুভাইপ্যাটেল এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ।  ভাষণ দিচ্ছেন এল কে আদবানি।  

বিজেপি-র সামনে ঐ রাজ্যে দ্বিতীয় পরীক্ষার সময় উপস্থিত হল ১৯৯৫-এরবিধানসভা নির্বাচনকালে। ঐ বছরই দল প্রথম বিধানসভার সবকটি অর্থাৎ, ১৮২টি আসনেইপ্রার্থী দিল। শুধু তাই নয়, এই প্রথম বিজেপি কংগ্রেসের থেকেও অনেক বেশি আসনেপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হল। গুজরাটের ভোটদাতারা জয়ের মালা তুলে দিল বিজেপি-র কন্ঠে,দখলে এল বিধানসভার ১২১টি আসন। বিজেপি-র ভোটের হার বৃদ্ধি পেল ৪২.৫১ শতাংশ। চরমহাতাশার স্বীকার হতে হল কংগ্রেসকে। তাদের দখলে তখন মাত্র ৪৫টি আসন। দলের সংগঠনকেএতটাই মজবুত করে তোলার কাজে সফল হতে পেরেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। কংগ্রেসের দুর্গেফাটল ধরানোর কাজেও তিনি পিছিয়ে ছিলেন না।  

রাজ্যে সরকার গঠন করল বিজেপি। কিন্তু সমস্যা সেখানেই মিটল নাগুজরাটেরবিজেপি নেতৃত্বের মধ্যেই মতভেদ প্রকট হয়ে উঠল। ১৯৯৬ সালে দলীয় নেতৃত্ব ক্ষমতাচ্যুতহল। ঐ সময় নরেন্দ্র মোদী কিন্তু গুজরাটে ছিলেন না। ছিলেন দিল্লিতে। কাজ করছিলেনদলের জাতীয় সম্পাদক রূপে।  

দলের নেতৃত্বের অনেকেই বিশ্বাসঘাতকতা করে একটি পৃথক দল গঠন করে হাতমেলায় কংগ্রেসের সঙ্গে। এই ঘটনা ১৯৯৬ সালের। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিজেপি আবারক্ষমতা ফিরে পায় ১৯৯৮-তে। এরপর এল ২০০১-এর আরেকটি ঘটনা। দলের ওপর কালো ছায়া তখন দীর্ঘতরহতে শুরু করেছে। বন্যা, ঘূর্নিঝড়, খরা এবং কচ্ছের এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে বিজেপি থেকেঅনেকেই দলত্যাগ করলেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল যে পরিস্থিতির মোকাবিলায় সরকার যথেষ্টতৎপরতা দেখাতে পারেনি। ফলে, ত্রাণ ও উদ্ধারের কাজ ছিল প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট কম।এমনকি সমবায় ক্ষেত্রেও দুর্নীতির অভিযোগ দানা বেঁধেছিল। ঠিক এই কঠিন পরিস্থিতিতেই৭ অক্টোবর, ২০০১-এ নরেন্দ্র মোদীকে নির্দেশ দেওয়া হল গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীরদায়িত্বভার গ্রহণ করার। যে মানুষটি কোনদিন ক্ষমতা বা গুরুদায়িত্বের কল্পনাওকরেননি, তাঁর ওপরই এই দায়িত্ব সঁপে দেওয়া হল। উপলক্ষ, গুজরাটে বিপর্যস্ত বিজেপিসরকারের সম্মান রক্ষা ও মর্যাদা বৃদ্ধি ।  

গোধরার দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা এবং অন্যান্য বিষয়ের কথা চিন্তা করেনরেন্দ্র মোদী উপলব্ধি করলেন যে গুজরাটের প্রয়োজন এমন এক নতুন সরকারের যে রাজ্যেরক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার পাশাপাশি উন্নয়নের কাজেও ব্রতী হবে। একটি বিষয়ে তিনি নিশ্চিতহলেন যে বিজেপি হল একটি সঠিক দল যার দ্বারা এই কাজ সম্ভব হবে। তাই, তিনি দ্রুতবিধানসভা ভেঙে দিয়ে নির্বাচনের জন্য আর্জি জানালেন। অবশেষে, ২০০২-এর ডিসেম্বরেস্থির হল নির্বাচনের নির্ঘন্ট।  

নির্বাচনী প্রচারের সময় দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুখ হয়ে উঠলেননরেন্দ্র মোদী। রাজনৈতিক ভাষ্যকাররা এবং নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা ঐ বছরের নির্বাচনটিকংগ্রেসের পক্ষে অনুকূল বলে মত প্রকাশ করলেন। কঠোর পরিশ্রম করে নির্বাচনী অভিযানচালিয়ে গেলেন নরেন্দ্র মোদী। বলা বাহুল্য, দলের প্রধান মুখ হয়ে উঠলেন তিনি। এই একইকৌশল তিনি অবলম্বন করলেন লোকসভা নির্বাচনের সময়েও। সারা রাজ্য চষে বেড়ালেন তিনি; জাগিয়েতুললেন আশার আলো।  

ফল ঘটল প্রত্যাশা মতোই। ৪৯.৮৫ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজেপি দখল করল ১২৭টিআসন। কংগ্রেসকে সন্তুষ্ট থাকতে হল মাত্র ৫১টি আসন নিয়েই। ২০০২-০৭ এই কবছরে এক স্বচ্ছও উন্নয়নমুখী সরকার গড়ে তুললেন নরেন্দ্র মোদী। রাজ্যে উন্নয়নের কাজ শুরু হলদ্রুতগতিতে এবং চলল পুরোদমেএইভাবে গুজরাট যতই উত্তরোত্তর উন্নত হতে শুরু করল,হতাশা ও নৈরাশ্য গ্রাস করল বিরোধীদের। ২০০৭-এ বিধানসভা নির্বাচন যতই এগিয়ে আসতেলাগল, ব্যক্তিগত নিন্দা ও গালমন্দ আরও বেশি করে বর্ষিত হতে থাকল নরেন্দ্র মোদীরওপর। বিদ্বেষে ভরা এক নির্বাচনী প্রচারে কংগ্রেস সভাপতি তাঁকে অভিহিত করলেনমৃত্যুর কারবারীহিসেবে। কিন্তু নিন্দার রাজনীতি থেকে নিজেকে অনেক দূরে রাখলেননরেন্দ্র মোদী। বেশি করে নজর দিলেন তাঁর নিজের ক্ষমতা ও উন্নয়ন কর্মসূচির ওপর।অবশেষে সুনিশ্চিত হল বিজেপি-র জয়লাভ। ৪৯.১২ শতাংশ ভোট লাভ করে বিজেপি জয়ী হল ১১৭টিআসনে। কংগ্রেসের দখলে তখন মাত্র ৫৯টি আসন।  

namo-organiser-in6

https://www.narendramodi.in/360/build.html

গুজরাট নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীর সাম্প্রতিকতম জয়লাভের ঘটনা ঘটে২০১২-তে। ঐ সময় তাঁর দল ১১৫টি আসনে জয়ী হয়। গুজরাটের জনসাধারণ এক গৌরবময় জয় এনেদিলেন তাঁকে।

 

২০০১ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত যতবারই নরেন্দ্র মোদী গুজরাটেরমুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বভার পালন করেছেন, পঞ্চায়েত ও পুর নির্বাচনের প্রত্যেকটিতেইজয়লাভ করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি।

 

১৯৯০ থেকে শুরু করে ২০১২ পর্যন্ত জল বয়ে গেছে অনেক নদীতেই। কিন্তু যাছিল অবিচল, স্থির ও সুদৃঢ় তা হল নরেন্দ্র মোদীর কঠোর শ্রম, সঙ্কল্প ও আত্মোৎসর্গেরমানসিকতা। প্রত্যেকটি অভিযানে নতুন কিছু করার উৎসাহ যুগিয়েছেন তিনি, নিশ্চিতকরেছেন বিজেপি-র পক্ষে রায় ও জনমত।

লোকসভা নির্বাচন : গুজরাট থেকে দিল্লি - বিকশিত হল একের পর এক পদ্ম

সংগঠক হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর ক্ষমতা ও দক্ষতার ফলশ্রুতিতেই সর্বোচ্চসংখ্যক প্রার্থী নির্বাচিত হয়ে সংসদে গুজরাটের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন । উপর্যুপরিসবক’টি লোকসভা নির্বাচনেই একই ঘটনার অনুরূপ প্রতিফলন ঘটে। ১৯৮৪ সালে গুজরাট থেকেলোকসভায় নির্বাচিত বিজেপি সাংসদ ছিলেন মাত্র একজন। কিন্তু পাঁচ বছর পরেই ১৯৮৯সালের লোকসভা নির্বাচনে নির্বাচিত প্রার্থীর সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ১২-তে। আবার,১৯৯১-এর লোকসভা নির্বাচনে জয়ী প্রার্থীর সংখ্যা পৌঁছয় ২০-তে।

১৯৯৬, ১৯৯৮ এবং ১৯৯৯-এর নির্বাচনে গুজরাট থেকে সংসদ প্রতিনিধিনির্বাচিত হয়েছিলেন বরাবরই ২০ জনের বেশি। যদিও তিনি এই সময়কালে গুজরাটে ছিলেন না,কিন্তু জয়ের এই ভিত গঠন করে দিয়েছিল তাঁর নিরলস প্রচেষ্টা ও পরিশ্রম। গুজরাটেরমুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ২০০৪ এবং ২০০৯-এর লোকসভা নির্বাচনে গুজরাট থেকে নির্বাচিতসাংসদদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই ছিল বিজেপি-র।

যাত্রা হল শুরু : ব্যক্তির ঊর্ধ্বে জাতি 

গুজরাটের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন ১৯৮৭-র ‘নয়া যাত্রা’ আয়োজনের পেছনেকাজ করেছিল তাঁরই ক্ষমতা ও দক্ষতা। ১৯৮৯-এর ‘লোকশক্তি যাত্রা’র ক্ষেত্রেও একই কথাপ্রযোজ্য। কংগ্রেসের দুর্নীতি ও দমন-পীড়নে জর্জরিত গুজরাটের সাধারণ মানুষদের জন্যন্যায়ের অন্বেষণে এই দুটি যাত্রা তখন প্রধান আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

namo-organiser-in7

১৯৯১ সালে ‘একতা যাত্রা’র সময় নরেন্দ্র মোদী ওমুরলী মনোহর যোশী

জাতীয় পর্যায়ে শ্রী এল কে আদবানির নেতৃত্বে ‘সোমনাথ থেকে অযোধ্যাযাত্রা’ এবং ডঃ মুরলী মনোহর যোশীর নেতৃত্বে পরিচালিত ‘একতা যাত্রা’র পেছনেও প্রধানসাংগঠনিক শক্তির হাত ছিল নরেন্দ্র মোদীর। জঙ্গি উপদ্রুত কাশ্মীরের অশান্ত ওটালমাটাল পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সূচনা হয় ‘একতা যাত্রা’র। শ্রীনগরে ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকা উত্তোলনে বাধা সৃষ্টি করেছিল উগ্রপন্থী তৎপরতা। যাত্রা শুরুর আগেনরেন্দ্র মোদী সরেজমিন পরিদর্শন করেন উপদ্রুত এলাকাগুলি।

namo-organiser-in8

এল কে আদবানির জনাদেশ যাত্রায় যোগ দিলেন নরেন্দ্রমোদী  

namo-organiser-in9

এল কে আদবানির সোমনাথ থেকে অযোধ্যা যাত্রা

কোন যাত্রার আয়োজন করা এক দুরূহ কাজ। যাত্রাপথ চূড়ান্ত করা থেকে শুরুকরে প্রতিটি স্থানেই সমস্তরকম প্রস্তুতির কাজ খুঁটিয়ে দেখভাল করাই মূল সংগঠকেরদায়িত্বে পড়ে। অসাধারণ কৃতিত্ব ও সাফল্যের সঙ্গে এই দুরূহ পর্বটি ঐ বছরগুলিতেসমাধা করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী স্বয়ং। এমনকি, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবেও বেশকয়েকটি যাত্রার সূচনা করেন তিনি যার মধ্যে সাম্প্রতিকতম ঘটনাটি ছিল ২০১২ সালের‘বিবেকানন্দ যুব বিকাশ যাত্রা’। ঐ সময় তিনি গুজরাটের বিভিন্ন প্রান্ত সফর করেস্বামী বিবেকানন্দের বাণী প্রচার করেছিলেন আপামর জনসাধারণের মধ্যে। 

namo-organiser-in10

বিবেকানন্দ যুব বিকাশ যাত্রার সূচনা করলেননরেন্দ্র মোদী

গুজরাটের সীমানা ছাড়িয়ে সাফল্য পৌঁছে গেল উত্তরভারতে

বিজেপি-র জাতীয় সচিব পদে মনোনীত করে ১৯৯৫ সালে নরেন্দ্র মোদীকে পাঠানোহয় দিল্লিতে। জম্মু ও কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ, পাঞ্জাব ও হরিয়ানা এবং কেন্দ্রশাসিতচণ্ডীগড় – উত্তর ভারতের এই অঞ্চলগুলির দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। ঐ রাজ্যগুলিতে তখন বিজেপি-রঅবস্থান ছিল খুবই দুর্বল। ১৫ বছর ধরে এক অশান্ত ও টালমাটাল পরিস্থিতির সাক্ষী ছিলজম্মু ও কাশ্মীর এবং পাঞ্জাব। ১৯৮৭-র জম্মু ও কাশ্মীর নির্বাচনে পক্ষপাতিত্বেরঅভিযোগ আনা হয়েছিল। অন্যদিকে, ১৯৯২ সালের পাঞ্জাবের নির্বাচন বয়কট করে বিরোধীপক্ষ। 

namo-organiser-in11

১৯৯২ সালে শ্রীনগরে ভারতীয় পতাকা উত্তোলন করলেননরেন্দ্র মোদী

নরেন্দ্র মোদীর প্রখর সাংগঠনিক দক্ষতা প্রমাণিত হল আরও একবার। ১৯৯৬-এরমাঝামাঝি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল হরিয়ানায়। বংশীলালের হরিয়ানা বিকাশ পার্টির সঙ্গেবিজেপি-র জোট সমঝোতা ৪৪টি আসনে জয়লাভ করে বংশীলালের মুখ্যমন্ত্রিত্বে সরকার গঠনকরল ঐ রাজ্যে। ২৫টি আসনে লড়াই করে বিজেপি জয়ী হল ১১টিতে। ১৯৯১-এর নির্বাচনের সঙ্গেএই নির্বাচনের ফলাফলের তখন আকাশ-পাতাল ফারাক। কারণ, ১৯৯১-তে ৯০টি আসনের মধ্যে৮৯টিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজেপি দখল করতে পেরেছিল মাত্র দুটি আসন। মাত্র একদশক আগেও বংশীলাল ও দেবীলালের সঙ্গে জোট সমঝোতার কথা কল্পনাও করতে পারেনি বিজেপি।কিন্তু শুধুমাত্র রাজনৈতিক কৌশল অবলম্বন করে অথচ দলের মতাদর্শের সঙ্গে কোনরকম আপোষনা করেই এই জোট গঠন অবশেষে সম্ভব হয়ে উঠল।

জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতি ছিল বেশ জটিল। ১৯৮৭ সালের নির্বাচনসেখানে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এমন এক পরিস্থিতিতে যা নিয়ে বেশ বিতর্কেরও সৃষ্টি হয়েছিল।১৯৯০ সাল পর্যন্ত কাশ্মীর ছিল রাষ্ট্রপতির শাসনাধীন। এরপর ১৯৯৬ সালে ঐ রাজ্যে যখনআবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল রাজ্যবাসী মতদান করল ফারুক আবদুল্লাহের ন্যাশনালকনফারেন্সের অনুকূলে। ৮৭টি আসনের মধ্যে ৫৭টিতেই জয়ী হল ন্যাশনাল কনফারেন্স। এরপরেইছিল বিজেপি-র স্থান। যদিও তাদের দখলে তখন ছিল মাত্র আটটি আসন তা সত্ত্বেও একদিকদিয়ে বিজেপি তখন কংগ্রেস ও জনতা দলের থেকে ছিল বেশ এগিয়ে। কারণ, ঐ দুটি দলের থেকেঅনেক বেশি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল ভারতীয় জনতা পার্টি।

হিমাচল প্রদেশেও দায়িত্ব পালন করেছেন নরেন্দ্র মোদী। ঐ রাজ্যের প্রেক্ষাপটছিল ভিন্ন প্রকৃতির। মোট ৬৮টি আসনের মধ্যে ৪৬টি আসনেই জয়ী হয়ে বিজেপি ঐ রাজ্যেক্ষমতা দখল করল ১৯৯০ সালে। কিন্তু ১৯৯২-এর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পরে পরেই বিজেপি-রহাত থেকে রাজ্যের শাসন ক্ষমতা চলে গেল। এরপরে অনুষ্ঠিত হল ১৯৯৩-এর নির্বাচন।বিজেপি পর্যুদস্ত হল মাত্র আটটি আসনে জয়ী হয়ে। ১৯৯৮-এর নির্বাচনে বিজেপি ও কংগ্রেস– দুটি দলই জয়ী হল ৩১টি করে আসনে। রাজ্যের রাজনীতি তখন এক ত্রিশঙ্কু অবস্থায়।প্রাক্তন কেন্দ্রীয় যোগাযোগ মন্ত্রী সুখরামের হিমাচল বিকাশ কংগ্রেসের দখলে ছিলপাঁচটি আসন। নরেন্দ্র মোদী অবতীর্ণ হলেন এক বিশেষ প্রভাবশালীর ভূমিকায় যার পরিণামেসরকার গঠনে নেতৃত্ব দিলেন প্রেম কুমার ধুমাল। সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে ২০০৭ সালেতিনি আবার পূর্ণ মেয়াদে ঐ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদে আসীন হলেন।

এবার আশা যাক পাঞ্জাবের কথায়। আকালি-বিজেপি জোট ১১৭টি আসনের মধ্যে৯৩টিতে জয়লাভ করল ১৯৯৭ সালে। ২২টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজেপি জয়ী হল১৮টিতে। ঐ আসনগুলিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতার নিরিখে তার ভাগ্যে ভোটের হার তখন ৪৮.২২শতাংশ। এর এক বছর আগে অর্থাৎ, ১৯৯৬ সালে চণ্ডীগড়ের পৌর নির্বাচনে বিজেপি-রপ্রচারাভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। চণ্ডীগড় পৌরসভায় জয়ের ঘটনাবিশেষভাবে উল্লেখের দাবি রাখে।

namo-organiser-in12

নরেন্দ্র মোদী ও প্রকাশ সিং বাদল

সংসদীয় নির্বাচনে সংগঠক হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর সাফল্য যথেষ্ট বর্ণময়।গুজরাটের বাইরে থাকার সময় ছ’বছর ধরে তিনটি লোকসভা নির্বাচন সামলাতে হয়েছিল তাঁকে।প্রথম যে নির্বাচনে দলের দায়িত্বভার সামলেছিলেন তিনি, তাতে জম্মু ও কাশ্মীরে একটিএবং হরিয়ানায় চারটি আসন দখল করেছিল বিজেপি। যদিও, পাঞ্জাব ও হিমাচল প্রদেশেবিজেপি-র জয়লাভের অঙ্ক ছিল শূন্য । কিন্তু ১৯৯৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে দু’জন,হিমাচল প্রদেশ থেকে তিনজন, পাঞ্জাব থেকে একজন এবং হরিয়ানা থেকে পাঁচজন বিজেপিপ্রার্থী নির্বাচনে জয়লাভ করে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেন। 

namo-organiser-in13

১৯৯৮ সালে শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর শপথ গ্রহণঅনুষ্ঠান

ভারতীয় জনতা পার্টির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক (সাংগঠনিক) পদে বৃত হলেননরেন্দ্র মোদী ১৯৯৮ সালে। এই পদটি দলের সাংগঠনিক কাঠামোয় ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।কারণ, সারা দেশে সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করতে হয় সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদককে। এর আগেঐ দায়িত্ব সামলেছিলেন কুশাভাই ঠাকরে এবং সুন্দর সিং ভাণ্ডারি। বিজেপি যখন সংসদে১৮২টি আসনে প্রতিনিধি পাঠিয়েছিল, তখন অর্থাৎ, ১৯৯৯ সালেও দলের সাধারণ সম্পাদকহিসেবে সংগঠনের দায়িত্ব পালন করেছেন নরেন্দ্র মোদী।

২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে এনডিএ-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবেবিজেপি-র পক্ষ থেকে মনোনীত করা হল শ্রী নরেন্দ্র মোদীকে।

namo-organiser-in14

এনডিএ-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণাকরা হল নরেন্দ্র মোদীর নাম

দলের কার্যালয় সাফাই থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত, রাজ্য ও সংসদীয়নির্বাচনে দলীয় সংগঠনের দায়িত্ব সামলাতে দেখা গেছে নরেন্দ্র মোদীকে। যে দায়িত্বইতিনি সামলেছেন তাতেই এসেছে সাফল্য। এক কথায়, বিজেপি-র সাংগঠনিক ইতিহাসে সোনারঅক্ষরে লেখা থাকবে শুধু একটিই নাম এবং তা হল ‘নরেন্দ্র মোদী’।

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
'You Are A Champion Among Leaders': Guyana's President Praises PM Modi

Media Coverage

'You Are A Champion Among Leaders': Guyana's President Praises PM Modi
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
প্রধানমন্ত্রী মোদী হলেন আধুনিক যুগের ‘ভগীরথ’
September 17, 2024

In the 21st century, India has taken on a key role in shaping the new world order. With global politics now multipolar, no major international group feels complete without India's presence. From disaster relief to forging global policy consensus, the world turns to India.

The visionary behind India's rise as a global leader over the past decade is our esteemed Prime Minister, Shri Narendra Modi.

Whether it's mediating in the Russia-Ukraine conflict or addressing crises in the West Asia, India, under PM Modi, is central to resolving international matters.

Today, both Indians and world powers alike place their trust in the belief that "If PM Modi is at helm, anything is possible", seeing his leadership as the ‘guarantee' of solutions.

In the context of India, PM Modi is seen as a modern-day ‘Bhageerath', guiding the nation toward achieving goals, solving challenges, and fulfilling aspirations.

Whether it's a woman farmer working in a remote field, a young entrepreneur in a tech company, a soldier guarding the nation's borders, or an Indian living abroad, all share unwavering trust in the PM's policies, vision, and decisions. This trust empowers the PM to make bold and decisive moves.

A prime example is the abrogation of Articles 370 and 35A, once considered impossible. Initially, there was resistance, but today Article 370 and 35A are history. Modi's determination has ended the era of "two flags, two constitutions" in Kashmir.


Now, instead of unrest, we see progress — new industries are springing up, and feats of engineering like the Chenab railway bridge, taller than the Eiffel Tower, are being realized. J&K is now on the path of development, and the world is watching. The people of this new Kashmir are prepared for upcoming assembly elections, where the PM's vision of nationalism, good governance, and development is set to triumph.

The PM has ignited a cultural renaissance in India. After a 500-year wait, India's spiritual and cultural aspirations have been realized with the consecration of Shri Ram Lalla at the grand new temple in Ayodhya and the renovation of Shri Kashi Vishwanath temple.

Since 2014, India has freed itself from the grip of political parties that thrived on casteism, corruption, and appeasement. Transparent and corruption-free execution of govt schemes has significantly improved the daily lives of common people.

Behind this transformation is a new work culture driven by the principle of ‘Sabka Saath, Sabka Vikas, Sabka Vishwas, Sabka Prayas'. At the core of this philosophy, which aims for ‘Antyodaya se Sarvodaya' (uplift of the last person leading to the uplift of all), is the priority given to the marginalised. For the first time, agriculture and farmers have become central to political discussions, with benefits from schemes like crop insurance, MSP, subsidies, and mechanized farming reaching farmers without discrimination.

The PM has inspired people to aspire for more, allowing every Indian to actively participate in the nation's development during this ‘Amrit Kaal'. The PM made two significant decisions within the first three months of his third term – extending Ayushman health coverage to all senior citizens over 70 and introducing the ‘Unified Pension Scheme' to safeguard public interests. The decisions have ushered in a new era of economic security and hope.

Over the past decade, the implementation of JAM — Jan Dhan, Aadhar, and Mobile — has eradicated systemic corruption, ensuring that the common man receives the full benefits of govt schemes. PM Modi described JAM as delivering "maximum return on every rupee spent", with focus on empowering the poor and spreading technology widely across the population.

In UP alone, over Rs 10,000 crore has been saved across just 11 departments through Direct Benefit Transfer (DBT). The use of technology has not only improved ease of living but also enabled the govt to achieve maximum results in minimal time. Platforms like UPI, DigiLocker, and DigiYatra have become integral to the lives of ordinary citizens.

Amid growing environmental challenges, the global community is increasingly recognizing that unsustainable development is not true progress and can have lasting consequences for humanity. This understanding aligns with the ancient Indian philosophy, which has always placed a high value on nature and environment. Under the PM, India has become a global advocate for environmental protection.

The PM's ‘Panchamrit' and ‘Lifestyle for Environment' (LiFE) campaigns have positioned India as a role model in fight against climate change. Over the past decade, India's installed solar energy capacity has surged by 2300%, with solar energy costs dropping by 70-80% since 2014. Through initiatives like the Pradhan Mantri Surya Ghar Yojana, the nation is now benefiting from renewable energy sources, marking a significant step toward a sustainable future.

Many major nations, still recovering from events like COVID-19 pandemic and Russia-Ukraine war, are grappling with economic difficulties. However, thanks to the PM's diplomatic prowess and financial expertise, India has not only navigated these tough times but has emerged as the world's fifth-largest economy. The moment is fast approaching when India will rise to become the third-largest economic superpower.

The International Monetary Fund (IMF) has recognized India as the fastest-growing economy in its latest global growth projections. Today, the world views India as an attractive investment destination. UP has been one of the biggest beneficiaries of this surge in economic interest.

‘Semicon India' conference held in UP last week marked the formal launch of India's journey to becoming a global hub for semiconductor manufacturing. From the Red Fort, the PM had declared, "My dream is for every device in the world to have a chip made in India". The country is committed to establishing itself as a semiconductor powerhouse.

With the PM "silicon diplomacy", India is poised to become a global leader in semiconductor production.

It is a divine coincidence that the birth anniversary of Devshilpi Bhagwan Vishwakarma coincides with the birthday of our PM. Today, India is crafting a glorious present on the foundation of future aspirations, taking on the role of a global leader, with PM Modi as the visionary architect of this ‘Amrit Nav Nirman'. We are confident that his resolve to build a ‘developed and self-reliant new India' will be realized through people's participation.

(The writer is Yogi Adityanath, the Chief Minister of Uttar Pradesh. Views expressed are personal)