‘মন কিবাত’ অনুষ্ঠানের এবারের পর্ব এ’বছরের শেষতম পর্ব। আর কী অদ্ভুত সমাপতন দেখুন, আজ২০১৭-র-ও শেষ দিন। এই বছর প্রায় সারা বছর ধরেই আমি ও আপনারা অনেক কথা শেয়ার করেছি।‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে আপনাদের লেখা অজস্র চিঠি, Comments এবং মতামতেরআদানপ্রদান আমাকে সবসময়েই এক নতুন উদ্দীপনায় ভরিয়ে রাখে। আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরেইবছর বদলে যাবে, কিন্তু আমাদের বার্তালাপের এই ধারাবাহিকতা চলতেই থাকবে। আগত নতুনবছরে আমরা আরও অনেক নতুন নতুন কথা বলব, নতুন অভিজ্ঞতা share করব। আপনাদেরসবাইকে জানাই নতুন বছর, ২০১৮-র অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন!
কিছুদিন আগেই সারা পৃথিবী জুড়ে ধুমধাম করে পালিত হলক্রিসমাসের উৎসব। সারা ভারত জুড়েও এই উৎসব অত্যন্ত হর্ষোল্লাসের সঙ্গে পালন করাহয়। ক্রিসমাসের এই সময়টিতে আমরা যীশুখ্রিস্টের শিক্ষা ও উপদেশকে মনে করি, আর যীশুযে কথাটিতে সবচেয়ে বেশি জোর দিতেন, তা হল – সেবা ভাব। এই সেবা ভাবনার সারসত্যটিবাইবেলেও পরিলক্ষিত হয়।
The son of man has come, not to be served
But to serve
And to give his life, as blessing
To all humankind.
এর থেকেই বোঝা যায় সেবার গুরুত্ব কতটা অপরিসীম! সারাপৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে আছে কতই না জাতি, ধর্ম, রঙ, বর্ণের সমাহার, কিন্তু সেবা ভাবনা,মানবিক মূল্যগুলির মধ্যে অতুলনীয় ও অনন্য। আমাদের দেশে নিষ্কাম কর্মের কথা বলা হয়েথাকে। নিষ্কাম কর্ম অর্থাৎ এমন সেবা যা কোন প্রতিদানের অপেক্ষা রাখে না। আমাদেরএখানে এও বলা হয় – সেবাই পরমধর্ম এবং জীব সেবাই শিবসেবা। রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবও বলেগিয়েছেন, শিব জ্ঞানে জীব সেবা করার কথা – আর এই প্রত্যেক কথারই মানবিক মূল্য রয়েছেসারা পৃথিবী জুড়ে। আসুন, আমরা এই সমস্ত মহাপুরুষদের এবং এই পবিত্র দিনগুলিকে স্মরণকরার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের পরম্পরা এবং মানবিক মূল্যবোধগুলিকেও মনে রাখি। এতে নতুনচেতনা, নতুন প্রাণশক্তি সঞ্চার করি এবং নিজেরাও তা পালন করি।
প্রিয় দেশবাসী, এই বছরটি ছিল গুরু গোবিন্দ সিংহ-জীর ৩৫০-তমপ্রকাশ পর্বের বছরও। অদম্য সাহস ও ত্যাগের প্রতীক গুরু গোবিন্দ সিংহ-জী শুধুমাত্রমহান মানব মূল্যের কথাই বলেননি, তাঁর সম্পূর্ণ জীবনের ভিত্তিও ছিল এই মানবিকজীবনমূল্য। একাধারে গুরু, কবি, দার্শনিক, মহান যোদ্ধা – এই সমস্ত ভূমিকায় তিনিমানুষকে নিরন্তর প্রেরণা জুগিয়ে গেছেন। অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতেশিখিয়েছেন, জাতি ও ধর্মের বন্ধন থেকে মুক্তির পথ দেখিয়েছেন। আর এই প্রচেষ্টায় যদিওতাঁকে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে অনেক কিছু হারাতে হয়েছিল, কিন্তু তিনি কখনো হীনভাবনাকে মনে ঠাঁই দেন নি। তাঁর জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত ছিল প্রেম, ত্যাগ ও শান্তিরবাণীতে ভরা। আর এই বৈশিষ্ট্যগুলি ছিল তাঁর মহান ব্যক্তিত্বেও। আমার সৌভাগ্য যে, এইবছরের শুরুতে গুরু গোবিন্দ সিংহ-জীর ৩৫০-তম জয়ন্তী উপলক্ষ্যে পটনাসাহিবে আয়োজিত‘প্রকাশোৎসব’-এ আমি সামিল হতে পেরেছিলাম।
আসুন, আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই গুরু গোবিন্দ সিংহ-জীর শিক্ষাএবং তাঁর মহান জীবন দর্শন থেকে আমরা প্রেরণা নেব ও আমাদের জীবনে তাঁর আদর্শকে মেনেচলব। পয়লা জানুয়ারি, ২০১৮ অর্থাৎ, আগামীকালটি আমার মতে একটি বিশেষ দিন। আপনারনিশ্চয়ই এই ভেবে আশ্চর্য হচ্ছেন যে, নতুন বছর তো প্রত্যেকবার আসে আর পয়লাজানুয়ারিও প্রত্যেকবার আসে, এতে আর ‘বিশেষ দিন’ হওয়ার কী আছে? কিন্তু যখন আমি বলছিএটি এক ‘বিশেষ দিন’, তখন আমি সত্যিই বলতে চাই যে এটি এক বিশেষ দিন। যে সমস্ত মানুষ২০০০ সালে জন্ম নিয়েছেন, অর্থাৎ একবিংশ শতাব্দীতে পৃথিবীর আলো দেখেছেন, পয়লাজানুয়ারি, ২০১৮ দিনটি থেকে তাঁরা প্রত্যেকেই eligible voter হিসেবে গণ্য হবেন।আমি দেশের এই যুবশক্তিকে অভিনন্দন জানাচ্ছি এবং অনুরোধ করছি, আপনারা নিজেদের নামঅবিলম্বে ভোটার হিসেবে নথিভূক্ত করান। সম্পূর্ণ ভারত আপনাদের একবিংশ শতকের মতদাতাহিসেবে স্বাগত জানাবার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। একবিংশ শতাব্দীর ভোটারহিসেবে আপনারাও নিশ্চয়ই নিজেদের নিয়ে গর্বিত। আপনার মূল্যবান ভোটই হবে ‘ New India ’-রভিত্তি। মতদানের শক্তি গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় শক্তি। লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনেইতিবাচক পরিবর্তন আনতে ভোটই সবচেয়ে শক্তিশালী ও প্রভাবশালী মাধ্যম। আর আপনারাশুধুমাত্র মতদানের অধিকারীই হচ্ছেন না, একবিংশ শতাব্দীর ভারত কীরকম হবে, আগামীদিনের ভারতকে নিয়ে আপনার কী স্বপ্ন – আপনাদের এগুলি নিয়েও ভাবতে হবে। কারণ, মনেরাখবেন, আপনিও একবিংশ শতকের ভারত নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন আর পয়লাজানুয়ারি থেকেই এর শুরু হতে যাচ্ছে।
‘মন কি বাত’-এর এবারের পর্বে আমি ১৮ থেকে ২৫ বছরের টগবগেজীবনীশক্তিতে ভরপুর, দৃঢ় নিশ্চয়ী যুবাশক্তিকে বিশেষ ভাবে সম্বোধন করতে চেয়েছিলাম।আমি মনে করি এরা নতুন ভারতের যুবশক্তি – New India Youth । New India Youth -এরমানে হল – আনন্দ, উৎসাহ, জীবনীশক্তি। আমার বিশ্বাস প্রাণপ্রাচুর্যে ভরপুর এইযুবশক্তির দক্ষতা ও শক্তির ওপর ভর করেই আমাদের New India -র স্বপ্নবাস্তবায়িত হবে। আগামী দিনের যে নতুন ভারতের কথা আমরা বলছি, তা হল জাতিবাদ,সম্প্রদায়বাদ, আতঙ্কবাদ ও ভ্রষ্টাচারের বিষমুক্ত ভারত। অপরিচ্ছন্নতা ও দারিদ্রতাথেকে মুক্ত ভারত। New India – যেখানে সবার জন্য থাকবে সমান সুযোগ,যেখানে সবার আশা-আকাঙ্ক্ষা স্বপ্ন পাবে পূর্ণতা। নতুন ভারত, যার চালিকা শক্তি হবেশান্তি, একতা ও সদ্ভাবনা। আমার নতুন ভারতের যুবশক্তি New India Youth , তোমরা এগিয়েএসো, ভাবো কীভাবে সাকার হবে New India –র স্বপ্ন। নিজেদের জন্য একটি রাস্তাতৈরি কর, তোমরা যাদের সঙ্গে যুক্ত, তাদেরকেও নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করো, আর এইভাবেদল সমৃদ্ধ হোক, এগিয়ে চলুক। তোমরাও এগিয়ে চল, দেশও এগিয়ে যাক।
আপনাদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে একটা ভাবনা আমার মনে এল,ভারতের প্রতিটি জেলাতে আমরা কি Mock Parliament –এর আয়োজন করতে পারি? যেখানে ১৮ থেকে ২৫বছরের যুবক-যুবতীরা একসঙ্গে বসে New India –র ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করবে, দিশাখুঁজবে, পরিকল্পনা তৈরি করবে? ভাববে, কি করে আমরা ২০২২-এর আগেই আমাদের পরিকল্পনারূপায়ন করবো? কি করে আমরা এমন এক ভারতের নির্মাণ করব, যার স্বপ্ন আমাদের স্বাধীনতাসংগ্রামের বীর যোদ্ধারা দেখেছিলেন? মহাত্মা গান্ধী স্বাধীনতার আন্দোলনকেজন-আন্দোলনের রূপ দিয়েছিলেন। আমার যুবা-বন্ধুরা, এটা এই সময়ের দাবী যে আমরাওএকবিংশ শতকের সুন্দর, সার্থক ভারতের স্বপ্নকে এক জন আন্দোলনের রূপ দিই। বিকাশ ওঅগ্রগতির জন আন্দোলন – প্রগতির জন আন্দোলন। সামর্থ্য বলে বলীয়ান এক শক্তিশালীভারতের জন্য জন আন্দোলন। আমি মনে করি – ১৫-ই আগস্টের আশেপাশে কোন এক সময়ে দিল্লিতেএকটি MockParliament –এর আয়োজন করা হোক, যাতে প্রতিটি জেলা থেকে বাছাই করা একজন যুবা অংশ নেবেন ও আলোচনা করবে কীভাবে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে New India –রস্বপ্ন সাকার করা যায়। সংকল্প থেকে সিদ্ধিতে কীভাবে পৌঁছান যায়। আজ তরুণদের জন্য অনেকনতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। স্কিল ডেভলপমেন্ট থেকে শুরু করে ইনোভেশন আরএন্টারপ্রেনারশিপে আমাদের তরুণরা এগিয়ে আসছে এবং সফল হচ্ছে। আমি চাইব যে এই সবপ্রকল্পের খবর এই ‘ নিউ ইন্ডিয়া ইউথ ’ -এর কোনো এক জায়গায় কীভাবে পাওয়া যেতেপারে তার জন্য ভাবনাচিন্তা হোক আর এ ব্যাপারে এমন এক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হোক যাতেআঠেরো বছর বয়স পূর্ণ হতেই এই জগতের ব্যাপারে, এই যাবতীয় জিনিস সম্পর্কে সহজভাবেজানতে পারে সে, আর এক্ষেত্রে আবশ্যিক লাভ যেন করতে পারে সে।
প্রিয়দেশবাসী, আগের ‘ মন কি বাত ’ অনুষ্ঠানে আমিপজিটিভিটি নিয়ে কথা বলেছিলাম আপনাদের সঙ্গে। সংস্কৃত একটি শ্লোক মনে আসছে আমার –
উৎসাহোবলবানায়ে, নাস্তুৎসাহাৎপরম্ বলম্ ।
সোৎসাহস্যচ লোকেষু ন কিঞ্চিদপি দুর্লভম্ ।।
এর অর্থ হল, উৎসাহেপরিপূর্ণ এক ব্যক্তি অত্যন্ত বলশালী, কেননা উৎসাহের থেকে বড় আর কিছু হয় না।পজিটিভিটি আর উৎসাহে ভরা ব্যক্তির জন্য কিছুই অসম্ভব নয়। ইংরেজিতেও সবাই বলেন – পেসিমিজ্ম লীড্সটু উইক্নেস্, অপ্টিমিজ্ম টু পাওয়ার। আমি আগের ‘ মন কি বাত ’ অনুষ্ঠানেদেশবাসীদের প্রতি আবেদন রেখেছিলাম যে ২০১৭ সালে নিজের পজিটিভ মুহূর্তগুলি শেয়ারকরুন আর এক পজিটিভ অ্যাটমসফিয়ারে ২০১৮-কে স্বাগত জানান। আমি খুব খুশি যে মানুষজনবিপুল সংখ্যায় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, ‘মাইগভ’ আর ‘নরেন্দ্রমোদী অ্যাপ’-এঅত্যন্ত পজিটিভ
রেসপন্সদিয়েছেন, নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। ‘পজিটিভ ইন্ডিয়া হ্যাশট্যাগ’-সহ লক্ষ লক্ষট্যুইট করা হয়েছে যা প্রায় দেড়শো কোটিরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছেছে। এক অর্থেপজিটিভিটির যে সঞ্চার, তা ভারতে শুরু হয়ে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। যে ট্যুইট আররেসপন্স এসেছে
তাসত্যিই ইন্সপায়ারিং ছিল। এক সুখের অনুভূতি ছিল। কিছু দেশবাসী এই বছরে যে সব ঘটনাতাঁদের মনে বিশেষ প্রভাব ফেলেছে,ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে সেই সব ঘটনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। কিছু মানুষ নিজেরব্যক্তিগত উপলব্ধিও শেয়ার করেছেন।
সাউন্ড বাইট
# আমারনাম মিনু ভাটিয়া। আমি ময়ূর বিহার, পকেট ওয়ান, ফেজ ওয়ান, দিল্লিতে থাকি। আমার মেয়েএম বি এ করতে চেয়েছিল। যার জন্য আমার ব্যাঙ্ক থেকে লোনের প্রয়োজন ছিল যা খুব সহজেইআমি পেয়ে গিয়েছি আর আমার মেয়ের লেখাপড়া চালু রয়েছে।
# আমারনাম জ্যোতি রাজেন্দ্র বাড়ে। আমি বোডল থেকে কথা বলছি। ওই যে এক টাকা কেটে নেয়বীমায়, সেই বীমা করিয়েছিল আমার স্বামী। আর অ্যাকসিডেন্টে তার মৃত্যু হয়। সেই সময়আমাদের কী অবস্থা হয়েছিল তা আমরাই জানি। সরকারের এই সহায়তায় আমাদের খুব উপকারহয়েছিল আর এতে আমরা পরিস্থিতির কিছুটা সামাল দিতে পেরেছিলাম।
# আমারনাম সন্তোষ যাদব। আমাদের গ্রামের পাশ দিয়ে, ভিন্নর গ্রাম থেকে ২০১৭ সালে ন্যাশনালহাইওয়ে তৈরি হয়েছে। এই কারণে আমাদের রাস্তা খুব ভালো হয়ে গিয়েছে আর বিজনেসও বাড়তেচলেছে।
# আমারনাম দীপাংশু আহুজা, মহল্লা সাদতগঞ্জ, জেলা সহরণপুর, উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা আমি।দুটো ঘটনা যা আমাদের ভারতীয় সৈনিকরা ঘটিয়েছেন – এক তো পাকিস্তানেতাদের করা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক যা উগ্রপন্থার লঞ্চিং প্যাড যেগুলো ছিল তাদেরনাস্তানাবুদ করে দিয়েছে আর সঙ্গে সঙ্গে ডোকলামে আমাদের ভারতীয় সৈনিকদের যে পরাক্রমদেখতে পেলাম সেটা অতুলনীয় ছিল।
# আমারনাম সতীশ বেওয়ানি। গত চল্লিশ বছর ধরে আমাদের এলাকায় জলের সমস্যা ছিল। আমরাসেনাবাহিনীর জন্য নির্মিত পাইপ লাইনের উপরে নির্ভরশীল ছিলাম। এখন আমাদের পাইপ লাইনআলাদা হয়েছে। তো ২০১৭ সালে এটা আমাদের বড় পাওনা।
এমনভাবে, অনেকব্যক্তি আছেন, যাঁরা নিজের নিজের স্তরে এমন কাজ করছেন যাতে অনেক মানুষের জীবনেইতিবাচক পরিবর্তন আসছে। বাস্তবে এটাই তো ‘ নিউ ইন্ডিয়া ’ যা আমরা সবাই মিলেনির্মাণ করছি। আসুন এই সব ছোট-ছোট আনন্দ নিয়ে আমরা ২০১৮ সালে প্রবেশ করি, নতুনবছরের শুভারম্ভ করি আর ‘ পজিটিভ ইন্ডিয়া ’ র লক্ষ্যে দৃঢ় পদক্ষেপ নিই।
যখনআমরা সবাই পজিটিভিটির কথা বলছি তখন আমারও একটা কথা শেয়ার করতে ইচ্ছে হচ্ছে। অতিসম্প্রতি কাশ্মীরের প্রশাসনিক সেবার টপার অঞ্জুম বশির খান খটক-এর প্রেরণাদায়ীকাহিনীর কথা জানতে পারলাম আমি। উনি উগ্রপন্থা আর ঘৃণার দংশন থেকে বেরিয়ে এসেকাশ্মীর অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসের পরীক্ষায় টপ করেছেন। আপনার জেনে হয়রান হয়েযাবেন যে ১৯৯০ সালে উগ্রপন্থীরা ওনার পৈতৃক বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছিল। ওখানেউগ্রপন্থা আর হিংসা এত বেশি ছিল যে ওনার পরিবারকে নিজেদের পৈতৃক ভিটে ছেড়ে বেরিয়েআসতে হয়েছিল। একটি ছোট শিশুর চারপাশে এত হিংসার বাতাবরণ হৃদয়ে অন্ধকার আর তিক্ততাসৃষ্টির জন্য যথেষ্ট ছিল – কিন্তু অঞ্জুম এমনটা হতে দেয় নি। সে কখনও আশা ছাড়ে নি। সেনিজের জন্য আলাদা এক পথ বেছে নেয় – জনগণের সেবার পথ। সে প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে এসেনিজের সফলতার কাহিনী নিজেই লেখে। আজ সে শুধু জম্মু আর কাশ্মীরেরই নয় বরং গোটাদেশের যুবকদের প্রেরণ আহয়ে উঠেছে। অঞ্জুম প্রমাণ করেছে যে পরিস্থিতি যতই খারাপ হোকনা কেন, ইতিবাচক কাজের মাধ্যমে নিরাশার মেঘকেও বিনষ্ট করা যায়।
এই গত সপ্তাহেই জম্মু-কাশ্মীরের কয়েকজন কন্যার সঙ্গে সাক্ষাতেরসুযোগ হল আমার। তাদের মধ্যে যে আবেগ ছিল, যে উৎসাহ ছিল, যে স্বপ্ন ছিল আর আমিশুনছিলাম তারা জীবনে কোন কোন ক্ষেত্রে অগ্রগতি করতে চায়। আর তারা কত আশায় পরিপূর্ণমানুষজন। তাদের সঙ্গে আমি কথা বলাম, কোথাও নিরাশার চিহ্নটুকুও ছিল না – উৎসাহ ছিল, আনন্দছিল, শক্তি ছিল, স্বপ্ন ছিল, সঙ্কল্প ছিল। ওই কন্যাদের সঙ্গে যতটা সময় আমিকাটিয়েছি তাতে নিজেও প্রেরণা পেয়েছি আর এটাই তো দেশের শক্তি, এই তো আমাদেরযুবক-যুবতীরা, এরাই তো আমার দেশের ভবিষ্যৎ।
আমার প্রিয় দেশবাসী, শুধু আমাদের দেশেরইনয়, যখনই বিশ্বের বিখ্যাত ধার্মিক স্থানের চর্চা হয় তখন কেরলের সবরীমালা মন্দিরেরআলোচনা হওয়া খুব স্বাভাবিক। বিশ্বখ্যাত এই মন্দিরে ভগবান আয়াপ্পাস্বামীর আশীর্বাদনিতে প্রতি বছর কোটি কোটি শ্রদ্ধানত মানুষ সেখানে উপস্থিত হন। যেখানে এত বিপুলসংখ্যায় শ্রদ্ধানত মানুষ আসেন, যে স্থানের এত বড় মাহাত্ম্য, সেখানে স্বচ্ছতা বজায়রাখা কত বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে? আর বিশেষ করে সেই জায়গায় যা পাহাড় আর জঙ্গলেরমধ্যে অবস্থিত। কিন্তু কী করে এই সমস্যাকেই একটা সংস্কারে বদলে ফেলা যায়, সমস্যারমোকাবিলা কীভাবে খোঁজা যেতে পারে, ভাবতে হবে। জনসাধারণের অংশগ্রহণে কতটা জোরদারহতে পারে একটা কর্মসূচি তা আমরা সবরীমালা মন্দিরের উদাহরণ থেকে জানতে পারি। পি.বিজয়ন নামে একজন পুলিশ অফিসার ‘পুণ্যম্ পুন্কাভনম্’ নামে একটা প্রোগ্রাম শুরুকরেছিলেন। স্বচ্ছতা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে স্বচ্ছতা অভিযান শুরু করলেন। সে অভিযানেরনিয়ম হল একজন তীর্থযাত্রী যতক্ষণ না স্বচ্ছতার জন্য কিছু না কিছু শারীরিক শ্রমদিচ্ছেন, তাঁর পূণ্যযাত্রা সম্পূর্ণ হবে না।
এই অভিযানে ছোট-বড়কোন ভেদ নেই। প্রত্যেক তীর্থযাত্রী ভগবানের পূজার অংশ হিসেবে স্বচ্ছতা কর্মকাণ্ডেকিছু না কিছু ভাবে অংশগ্রহণ করছেন, আবর্জনা পরিষ্কারের কাজ করছেন। প্রত্যেক সকালেএই সাফাইয়ের অদ্ভুত এক দৃশ্য দেখা যায় আর সমস্ত তীর্থযাত্রী তাতে সামিল হন। তিনিসেলিব্রিটি হতে পারেন বা ধনবান হতে পারেন, কিংবা মস্ত বড় অফিসার হতে পারেন, অথবাসাধারণ তীর্থযাত্রী – প্রত্যেকেই পূণ্যম্ পুন্কাভনম্ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেনএবং সাফাই কাজ করেই তাঁদের এগোতে হয়। দেশবাসীর কাছে এমন অনেক উদাহরণ আছে।সবরীমালায় এই স্বচ্ছতা অভিযান এগিয়ে চলে, পুণ্যম্ পুন্কাভনম্ সফল হয় এবং সবতীর্থযাত্রী এতে অংশগ্রহণ করেন। ওখানে কঠোর ব্রত পালনের সঙ্গে সঙ্গে কঠোর সংকল্পওএকসঙ্গে চলেছে।
প্রিয় দেশবাসী, ২০১৪-র ২-রা অক্টোবর পূজনীয় বাপু-র জন্মজয়ন্তীদিবসে আমরা সবাই সংকল্প নিয়েছি বাপুর যে অসমাপ্ত কাজ অর্থাৎ স্বচ্ছ ভারত,দুর্গন্ধমুক্ত ভারত গড়ব, পূজনীয় বাপু সারা জীবন এই কাজের জন্য যুঝেছেন এবং চেষ্টাওকরতেন। আর আমরা শপথ নিয়েছি বাপুর যখন ১৫০-তম জন্মজয়ন্তী হবে, তখন তাঁর স্বপ্নেরভারত স্বচ্ছ ভারত উপহার দেওয়ার জন্য কিছু না কিছু করব। স্বচ্ছতার জন্য সারা দেশেব্যাপক স্তরে প্রচেষ্টা চলছে। গ্রামীন ও শহরের সব জায়গায় বিপুল জনগণ অংশগ্রহণকরছেন, তাতে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শহর স্তরে স্বচ্ছতার অগ্রগতি পরখ করারজন্য আগামী ২০১৮-র ৪-ঠা জানুয়ারি থেকে ১০-ই মার্চের মধ্যে দুনিয়ার সব থেকে বড় সার্ভে ‘স্বচ্ছসর্বেক্ষণ ২০১৮’-র আয়োজন করা হবে। এই কর্মসূচি চার হাজারের বেশি শহরের প্রায়চল্লিশ কোটি জনগণের মধ্যে করা হবে। এই সার্ভেতে কি কি করা যাবে দেখা যাক। শহরেখোলা জায়গায় শৌচ থেকে মুক্তি, আবর্জনা সংগ্রহ, সেই আবর্জনা উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যপরিবহনের ব্যবস্থা, আবর্জনার বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে প্রসেসিং, বিহেভিরিয়্যাল চেঞ্জ কীকরে করা যায়, ক্যাপাসিটি বিল্ডিং আর স্বচ্ছতার জন্য ইনোভেটিভ প্রয়াস কী কী চলছেএবং তাতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ কী করে বাড়ান যায়। এই সার্ভের জন্য আলাদা আলাদাদল শহরগুলো ইন্স্পেকশন করবে। নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের প্রতিক্রিয়া নেবে।স্বচ্ছতা অ্যাপ উপযোগিতা তথা সেবাক্ষেত্রের সংশোধনের জন্য অ্যানালিসিস্ করবে। এইকাজে দেখা হবে শহরের প্রতিটি মানুষের স্বভাবের মধ্যে শহরকে স্বচ্ছ রাখার প্রক্রিয়াযাতে যুক্ত হয় এবং তা শহরের অভ্যাসে পরিনত হয়। স্বচ্ছতা শুধু সরকারের দায়িত্ব –এমনটা নয়, এতে নাগরিক ও নাগরিক সংগঠনগুলোর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ এবং সমস্ত নাগরিকের
কাছেআমার আবেদন, আপনারা এই সার্ভেতে জোরদার অংশগ্রহণ করুন। আপনার পাড়া, আপনার মহল্লা,আপনার শহর অন্যদের থেকে পিছিয়ে না পড়ে তা নিয়ে আপনারা সচেতন হয়ে উঠুন।
আমার পুরো বিশ্বাস, আপনারা ঘরদোরের শুকনো আবর্জনা এবং ভেজা আবর্জনা আলাদা করেযথাক্রমে নীল আর সবুজ ডাস্টবিনে ফেলছেন।
আবর্জনা reduce , reuse এবং recycle করার সিদ্ধান্ত খুবইউপযোগী হবে। যখন কোনো শহরের র্যাঙ্কিং এই সার্ভের ভিত্তিতে হবে, তখন আপনার শহরেযদি ১ লাখের ওপর বাসিন্দা থাকে তবে জাতীয় স্তরে, আর ১ লাখের কম হলে আঞ্চলিক স্তরেআপনার শহর যাতে ওপরের দিকের ranking –এ আসে, তার জন্য আপনারা স্বপ্ন দেখবেন,চেষ্টা চালাবেন, এটাই আমার বিশ্বাস।
৪-ঠা জানুয়ারি থেকে ১০-ই মার্চ, ২০১৮-র মাঝে স্বচ্ছতা-সর্বেক্ষণ অভিযানের Healthy competition –এ আপনারা পিছিয়ে নাপড়েন এই নিয়ে সারাক্ষণ আপনাদের চর্চার বিষয় করে তুলুন এবং আপনাদের সব্বার স্বপ্নহওয়া উচিত ‘আমার শহর আমার প্রয়াস – আমার প্রগতি দেশের প্রগতি’। আসুন, এই শপথেরসঙ্গে পূজনীয় বাপুকে স্মরণ করি এবং স্বচ্ছ ভারতের সঙ্কল্প নিয়ে নিজেদের পুরুষকারেরউত্তরণ ঘটাই।
আমার প্রিয় দেশবাসী, কিছু কিছু কথা আপাতদৃষ্টিতে খুবই ছোট বাসামান্য মনে হয়, কিন্তু একটা সমাজের ক্ষেত্রে তা সুদূরপ্রসারী হয়ে যায়। আজ ‘মন কিবাত’ এই কার্যক্রমে এমনই একটি ঘটনার উল্লেখ করছি। আমার চেনা-পরিচিত জগৎ থেকে জানলামকোনো মুসলিম মহিলা যদি হজ করতে যেতে চায় তবে মহরম অর্থাৎ পুরুষ অভিভাবক ছাড়া তিনিযেতে পারবেন না। যখন প্রথম এই বিষয়টা আমার কানে এল, ভাবলাম, এটা কেন হবে? কে এমননিয়ম বানালো? এমন discrimination কেন থাকবে? এর গভীরে যখন গেলাম, আমি হতবাক হয়ে গেলাম।স্বাধীনতার ৭০ বছর পরেও এই বাধ্যবাধকতা আমরাই চালু রেখেছি! দশকের পর দশক মুসলিমমহিলাদের সঙ্গে এই অন্যায় হয়ে চলেছে? কিন্তু কেউ তা নিয়ে ভাবছে না! এমন কি কিছুমুসলিম দেশেও এমন নিয়ম নেই! অথচ, আমাদের দেশের মুসলিম মহিলাদের সে অধিকার দেওয়াহয়নি। আমার অত্যন্ত ভালো লেগেছে, আমাদের সরকার এই ব্যাপারে মনোযোগ দিয়েছে। আমাদের Ministry of MinorityAffairs এই বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ নিয়েছে এবং ৭০ বছরের পুরনো এই পরম্পরাপরিবর্তন করে ঐ প্রতিবন্ধকতা তুলে দিয়েছে। আজ একজন মুসলিম মহিলা মহরম ছাড়াই হজকরতে যেতে পারবেন এবং আমার ভালো লেগেছে এবারে প্রায় ১৩০০ মুসলিম মহিলা মহরম ছাড়াহজ যাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন এবং দেশের বিভিন্ন অংশ থেকে – কেরল থেকে উত্তরভারত –সব জায়গা থেকে মুসলিম মহিলারা হজে যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। সংখ্যালঘু বিষয়কমন্ত্রণালয়কে আমি পরামর্শ দিয়েছি, যে মহিলারা একলা হজ-এ যেতে চাইছেন, তাঁদের সেআবেদনে যেন অনুমতি মিলে যায়। সাধারণভাবে হজ-এ যাওয়ার জন্য লটারির ব্যবস্থা আছে।কিন্তু আমি চাই, যে মহিলারা একলা হজে যেতে আগ্রহী, তাঁদের এই লটারির বাইরে রেখেস্পেশ্যাল ক্যাটেগরি হিসেবে যেন বিচার করা হয়। আমি পরিপূর্ণ বিশ্বাসের সঙ্গে বলছিএবং এ আমার দৃঢ় ধারণা, ভারতের বিকাশযাত্রা আমাদের নারীশক্তি ও তাদের প্রতিভারভরসায় এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগোতে থাকবে। আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে আমাদের মহিলারাপুরুষদের মতই সমান অধিকার পাবেন, সমান সুযোগ পাবেন যাতে প্রগতির পথে সমান ভাবেঅংশগ্রহণ করতে পারেন।
আমার প্রিয় দেশবাসী, ২৬-শে জানুয়ারি আমাদের দেশের এক ঐতিহাসিকদিন। কিন্তু
২৬-শে জানুয়ারি, ২০১৮ দিনটিকে বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে। এবছর সাধারণতন্ত্র দিবসসমারোহে আসিয়ানভুক্ত দশটি দেশের নেতৃত্ব প্রধান অতিথি হিসেবে ভারতে আসবেন। ভারতেরইতিহাসে এর আগে এমনটা কখনও হয়নি। ২০১৭ বছরটি ছিল আসিয়ানভুক্ত দেশগুলি ও ভারত – এইদুই পক্ষের জন্যই উল্লেখযোগ্য। ‘আসিয়ান’ এবার পঞ্চাশ বছর পূর্ণ করল এবং ২০১৭ সালআসিয়ান-ভুক্ত দেশগুলির সঙ্গে ভারতের সমঝোতার ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। ২৬-শে জানুয়ারিবিশ্বের দশজন মহান নেতার একসঙ্গে মিলিত হওয়ার ঘটনা আমাদের কাছে অত্যন্ত গর্বের।
প্রিয় দেশবাসী, এটা উৎসবের মরশুম। এমনিতে আমাদের দেশ এক অর্থেউৎসবের দেশ। সম্ভবত এমন কোনও দিন নেই, যেদিন কোনো না কোনো পার্বণ থাকে না।সম্প্রতি আমরা সবাই মিলে ক্রিসমাস পালন করেছি, আবার নতুন বছর আসছে সামনে। নতুন বছরআপনাদের সবার জন্য সুখ, সমৃদ্ধি ও খুশি আনুক। আমরা সবাই নতুন উদ্যোগ, নতুন উৎসাহ,নতুন আশা ও সংকল্প নিয়ে অগ্রসর হই এবং দেশও এগিয়ে চলুক। জানুয়ারি মাসে সূর্যেরউত্তরায়ণ হয় এবং এসময় মকর সংক্রান্তি পার্বণ পালন হয়। এটি প্রকৃতির সঙ্গেসম্পর্কিত একটি পরব। একদিকে আমাদের প্রত্যেক পার্বণ কোনও না কোনভাবে প্রাকৃতিকঘটনার সঙ্গে জুড়ে রয়েছে, কিন্তু বৈচিত্র্যে ভরা আমাদের সংস্কৃতিতে প্রকৃতির এইঘটনাগুলি পালন করার পদ্ধতি ভিন্ন। একদিকে যখন পঞ্জাব আর উত্তর ভারতে ‘লোহড়ী’ নিয়েআনন্দ উৎসব হয়, অন্যদিকে তখন ইউ.পি-বিহারে ‘খিচড়ি’ আর ‘তিল সংক্রান্তি’র অপেক্ষাথাকে, রাজস্থানে ‘সংক্রান্তি’, অসমে ‘মাঘ বিহু’, তামিলনাড়ুতে ‘পোঙ্গল’ – এই সবকটিউৎসবই নিজ নিজ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রত্যেক উৎসবেরই আলাদা মাহাত্ম্য আছে।এই সব পার্বণ মোটামুটি ১৩ থেকে ১৭ জানুয়ারির মধ্যে পালিত হয়। এইসব পার্বণের নামআলাদা আলাদা কিন্তু এর গভীরে একটাই তত্ত্ব – প্রকৃতি ও কৃষির মেলবন্ধন।
সমস্ত দেশবাসীকে সব পার্বণের জন্য শুভেচ্ছা জানাই। আরেকবারআপনাদের সবাইকে নববর্ষ ২০১৮’র শুভেচ্ছা! অনেক অনেক ধন্যবাদ! আবার ২০১৮-য়আমি কথা বলব। ধন্যবাদ!
PM @narendramodi conveys Christmas greetings, talks about the commitment of Lord Christ to service. #MannKiBaat pic.twitter.com/lo4HRy5QEx
— PMO India (@PMOIndia) December 31, 2017
Service is a part of India's culture. #MannKiBaat pic.twitter.com/FiIO8goQr5
— PMO India (@PMOIndia) December 31, 2017
PM @narendramodi pays tributes to Guru Gobind Singh Ji. #MannKiBaat https://t.co/Y1Thhl6aLy pic.twitter.com/psqV1w1KIh
— PMO India (@PMOIndia) December 31, 2017
Tomorrow, 1st January is special. We welcome those born in the 21st century to the democratic system as they will become eligible voters. #MannKiBaat pic.twitter.com/zNGozfpaTT
— PMO India (@PMOIndia) December 31, 2017
A vote is the biggest power in a democracy. It can transform our nation. #MannKiBaat pic.twitter.com/EF6xuo1gAG
— PMO India (@PMOIndia) December 31, 2017
PM @narendramodi addresses the 'New India Youth' during today's #MannKiBaat pic.twitter.com/lbUtT6c6d8
— PMO India (@PMOIndia) December 31, 2017
The New India Youth will transform our nation. #MannKiBaat pic.twitter.com/KScr1V5dRL
— PMO India (@PMOIndia) December 31, 2017
We can have mock Parliaments in our districts, where we discuss how to make development a mass movement and transform India. The New India Youth must take a lead in this. #MannKiBaat pic.twitter.com/b7ysbh4XYT
— PMO India (@PMOIndia) December 31, 2017
There are several opportunities for our youth today. #MannKiBaat pic.twitter.com/9XAiCXKqzm
— PMO India (@PMOIndia) December 31, 2017
During #MannKiBaat last month, I had spoken about #PositiveIndia. I am happy that so many people shared their Positive India moments through social media: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) December 31, 2017
Let us enter 2018 with a spirit of positivity. #MannKiBaat pic.twitter.com/2LYZs4k8Yt
— PMO India (@PMOIndia) December 31, 2017
While talking about positivity, I want to talk about Anjum Bashir Khan Khattak, who excelled in the KAS exam. He overcame adversities and distinguished himself: PM @narendramodi during #MannKiBaat
— PMO India (@PMOIndia) December 31, 2017
PM @narendramodi appreciates the Punyam Poonkavanam initiative at the Sabarimala Temple in Kerala. #MannKiBaat
— PMO India (@PMOIndia) December 31, 2017
Towards a Swachh Bharat. #MannKiBaat pic.twitter.com/rYGmIwxjyX
— PMO India (@PMOIndia) December 31, 2017
Swachh Survekshan begins in January. We will once again have a look at the strides we are making in cleanliness and areas in which we can improve: PM @narendramodi #MannKiBaat
— PMO India (@PMOIndia) December 31, 2017
A step that will benefit Muslim women. #MannKiBaat pic.twitter.com/tkjfILvB7o
— PMO India (@PMOIndia) December 31, 2017
India looks forward to welcoming ASEAN leaders for Republic Day 2018 celebrations. This is the first time so many leaders will grace the celebrations as the Chief Guests. #MannKiBaat pic.twitter.com/EF91d1oGMl
— PMO India (@PMOIndia) December 31, 2017