আমার প্রিয় দেশবাসী, নমস্কার!
‘মন কি বাত’ শুরু করতে গিয়ে আজ আমার মন ভারাক্রান্ত। দশ দিন আগে, ভারতমাতা তাঁর বীর সুসন্তানদের হারিয়েছেন। এই সাহসী বীরেরা আমাদের একশো কোটি ভারতবাসীকে রক্ষা করতে আত্মবলিদান করেছেন। দেশবাসী যাতে নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারেন সেদিকে খেয়াল রেখে এইসব বীর সুসন্তানরা দিন-রাত এক করে সজাগ দৃষ্টি রেখে চলতো। পুলওয়ামাতে সন্ত্রাসবাদীদের আক্রমণে বীর জওয়ানদের শহিদ হওয়ার পর সারা দেশের মানুষের মনেই আঘাত ও আক্রোশ জন্মেছে। শহিদের এবং তাঁদের পরিবারের প্রতি চারিদিক থেকে সমবেদনার বার্তা আসছে। এই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যে আবেগ আমার মনে জাগছে, সেই আবেগ প্রত্যেক দেশবাসীর অন্তরে আছে এবং মানবতায় বিশ্বাস করেন যাঁরা, সারা বিশ্বে মানবতাবাদী মানুষের মধ্যেও আছে। ভারতমাতাকে রক্ষা করার কাজে নিজের প্রাণ বলিদান দিচ্ছেন যাঁরা, দেশের সেই সব বীর, সুসন্তানদের প্রণাম জানাই। এই শহিদ হওয়া, সন্ত্রাসকে সমূলে উৎপাটিত করার জন্য আমাদের নিরন্তর উৎসাহিত করবে, আমাদের সঙ্কল্পকে আরও শক্ত করবে। দেশের সামনে উপস্থিত এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার জন্য আমাদের সবাইকে জাতপাত, সাম্প্রদায়িকতা, আঞ্চলিকতাবাদ এবং বাকি সব মতানৈক্য ভুলে যেতে হবে, যাতে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমরা আগের চাইতে আরও দৃঢ়, শক্তিশালী এবং ফলপ্রসূ পদক্ষেপ নিতে পারি।
আমাদের সশস্ত্র সেনা অদম্য সাহসের পরিচয় দিয়ে থাকে। দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য তাঁরা অত্যাশ্চর্য ক্ষমতা দেখিয়েছেন এবং সন্ত্রাসবাদীদের তাদের ভাষাতেই জবাব দিয়েছেন।
আপনারা দেখেছেন যে সন্ত্রাসের ১০০ ঘণ্টার ভিতরেই কীরকম পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সেনারা সন্ত্রাসবাদীদের এবং তাদের মদতকারীদের কীভাবে সমূলে ধ্বংস করা যায় তার সঙ্কল্প নিয়েছে।
বীর সৈনিকদের শহিদ হয়ে যাওয়ার পর, মিডিয়ার মাধ্যমে তাঁদের পরিজনদের প্রেরণাদায়ক বার্তা সামনে এসেছিল, যা কিনা সমগ্র দেশের মানুষের মধ্যে অতীব সাহস, উৎসাহ এবং শক্তির প্রেরণা জাগিয়ে থাকে।
বিহারের ভাগলপুরে শহিদ রতন ঠাকুরের পিতা রামনিরঞ্জনজী এই দুঃখের সময়েও উদ্দীপনার সঙ্গে দৃঢ় সঙ্কল্পের যে পরিচয় দিয়েছেন তা আমাদের সকলকে প্রেরণা জোগায়। তিনি বললেন যে ওঁর অন্য পুত্রকেও দেশের শত্রুদের সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য পাঠাবেন এবং প্রয়োজন হলে নিজেও লড়াইয়ের ময়দানে উপস্থিত হবেন।
ওড়িশার জগৎসিংহপুরের শহিদ প্রসন্না সাহুর পত্নী মীনাজীর অদম্য সাহসকে সমগ্র দেশ কুর্ণিশ জানাচ্ছে। তিনি তাঁর একমাত্র পুত্রকে CRPF-এ যোগদান করানোর সংকল্প নিয়েছেন। যখন জাতীয় পতাকায় ঢাকা শহিদ বিজয় সোরেনের মৃতদেহ ঝাড়খণ্ডের গুমলায় পৌঁছায়, সেই সময় তাঁর ছোট ছেলে বলে ওঠে যে সেও সেনাবাহিনিতে যোগ দেবে।
এই নিষ্পাপ শিশুর উৎসাহের সঙ্গে এই দৃঢ় সঙ্কল্প, ভাবনা আজ ভারতবর্ষের ছোট ছোট সন্তানদের ভাবনাকে প্রকাশ করে। এই ভাবনাই আমাদের বীর, সাহসী শহিদদের ঘরে ঘরে দেখতে পাওয়া যায়। একটিও বীর শহিদ এবং তাঁদের পরিবার এর ব্যতিক্রম নয় — সেটা দেবরিয়ার শহিদ বিজয় মৌর্যর পরিবার হোক বা কাংড়ার শহিদ তিলকরাজের পিতা-মাতা, বা কোটার শহিদ হেমরাজের ছ’বছরের পুত্রও হতে পারে। শহিদদের পরিবারের কাহিনিগুলি প্রেরণায় ভরপুর। আমি যুব সম্প্রদায়কে এই অনুরোধ করবো যে, এইসব পরিবার উৎসাহের সঙ্গে যে দৃঢ় সঙ্কল্প দেখিয়েছে তাঁদের যে সব ভাবনা প্রকাশ করেছেন, সেই সমস্ত জানার এবং বোঝার চেষ্টা করুন। দেশভক্তি কি? ত্যাগ, তপস্যা কাকে বলে — এই বিষয়ে জানার জন্য ইতিহাসে পুরনো ঘটনা জানার প্রয়োজন হয় না। আমাদের চোখের সামনে যে জীবন্ত বাস্তব দৃষ্টান্তগুলি আছে সেগুলি ভবিষ্যতে উজ্জ্বল ভারত গঠনের প্রেরণার কারণ।
আমার প্রিয় দেশবাসী, স্বাধীনতার এত দীর্ঘসময়ে আমাদের সকলের যে ‘War Memorial’-এর অপেক্ষা ছিল, তা এখন সমাপ্ত হতে চলেছে। এই বিষয়ে দেশবাসীর অনেক প্রশ্ন, অনুসন্ধিৎসা থাকা খুবই স্বাভাবিক। ‘নরেন্দ্র মোদী অ্যাপ’-এ ওড়ুপী, কর্ণাটকের শ্রী ওঙ্কার শেট্টিজী ন্যাশনাল ওয়্যার মেমোরিয়াল তৈরি হওয়ায় নিজের প্রসন্নতা ব্যক্ত করেছেন। আমি অবাক হয়ে যেতাম এবং ব্যথিতও হয়েছি যে ভারতে কোনো ন্যাশনাল ওয়্যার মেমোরিয়াল ছিল না। এটা এমন এক মেমোরিয়াল যা দেশকে রক্ষার জন্য যাঁরা প্রাণ উৎসর্গ করেছেন, সেই বীর জওয়ানদের বীরত্বের গল্পগুলি সযত্নে রাখা যায়। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, আমাদের দেশে এরকম একটি স্মারক হওয়া অবশ্যই প্রয়োজন।
আমার প্রিয় দেশবাসী, আমাদের দেশের পূর্ব প্রধানমন্ত্রী মোরারজীভাই দেশাইয়ের জন্ম হয়েছিল২৯-শে ফেব্রুয়ারি। আপনারা সকলে এও জানেন যে ঐ বিশেষ দিনটি ৪ বছরে একবারই আসে। সহজ, শান্তিপূর্ণ ব্যক্তিত্বে বলীয়ান, মোরারজীভাই এই দেশের সবচেয়ে নিষ্ঠাবান নেতাদের অন্যতম ছিলেন। আমাদের এই স্বতন্ত্র ভারতে, সংসদে সবচেয়ে বেশিবার বাজেট পেশ করার রেকর্ড মোরারজী ভাই দেশাইয়ের নামেইরয়েছে। সেদিনের ঐ কঠিন সময়ে মোরারজী দেশাই ভারতকে সঠিক নেতৃত্ব দান করেন, যখন কিনা দেশের গণতন্ত্র এক সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় ছিল। আর এরজন্যই আমাদের আগামী প্রজন্ম তাঁর কাছে ঋণী থাকবে। মোরারজীভাই দেশাই এই গণতন্ত্রকে রক্ষা করতেই, ‘জরুরী অবস্থা’র বিরুদ্ধে আন্দোলনে নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন। আর এর জন্য বার্ধক্যে এসেও তাঁকে অনেক মূল্য দিতে হয়েছিল। সেদিনের সরকার তাঁকে গ্রেফতার করে কারাগারে নিক্ষেপ করে। কিন্তু, ১৯৭৭-এ যখন জনতা পার্টি ভোটে জেতে, তখন তিনি আমাদের প্রধানমন্ত্রী হন। তাঁর প্রধানমন্ত্রীত্বের সময়কালেই ৪৪-তম সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়। ঘটনাটা এই কারণেই খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ‘জরুরী অবস্থা’র জন্য ৪২-তম সংশোধনের প্রস্তাব করা হয় — যেখানে সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতাকে খর্ব করার এবং আরও কিছু প্রস্তাবও সেখানে ছিল যাতে আমাদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধও খর্ব হত — সেগুলি কার্যকরী না করে ফেরৎ পাঠানো হয়। যেমন ৪৪-তম সংশোধনী প্রস্তাবের কারণে সংসদ ও বিধানসভার যাবতীয় কাজকর্মের খবর সংবাদপত্রে প্রকাশের সুযোগ করে দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি, সুপ্রিমকোর্টের কিছু কিছু ক্ষমতা বহাল রাখা হয়। এই সংশোধনী প্রস্তাবে রাখা হয় যে, সংবিধানের ২০ এবং ২১ নং অনুচ্ছেদ মিলে নাগরিকের মৌলিক অধিকারগুলিও যেন ‘জরুরী অবস্থা’র কারণে কোনোভাবেই কেড়ে নেওয়া না হয়। এই প্রথমবার এরকম বন্দোবস্ত হল যে মন্ত্রীসভার লিখিত ঐক্যমত্যের ভিত্তিতেই রাষ্ট্রপতি দেশে ‘জরুরী অবস্থা’ ঘোষণা করতে পারবেন। সেইসঙ্গে এও বলা হল যে এই ‘জরুরী অবস্থা’র মেয়াদ এককালীন ছ’মাসের বেশি বাড়ানো যাবে না। এইভাবে মোরারজীভাই সুনিশ্চিত করলেন যে — ১৯৭৫ সালে যে ভাবে ‘জরুরী অবস্থা’ ঘোষণা করে দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছিল — তা যেন আর আগামী দিনে ফিরে না আসে। ভারতীয় গণতন্ত্রের মাহাত্ম্য ও মর্যাদাকে অক্ষুণ্ণ রাখতে তাঁর এই অবদান — আগামীপ্রজন্মও সর্বদাই সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করবে। আজ আর একবার এই মহান নেতাকে আমি আমার শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণ করছি।
আমার প্রিয় দেশবাসী, প্রত্যেক বছরের মতই এবারও ‘পদ্ম’ পুরস্কার নিয়ে মানুষের মনে খুব কৌতুহল ছিল। আজ আমরা এক নতুন ভারতের দিকে এগিয়ে যেতে চলেছি। এভাবে আমরা তাঁদের সম্মানিত করতে চাই, যাঁরা প্রত্যাশাহীনভাবে একেবারে গ্রাসরুট লেভেলে নিজের নিজের কাজ করে চলেছেন। নিজের পরিশ্রমের ওপর ভরসা করে, নিজস্ব উপায়ে অন্যের জীবনে গুণগত পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছেন। আসলে তাঁরাই প্রকৃত কর্মযোগী, যাঁরা মানুষের সেবা, সমাজের সেবা এবং সর্বোপরি দেশের সেবায় একেবারে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে চলেছেন। আপনারা দেখেছেন যে, যখন ‘পদ্ম’ পুরস্কার ঘোষণা করা হয়, তখন মানুষ জানতে চান যে ইনি কে? একদিক থেকে আমি এটাকে খুব বড় সাফল্য মনে করি, কারণ তাঁরা সেই মানুষ যাদের টিভি, ম্যাগাজিন বা খবরের কাগজের প্রথম পাতায় দেখতে পাই না, এই ঝলমলে দুনিয়া থেকে অনেক দূরে কিন্তু তাঁরা এমন মানুষ—যাঁরা নিজের নামের পরোয়া না করে মাটির কাছাকাছি থেকে কাজ করায় বিশ্বাসী। “যোগঃ কর্মসু কৌশলম্” গীতার এই বার্তাকে অনুসরণ করেই তাঁরা বাঁচেন। আমি আজ এরকম কিছু মানুষের কথা আপনাদের বলতে চাই। ওড়িশার দৈতারী নায়ক-এর কথা আপনারা নিশ্চয়ই শুনেছেন। তাঁকে ‘The Cannel Man of Odisha’ এমনি বলা হয় না। দৈতারী নায়ক, নিজের গ্রামে নিজের হাতে পাহাড় কেটে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ খাল বানিয়েছেন। নিজ পরিশ্রমে সেচ এবং পানীয় জলের সমস্যা চিরতরে মিটিয়েছেন। গুজরাটের আব্দুল গফুর খাতড়িজীর কথাই ধরন, তিনি কচ্ছের ঐতিহ্যবাহী রোগন শিল্পকলাকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য আশ্চর্যজনক কাজ করেছেন। তিনি এই দুর্লভ শিল্পকে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে এক অসাধারণ কাজ করেছেন। আব্দুল গফুরের বানানো ‘Tree of Life’ আমি আমেরিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামাকে উপহার দিয়েছিলাম। ‘পদ্ম’ পুরস্কার প্রাপকদের মধ্যে মারাঠওয়াড়ার সাব্বির সঈদকে ‘গোমাতার সেবক’ হিসেবে সবাই জানে। তিনি যেভাবে নিজের সমস্ত জীবন গোমাতার সেবায় সঁপে দিয়েছেন — তাতে তিনি অনন্য। মাদুরাই চিন্না পিল্লাই, সেই বিশিষ্ট মানুষ, যিনি তামিলনাড়ুতে ‘কলঞ্জিয়ম আন্দোলন’-এর মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত এবং শোষিতদের শক্তিশালী ও স্বনির্ভর করার চেষ্টা করেছেন। একইসঙ্গে তাদের জন্য সমবায় ভিত্তিক ক্ষুদ্র অর্থব্যবস্থা শুরু করেন। আমেরিকার Tao Porchon Lynch-এর কথা শুনে আপনারা আশ্চর্য হয়ে যাবেন। Lynch এক চলমান যোগা-প্রতিষ্ঠান। তিনি একশ বছর বয়সেও বিশ্বজুড়ে সব মানুষকে যোগ ব্যায়ামের প্রশিক্ষণ দিয়ে চলেছেন এবং এখন পর্যন্ত ১৫০০ জন যোগা শিক্ষক তৈরি করেছেন।
ঝাড়খণ্ডের বিখ্যাত ‘Lady Tarzan’ হিসেবে খ্যাত যমুনা টুডু, গাছপাচারকারী মাফিয়া ও নকশালদের মোকাবিলা করার মত সাহসী কাজ করে তিনি শুধু ৫০ হেক্টর জঙ্গল উজাড় হয়ে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচাননি, উপরন্তু দশ হাজার মহিলাকে একজোট করে গাছ ও বন্যপ্রাণীদের সুরক্ষার জন্য পাঠিয়েছেন। যমুনাজীর এই পরিশ্রমের সুফল হিসেবে আজ গ্রামের মানুষ প্রতিটি শিশুর জন্মের সময় ১৮টি করে এবং প্রতিটি মেয়ের বিয়ের সময় ১০টি করে গাছ লাগান।
গুজরাটের মুক্তা বেন পঙ্কজ কুমার দগলীর কাহিনি শুনলে আপনারা অনুপ্রাণিত হবেন। নিজে দিব্যাঙ্গ হয়েও দিব্যাঙ্গ মহিলাদের উন্নয়নের জন্য তিনি যেভাবে কাজ করেছেন — তেমন উদাহরণ বিরল। ‘চক্ষু মহিলা সেবাকুঞ্জ’ নামক সংস্থা তৈরি করে দৃষ্টিহীন শিশুদের স্বনির্ভর করে তোলার পুণ্যকাজে তিনি নিজেকে উৎসর্গ করেছেন।
বিহারের মজঃফরপুরের ‘কিষাণচাচী’ রাজকুমারী দেবীর কাহিনি খুবই প্রেরণাদায়ক। নারীদের ক্ষমতায়ন এবং কৃষিকে লাভজনক করে তোলার লক্ষ্যে তিনি এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। কিষাণচাচী নিজের এলাকায় ৩০০ মহিলাকে নিয়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়ে তোলেন এবং অর্থনৈতিকভাবে তাদের স্বনির্ভরও করে তুলেছেন। তিনি গ্রামের মহিলাদের চাষবাসের পাশাপাশি স্বনির্ভর হওয়ার নানান প্রশিক্ষণ দেন। আসল কথা এই যে, তিনি চাষবাসের সঙ্গে কারিগরি বিদ্যা প্রয়োগের কাজটিও করেছেন।
আমার প্রিয় দেশবাসী, এই বোধহয় প্রথমবার এমন হল যে এই বছর যাঁদের ‘পদ্ম’ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ১২ জন কৃষক রয়েছেন। সাধারণত কৃষিক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত খুব কম মানুষ এবং সরাসরি যাঁরা কৃষক তাঁদের মধ্যে খুব স্বল্পজনই ‘পদ্মশ্রী’ প্রাপকদের তালিকায় আসেন। আর এটাই হল বদলে যাওয়া ভারতের জীবন্ত ছবি।
আমার প্রিয় দেশবাসী, আমি আজ আপনাদের সকলের সঙ্গে এক হৃদয়স্পর্শী অনুভবের কথা জানাব, কথাটা গত কয়েকদিন ধরে আমি নিজে উপলব্ধি করেছি। আজকাল আমি দেশের যে অঞ্চলেই যাই, ‘আয়ুষ্মান ভারত’ যোজনা — ‘PM-JYA’ তথা ‘PM জন আরোগ্য যোজনা’য় উপকৃত মানুষের সঙ্গে দেখা করতে চাই। এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথাবার্তা বলার সুযোগ হয়েছিল। একজন সহায়সম্বলহীন মা তাঁর ছোট বাচ্চার চিকিৎসা করাতে পারছিলেন না। এই যোজনার সাহায্য নিয়ে তার বাচ্চাকে চিকিৎসা করিয়েছেন এবং সে সুস্থ হয়ে উঠেছে। দিনভর খাটাখাটনির উপার্জনে সংসারের ভার সামলানো পরিবারের প্রধান মানুষটি অ্যাক্সিডেণ্টে পঙ্গু হয়ে গিয়েছিলেন, কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন। এই যোজনার সাহায্য নিয়ে চিকিৎসা করিয়ে এখন নতুন জীবন লাভ করেছেন।
ভাই ও বোনেরা, গত পাঁচ মাসে প্রায় বারো লক্ষ দরিদ্র পরিবার এই যোজনার সুযোগ নিয়েছেন। আমি বুঝতে পারছি, দরিদ্র মানুষের জীবনে এর ফলে কত বড় পরিবর্তন এসেছে। আপনারা যদি কোনো দরিদ্র মানুষকে জানেন, যিনি অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না, তাঁদের এই যোজনা সম্পর্কে জানান। এই যোজনা এইসব দরিদ্র জনসাধারণের উপকারের জন্যই চালু করা হয়েছে।
আমার প্রিয় ভাই বোনেরা স্কুলে স্কুলে পরীক্ষা শুরু হতে যাচ্ছে। সারা দেশের বিভিন্ন শিক্ষা সংসদদশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি শুরু করবে। পরীক্ষার্থীদের, তাদের অভিভাবক ও শিক্ষকদের সকলকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা।
কিছুদিন আগে দিল্লিতে ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ এই কার্যক্রমে টাউন হল ফরম্যাটে এক বিপুল আয়োজন হয়েছিল। এই টাউন হল কার্যক্রমে টেকনলোজির সাহায্যে দেশ-বিদেশের কয়েক কোটি ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে,তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে,টিচারদের সঙ্গে কথা বলার অবকাশ হয়েছিল। ‘পরীক্ষা পে চর্চা’র একটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পরীক্ষা সংক্রান্ত নানান বিষয় নিয়ে এখানে আলোচনা করা যায়। এমন কিছু না কিছু বিষয়চলে আসে যে তা সব পরীক্ষার্থীদের কাছেই অত্যন্ত কার্যকরী হয়ে উঠতে পারে। সমস্ত বিদ্যার্থী, তাদের শিক্ষক, পিতা-মাতা ইউটিউবে এই কার্যক্রমের রেকর্ডিং দেখতে পারেন, আসন্ন পরীক্ষা-যোদ্ধাদের ওসংশ্লিষ্ট সকলকে আমার আগাম শুভকামনা জানালাম।
আমার প্রিয় দেশবাসী, ভারতের কথা হবে আর তার পুজোপার্বণের কথা হবে না তা তো হয় না। সম্ভবত আমাদের দেশে হেন দিন নেই যেদিনের সঙ্গে কোনও না কোনো উৎসব বা পার্বণ জুড়ে নেই বা কোনও বিশিষ্ট তাৎপর্য নেই, কারণ আমাদের সঙ্গে রয়েছে হাজার বছরের পুরনো ঐতিহ্য। আর কয়েকদিনের মধ্যে মহাশিবরাত্রি আসছে এবং এবার শিবরাত্রি সোমবার পড়েছে। সোমবার এবং শিবরাত্রি একসঙ্গে পড়ে গেলে আমাদের মন বিশেষ পবিত্র ভাবনায় ও ভক্তিতে ভরে ওঠে। শিবরাত্রি পার্বণ উপলক্ষে সব্বাইকে আমার অনেক অনেক শুভকামনা!
আমার প্রিয় দেশবাসী কিছুদিন আগে আমি কাশীগিয়েছিলাম। ওখানে আমার দিব্যাঙ্গ
ভাই-বোনেদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ হয়েছিল। তাঁদের নানান ভাবনা-চিন্তা নিয়ে আলোচনা হল আর সেগুলো আমাদের অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী করে তোলে,অনুপ্রাণিত করে। সেই আলোচনায় একজন দৃষ্টিতে অন্য ভাবে সক্ষমতরুণের সঙ্গে কথা বললাম,তিনি জানালেন,“আমিস্টেজ আর্টিস্ট। বিভিন্ন মনোরঞ্জনী ওবিনোদন অনুষ্ঠানে আমি মিমিক্রি করি।”তখন আমি জানতে চাইলাম কাদের মিমিক্রি করেন আপনি। তিনি জানালেন “আমিপ্রধানমন্ত্রীর মিমিক্রি করি।” তখন আগ্রহী হলাম, দেখাতে বললাম কেমন সে মিমিক্রি। অত্যন্তআশ্চর্য হয়ে গেলাম, মজাও লাগলো উনি ‘মন কি বাত’-এ আমি যেভাবেকথা বলি তার মিমিক্রি করলেনএবং ‘মন কি বাত’-এরই মিমিক্রি করে শোনালেন। আমার এটা শুনেভালো লাগল যে মানুষ শুধু আমার ‘মন কি বাত’শোনেই না তা মনে রাখে, ‘মন কি বাত’নিয়ে চর্চাও করে। এ কথা মেনে নিতেই হবে এই দিব্যাঙ্গতরুণের ক্ষমতায়আমি অত্যন্ত প্রভাবিত হয়েছি।
আমার প্রিয় দেশবাসী, ‘মন কি বাত’ কার্যক্রমের মাধ্যমে আপনাদের সকলের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন আমার কাছে এক অনন্য অভিজ্ঞতা। রেডিওর মাধ্যমে প্রত্যেক মাসে কোটি কোটি পরিবারের সঙ্গে আমি মুখোমুখি হই। আত্মীয় হয়ে উঠেছি। অনেক সময় আপনাদের চিঠি পড়তে পড়তে, আপনাদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে, বা ফোনে পাঠানো আপনাদের নানান কথা, পরামর্শ শুনতে শুনতে মনে হয়েছে আমাকে আপনারা আপনাদের পরিবারেরই একজন করে নিয়েছেন। এ আমার এক অত্যন্ত খুশির অনুভব।
বন্ধুগণ নির্বাচন গণতন্ত্রের সব থেকে বড় উৎসব। আগামী দু’মাস আমরা নির্বাচন নিয়ে বিভিন্নভাবে ব্যস্ত থাকব। আমি নিজে এই নির্বাচনে একজন প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াব। সুস্থ গণতন্ত্রের নিয়ম মেনে এর পরের ‘মন কি বাত’ আগামী মে মাসের শেষ রবিবারেই হবে অর্থাৎ, এই মার্চ, এপ্রিল ও মে — এই তিন মাসের যত ভাবনাচিন্তা আছে, নির্বাচনের পর আপনাদের শুভেচ্ছা ও বিশ্বাসের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে আপনাদের আশীর্বাদ নিয়ে আবার আমাদের ‘মন কি বাত’-এর মাধ্যমে আমাদের এই কথাবার্তার প্রক্রিয়া আবার শুরু করব এবং আগামী বহু বছর ধরে ‘মন কি বাত’ বলতেই থাকব।
আপনাদের সবাইকে আরেকবার অনেক অনেক ধন্যবাদ!
पुलवामा के आतंकी हमले में, वीर जवानों की शहादत के बाद देश-भर में लोगों को, और लोगों के मन में, आघात और आक्रोश है: PM#MannKiBaat pic.twitter.com/72l5s74OuO
— PMO India (@PMOIndia) February 24, 2019
वीर सैनिकों की शहादत के बाद, उनके परिजनों की जो प्रेरणादायी बातें सामने आयी हैं उसने पूरे देश के हौंसले को और बल दिया है | बिहार के भागलपुर के शहीद रतन ठाकुर के पिता रामनिरंजन जी ने, दुःख की इस घड़ी में भी जिस ज़ज्बे का परिचय दिया है, वह हम सबको प्रेरित करता है : PM
— PMO India (@PMOIndia) February 24, 2019
जब तिरंगे में लिपटे शहीद विजय शोरेन का शव झारखण्ड के गुमला पहुँचा तो मासूम बेटे ने यही कहा कि मैं भी फौज़ में जाऊँगा | इस मासूम का जज़्बा आज भारतवर्ष के बच्चे-बच्चे की भावना को व्यक्त करता है | ऐसी ही भावनाएँ, हमारे वीर, पराक्रमी शहीदों के घर-घर में देखने को मिल रही हैं : PM
— PMO India (@PMOIndia) February 24, 2019
हमारा एक भी वीर शहीद इसमें अपवाद नहीं है, उनका परिवार अपवाद नहीं है | चाहे वो देवरिया के शहीद विजय मौर्य का परिवार हो, कांगड़ा के शहीद तिलकराज के माता-पिता हों या फिर कोटा के शहीद हेमराज का छः साल का बेटा हो – शहीदों के हर परिवार की कहानी, प्रेरणा से भरी हुई हैं: PM
— PMO India (@PMOIndia) February 24, 2019
मैं युवा-पीढ़ी से अनुरोध करूँगा कि वो, इन परिवारों ने जो जज़्बा दिखाया है, जो भावना दिखायी है उसको जानें, समझने का प्रयास करें | देशभक्ति क्या होती है, त्याग-तपस्या क्या होती है – उसके लिए हमें इतिहास की पुरानी घटनाओं की ओर जाने की जरुरत नहीं पड़ेगी : PM
— PMO India (@PMOIndia) February 24, 2019
मुझे आश्चर्य भी होता था और पीड़ा भी कि भारत में कोई National War Memorial नहीं था | एक ऐसा मेमोरियल, जहाँ राष्ट्र की रक्षा के लिए अपने प्राण न्योछावर करने वाले वीर जवानों की शौर्य-गाथाओं को संजो कर रखा जा सके | मैंने निश्चय किया कि देश में, एक ऐसा स्मारक अवश्य होना चाहिये: PM pic.twitter.com/03B3gs8iO8
— PMO India (@PMOIndia) February 24, 2019
आज, अगर हमारे नौजवानों को मार्गदर्शन के लिए किसी प्रेरणादायी व्यक्तित्व की जरुरत है तो वह है भगवान ‘बिरसा मुंडा’: PM#MannKiBaat pic.twitter.com/mDQPW1RUaq
— PMO India (@PMOIndia) February 24, 2019
जमशेदजी टाटा सही मायने में एक दूरदृष्टा थे, जिन्होंने ना केवल भारत के भविष्य को देखा बल्कि उसकी मजबूत नींव भी रखी: PM#MannKiBaat pic.twitter.com/Cmd0eAv8fY
— PMO India (@PMOIndia) February 24, 2019
हमारे देश के पूर्व प्रधानमंत्री मोरारजी भाई देसाई का जन्म 29 फरवरी को हुआ था | सहज, शांतिपूर्ण व्यक्तित्व के धनी, मोरारजी भाई देश के सबसे अनुशासित नेताओं में से थे: PM pic.twitter.com/9h7hMZOgbB
— PMO India (@PMOIndia) February 24, 2019
मोरारजी भाई देसाई के कार्यकाल के दौरान ही 44वाँ संविधान संशोधन लाया गया |
— PMO India (@PMOIndia) February 24, 2019
यह महत्वपूर्ण इसलिए है क्योंकि emergency के दौरान जो 42वाँ संशोधन लाया गया था, जिसमें सुप्रीमकोर्ट की शक्तियों को कम करने और दूसरे ऐसे प्रावधान थे, उनको वापिस किया गया: PM#MannKiBaat pic.twitter.com/UvbjjIRtBz
हर साल की तरह इस बार भी पद्म अवार्ड को लेकर लोगों में बड़ी उत्सुकता थी | आज हम एक न्यू इंडिया की ओर अग्रसर हैं | इसमें हम उन लोगों का सम्मान करना चाहते हैं जो grass-root level पर अपना काम निष्काम भाव से कर रहे हैं: PM#MannKiBaat pic.twitter.com/7rpJW0vngB
— PMO India (@PMOIndia) February 24, 2019
मैं आज आप सब के साथ एक ऐसे दिल को छूने वाले अनुभव के बारे में बात करना चाहता हूँ जो पिछले कुछ दिनों से मैं महसूस कर रहा हूँ: PM#MannKiBaat pic.twitter.com/IuxZzz7MUl
— PMO India (@PMOIndia) February 24, 2019
मुझे ये सुनकर बहुत अच्छा लगा कि लोग न सिर्फ ‘मन की बात’ सुनते हैं बल्कि उसे कई अवसरों पर याद भी करते हैं: PM#MannKiBaat pic.twitter.com/DOgBUtCM13
— PMO India (@PMOIndia) February 24, 2019
अगले दो महीने, हम सभी चुनाव की गहमा-गहमी में व्यस्त होगें | मैं स्वयं भी इस चुनाव में एक प्रत्याशी रहूँगा |
— PMO India (@PMOIndia) February 24, 2019
स्वस्थ लोकतांत्रिक परंपरा का सम्मान करते हुए अगली ‘मन की बात’ मई महीने के आखरी रविवार को होगी: PM#MannKiBaat
मार्च, अप्रैल और पूरा मई; ये तीन महीने की सारी हमारी जो भावनाएँ हैं उन सबको मैं चुनाव के बाद एक नए विश्वास के साथ आपके आशीर्वाद की ताकत के साथ फिर एक बार ‘मन की बात’ के माध्यम से हमारी बातचीत के सिलसिले का आरम्भ करूँगा और सालों तक आपसे ‘मन की बात’ करता रहूँगा: PM#MannKiBaat
— PMO India (@PMOIndia) February 24, 2019