প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার মিউনিখ থেকে দেশে ফেরার সময় আবুধাবীতে সংক্ষিপ্ত্ সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি করেন। তিনি সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর রাষ্ট্রপতি এবং আবুধাবীর শাসক শেখ মোহামেদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ২০১৯ সালের অগাস্ট মাসে প্রধানমন্ত্রীর আবুধাবী সফরের পর এই প্রথম তাঁদের মুখোমুখী বৈঠক।
সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ান গত মাসে প্রয়াত হন। প্রধানমন্ত্রী্র এবারের সফরের মূল উদ্দেশ্য প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির প্রয়াণে ব্যক্তিগত শোক জ্ঞাপন করা। তিনি শেখ মোহামেদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান, সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শেখ তাহনাউন বিন জায়েদ আল নাহিয়ান, উপ-প্রধানমন্ত্রী শেখ মনসুর বিন জায়েদ আল নাহিয়ান, আবুধাবী বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর শেখ হামিদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান, বিদেশ ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা মন্ত্রী শেখ আব্দুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান সহ অন্যান্যদের প্রতি তাঁর আন্তরিক শোক প্রকাশ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর তৃতীয় রাষ্ট্রপতি এবং আবুধাবীর শাসক হিসাবে নির্বাচিত হওয়ায় শেখ মোহামেদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান-কে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
উভয় নেতা ভারত – সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর সর্বাঙ্গীন কৌশলগত অংশীদারিত্বের বিভিন্ন দিক নিয়ে পর্যালোচনা করেছেন। গত কয়েক বছর ধরে তাঁরা এই অংশীদারিত্বের বিষয়ে কাজ করে চলেছেন। এর আগে ১৮ই ফেব্রুয়ারি উভয় দেশ সর্বাঙ্গীন অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে স্বাক্ষর করে, যা পয়লা মে থেকে কার্যকর হয়েছে। এই চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার ফলে দুটি দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে উভয় দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল প্রায় ৭ হাজার ২০০ কোটি মার্কিন ডলার। ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার সংযুক্ত আরব আমিরশাহী ভারতীয় পণ্য রপ্তানী ক্ষেত্রে দ্বিতীয় বৃহত্তম গন্তব্য। গত কয়েক বছর ধরে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর বিভিন্ন সংস্থা ভারতে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ করছে। বর্তমানে এর পরিমাণ ১ হাজার ২০০ কোটি মার্কিন ডলার।
ভার্চ্যুয়াল বৈঠকের সময় উভয় নেতা একটি পরিকল্পনা সম্বলিত বিবৃতি প্রকাশ করেন, যাতে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানী সহ সব ধরনের জ্বালানী, খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, প্রতিরক্ষা, দক্ষতা, শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং দুটি দেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ সহ বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতার কথা উল্লেখ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে অংশীদারিত্বের বিষয়ে উভয় নেতা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন - তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব ও দুটি দেশের মানুষের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্কের কারণেই যা বাস্তবায়িত হয়েছে। ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর মধ্যে জ্বালানী ক্ষেত্রে শক্তিশালী অংশীদারিত্ব রয়েছে। বর্তমানে পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানী ক্ষেত্রকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী কোভিডকালে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে বসবাসরত ৩৫ লক্ষ ভারতীয়র প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়ায় আবুধাবীর শাসক শেখ মোহামেদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান-কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি তাঁকে শীঘ্র ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানান।