#MannKiBaat দেশ ও সমাজের কাছে একটি দর্পণের মতো। এ আমাদের বলে দেয় দেশবাসীর মধ্যে আন্তরিক শক্তি, সামর্থ্য ও প্রতিভার কোনো অভাব নেই: প্রধানমন্ত্রী
#MannKiBaat-এ আমার কাছে প্রচুর চিঠিপত্র আসে, অসংখ্য ফোন আসে, অনেক বার্তা আসে কিন্তু অভিযোগের মাত্রা থাকে খুব কম: প্রধানমন্ত্রী মোদী
জরুরি অবস্থার সময় গণতান্ত্রিক অধিকার লুণ্ঠিত হয়েছিল: প্রধানমন্ত্রী #MannKiBaat
গণতন্ত্র আমাদের সংস্কার, আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের ঐতিহ্য, এবং এই ঐতিহ্যকে নিয়েই আমরা বড়ো হয়েছি: #MannKiBaat অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী
যতজন ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন, সেই সংখ্যা আমেরিকার মোট জনসংখ্যার চেয়ে বেশি, প্রায় দ্বিগুণ। ভারতের মোট ভোটদাতার সংখ্যা গোটা ইউরোপের জনসংখ্যার চেয়ে বেশি: প্রধানমন্ত্রী #MannKiBaat
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচন এখনও পর্যন্ত ইতিহাসে পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহৎ গণতান্ত্রিক নির্বাচন: প্রধানমন্ত্রী মোদী #MannKiBaat
সকলের চেষ্টায় বড়ো ইতিবাচক পরিণাম লাভ করা সম্ভব: #MannKiBaat অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী
আমরা একসঙ্গে কঠোর পরিশ্রম করে সবচেয়ে কঠিন কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারি: জন জন জুড়েগা, জল বাচেগা: প্রধানমন্ত্রী মোদী #MannKiBaat
আসুন স্বচ্ছতার মতো জল সংরক্ষণের জন্য একটি গণ আন্দোলনের শুভারম্ভ করি: প্রধানমন্ত্রী মোদী #MannKiBaat
#MannKiBaat: প্রধানমন্ত্রী মোদী সিনেমা জগত, মিডিয়া এবং সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের প্রতি জল সংরক্ষণের জন্য ইনোভেটিভ ক্যাম্পেইনের নেতৃত্ব প্রদানের আহ্বান জানিয়েছেন
২১ জুন সক্রিয়তার সঙ্গে যোগ দিবস পালন করা হয়েছে: #MannKiBaat অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী
একটা সুস্থ সমাজ গড়তে, সুস্থ ও সংবেদনশীল মানুষের প্রয়োজন: #MannKiBaat অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী

আমার প্রিয় দেশবাসী, নমস্কার!এক দীর্ঘ ব্যবধানের পর আবারো একবার আপনাদের সবার সঙ্গে ‘মন কি বাত’, ‘জন কি বাত’, ‘জন-জন কি বাত’, ‘জন-মন কি বাত’-এর ধারাবাহিকতা শুরু করছি। ভোটের সরগরম দিনগুলিতে ব্যস্ততা তুঙ্গে থাকলেও ‘মন কি বাত’-এর আনন্দ হারিয়ে গিয়েছিল। একটা অভাব বোধ করছিলাম। নিজেদের মধ্যে হালকা পরিবেশে, ১৩০ কোটি দেশবাসীর একজন হয়ে কতরকম কথা শুনতাম, পুনরাবৃত্তি করতাম আর কখনও কখনও নিজেদের কথাই নিজেদের প্রেরণাস্রোত হয়ে উঠত। আপনারা কল্পনা করে নিন এই মাঝখানের সময়টুকু কীরকম গেছে। রবিবার, প্রত্যেকটি শেষ রবিবার ১১ টা বাজলেই আমার মনে হত আরে, কিছু যেন বাকি রয়ে গেল। আপনাদেরও মনে হত তো? নিশ্চয়ই মনে হত। আসলে এ যে কোন নিষ্প্রাণ অনুষ্ঠান ছিল না। এতে সজীবতা ছিল, অন্তরঙ্গতা ছিল, মন যুক্ত ছিল, হৃদয় জড়িত ছিল আর এই কারণেই মাঝখানের এই সময়টুকু খুব কঠিন মনে হয়েছে আমার। আমি প্রতিটি মুহূর্তে কিছু miss করতাম। যখন আমি ‘মন কী বাত’-এ মনের কথা বলি, তখন যদিও বলতাম আমিই, শব্দগুলিও আমার, গলার আওয়াজও আমার, কিন্তু বক্তব্য ছিল আপনাদের, পুরুষার্থ ছিল আপনাদের, পরাক্রমও ছিল আপনাদেরই। আমি তো শুধুমাত্র আমার শব্দ, আমার বাণীর প্রয়োগ করতাম। আর এই কারণেই আমি এই অনুষ্ঠানটি নয়, আপনাদের miss করতাম। এক রিক্ততা অনুভব করতাম। একবার তো মনে হল ভোট শেষ হতেই আপনাদের কাছে চলে আসি, কিন্তু পরক্ষণেই মনে হল — না, ওই রবিবারের পর্যায়ক্রমটি ধরে রাখা উচিৎ। কিন্তু এই রবিবার আমায় অনেক অপেক্ষা করিয়েছে। যাক, শেষ পর্যন্ত সুযোগও এসে গেছে। এক ঘরোয়া পরিবেশে, ‘মন কী বাত’ অর্থাৎ ছোটো ছোটো হালকা মনের কথা, যা সমাজে, জীবনে হয়ে উঠতে পারে পরিবর্তনের কারণ, তার ধারাবাহিকতা এক নতুন উদ্দীপনার জন্ম দিক আর এইভাবে নবীন ভারতের আত্মাকে বলীয়ান করে তুলে এই ধারাবাহিকতা এগিয়ে চলুক।

গত কয়েক মাস ধরে বেশ কিছু বার্তা এসেছে, যাতে লোকেরা জানিয়েছেন তাঁরা ‘মন কি বাত’ missকরছেন। যখন আমি এগুলো পড়ি, শুনি, আমার ভালো লাগে। অন্তরঙ্গতা অনুভব করি। কখনও আমার মনে হয় এ আমার একক থেকে সমষ্টির দিকে যাত্রা, ‘অহম্‌’ থেকে ‘বয়ম্‌’ অর্থাৎ ‘আমি’ থেকে ‘আমরা’–র দিকে যাত্রা। আপনাদের সঙ্গে আমার এই মৌণ আদানপ্রদান, আমার কাছে এ এক প্রকার আধ্যাত্মিক যাত্রার অনুভূত অংশ ছিল। অনেকে আমাকে এ-ও জিজ্ঞাসা করেছেন ভোটের ঐ ব্যস্ততার মধ্যে আমি কেদারনাথ কেন গিয়েছিলাম।

আপনাদের অধিকার আছে এবং আমি আপনাদের এই কৌতুহল বুঝতে পারি। আমার এ-ও মনে হয়, আমার ঐ সময়ের অবস্থার কথা কখনও আপনাদের কাছে বলি। কিন্তু আজ আমার মনে হয়, এখন যদি ঐসব কথা বলতে বসি, তবে ‘মন কি বাত’-এর স্বরূপটাই বদলে যাবে। ভোটের তুমুল ব্যস্ততা, হার-জিতের অনুমান এবং পোলিং তখনও বাকি, যখন আমি বেরিয়ে পড়েছিলাম। বেশির ভাগ মানুষই এর মধ্যে রাজনৈতিক মানে খুঁজে নিয়েছিলেন। কিন্তু আমার জন্য এ ছিল নিজের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ। বলতে পারেন আমি আমার সঙ্গে মিলিত হতে গিয়েছিলাম। আজ এর থেকে বেশি কিছু বলব না, তবে এটুকু নিশ্চয়ই বলব, ‘মন কি বাত’-এর এই ব্যবধানের জন্য যে রিক্ততা সৃষ্টি হয়েছিল, কেদারের উপত্যকায়, ঐ একান্ত গুহাটি বোধহয় তার কিছুটা হলেও পূর্ণ করার সুযোগ করে দিয়েছিল। বাকিটুকু, যা আপনারা জানতে চেয়েছেন কোনো একসময়ে সে কথাও জানাবো। কবে বলতে পারবো — জানি না, তবে নিশ্চয়ই বলব, কারণ আপনাদের অধিকার আছে আমার ওপর। যেরকম কেদারের বিষয়ে লোকেরা জানার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন, সেইরকম একটি ইতিবাচক শক্তি আপনাদের চেষ্টায়, আপনাদের কথায় আমি সর্বক্ষণ অনুভব করি।

‘মন কি বাত’-এর জন্য যে সমস্ত চিঠিপত্র আসে, যা যা input পাওয়া যায়, তা routine সরকারি কাজের থেকে একেবারেই আলাদা। বলা যেতে পারে, আপনাদের চিঠিগুলি কখনও আমাকে প্রেরণা যোগায়, আবার কখনও শক্তি প্রদান করে। কখনও কখনও তো আপনাদের কিছু কিছু শব্দ আমার চিন্তাভাবনাকে পর্যন্ত ধারালো করে তোলে। মানুষজন যেমন দেশ ও সমাজের সামনে মাথা তুলে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জের কথা বলেন, আবার সঙ্গে সঙ্গে তার সমাধানের কথাও বলেন। আমি লক্ষ্য করেছি, চিঠিতে সমস্যার বর্ণনা তো থাকেই, কিন্তু তার সঙ্গে এই বৈশিষ্ট্যও থাকে যে কোনও না কোনও সমাধান সূত্র, কিছু না কিছু পরামর্শ, কিছু কল্পনা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দেওয়া হয়। যদি কেউ স্বচ্ছতা নিয়ে লেখেন তিনি নোংরা আবর্জনা নিয়ে তাঁর বিরক্তির কথা প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে স্বচ্ছতার প্রতি এই প্রচেষ্টাকে স্বাগতও জানান। কেউ যখন পরিবেশের কথা বলেন, তখন দূষণের প্রতি কষ্ট অনুভব করার সঙ্গে সঙ্গে তিনি তাঁর নিজের চেষ্টার কথাও বলেন। যা যা উপায় অবলম্বন করা হচ্ছে, তার কথাও উল্লেখ করেন, আবার যে সমস্ত কল্পনা উনি মনে মনে এঁকে রেখেছেন পরিবেশ দূষণ রোধে, তার কথাও বলেন। অর্থাৎ সমস্যার সমাধান পুরো সমাজকে সঙ্গে নিয়ে কীভাবে সম্ভব তার এক ঝলক যেন আমি আপনাদের কথাবার্তা থেকে পাই। ‘মন কি বাত’ দেশ ও সমাজের কাছে একটি দর্পণের মতো। এ আমাদের বলে দেয় দেশবাসীর মধ্যে আন্তরিক শক্তি, সামর্থ্য ও প্রতিভার কোনো অভাব নেই। শুধু দরকার ঐ শক্তি ও প্রতিভাকে সঠিক পথে পরিচালিত করার, সুযোগ দেওয়ার, তাকে কাজে লাগানোর। ‘মন কি বাত’ এ-ও বলে দেয়, দেশের অগ্রগতিতে সমগ্র ১৩০ কোটি দেশবাসীর শক্তি ও সক্রিয়তাকে যুক্ত করতে হবে। আমি আরও একটি কথা অবশ্যই বলব যে ‘মন কি বাত’-এ আমার কাছে প্রচুর চিঠিপত্র আসে, অসংখ্য ফোন আসে, অনেক বার্তা আসে কিন্তু অভিযোগের মাত্রা থাকে খুব কম। কেউ কিছু চেয়েছেন, নিজের জন্য কিছু পাওয়ার কথা বলছেন এমনটা তো গত পাঁচবছরে একটিবারও হয়েছে বলে মনে করতে পারছি না।

আপনারা কল্পনা করতে পারেন, দেশের প্রধানমন্ত্রীকে কেউ চিঠি লিখছে কিন্তু নিজের জন্য কিছু চাইছে না? এটা দেশেরকোটি কোটি মানুষের উচ্চ চিন্তাধারার নিদর্শন। আমি যখন এই বিষয়গুলোকে খুঁটিয়ে দেখি, তখন আমার মনে কতআনন্দ হয়, কত উজ্জীবিত হই আমি সেটা আপনারা ভাবতেও পারবেন না। আপনারাই আমার চালিকাশক্তি, আমারএগিয়ে চলার পাথেয়, প্রতি মুহূর্তে আপনারা আমায় প্রাণবন্ত করে তোলেন। আপনাদের সঙ্গে আমার এইযোগাযোগকেই আমি মিস করতাম। আজ আমার মন খুশিতে ভরপুর। শেষবার যখন আমি বলেছিলাম যে আমরাআবার ৩-৪ মাস বাদে মিলিত হবো, তখন অনেকেই অনুমান করেছিল যে এর পেছনে নিশ্চই কোনো রাজনৈতিক স্বার্থআছে। কিছু লোক এ-ও বলেছিল যে মোদীজির কি কনফিডেন্স, কি আত্মবিশ্বাস! এই কনফিডেন্স মোদির ছিল না, এইবিশ্বাসের ভিত ছিল আমার ওপর আপনাদের ভরসা। আপনারাই আমার বিশ্বাসের আধার। আর তাই সহজভাবেই আমিশেষ ‘মন কি বাত’-এ ঘোষণা করেছিলাম যে কিছু মাস পর আমি আবার আপনাদের কাছে ফিরে আসব। আসলে আমিআসিনি, আপনারাই আমায় এনেছেন, আমায় অধিষ্ঠিত করেছেন, এবং আর একবার কথা বলার সুযোগ করেদিয়েছেন। এই ভাবনাকে পাথেয় করে চলুন ‘মন কি বাত’-এর ধারাবাহিকতাকে এগিয়ে নিয়ে যাই।

যখন দেশে জরুরি অবস্থা কার্যকর হয়েছিল তখন তার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুধুমাত্র রাজনৈতিক বৃত্ত, রাজনৈতিক নেতাবা কারাগারের গণ্ডি পর্যন্ত সীমিত ছিল না। প্রতিটি মানুষের মনের মধ্যে একটা চাপা ক্ষোভ ছিল, হারিয়ে যাওয়াগণতন্ত্রের জন্য প্রবল আকুতি ছিল। দিবা-রাত্র যখন সময়মতো আমরা খেতে পাই, তখন ক্ষুধার জ্বালা অনুভব করিনা।ঠিক তেমনই দৈনন্দিন জীবনে গনত্রন্ত্রের অধিকারের কী গুরুত্ব সেটা তখনই অনুভূত হয় যখন সেই অধিকার লুণ্ঠিতহয়। জরুরি অবস্থায় দেশের প্রতিটি নাগরিকের মনে হচ্ছিল যে তার থেকে কিছু ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। হয়ত সেঅধিকার সে জীবনে কোনও দিন প্রয়োগ করেনি, কিন্তু সেটাও হারানোর একটা ব্যথা তার মনে সঞ্চারিত হয়েছিল।আর এটা এই জন্য নয় যে ভারতীয় সংবিধান এমন কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিল যাতে গণতন্ত্রের শ্রীবৃদ্ধি হয়।সমাজব্যবস্থাকে সুষ্ঠভাবে চালাতে সংবিধান এবং আইনকানুনের প্রয়োজন। অধিকার এবং কর্তব্যের প্রসঙ্গও ওঠে।ভারত গর্বের সঙ্গে এ-কথা বলতে পারে যে আমাদের কাছে গণতন্ত্র সব আইনকানুনের ওপরে। গণতন্ত্র আমাদেরসংস্কার, আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের ঐতিহ্য, এবং এই ঐতিহ্যকে নিয়েই আমরা বড়ো হয়েছি। তাই এর অভাবআপামর দেশবাসী অনুভব করতে পারে, জরুরি অবস্থায় যা আমরাও অনুভব করেছিলাম। আর তাই দেশ একটা গোটানির্বাচনকে সমর্পণ করেছিল, নিজের জন্য নয় — শুধুমাত্র গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য। ১৯৭৭ সালে আমরাদেখেছিলাম কীভাবে গণতন্ত্র রক্ষার্থে নিজের অধিকার ও চাহিদাকে উপেক্ষা করে একটি সমগ্র দেশ মতাধিকার প্রয়োগকরেছিল। সম্প্রতি গণতন্ত্রের মহাপর্ব, সর্ববৃহৎ নির্বাচন প্রক্রিয়া আমাদের দেশে সম্পন্ন হল, যেখানে ধনী থেকে দরিদ্র, সবাই সানন্দে এই অভিযানে সামিল হয়ে দেশের ভবিষ্যৎ নির্ণয় করতে তৎপর হয়েছিল।

যখন কোনো বস্তু আমাদের অত্যন্ত কাছে থাকে, আমরা তার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারি না; তার অভিনব বিষয়গুলি ও অনেক সময় নজর এড়িয়ে যায়। আমাদের যে মূল্যবান গণতন্ত্র আছে, আমরা তাকে খুব সহজলভ্য মনে করে নিই। আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে যে এই গণতন্ত্র মহান, বহু বছরের সাধনা, বহু প্রজন্মের সংস্কার, এক মানসিক ব্যপ্তির ফসল এই গণতন্ত্র। ভারতে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে ৬১ কোটিরও বেশি মানুষ ভোটদান করেন, Sixty One Crore! সংখ্যাটা সামান্য মনে হতে পারে, কিন্তু গোটা দুনিয়ার নিরিখে দেখতে গেলে আমি বলব, এক চিন ছাড়া পৃথিবীর যে কোনো দেশের জনসংখ্যার থেকে বেশি মানুষ ভারতে ভোট দিয়েছেন।

যতজন ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন, সেই সংখ্যা আমেরিকার মোট জনসংখ্যার চেয়ে বেশি, প্রায় দ্বিগুণ। ভারতের মোট ভোটদাতার সংখ্যা গোটা ইউরোপের জনসংখ্যার চেয়ে বেশি। এগুলি আমাদের গণতন্ত্রের বিশালতা ও ব্যাপকতার পরিচায়ক। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচন এখনও পর্যন্ত ইতিহাসে পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহৎ গণতান্ত্রিক নির্বাচন। আপনি কল্পনা করতে পারেন — এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে কী বিপুল আয়োজন ও মানব সম্পদের প্রয়োজন হয়। লক্ষাধিক শিক্ষক, আধিকারিক ও কর্মচারিদের কঠোর পরিশ্রমের জন্য এই নির্বাচন সম্ভব হয়েছে। গণতন্ত্রের এই মহাযজ্ঞকে সাফল্যপূর্বক সম্পন্ন করতে একদিকে যেমন আধা-সামরিক বাহিনীর প্রায় তিন লক্ষ সুরক্ষাকর্মীরা নিজেদের দায়িত্ব নিষ্পন্ন করেছেন, অন্যদিকে বিভিন্ন রাজ্যের কুড়ি লক্ষ পুলিশকর্মী অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। এঁদের কঠিন পরিশ্রমের ফলস্বরূপ এইবার, গত নির্বাচনের থেকে বেশি ভোটদান হয়। এই নির্বাচন প্রক্রিয়ায় প্রায় দশ লক্ষ Polling Station, প্রায় চল্লিশ লক্ষের বেশি EVMমেশিন, ১৭ লক্ষের বেশি VVPAT মেশিনের ব্যবস্থা করা হয় — কল্পনা করতে পারছেন, কী বিশাল মাপের কর্মকাণ্ড! এইসব সুনিশ্চিত করার জন্য যে, কেউ যেন তার ভোটাধিকার প্রয়োগে বঞ্চিত না থাকেন। অরুণাচল প্রদেশের এক প্রত্যন্ত জায়গায় কেবল একজন মাত্র মহিলা ভোটদাতার জন্য Polling Station বানানো হয়। আপনারা জেনে অবাক হবেন, নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকদের ওই জায়গায় পৌঁছনোর জন্য দু’দিন ধরে যাত্রা করতে হয়েছে। এটাই তো গণতন্ত্রের প্রকৃত সম্মান। পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু জায়গায় অবস্থিত ভোটদান কেন্দ্রও এই ভারতেই। হিমাচল প্রদেশের লাহুল-স্পিতি অঞ্চলে ১৫০০০ ফিট উচ্চতায় রয়েছে এই ভোটদান কেন্দ্র। এছাড়া আরও এক তথ্য আছে, যে বিষয়ে আমরা গর্ববোধ করতে পারি। সম্ভবত ইতিহাসে প্রথমবার মহিলারাও পুরুষদের মত উৎসাহের সঙ্গে ভোটদান করেছেন। এই নির্বাচনে পুরুষ ও মহিলা ভোটদাতার সংখ্যা প্রায় সমতুল্য। আরও এক অনুপ্রাণিত করার মত তথ্য হল এখন সংসদে ৭৮ জন মহিলা সাংসদ আছেন, যা এক রেকর্ড। আমি নির্বাচন কমিশনকে এবং ভোটদান প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেককে অভিনন্দন জানাচ্ছি এবং ভারতের সচেতন ভোটদাতাদের প্রণাম জানাচ্ছি।

আমার প্রিয় দেশবাসী, আপনারা বেশ কয়েকবার আমার মুখে শুনে থাকবেন — “‘Bouquet’ নয়, বুক”। আমার ইচ্ছা ছিল অভ্যাগতদের আপ্যায়ণের জন্য যদি ফুলের তোড়ার বদলে বই দেওয়া যায়? এখন অনেক জায়গায় দেখছি এই ব্যবস্থা চালু হয়ে গেছে। আমাকে কিছুদিন আগেই একজন ‘প্রেমচাঁদ কী লোকপ্রিয় কাহাণীয়া’ বইটি উপহার দেয়। আমার খুব ভালো লাগে। খুব বেশি সময় না হলেও বিদেশে থাকাকালীন প্রেমচাঁদের গল্পগুলি আবার পড়ার সুযোগ পাই। উনি নিজের লেখায় সমাজচিত্রকে যথাযথ তুলে ধরেছেন। ওঁর লেখা পড়ার সময় আপনার মনেও সেই ছবি ফুটে ওঠে। ওঁর লেখা প্রত্যেকটি বিষয় যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে। সহজ-সরল ভাষায় ব্যক্তি মানবমনের আবেগ, যা ওঁর লেখার বৈশিষ্ট্য, আমার মনকে বিশেষভাবে স্পর্শ করে ? আর গল্পগুলি গোটা ভারতের প্রতিচ্ছবি। যখন আমি ওঁর লেখা ‘Nasha’ নামক গল্পটি পড়ছিলাম, তখন অচিরেই সমাজের আর্থিক বৈষম্য প্রকট হয়ে ওঠে। আমার নিজের যুবক বয়সের স্মৃতি মনে পড়ে — যখন এই নিয়ে রাতভর তর্ক-বিতর্ক হত। জমিদার পুত্র ঈশ্বরী এবং গরীব ঘরের ছেলে বীর-এর এই গল্প থেকে আমরা শিক্ষা পাই যে অসৎ সঙ্গ থেকে সবসময় সাবধান থাকা উচিৎ। অসৎ সঙ্গ কখন সর্বনাশ ডেকে আনবে বোঝাও যায় না। আরেকটি গল্প, যা আমার হৃদয়কে গভীরভাবে নাড়া দেয়, সেটি হল ‘ঈদগাহ্‌’। গল্পের বিষয় এক বালকের সমবেদনা। নিজের দিদিমার প্রতি বিশুদ্ধ ভালোবাসা। চার-পাঁচ বছরের হামিদ যখন মেলা থেকে তার দিদিমার জন্য একটি চিমটে নিয়ে যায়, তখন সত্যিই মনে হয় মানব মনের ভালোবাসা, সহমর্মিতা কী অপূর্ব, কী অভাবনীয় হতে পারে। এই গল্পের শেষ লাইনটি আমাদের ভাবায়, শেখায় জীবনের এক অমোঘ সত্য।

“শিশু হামিদ, বৃদ্ধ হামিদের ভূমিকা পালন করেছিল — বৃদ্ধা আমিনা, বালিকা আমিনায় পরিবর্তিত হয়েছিল।”

এরকমই এক খুবই হৃদয়স্পর্শী গল্প হল ‘পুস কি রাত’। এই গল্পে এক গরীব কৃষকের জীবনের বিড়ম্বনারপ্রকৃত ছবি দেখতে পাওয়া যায়। নিজের ফসল নষ্ট হওয়ার পরেও কৃষক হলদু আনন্দিত হয়, কারণ তাকে আর শীতকালের ঠাণ্ডায় ক্ষেতের মধ্যে ঘুমোতে হবে না। যদিও এইসব গল্প প্রায় শতাব্দী প্রাচীন, তবুও এর প্রাসঙ্গিকতা আজও ততটাই অনুভূত হয়। গল্পটা পড়ার পর, আমার এক অন্য ধরনের অনুভুতি হয়।

যখন বই পড়ার কথা হচ্ছে, তখন কোন এক সংবাদমাধ্যমে, আমি কেরলের অক্ষরা লাইব্রেরি সম্বন্ধে পড়েছিলাম। আপনি এটা জেনে আশ্চর্য হবেন যে ওই লাইব্রেরি ইডুক্কির গভীর অরণ্যের এক গ্রামের মধ্যে অবস্থিত। ওখানকার এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পি.কে. মুরালিধরন আর এক ছোট্ট চায়ের দোকানের মালিক পি.ভি চিন্নাথাম্পি এই লাইব্রেরির জন্য অসামান্য পরিশ্রম করেছিলেন। একটা সময় এমনও ছিল, যখন বস্তায় ভরে পিঠের ওপর চাপিয়ে, এখানে বই আনা হত। আজ এই লাইব্রেরি আদিবাসী শিশুদের পাশাপাশি, সকলকেই এক নতুন দিশা দেখাচ্ছে।

গুজরাটের, ‘ওয়াংচে গুজরাট’ অভিযান, এক সফল উদ্যোগ। সব বয়সের, লক্ষ লক্ষ মানুষ, বই পড়ার এই অভিযানে অংশ নিয়েছিল। আজকের ডিজিটাল জগতে, গুগল গুরুর কালে, আমি আপনাদেরও অনুরোধ করব যে, একটু সময় বের করে, নিজের ডেইলি রুটিনে বইকেও যেন একটু স্থান দেওয়া হয়। আপনি সত্যিই খুব এনজয় করবেন আর যেই বই পড়ুন না কেন, সেই ব্যাপারে NarendraModiApp-এ অবশ্যই লিখবেন যাতে কিনা ‘মন কি বাত’-এর সকল শ্রোতারাও, সেই বিষয়ে অবগত হন।

আমার প্রিয় দেশবাসী, আমি খুব খুশি যে আমার দেশের জনগণ সেই সকল বিষয় নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করছে, যা কিনা কেবল বর্তমান নয়, ভবিষ্যতের জন্য এক বড় Challenge। আমি NarendraModiApp আর MyGov-এ আপনাদের কমেন্ট পড়ছিলাম। আমি লক্ষ্য করলাম যে জলের সমস্যা নিয়ে অনেকেই অনেক কিছু লিখেছেন।Belgavir পওয়ান গৌড়াই, ভুবনেশ্বরের সিতাংশু মোহন পারিদা, এছাড়াও ইয়াশ শর্মা, শাহাব আলতাফ এবং আরও অনেকেই জল সম্পর্কিত সমস্যার সম্বন্ধে লিখেছেন।

আমাদের সংস্কৃতিতে জলের খুব বড় প্রভাব রয়েছে। ঋকবেদের আপঃ সুক্তম-এ জলের সম্বন্ধে বলা হয়েছে যে,

আপো হিষ্ঠ ময়ো ভুবঃ স্থা ন উর্জে দধাতন,

মহে রণেয় চক্ষসে ইয়ো বহঃ শিবতমো রসঃ,

তস্য ভাজয়তেহ নঃ উশতিরিভ মাতরঃ।।

অর্থাৎ জলই হল জীবনদায়ী শক্তি। শক্তির স্রোত। আপনি মায়ের মত। অর্থাৎ আপনি মাতৃসম। আপনি মায়ের মতো আশীর্বাদ করুন। আমরা যেন সদা আপনার কৃপাধন্য থাকি।

জলের অভাবে দেশের বহু অংশ প্রতিবছর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আপনি আশ্চর্য হবেন জেনে যে এক বছরে, বর্ষাথেকে প্রাপ্ত জলের কেবল মাত্র ৮ শতাংশ আমাদের দেশে সংরক্ষণ করা হয়। শুধু মাত্র ৮ শতাংশ। কিন্তু এখন এই সমস্যার সমাধানের সময় এসেছে। আমি বিশ্বাস করি যে, আমরা অন্যান্য সমস্যার মতোই, গণ অংশগ্রহণের মাধ্যমে, জনগণের শক্তি দিয়ে, 130 কোটি দেশবাসীর সামর্থ্য, সহযোগিতা ও সংকল্পের সাহায্যে এই সংকটেরও সমাধান খুঁজে নেব।

জলের গুরুত্বকে সর্বাগ্রে রেখে দেশে নতুন জলশক্তি মন্ত্রক তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে জল সম্বন্ধিত সমস্ত বিষয়ে তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হবে। কিছু দিন আগে আমি আলাদা কিছু উদ্ভাবন করার চেষ্টা করেছিলাম। আমি দেশের সমস্ত গ্রামপ্রধানকে চিঠি লিখেছিলাম। আমি গ্রামপ্রধানদের লিখেছিলাম জল বাচাঁতে, জল সঞ্চয় করতে, বর্ষার প্রতিটি ফোঁটাকে বাঁচাতে। তাঁরা গ্রামসভার বৈঠক ডেকে, গ্রামবাসীদের সঙ্গে বসে যেন শলা-পরামর্শকরেন। আমার ভালো লাগছে যে তাঁরা এ-বিষয়ে সম্পূর্ণ উৎসাহ দেখিয়েছেন এবং এ-মাসে ২২ তারিখে হাজার হাজার পঞ্চায়েতে কোটি কোটি লোক শ্রমদান করেছেন। গ্রামে গ্রামে লোকেরা জলের এক-এক ফোঁটা সঞ্চয় করতে সঙ্কল্প করেছেন। আজ ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে আমি একজন গ্রামপঞ্চায়েতের কথা শোনাতে চাই। ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগ জেলার কাটকামশাণ্ডী ব্লকের লুপুং গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান আমাদের সবাইকে কী বার্তা দিয়েছেন শুনুন —

আমার নাম দিলীপ কুমার রবিদাস। জল বাঁচাতে যখন প্রধানমন্ত্রী মহোদয় আমাদের চিঠি লিখেছেন, তো আমাদের বিশ্বাস হচ্ছিল না যে প্রধানমন্ত্রী আমাদের চিঠি লিখেছেন। যখন আমরা ২২ তারিখে গ্রামের সবাইকে জড়ো করে প্রধানমন্ত্রীর চিঠি পড়ে শোনাই, তো গ্রামের লোকেরা খুব উৎসাহিত হয়েছিলেন এবং জল বাঁচাতে পুকুর সংষ্কার ও নতুন পুকুর খুঁড়তে শ্রমদান করে নিজেদের কর্তব্য পালন করতে প্রস্তুত হয়ে গেলেন। বর্ষার আগে এই পদ্ধতি অবলম্বন করার ফলে ভবিষ্যতে আমাদের জলের অভাব হবে না। এটা খুব ভালো হয়েছে যে প্রধানমন্ত্রী আমাদের সঠিক সময়ে সতর্ক করে দিয়েছেন।

বিরসা মুণ্ডার ভূমি, যেখানে প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে থাকাই আমাদের সংস্কৃতির অংশ। ওখানের লোকেরা আবার একবার জল সংরক্ষণের জন্য নিজেদের সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে প্রস্তুত হয়েছেন। আমার পক্ষ থেকে সকল গ্রামপ্রধানকে, সকল পঞ্চায়েতপ্রধানকে, তাদের সক্রিয়তার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা। সারা দেশে এমন অনেক পঞ্চায়েতপ্রধান আছেন, যাঁরা জল সংরক্ষণে উদ্যোগী হয়েছেন। এইভাবে সমগ্র গ্রামে জল বাঁচানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। মনে হচ্ছে গ্রামের লোকেরা, এখন নিজেদের গ্রামে জলমন্দির তৈরি করতে সচেষ্ট হয়েছেন। আমি যেটা বলেছিলাম, সকলের চেষ্টায় বড়ো ইতিবাচক পরিণাম লাভ করা সম্ভব। সমগ্র দেশে জল সংকট সমাধান করতে কোনো একটি সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি সম্ভব নয়, তাই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন পদ্ধতিতে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্তু সবার লক্ষ্য একটাই, সেটা হল জল বাঁচানো, জল সংরক্ষণ।

পাঞ্জাবে জলের নিকাশী নালা সংস্কারের কাজ চলছে। এর ফলে জল জমে যাওয়ার সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যাচ্ছে। তেলেঙ্গানার থিমাঈপল্লীতে একটি জলাধার নির্মাণের ফলে গ্রামের লোকেদের জীবন বদলে যাচ্ছে। রাজস্থানের কবিরধামে ক্ষেতের মধ্যে তৈরি ছোটো ছোটো পুকুর নির্মাণের ফলে এক বড় পরিবর্তন এসেছে। আমি তামিলনাড়ুর ভেল্লোরে একটি সার্বজনিক প্রচেষ্টার কথা পড়ছিলাম, সেখানে নাগনদীকে আবার বাঁচিয়ে তুলতে ২০ হাজার মহিলা এক জায়গায় হয়েছেন। আমি গাঢ়ওয়ালের সেইসব মহিলাদের সম্বন্ধেও পড়ছিলাম, যাঁরা একসঙ্গে মিলে বৃষ্টির জলকে ধরে রাখার জন্য খুব সুন্দর কাজ করে যাচ্ছেন। এইভাবে অনেক ধরনের চেষ্টা চলছে, আর আমি বিশ্বাস করি যখন আমরা একজোট হয়ে, মজবুত হয়ে চেষ্টা করি, তখন অসম্ভবকেও সম্ভব করা যেতে পারে। যখন জনতা যুক্ত হবে, জল বাঁচবে। আজ ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশবাসীকে তিনটি অনুরোধ করছি।

আমার প্রথম অনুরোধ — যেভাবে দেশবাসী স্বচ্ছতাকে একটি গণ আন্দোলনের রূপ দিয়েছিলেন, আসুন সেইভাবে জল সংরক্ষণের জন্য একটি গণ আন্দোলনের শুভারম্ভ করি। আমরা সবাই মিলে জলের প্রতিটি ফোঁটা বাঁচানোর সংকল্প করি, আমার বিশ্বাস জল হল পরমেশ্বরের থেকে পাওয়া প্রসাদ, জল পরশপাথরের রূপ। আগে বলা হত পরশপাথরের ছোঁয়ায় লোহা সোনা হয়ে যায়। আমি বলি – জল পরশপাথর, যার সংস্পর্শে নবজীবনের নির্মাণ হয়। জলের এক-এক ফোঁটাকে বাঁচাতে একটি সচেতনতার অভিযানের শুভারম্ভ করি। যার মধ্যে জল সম্পর্কিত সমস্ত সমস্যাকে নিয়ে আলোচনা করি, তার সঙ্গে জল বাঁচানোর বিভিন্ন পদ্ধতির প্রচার-প্রসার করি। আমি বিশেষ ভাবে আলাদা আলাদা ক্ষেত্রের জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিদের জল সংরক্ষণের জন্য Innovative Campaign-এর নেতৃত্ব প্রদানের জন্য অনুরোধ করছি। সিনেমা জগত হোক, খেলাধূলার জগত হোক, মিডিয়ার বন্ধুরা হোক, সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত লোকেরা হোক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত লোকেরা হোক, কথা-কীর্তনের শিল্পীরা হোক, প্রত্যেকে নিজ নিজ পদ্ধতির মাধ্যমে এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিন। সমাজকে জাগিয়ে তুলুন, প্রত্যেককে যুক্ত করুন ও জোট বাঁধুন। আপনারা দেখুন, নিজের চোখের সামনে আমরা পরিবর্তন দেখতে পাব।

সকল দেশবাসীর কাছে আমার দ্বিতীয় অনুরোধ এই যে, আমাদের দেশে জল সংরক্ষণের জন্য যে পারম্পরিক পদ্ধতি শত শত বছর ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে, আমি আপনাদের সবাইকে জল সংরক্ষণের ওই পারম্পরিক পদ্ধতিগুলি share করার জন্য অনুরোধ করছি। আপনাদের মধ্যে যদি কোনও ব্যক্তির পোরবন্দর, পূজনীয় বাপুর জন্ম স্থানে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়, তাহলে দেখবেন পূজনীয় বাপুর বাড়ির ঠিক পিছনেই অন্য আর একটি বাড়ি আছে, যেখানে দু’শো বছরের পুরনো জল সংরক্ষণ ট্যাঙ্ক আছে, এবং আজও ওই ট্যাঙ্কের ভিতর জল আছে আর বর্ষার জল ধরে রাখার সুবন্দোবস্ত আছে। অতএব, যিনি কীর্তি মন্দির যাবেন, তিনি অবশ্যই ওই জল সংরক্ষণের আধারটিকে দেখবেন। আমার ধারণা এই রকম ব্যবস্থা অনেক জায়গাতেই পাওয়া যাবে।

আপনাদের সবার কাছে আমার তৃতীয় অনুরোধ এই যে, জল সংরক্ষণের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণকারী ব্যক্তি, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং এই বিশেষ ক্ষেত্রে কাজ করেন এরকম ব্যক্তির, ওঁদের কাছে যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আছে, সেগুলি আপনি share করুন যাতে করে জলের সংরক্ষণের জন্য উৎসর্গীকৃত মানুষ, জল সংরক্ষণের কাজে যুক্ত সক্রিয় সংগঠনগুলির এবং ব্যক্তিবর্গের একটি খুবই সমৃদ্ধ Database তৈরি করা যায়।

আসুন, আমরা জল সংরক্ষণের সঙ্গে যুক্ত পদ্ধতিগুলির একটি তালিকা তৈরি করে মানুষকে জল সংরক্ষণে অনুপ্রাণিত করি। আপনারা সকলে ‘হ্যাশট্যাগ janshakti4jalshakti’-এর ব্যবহার করে আপনার content shareকরতে পারেন।

আমার প্রিয় দেশবাসী, আরও একটি বিষয়ের জন্য আপনাদের এবং বিশ্বের সকল মানুষকে আমার কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। যেভাবে ২১ জুন, আবার একবার ‘যোগ দিবস’-এ যেরকম সক্রিয়তার সঙ্গে, উৎসাহে ভরপুর এক-একটি পরিবারের তিন-তিন বা চার-চার প্রজন্ম একসঙ্গে বসে ‘যোগ দিবস’ পালন করেছেন, তার জন্য।

Holistic Health Care-এর জন্য যে সচেতনতা এসেছে এর মধ্যে, ‘যোগ দিবস’-এর মাহাত্ম্য বেড়েই চলেছে।

পৃথিবীর প্রতিটি কোণে সূর্যোদয়ের সঙ্গে যদি কোনও যোগাপ্রেমী সূর্যকে স্বাগত জানায়, তবে তার পুরো যাত্রা শেষ হয় সূর্যাস্তের সঙ্গে। এরকম জায়গা আছে কি, যেখানে মানুষ আছে অথচ যোগার সঙ্গে যুক্ত নয়? ‘যোগা’ এমনই বৃহত্তর রূপে বিস্তার লাভ করেছে। ভারতে হিমালয় থেকে ভারত মহাসাগর পর্যন্ত, সিয়াচেন থেকে সাবমেরিন, এয়ার ফোর্স থেকে এয়ারক্র্যাফ্‌ট ক্যারিয়ার পর্যন্ত, এসি জিম থেকে তপ্ত মরুভূমি, গ্রাম থেকে শহর — যেখানেই সম্ভব হয়েছিল, প্রত্যেক জায়গাতেই শুধুমাত্র যোগাভ্যাসই করা হয়নি, বরং দিনটিকে সমষ্টিগতভাবে সমারোহের সঙ্গে পালন করা হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, সুপরিচিত গণ্য-মান্য ব্যক্তিত্ব, সাধারণ মানুষ — এঁরা আমাকে ট্যুইটারে দেখিয়েছেন কীভাবে তাঁদের নিজের নিজের দেশে ‘যোগ দিবস’ পালন করেছেন। ওই দিন, বিশ্বকে খুশিতে ভরপুর এক বিশাল পরিবারের মতো লাগছিল।

আমরা সবাই জানি, একটা সুস্থ সমাজ গড়তে, সুস্থ ও সংবেদনশীল মানুষের প্রয়োজন। যোগা সেটাই সুনিশ্চিত করে।তাই যোগের প্রচার ও প্রসার সমাজ সেবার অভিন্ন অঙ্গ। এই সেবাকে স্বীকৃতি দিয়ে সম্মানিত করা কি উচিত নয়? ২০১৯-এ যোগের প্রসার ও উন্নতিকল্পে অনন্য অবদানের জন্য Prime Minister’s Awards-এর ঘোষণা করাহয়েছিল, যেটা অবশ্যই আমার কাছে সুসংবাদ. এই পুরস্কার পৃথিবীর সেই সংগঠনগুলিকে দেওয়া হয়েছে যারা যোগেরপ্রচার ও প্রসারে গুরুপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। যেমন, ‘জাপান যোগা নিকেতন’-এর কথাই বলা যেতে পারে, যারাসমগ্র জাপানে যোগাকে ভীষণ জনপ্রিয় করে তুলেছেন। ‘জাপান যোগা নিকেতন’ অনেকগুলো সংস্থা ও ট্রেনিং কোর্সেসচালায়। এবার আসি, ইতালির মিস অন্তনিয়েত্তা রোজির কথায়, যিনি ‘সর্বযোগা ইন্টারন্যাশনাল’-এর প্রতিষ্ঠা করেযোগকে সমগ্র ইউরোপে ছড়িয়ে দিয়েছেন। এটি একটি অনুপ্রেরণাদায়ক উদাহরণ। আর যেখানে বিষয়টা যোগের সঙ্গেযুক্ত সেখানে কি ভারতীয়রা পিছিয়ে থাকতে পারেন? বিহারের মুঙ্গেরের যোগা বিদ্যালয়, যারা গত কয়েক দশক ধরেযোগের প্রতি নিবেদিত, তাদের সম্মানিত করা হয়েছে। একই ভাবে, স্বামী রাজর্ষি মুনিকেও সম্মান জ্ঞাপন করা হয়েছেযিনি ‘লাইফ মিশন’ এবং ‘লাকুলিশ যোগা বিশ্ববিদ্যালয়’-এর প্রতিষ্ঠা করেছেন। যোগের আড়ম্বরপূর্ণ উদ্‌যাপন এবংযাঁরা ঘরে ঘরে যোগের বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন, তাঁদেরকে সম্মানিত করা, এই দুটি বিষয়ই ‘যোগ দিবস’-এ আলাদামাত্রা যোগ করেছে। আমার প্রিয় দেশবাসী, আমাদের এই যাত্রা আজ নতুন ভাবনা, নতুন অনুভূতি, নতুন সংকল্প এবংনতুন শক্তিকে পাথেয় করে শুরু হয়েছে, আমি আপনাদের সুচিন্তিত মতামতের প্রতীক্ষায় রইলাম। আপনাদের ভাবনারসঙ্গে নিজেকে যুক্ত করতে পারা, আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, ‘মন কি বাত’ তো নিমিত্তমাত্র। আসুন আমরা মিলিতহয়ে কথোপকথন চালিয়ে যাই, আপনাদের চিন্তাভাবনা শুনি, বুঝি এবং সেই ভাবনাগুলোকেই বাস্তবায়িত করার চেষ্টাকরি। আপনাদের আশীর্বাদ আমার সঙ্গে থাকুক। আপনারাই আমার প্রেরণা, আমার শক্তি। আসুন আমরা সবাইএকসঙ্গে বসে ‘মন কি বাত অনুষ্ঠান’ শুনতে শুনতে জীবনের সমস্ত দায়িত্ব সম্পন্ন করি। আগামী মাসে ‘মন কি বাত’অনুষ্ঠানে আবার আপনাদের সঙ্গে কথা হবে।

আপনাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ, নমস্কার।

 
Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII

Media Coverage

PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM Modi visits the Indian Arrival Monument
November 21, 2024

Prime Minister visited the Indian Arrival monument at Monument Gardens in Georgetown today. He was accompanied by PM of Guyana Brig (Retd) Mark Phillips. An ensemble of Tassa Drums welcomed Prime Minister as he paid floral tribute at the Arrival Monument. Paying homage at the monument, Prime Minister recalled the struggle and sacrifices of Indian diaspora and their pivotal contribution to preserving and promoting Indian culture and tradition in Guyana. He planted a Bel Patra sapling at the monument.

The monument is a replica of the first ship which arrived in Guyana in 1838 bringing indentured migrants from India. It was gifted by India to the people of Guyana in 1991.